উল্লাপাড়ায় নৌকা তৈরিতে ব্যস্ত কারিগরেরা

Spread the love

উল্লাপাড়া প্রতিনিধিঃ  নৌকা তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ার নৌকা তৈরির কারিগরেরা। বাংলাদেশ নদীমাতৃক দেশ। আবহমান গ্রাম বাংলার প্রধান বাহক নৌকা। উল্লাপাড়ায় বর্ষার আগমনে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় নৌকা বা কোসার চাহিদা বেড়েছে। বর্ষা মৌসুমে মানুষের অন্যতম যাতায়াত বাহন হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে নৌকা বা কোসা। বর্ষা এলেই গ্রামগঞ্জে বেড়ে যায় নৌকার কদর। এ গ্রাম থেকে অন্য গ্রামে যাতায়াত, হাটবাজার, মাছ ধরা, গোখাদ্য সংগ্রহ, বিভিন্ন এলাকায় খেয়া পারাপারের জন্য নৌকা অতি জরুরি বাহন হিসেবে প্রতিটি গ্রামে বর্ষা মৌসুমে নিত্যপ্রয়োজনীয় বাহন হিসেবে পরিগণিত। 

এ মৌসুমে নৌকার ব্যাপক চাহিদা থাকায় অধিক হারে নৌকা বা কোসা বেচাঁ- কেনা হচ্ছে। চাহিদা বেশি থাকায় বেশি লাভবান হওয়ার আশায় দিন-রাত পরিশ্রম করে নৌকা তৈরি করছেন কারিগরেরা।
নৌকা তৈরির কারিগর নিতাই বলেন, বর্ষার এ মৌসুমে নৌকার ব্যাপক চাহিদা বেড়েছে। আর সে কারণে আমরা দিন রাত পরিশ্রম করে নৌকা তৈরি করছি। বিক্রিও হচ্ছে ভালো। গতবারের চেয়ে দামও একটু বেশি। নৌকা বিক্রির টাকায় আমরা পরিবার নিয়ে ভালোই আছ।

উপজেলার বিভিন্ন স্থানে ৩০-৪০টি কারখানায় কারিগররা নৌকা তৈরিতে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছে। কেউ করাত দিয়ে কাঠ কাটছে, কেউ বা হাতুড়ি দিয়ে নৌকায় পেরেক লাগাতে ব্যস্ত সময় পার করছে।

উপজেলা চঁন্দগাতী ও গয়হাট্টা নৌকা তৈরির কারিগর ইয়াদ আলী, মোন্নাফ আলী জানান, আমাদের এই এলাকায় বর্ষা মৌসুমকে ঘিরে বিভিন্ন ধরনের ছোট বড় নৌকা বা কোসা তৈরি করা হয়। বর্তমানে প্রতিদিন প্রায় ২০ থেকে ৩০ টি নৌকা বিক্রি করা যায়। বড় নৌকার চেয়ে ছোট নৌকা ও কোসা নৌকার চাহিদা বেশি। প্রতিটি নৌকা বিক্রি করা যায় প্রায় ৬ থেকে ৮ হাজার টাকায়। কাঠ ও লোহাসহ নৌকা তৈরির সরঞ্জামের দাম দ্বিগুণ হওয়ায় আগের মতো আর লাভ হয় না। তবে পুর্ব পুরুষের এই ব্যবসা কোনো মতে ধরে আছি।

নৌকা তৈরির কারিগর করিম জানান, বর্ষা মৌসুম এলে নৌকা তৈরির কাজে ব্যস্ত থাকি। এই সময় নৌকার চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় আমরা অতিরিক্ত কিছু আয় করতে পারি। তিনি আরো জানান, একজন ব্যক্তি একটি ছোট নৌকা তৈরি করতে একদিন সময় লাগে। আর এ ছোট নৌকা তৈরির মুজুরী পাওয়া যায় ৮ থেকে ৯ শত টাকা। ১২ ফুটের নৌকা বানাতে ২ জন মিস্ত্রির এক দিন সময় লাগে। আর এ ১২ ফুট নৌকা বানানোর মুজুরি ১২০০ টাকা পাওয়া যায়। তবে নৌকা তৈরির সরঞ্জামের দাম বাড়লেও বাড়েনি আমাদের শ্রম মুজুরির দাম।

বড়পাঙ্গাসী ইউনিয়নের হাওড়া গ্রামের মুকুল নৌকা ক্রয়ের জন্য নৌকা কারখানায় এলে তিনি বলেন, বর্ষা মৌসুম এলেই নিচু এলাকাতে নৌকার প্রয়োজন দেখা দেয় কারন গ্রামের রাস্তাগুলো নিচু হওয়ায় বন্যার পানিতে রাস্তা তলিয়ে যায়। তাই নৌকা ছাড়া চলাচলের কোনো উপায় থাকে না। তখন নৌকাই একমাত্র যাতায়াতের ভরসা।

Please follow and like us:
Pin Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Website Design, Developed & Hosted by ALL IT BD