নিমগাছিতে জেএসসি, এসএসসি কেন্দ্র স্থাপন সময়ের দাবি

Spread the love

আব্দুল কুদ্দুস তালুকদার : সিরাজগঞ্জ জেলার রায়গঞ্জ উপজেলাধীন নিমগাছি ঐতিহাসিকভাবে বিখ্যাত স্থান। ইতিহাস খ্যাত পাল রাজাদের নানা কীর্তি আজও এখানে বিরাজমান। বিরাট রাজার রাজধানী নিমগাছি বাজারের সন্নিকটে ক্ষীরতলায় অবস্থিত। যদিও তা ধ্বংস প্রাপ্ত তবুও চিহ্ন বিদ্যমান। কিছুদিন আগেও একদল গবেষক খনন কাজ চালায় এখানে। ঐ আমলের নিমগাছির জয়সাগর দীঘি আজকেও দেশজোড়া নিজ নামে পরিচিত যা ইতিহাসের উপাদানের চেয়ে মৎস্যচাষ ক্ষেত্র হিসেবে বেশী অবদান রাখছে এলাকার অর্থনীতিতে। এছাড়া আরও বহু দীঘি প্রাচীন সভ্যতার লীলাভূমি হিসেবে সাক্ষ্য দিচ্ছে ; ফলে স্বাদু পানির মাছ উৎপাদনের ক্ষেত্রে নিমগাছি বাংলাদেশের অন্যতম সেরা স্পট হিসেবে স্বীকৃত । বাণিজ্য কেন্দ্র হিসেবে বলা যায় এটা কৃষি প্রধান এলাকা হলেও নিমগাছি হাটে কৃষিপণ্য বিশেষ করে মৌসুমের সময় ধান এত বেশী পরিমাণে বেচা – কেনা হয় যে অত্রাঞ্চলে এমন আর চোখে পড়ে না।

শিক্ষা ক্ষেত্রেও পিছিয়ে নেই নিমগাছি। এখানে একটা অনার্স কলেজ, দুইটা টেকনিক্যাল কলেজ, একটা গার্লস স্কুল এ্যান্ড কলেজ, একটা বহুমূখী উচ্চ বিদ্যালয় বিদ্যমান। নিমগাছি এমএল হাইস্কুলটি এলাকার প্রাচীন বিদ্যাপীঠ, যা স্থাপিত ১৯৩৭ সনে। যোগাযোগের দিক থেকে সড়ক পথে সিরাজগঞ্জ – তাড়াশ আঞ্চলিক সড়কের সাথে যুক্ত। তাছাড়া চারদিকে এলজিইডির পাকা রাস্তা জালের মত ছড়ানো। এছাড়া এর আশে পাশে বেশ কয়েকটি উচ্চ বিদ্যালয় বিদ্যমান যার প্রায় দেড় হাজারের মত শিক্ষার্থী জেএসসি ও এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয় অনেক দূরের কেন্দ্রসমূহে বহু কষ্ট সহ্য করে। যেমন – শালিয়াগাড়ী হাইস্কুলের শিক্ষার্থীরা চান্দাইকোনায়, খৈচালা আদিবাসী হাইস্কুল, পশ্চিম আটঘরিয়া নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ভূয়াগাঁতী গার্লস হাইস্কুল, নিমগাছি এমএল হাইস্কুলের রায়গঞ্জে, বিষমডাঙ্গা গার্লস হাইস্কুল এ্যান্ড কলেজ, মাধাইনগর দ্বিমূখী উচ্চ বিদ্যালয়ের তাড়াশে, মাঝদক্ষিনা কে আর হাইস্কুলের যারা ওরা গুল্টায় গিয়ে পরীক্ষায় অংশ নেয়।

বিশেষ করে আদিবাসী অধ্যুষিত বিষমডাঙ্গা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রীদের দূর্দশা আরো বেশী। কারণ আদিবাসী মেয়েরা খুব সরল – সোজা ও নিরীহ স্বভাবের। ওরা ১০/১২ মাইল দূরের তাড়াশে গিয়ে আতংকে জড়সড় হয়ে পড়ে নতুন পরিবেশে। পরীক্ষা দিতে পারে না ঠিকমত। এ যেন অনেকটা মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা এর মত দশা। এহেন অবস্থার সমাধান হতে পারে যদি নিমগাছি হাইস্কুলে জেএসসি ও এসএসসি পরীক্ষার কেন্দ্র স্থাপন করা হয়। যোগাযোগ ব্যবস্থার ঈর্ষনীয় উন্নতির কারণে উপরোল্লেখিত স্কুলসমূহ হতে নিমগাছির পরীক্ষাকেন্দ্রে আসতে পরীক্ষার্থীদের আধা ঘন্টার বেশী লাগবে না রিক্সায় বা ভ্যান গাড়ীতে চড়ে আসলেও। যেমন – বিষমডাংগা গার্লস স্কুল এ্যান্ড কলেজ থেকে দূরত্ব মাত্র ৩০০ গজ অথচ ওরা তাড়াশ যায় ১০/১২ মাইল পথ পাড়ি দিয়ে। ওই রূপ পশ্চিম আটঘরিয়া জুনিয়র হাইস্কুল বা খৈচালা আদিবাসী হাইস্কুল থেকে নিমগাছির দুরত্ব এক/ দেড় কিঃমিঃ অথচ ওরা রায়গঞ্জে যায় ১২/১৪ কিঃমিঃ অতিক্রমের মাধ্যমে ; যা অমানবিকও বটে। অন্যান্য স্কুলগুলোরও এমন অবস্থা ।

যদিও এ ব্যাপারে নিমগাছি হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক মহোদয় রায়গঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট কেন্দ্র স্থাপনের আবেদন দিয়েছেন। কিন্ত শুধু আবেদনে কি চিঁড়ে ভেজে ? এজন্য উপর লেবেলে খুঁটির জোর থাকা লাগে। তা তো নেই। ফলে আবেদনের যৌক্তিকতা যতই থাকুক না কেন কাজের কাজ হচ্ছে না কিছু। তাই এলাকাবাসী এ ব্যাপারে মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী তথা প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন যাতে নিমগাছি বহুমূখী উচ্চ বিদ্যালয়ে জেএসসি ও এসএসসি পরীক্ষার কেন্দ্র স্থাপন করা হয়। এটা এখন সময়ের দাবী ও গণদােিত পরিণত হয়েছে। এক্ষেত্রে তাড়াশ-রায়গঞ্জের মাননীয় এমপি মহোদয়েরও জরুরী নেক দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে।

Please follow and like us:
Pin Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Website Design, Developed & Hosted by ALL IT BD