গোলাম মোস্তফা
সিরাজগঞ্জের তাড়াশে পুকুর পাড়ে কলা চাষ করে বাড়তি আয়ের মুখ দেখছেন কৃষকেরা। এ জন্য দিনকে দিন তাদের কলা চাষে আগ্রহ বাড়ছে।
কালীদাশনীলি গ্রামের আব্দুর রহিম নামে একজন কৃষক বলেন, ধান চাষে সব সময় আশাতীত ফলন পাওয়া যায়না। তিনি চার বিঘা জমি কেটে পুকুর দিয়েছেন। সেখানে মাছ চাষের জলা বাদে এক বিঘা পাড় রয়েছে। পুকুরের ঐ চার পাড়ে কলাগাছ রোপন করেছিলেন। বয়স ভেদে এসব গাছ থেকে সারা বছরই ফলন পাওয়া যায়। তিনি আরো বলেন, তার ফলানো সবরি জাতের কলার স্থানীয়ভাবে অনেক চাহিদা রয়েছে। চলতি মৌসুমে বিশেষ করে রমজান মাস জুড়ে কলার ভালো দাম পেয়ে তিনি বেশ খুশি।
কালুপাড়া ভায়াট গ্রামের ফারুক হোসেন নামে আরেকজন কৃষক বলেন, তিনি কৃষকদের জমি লীজ নিয়ে পুকুর খনন করে মাছ চাষ করছেন। ঐসব পুকুর পাড়ে কলা চাষ করে ভালো লাভ পেতে শুরু করেছেন। এক বিঘা সমান পুকুর পাড়ে সবরি, চাম্পাসহ জাত ভেদে ৩৫০ থেকে ৪০০ পর্যন্ত কলার চারা রোপন করেছিলেন। এখন খরচ বাদে প্রতি বিঘা থেকে প্রায় ৪০ হাজার টাকা লাভ হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, করোনা পরিস্থিতির কারণে মাছের বাজার ভালোনা। কিন্তু কলা চাষের লাভ দিয়ে ক্ষতির পরিমাণ পুষিয়ে নিতে পেরেছেন তার মতো অনেক কৃষক। কৃষি বিভাগ সূত্র জানিয়েছেন, এ বছর ১২০ হেক্টর কলার চাষ হয়েছে। যার অধিকাংশই পুকুরের পাড়ে। এ থেকে কৃষকেরা লাভবান হওয়ায় প্রতি বছরই কলা চাষ বাড়ছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলা জুড়ে মাঠে-মাঠে হাজারো পুকুর পাড়ে সারি-সারি কলা গাছ। বিশেষ করে তাড়াশ সদর ইউনিয়নের মাধবপুর, মথুরাপুর, চক গোপিনাথপুর, বিদিমাগুড়া, বোয়ালিয়া, সোলাপাড়া মাঠে ও নওগাঁ ইউনিয়নের মাটিয়া মালিপাড়া, সাকৈই, ভায়াট, খালকুলা মাঠে যত দূর দৃষ্টি যায় শুধু পুকুর আর কলা গাছ চোখে পড়ে। এই সময়টাতে বেশিরভাগ গাছেই দেখা মেলে পরিপক্ক কাঁচা কলার কাদি।
এ প্রসঙ্গে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা লুৎফুননাহার লুনা বলেন, কলা চাষে তুলনামূলক লাভ বেশি। ফলে কৃষকেরা দিনকে দিন এ বাড়তি আয়ের দিকে ঝুঁকে পড়ছেন। কৃষি বিভাগ থেকেও তাদের সহায়তা করা হচ্ছে।