তাড়াশে দায়সারাভাবে সড়ক মেরামত
কাজ বন্ধ করে দিয়েছেন স্থানীয়রা
নিজস্ব প্রতিবেদক, গোলাম মোস্তফা
সিরাজগঞ্জের তাড়াশে উপজেলা প্রকৌশল বিভাগের কুন্দইল সড়কের মেরামত কাজে অতি নি¤œমানের সামগ্রী ব্যবহার করার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে (২৪ মার্চ) বৃহস্পতিবার স্থানীয় মানুষজন ঐ সড়কের মেরামত কাজ বন্ধ করে দিয়েছেন। এরপর সড়ক মেরামত কাজের উপকরণ নিয়ে সটকে পড়েছেন ঠিকাদার।
কুন্দইল সড়কের পাশের দিঘী গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল আলিম, রহমত আলী, কাজেম উদ্দিন, আবু হাসান ও মোকলেস উদ্দিন বলেন, দায়সারাভাবে কুন্দইল সড়কের মেরামত কাজ করা হচ্ছিলো। বিটুমিন ও ইট,খোয়া ছিলো খুবই নি¤œমানের। তাছাড়া প্রয়োজনের তুলনায় সেসব মেরামত সামগ্রী পরিমানে কম ছিলো। ফলে কার্পেটিং করার পরেই তা উঠে যাচ্ছিলো।
সরজমিনে শুক্রবার দুপুরে দেখা যায়, কুন্দইল সড়কে ঠিকাদার বা মেরামত কাজের শ্রমিক নেই। সড়ক মেরামত কাজের উপকরণগুলোও সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। দিঘী সগুনা বাজার থেকে দিঘী গ্রামের শেষের দিকে অতি নি¤œমানের মেরামত সামগ্রী দিয়ে কার্পেটিং করা হয়েছে।
উপজেলা প্রকৌশল বিভাগ সূত্রে জানা যায়, প্রায় চার বছর আগে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের আওতাধীন তাড়াশের কুন্দইল সড়কটির পূর্বের অংশে পাথর ও বিটুমিনের কার্পেটিং করা হয়। এরই মধ্যে দফায় দফায় বন্যায় সড়কটির কার্পেটিং করা অংশের অধিকাংশ স্থানে ছোট বড় অসংখ্য গর্তের সৃষ্টি হয়েছিলো। ফলে এ সড়ক দিয়ে নিরাপদ চলাচলে চরম দুর্ভোগে পড়তে হয়। তারপর এ বছরের জানুয়ারি মাসের ১৫ তারিখ থেকে কুন্দইল সড়কের তাড়াশ থেকে দিঘী সগুনা বাজার পর্যন্ত ছয় কিলোমিটার মেরামত কাজ শুরু করা হয়।
জানা গেছে কুন্দইল সড়কটি চলনবিলের মধ্যে দিয়ে তাড়াশ উপজেলা ও গুরুদাসপুর উপজেলার মানুষের একমাত্র ও সহজ চলাচলের অন্যতম মাধ্যম। ফলে এই সড়ক দিয়ে সারা দিন ও রাতভর হাজারো মানুষ চলাচল করেন। চলনবিল অধ্যূষিত তাড়াশ, দিঘী, দিঘী সগুনা, কামারশন, মাকরশন, কুন্দইল, বিলসা ও খবজিপুরসহ অন্তত ২০ গ্রামের মানুষের চলাচলের সড়ক এটি। এই এলাকার সব ধরনের কৃষিপণ্য বেচা-কেনার জন্য এই সড়ক পথ ব্যবহার করা হয়। সেজন্য কুন্দইল সড়কটিকে তাড়াশ-গুরুদাশপুর মৈত্রি সড়ক হিসাবে আখ্যায়িত করা হয়েছে।
স্থানীয় ভুক্তভোগী মানুষজন আরো বলেন, দীর্ঘদিন পর হলেও কুন্দইল সড়কটির মেরামত কাজ শুরু হওয়া আমাদের মধ্যে স্বস্তি ফিরে এসেছিলো। কিন্তু কাজ অসম্পূর্ণ রেখে ঠিকাদার চলে যাওয়ায় রীতিমত হতাশ হয়ে পড়েছি।
এদিকে ঠিকাদার মোহাম্মদ আলী বলেন, ডিজিটাল মিকচার মেশিন নতুন। এ কারণে বিটুমিন মেশানোয় সমস্যা হয়েছে। পরে স্থানীয়রা মেরামত কাজ বন্ধ করে দিয়েছেন। এ প্রসঙ্গে উপজেলা প্রকৌশলী মো. ইফতেখার ছারোয়ার ধ্রুব দৈনিক যমুনা প্রবাহকে বলেন, ডিজিটাল মিকচার মেশিনে অতিরিক্ত তাপের কারণে মিকচার পুড়ে যায়। ফলে বিটুমিন মেশানোয় সমস্যা হয়। কিন্তু স্থানীয় মানুষজন মনে করেন নি¤œমানের কাজ করা হচ্ছে। এ কারণে তারা কাজে বাঁধা দেয়। পরে কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। সমস্যার সমাধান করে দ্রুততম সময়ের মধ্যে কুন্দইল সড়কের মেরামত কাজ শুরু করা হবে।#