গুরুদাসপুরে লিচুর হাট ইজারা ৯ লাখ টাকায়

Spread the love

গুরুদাসপুর (নাটোর) প্রতিনিধি.
অবশেষে লিচুর রাজ্য খ্যাত নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার নাজিরপুর ইউনিয়নের বেড়গঙ্গারামপুর লিচুর হাটটি সরকারীভাবে গণ্য হলো। বিগত বিশ বছর ধরে লিচুর হাটটি ব্যাক্তিস্বার্থে নিয়ন্ত্রণ করে আসছিলো আড়তদার সমিতির সিন্ডিকেট। প্রতি মৌসুমে অন্তত ২০ থেকে ৩০ কোটি টাকার লিচু এখানে বেচাকেনা হয়ে থাকে। এবারই প্রথম সরকারীভাবে ৯ লাখ ১২ হাজার টাকায় হাটটি ইজারা দেওয়া হয়েছে।
উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, আড়তটি ব্যক্তিমালিকানার জায়গার প্রতিষ্ঠিত এমন অজুহাতে এতদিন স্থানীয় উপজেলা প্রশাসন হাটটি ইজারা দিতে পারেনি। এ যাবত বেড়গঙ্গারামপুর লিচু আড়ত মালিক সমিতি কমিশনের নামে ১০০ লিচু বিক্রয়ের ওপর বাগান মালিক ও পাইকারীদের কাছ থেকে খাজনা আদায়ের নামে ১৫-২০ টাকা করে চাঁদা আদায় করছিলো। এতে কৃষকের লাভের টাকা ঢুকতো আড়ত মালিকদের পকেটে।
অবশেষে জেলা প্রশাসক মো. শাহরিয়াজের হস্তক্ষেপে ৯ লাখ ১২ হাজার টাকায় লিচুর হাটটি এই প্রথম ইজারা নেন স্থানীয় মাহাবুব হোসেন নামে এক আড়ত মালিক। এতে লিচু বাগান মালিকদের আর কোন কমিশন বা চাঁদা দিতে হবে না। তবে যারা লিচু ক্রয় করবেন তাদেরকে প্লাস্টিকের ক্যারেট প্রতি ৫ টাকা, বড় ঝুঁড়ি ২০টাকা এবং ছোট ঝুঁড়ি প্রতি ১০ টাকা ইজারা দিতে হবে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে উপজেলার হাট পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. আবু রাসেল বলেন, জেলা প্রশাসকের আদেশবলে প্রতিবছর ওই হাটটি দুই মাসের জন্য ইজারা দেওয়া হবে। এবারই প্রথম হাট হওয়ায় টেন্ডার ছাড়া ইজারা দেওয়া হয়েছে।
ইজারাদার মাহবুবুর রহমান বলেন, লিচুর ভরা মৌসুমে প্রতিদিন ৮০ থেকে ১০০ ট্রাক বোঝাই লিচু দেশব্যাপী ছড়িয়ে পড়ে। কিন্তু এ বছর খরায় লিচু ঝরে পড়ায় সরবরাহ কম হচ্ছে। এই মৌসুমে ২৫ কোটি টাকার বেশি লিচু বিক্রি হবেনা। হাটে লিচু বিক্রি করতে এসে ভাল দাম পাচ্ছেন চাষীরা।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. হারুনর রশিদ জানান, এ বছর ৫৭০টি ছোটবড় বাগান মিলে ৪১০ হেক্টোর জমিতে লিচু উৎপাদন হয়েছে। ফলন ভালো হয়েছে। আশা করছি লিচু চাষীরা ভাল দাম পাবেন। উপজেলার পাশর্^বর্তী বড়াইগ্রাম ও সিংড়া উপজেলা থেকে চাষীরা এই হাটে প্রচুর পরিমাণ লিচু বিক্রি করে থাকেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. তমাল হোসেন বলেন, বেড়গঙ্গারামপুর বটতলা মোড়ে খাস জায়গাটি উদ্ধার করে সেখানেই সৃজন করা হয়েছে লিচুর হাট। জৈষ্ঠ্য ও আষাঢ় মাসের জন্য সরকারীভাবে ইজারা দেওয়া হয়েছে। আগামী বছর এই লিচুর হাট থেকে সরকার আরো বেশি রাজস্ব পাবে বলে আশা করছি।

Please follow and like us:
Pin Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Website Design, Developed & Hosted by ALL IT BD