ইয়াবা সেবন, চোলাই মদ পান ও তাস দিয়ে জুয়া খেলার অভিযোগ
নিজস্ব প্রতিবেদক :
সিরাজগঞ্জের তাড়াশে ইয়াবা সেবন, চোলাই মদ পান ও তাস দিয়ে জুয়া খেলার সময় গুল্টা বাজার দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক মাসুদ রানা ও গুল্টা আদিবাসী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের পিয়ন সোহেল রানাসহ আরো ২ জন ব্যক্তি স্থানীয়দের হাতে ধরা পড়ে শনিবার দিবাগত রাতে। পরে (১০) এপ্রিল রবিবার সকালে তাদেরকে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৫১ ধারায় জেলে পাঠিয়েছেন তাড়াশ থানা পুলিশ।
এ বিষয়টি নিশ্চিত করে তাড়াশ থানার সেকেন্ড অফিসার আব্দুস সালাম বলেন, টহল পুলিশের একটি দল রাত ৯ টার দিকে জনতার চেচামেচি শুনে ঘটনাস্থল উপজেলার তালম ইউনিয়নের বড়ইচরা গ্রামের দোলোয়ার হোসেনের বাড়িতে পৌঁছায়। এরপর স্থানীয়রা শিক্ষক ও পিয়নসহ ঐ চার ব্যক্তিকে পুলিশের হাতে তুলে দেন।
রানীহাট দারুল উলুম ইসলামিয়া মাদ্রাসার অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক ও বড়ইচরা গ্রামের স্থানীয় বাসিন্দা মজনু সরকার বলেন, দেলোয়ার হোসেন ইটের ভাটায় শ্রমিকের কাজ করেন। তার স্ত্রী ও ছেলে তাড়াশের নাদোসৈয়দপুর চর এলাকাতে রসুন তোলার জন্য গেছেন। বাড়িতে শুধু তার এক মেয়ে থাকেন। এরই মধ্যে প্রায় ৭ দিন ধরে শিক্ষক ও পিয়নসহ চারজন ব্যক্তি সন্ধা থেকে গভীর রাত অবদি এই বাড়িতে বসে ইয়াবা সেবন, চোলাই মদ পান ও তাস দিয়ে জুয়া খেলেন। এসব কারণে আমরা বরইচড়া গ্রামবাসী তাদের হাতেনাতে ধরে ফেলি।
এদিকে জনতার হাতে ধরা খাওয়ার একটি ভিডিও চিত্রে ঐ চার ব্যক্তিকে স্থানীয়দের চর থাপ্পর মারতে দেখা যায় ও গালি গালাজ করতে শোনা যায়। সেসময় তাদের কাছ থেকে ইয়াবা খাওয়ার ফুয়েল ও তাস খুঁজে পায় স্থানীয়রা। তবে চোলাই মদের বতল থেকে মদ ঢেলে মাটিতে ফেলে দেন অভিযুক্তরা। জনতার হাতে ধরা পড়া অপর ২ জন তালম ইউনিয়নের গুল্টা গোলাপুর গ্রামের মৃত আবু বক্করের ছেলে আলমগীর হোসেন (৩১) ও মৃত জরিত প্রামানিকের ছেলে হাবিবুর রহমান (৩৩)।
গুল্টা বাজার দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আলী আহমেদ ও গুল্টা আদিবাসী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুস ছাত্তার বলেন, বিষয়টি সম্পর্কে আমরা অবগত। দু্রুততম সময়ের মধ্যে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সাথে বসে তাদের বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ফকির জাকির হোসেন বলেন, গুল্টা বাজার দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক মাসুদ রানা ও গুল্টা আদিবাসী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের পিয়ন সোহেলকে জেলে পাঠানোয় বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির কাছে তাদের সাময়িক বরখাস্তের সুপারিশ করা হবে। পরে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ প্রসঙ্গে তাড়াশ থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, জনতার পক্ষ থেকে কেউ থানায় বাদি না হওয়ায় ১৫১ ধারায় জেলে পাঠানো হয়েছে। পরে তদন্ত করে আইনানুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।