গুরুদাসপুর (নাটোর) প্রতিনিধি.
নাটোরের গুরুদাসপুরে মামলা ও তালাকের কাগজে স্বাক্ষর না দেওয়ায় দুই বোন সুখী-সুমিকে মারধোর করে পুড়িয়ে হত্যা চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে তাদের দুজনের স্বামী আলমগীর হোসেন ও সবুজ আলীর বিরুদ্ধে।
গুরুদাসপুর পৌরসদরের খামারনাচকৈড় মহল্লায় শুক্রবার রাত আটটার দিকে হযরত মোল্লার বাড়িতে তার ওই দুই মেয়ের উপরে এই হামলা, নির্যাতন ও নিপীড়ন চালানো হয়। হামলার স্বীকার দুই বোন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
প্রতক্ষ্যদর্শী সূত্রে জানা যায়, ঘটনার রাতে আলমগীর, তার দ্বিতীয় স্ত্রী রোজিনা এবং সবুজ ও তার বোন ঋতু মিলে হযরত মোল্লার বাড়িতে ঢুকে সুখী ও সুমির কাছে মামলা ও তালাকের কাগজে স্বাক্ষর দিতে বলে।এতে দুই বোন অস্বীকৃতি জানালে তাদের উপর মারধর শুরু করে এবং সুুখীর শরীরে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে তারা। এতে সুখীর ডান হাত ও মাথার চুল কিছুটা পুড়ে যায়। এ সময় সুখীর দোকানের ড্রয়ার থেকে টাকাও বের করে নেয় হামলাকারীরা। সুখী ও সুমির চিৎকারে স্থানীয়রা এগিয়ে এলে তারা পালিয়ে যায়। এলাকাবাসী তাদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান।
তিন বছর আগে শারিরিক নির্যাতন, যৌতুকের জন্য অত্যাচার ও স্ত্রীর অনুমতি ছাড়া শ্যালকের স্ত্রীকে দিত্বীয় বিয়ে করার অভিযোগে স্বামী আলমগীরের বিরুদ্ধে তিনটি মামলা করে সুখী।অন্যদিকে গত জানুয়ারি মাসে সুখীর ছোট বোন সুমি স্বামী সবুজের বিরুদ্ধে যৌতুকের অভিযোগে মামলা করলে সবুজ সুমির বিরুদ্ধে তালাকনামা পাঠায় বলে জানান হযরত মোল্লা।
তিনি বলেন, আমার দুই মেয়েকে বিভিন্নভাবে অত্যাচার-নির্যাতন ও ষড়যন্ত্র করে তাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এর প্রতিবাদে তাদের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করা হয়। মামলা তুলে না নেওয়ায় এবং তালাক নামা গ্রহণ না করায় আলমগীর ও সবুজ পরিকল্পিতভাবে তার বাড়িতে আক্রমণ করে মারধর, ভাংচুর ও পুড়িয়ে হত্যার চেষ্টা করে।এ ব্যপারে অভিযুক্ত সবুজ মুঠোফোনে বলেন, এ অভিযোগ সত্য নয়। সুমি আমার অবাধ্য তাই তাকে তালাক দিয়েছি। তবে, অভিযুক্ত আলমগীর মুঠোফোন রিসিভ না করায় তার বক্তব্য জানা যায়নি।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত ডাক্তার আব্দুস সালাম বলেন, সুখী ও সুমির শরীরে বিভিন্ন অংশে জখমের চিহ্ন রয়েছে। সুখীর ডান হাত ও মাথার চুল কিছুটা পুড়ে গেছে।মারধর ও পুড়িয়ে হত্যা চেষ্টার ব্যাপারে জানতে চাইলে গুরুদাসপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুল মতিন বলেন, এ ব্যাপারে মামলা রুজু হয়েছে। আসামীদের দ্রুত গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। অভিযুক্ত আলমগীর উপজেলার চাঁচকৈড় বাজারের মাংস ব্যবসায়ী বাটুল মন্ডলের ছেলে, রোজিনা আলমগীরের দ্বিতীয় স্ত্রী, সবুজ শহীদুল আমিনের ছেলে গুরুদাসপুর উপজেলা পরিষদে এমএলএসএস পদে চাকরি করেন।