স্থানীয় সরকার অধিদপ্তরের অবহেলার কারণে তাড়াশ উপজেলার উন্নয়ন স্থবির

Spread the love

লুৎফর রহমান

সিরাজগঞ্জ জেলার স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ মিজানুর রহমানের দ্বায়িত্ব পালনে অবহেলার কারণে তাড়াশ উপজেলায় বর্তমান সরকারের নানামুখী উন্নয়ন  কর্মকান্ড স্থবির হয়ে পড়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

সিরাজগঞ্জ স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের একাধিক সূত্র জানায়, বৃহত্তর পাবনা ও বগুড়া জেলার গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন (জিপিবিআরআইডিপি) প্রকল্পের আওতায়  ডিপিপি ভূক্ত তিনটি জনগুরুত্বপূর্ণ রাস্তা যথাক্রমে, নওগাঁ জিসি পাকা সড়ক ঘরগ্রাম পূর্বপাড়া হতে ওয়াপদা আরএইচডি গাজী ম,ম,আমজাদ হোসেন মিলন সড়ক উন্নয়ন,যার চেই: ০০-১১৫০ মিটার, আইডি নং ১৮৮৮৯৫০০৫,   পাঁচান ব্রীজ ইউ জেড আর সড়ক হতে গৌরিপুর ওয়াপদা সড়ক উন্নয়ন,যার চেই:০০-৯৬০ মিটার, আইডি নং ১৮৮৮৯৪০১১, গুড়পিপুল ইউ জেড আর পাকা সড়ক হতে ধলাপাড়া সড়ক উন্নয়ন,যার চেই: ০০-১০৮০ মিটার, আইডি নং ১৮৮৮৯৪০৩৯ উন্নয়নের জন্য গত ১ জানুয়ারি ২০১৮ সালে সে সময়ের সিরাজগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য গাজী ম.ম.আমজাদহোসেন মিলন  স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী  বরাবর ডিও লেটার দেন।

 

সে প্রেক্ষিতে প্রকল্প পরিচালক  শরিফুল ইসলাম ৩ টি রাস্তার প্রাক্কলন দ্রুত সদর দপ্তরে প্রেরণের জন্য স্বারক নং এলজিইডি/পিডি/জি পি বি আর আই ডি পি/এ-০১/২০১৫/৯২২, ৯ এপ্রিল ২০১৮ তারিখে সিরাজগঞ্জের নির্বাহী প্রকৌশলী  মোঃ মিজানুর রহমান নির্দেশনা প্রদান করেন। সে নির্দেশনা মোতাবেক সে সময়ের(বর্তমানে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর,ঢাকায় কর্মরত) তাড়াশ উপজেলা প্রকৌশলী আহমেদ আলী প্রাক্কলন প্রস্তুত করে নির্বাহী প্রকৌশলী বরাবর পাঠানোর পর নির্বাহী প্রকৌশলী সিরাজগঞ্জ, এলজিইডির প্রকল্প পরিচালক, ঢাকা বরাবর প্রেরণ করেন। এ কারণে প্রকল্প পরিচালক জিপিবিআরআইডিপি প্রাক্কলন অনুমোদন সহ (জিপিবিআরআইডিপি/আরডি-৫৪১) প্যাকেজ নির্ধারণ করে নির্বাহী প্রকৌশলীকে নিয়মানুযায়ী টেন্ডার আহবান সহ ঠিকাদার নিয়োগের নির্দেশ প্রদান করেন। সে প্রেক্ষিতে যথারীতি উপজেলা প্রকৌশলী তাড়াশ দপ্তরে উক্ত ৩টি প্রকল্পের ১টি প্যাকেজ প্রকল্প ওয়ারী মাসিক প্রগ্রেস রিপোর্ট ১৫ নং ক্রমিকে ১,৯১,৭৪,০৮০/- (তারিখ- ০১/০৭/২০১৯) চুক্তি মূল্যে প্রদর্শিত হয়, যার মন্তব্য কলামে কাজটি টেন্ডার বাতিল বলে উল্ল্যেখ আছে।

 

