ভুয়া সনদ ও জাতীয় পরিচয়পত্র দিয়ে চাকরি করছেন তাড়াশের আব্দুল বারিক জাম্বু

Spread the love

অভিযোগ সহধর ভাইয়ের
– আব্দুল বারিক জাম্বু ও মো. রুহুল আমীন একই বাবার সন্তান হওয়ার কারণে সনদে আব্দুল বারিক জাম্বুর নামের স্থলে সহজেই মো. রুহুল আমিন লিখে নেন। অনরুপভাবে জাতীয় পরিচয়পত্র সেরে নেন
– ঘটনা যদি সত্যি হয় তাহলে তো বড় অন্যায়। আমরা খোঁজ খবর নিয়ে ব্যবস্থা নিচ্ছি- ঢাকা শিশু হাসপাতালের পরিচালক প্রফেসর জাহাঙ্গীর আলম

গোলাম মোস্তফা, তাড়াশ (সিরাজগঞ্জ) :
সিরাজগঞ্জের তাড়াশের আব্দুল বারিক জাম্বু নামের এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে এসএসসি পাশের ভুয়া সনদ ও জাতীয় পরিচয় পত্র পরিবর্তন করে ঢাকা শিশু হাসপাতালে চাকরি নেওয়ার অভিযোগ তুলেছেন সহদর ভাই মো. রুহুল আমীন। এদের বাড়ি উপজেলার বারুহাস ইউনিয়নের কাজিপুর গ্রামে। এদের বাবার নাম মৃত আজিজুল হক। মায়ের নাম মোছা. সুফিয়া খাতুন। বিশেষ করে আব্দুল বারিক জাম্বু ও মো. রুহুল আমীন একই বাবার সন্তান হওয়ার কারণে সনদে আব্দুল বারিক জাম্বুর নামের স্থলে সহজেই মো. রুহুল আমিন লিখে নেন। অনরুপভাবে জাতীয় পরিচয়পত্র সেরে নেন। সেই এসএসসি পাশের ভুয়া সনদ ও জাতীয় পরিচয়পত্র দিয়ে বহাল তবিয়তে দীর্ঘ প্রায় দেড় যুগ ধরে নিজের পরিচয় গোপন করে চাকরি করে আসছেন আব্দুল বারিক জাম্বু মো. রুহুল আমীন নামে।
এদিকে আব্দুল বারিক জাম্বুর বড় ভাই মো. রুহুল আমীন বলেন, আমারও ঢাকাতে একটি চাকরির সুযোগ হয়। পরে বিনসাড়া হাইস্কুলে আমার এসএসসি পাশের সার্টিফিকেট নিতে গেলে সেখানকার সাবেক প্রধান শিক্ষক আব্দুল ওয়াজেদ জানান, ২০২৪ সালে তার বাবা আজিজুল হক মো. রুহুল আমীনের সার্টিফিকেট হাইস্কুল থেকে তুলে নিয়ে গেছেন। তিনি নিশ্চিত হন তার এসএসসি পাশের সার্টিফিকেট ও জাতীয় পরিচয়পত্র সেরে নিয়ে ঢাকায় শিশু হাসপাতালে আব্দুল বারিক জাম্বু মো. রুহুল আমিন নামে প্রতারণার মাধ্যমে চাকরি নিয়েছেন।
অপরদিকে নিজের এসএসসি পাশের সার্টিফিকেট না পেয়ে ঢাকার পোশাক শ্রমিক কারখানায় কাজ করে খুব কষ্টে জীবিকা নির্বাহ করছেন বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগী মো. রুহুল আমীন। তার সার্টিফিকেট ফিরে পেতে তিনি ২০০১ সালের জুলাই মাসের ৩১ তারিখে তাড়াশ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করে রেখেছেন। জিডি নং ১০২২।
গতকাল বৃহস্পতিবার বিনসাড়া হাইস্কুলে গেলে প্রধান শিক্ষক মকবুল হোসেন বলেন, মো. রুহুল আমীনের এসএসি পাশের সার্টিফিকেট তার বাবা আজিজুল হক তার ছেলের চাকরির কথা বলে ২০০৯ সালের মার্চ মাসের ৩০ তারিখে বিধি মোতাবেক স্বাক্ষর দিয়ে তুলে নিয়েছেন। বিনসাড়া হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক আরো বলেন, মো. রুহুল আমীন হাইস্কুলে এসেছিলেন তার এসএসসি পাশের সার্টিফিকেট নেওয়ার জন্য। আমরা তাকে পরামর্শ দিয়েছি নিয়মানুযায়ী বোর্ড থেকে সার্টিফিকেট তুলে নেওয়ার জন্য।
মো. রুহুল আমিন আক্ষেপ করেন, ভুয়া সনদ ও জাতীয় পরিচয়পত্র দিয়ে ঢাকা শিশু হাসপাতালে চাকরি করছেন তারই সহধর ছোট ভাই আব্দুল বারিক জাম্বু। অসদ উপায় অবলম্বন করে সরকারি চাকরি সে বেশ ভালো অবস্থানে রয়েছেন। অথচ নিজের এসএসসি পাশের সার্টিফিকেট না থাকায় ২০০২ সাল থেকে আমার পোশাক শ্রমিক কারখানায় কাজ করে পরিবার নিয়ে খুব অভাব অনটনে দিন কাটে। বারংবার নিজ পরিবারের কাছে প্রতিকার চেয়ে সমাধান মেলেনি এখনো। পরে রাজশাহী বোর্ড থেকে আমার এসএসসি পাশের সার্টিফিকেটের ডুপ্লিকেট কপি ২০২০ সালের আগষ্ট মাসের ২৪ তারিখে তুলে এনে রেখে দিয়েছি।
আব্দুল বারিক জাম্বু ও মো. রুহুল আমীনের বড় ভাই প্রথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক আব্দুস সবুর মিন্টু প্রথমে অভিযোগ অস্বীকার করেন। তারপর বলেন, ঘটনার সত্যতা থাকলে সংবাদ করেন।
আব্দুল বারিক জাম্বু, মো. রুহুল আমীন ও আব্দুস সবুর মিন্টুর মামা জিল্লুর রহমান তোতা বলেন, আমি ভাগ্নেদের কোলে পিঠে বড় করেছি। মো. রুহুল আমীনের অভিযোগ সত্য। সহদর ভাইকে এরকমভাবে ঠকানো আব্দুল বারিক জাম্বুর উচিত হয়নি।
অভিযুক্ত আব্দুল বারিক জাম্বু বলেন, “ ভাইয়া আমি আপনার সাথে সাক্ষাত করে কথা বলবো যত তাড়াতাড়ি সম্ভব। আমি আপনার সাথে দেখা করবো ভাই।”
এ প্রসঙ্গে ঢাকা শিশু হাসপাতালের পরিচালক প্রফেসর জাহাঙ্গীর আলম  বলেন, ঘটনা যদি সত্যি হয় তাহলে তো বড় অন্যায়। আমরা খোঁজ খবর নিয়ে ব্যবস্থা নিচ্ছি।

Please follow and like us:
Pin Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Website Design, Developed & Hosted by ALL IT BD