কোন কারণে উক্ত প্যাকেজের কাজ গুলো শুরু হচ্ছে না মর্মে  দৈনিক নয়াদিগন্তের পক্ষ থেকে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয়ে বতর্মানে কর্মরত সে সময়ের তাড়াশ উপজেলা প্রকৌশলী আহমেদ আলীকে জিজ্ঞাসা করলে তিনি জানান, নির্বাহী প্রকৌশলী আমাকে কোন নির্দেশনা দেননি বলে আমি কোন পদক্ষেপ নিতে পারিনি।বিষয়টি নিয়ে সাবেক সংসদ সদস্য গাজী ম.ম.আমজাদ হোসেন মিলন ও সুবিধাভোগী স্থানীয় জনসাধারণ  বর্তমান সংসদ সদস্য অধ্যাপক ডা: মোঃ আব্দু আজিজকে অবহিত করলে গত ২২ জুলাই তিনিও পূণরায় আরেকটি ডিও লেটার,যার স্বারক নং জাসস/সিরাজ-৩/২০১৯/১১৯  ইং এলজিইডির প্রধান প্রকৌশলী বরাবর দেন। কিন্তু  নির্বাহী প্রকৌশলী এরপরও কোন প্রকার পদক্ষেপ নেননি। যার ফলে এলাকায় জনপ্রতিনিধিদের দেয়া প্রতিশ্রুতি পূরণের জন্য প্রকল্প সঠিক সময়ে বাস্তবায়নের কোনরুপ পদক্ষেপ না নেওয়ায় সিরাজগঞ্জ স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ মিজানুর রহমানের উদাসীনতাকে দায়ী করা হয়েছে। এ ছাড়াও জিপিবিআরআইডিপি প্রকল্পের আওতায় নওগাঁ জিসি খালকুলা আর এইচ ডি ভায়া সাকুয়াদিঘী সড়ক উন্নয়ন চেইঃ ৪১৫৬-৫১৪৬ মিটার প্যাকেজ নং (জিপিবিআরআইডিপি/আরডি-২৮) ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স হুমা এন্টারপ্রাইজের নামে কার্যাদেশ দেয়া হলে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানটি মাত্র ৪০০ মিটার আংশিক শুরু করে বাঁকী অংশ বক্সকাটিং করে দীর্ঘদিন যাবত ফেলে রেখেছন।

 

এ ব্যাপারে ওই এলাকার বাসিন্দা মামুন বাহারী,রেজাউল করিম,রেজা রহমান অভিযোগ করে বলেন, এ বিষয়ে নির্বাহী প্রকৌশলীকে বারবার অভিযোগ করলেও কোন প্রকার প্রদক্ষেপ নেয়নি।তাড়াশ এলজিইডি’র একটি দায়িত্বশীলসূত্র জানায়,সম্প্রতি প্রকল্প পরিচালক এচইজওউচ প্রকল্পটি সরেজমিনে পরিদর্শন করে নির্বাহী প্রকৌশলীর অবহেলার কারণে কাজটি বাস্তবায়ন হচ্ছে না মর্মে নির্বাহী প্রকৌশলীর প্রতি তিনি অসন্তোষ প্রকাশ করে কাজটি দ্রুত বাস্তবায়নের নির্দেশ দেন।  জানা যায়, ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স হুমা এণ্টারপ্রাইজ ৪০০ মিটার কাজের চলতি বিল চেয়ে নির্বাহী প্রকৌশলী বরাবর আবেদন করলেও তাকে কোন প্রকার বিল দেয়া হয় নাই। এ কারণে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানটি চলমান কাজটি ফেলে রেখেছে। এতে করে ওই এলাকায় জন দূর্ভোগ দেখা দিয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, সিরাজগঞ্জ উন্নয়ন প্রকল্পের প্রায় ৩৫টি স্কুল সংযোগ সড়ক সহ অন্যান্য প্রায় ৫টি প্রকল্প বাস্তবায়নের কোন প্রকার পদক্ষেপও নেয়নি নির্বাহী প্রকৌশলী।

এ ছাড়াও গত মে,২০১৯ তারিখে তাড়াশ উপজেলা প্রকৌশলীর দপ্তর হতে নির্বাহী প্রকৌশলীর দপ্তরে ১১টি প্রকল্পের প্রাক্কলন, প্রকল্প পরিচালক বরাবর জুলাই ২০১৯  মাসে প্রেরণ করা হলে,  প্রকল্পগুলো দেরিতে পাঠানো হয়েছে  মর্মে ৪টি প্রকল্পের টেন্ডারের অনুমোদন দেয়নি প্রকল্প পরিচালক। এ ব্যাপারে সিরাজগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য অধ্যাপক ডা: মো: আব্দুল আজিজ নির্বাহী প্রকৌশলীকে বাকী ৪টি প্রকল্প দ্রুত বাস্তবায়নের জোর তাগিদ দিলেও কোন প্রকার পদক্ষেপ গ্রহন করা হয় নাই। প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নের ধীরগতি নিয়ে  তাড়াশ উপজেলা প্রকৌশলী  রোকনুজ্জামান খাঁনের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, আমি সদ্য যোগদান করেছি। খোঁজ নিয়ে বিস্তারিত জানাবো। এ প্রসঙ্গে সিরাজগঞ্জ প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো:মিজানুর রহমান বলেন, স্থবিরতার কিছু নেই। মাঝখানে থেমে ছিলো, আবারও  চাহিদা চেয়েছেন। আশাকরি কাজগুলো হবে।

Please follow and like us:
Pin Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Website Design, Developed & Hosted by ALL IT BD