প্রতিবন্ধী চাঁদের কণার আর কত প্রতীক্ষা !

Spread the love

বিশেষ প্রতিনিধি: আমার ‘মা’ (মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর) গণভবনে বারবার গিয়েও তাঁর সাক্ষাৎ মেলেনি। কারণ, মা জানেন না ‘‘দরজায় তাঁর অসহায় মেয়ে দাঁড়িয়ে আছে।’’ মঙ্গলবার রাতে প্রতিবন্ধী চাঁদের কণার ফেসবুকে পোস্ট করা এমন একটি লেখা তার বন্ধু ও শুভানুধ্যয়ীদের নজরে আসে। তারা সবাই চাঁদের কণার যোগ্যতা অনুযায়ী চাকরির জন্য আবারও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।

প্রায় দুই হাজার শব্দের ঐ ফেসবুক পোস্টে চাঁদের কণা (৩১) তার প্রতিবন্ধী জীবনের সব প্রতিবন্ধকতা আর শিশুকাল থেকে আজ অব্দি তার দুঃখ দুর্দশার কথা তুলে ধরেছেন। লিখেছেন, প্রতিবন্ধিতা আর দরিদ্রতা জয় করে উচ্চ শিক্ষা লাভের পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক কর্মকান্ডে নিজেকে দক্ষ করে গড়ে তোলার বিষয়টিও।

মাত্র নয় মাস বয়সে পোলিওতে আক্রান্ত হয়ে দুটি পায়ের কার্যক্ষমতা হারায় চাঁদের কণার। তবুও বাবা-মায়ের সচেতনতা আর নিজের প্রতিবন্ধিকতা জয়ের অদম্য চেষ্টায় চলতে থাকে হাতে হেঁটে পড়ালেখা। শেষ পর্যন্ত হাতের উপর ভর দিয়ে হেঁটেই নানা চরাই উৎরাই পার হয়ে ২০১৩ সালে ইডেন কলেজ থেকে প্রথম বিভাগে মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করেন তিনি। এরপর যোগ্যতা অনুযায়ী একটি সরকারি চাকরির জন্য ছুটে বেড়িয়েছেন এ দুয়ার থেকে ও দুয়ার। কিন্তু চাকরি তার ভাগ্যে জোটেনি।

নিরুপায় হয়ে গত জুন মাসের ২৬ তারিখ, বুধবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অনশনে বসেন চাঁদের কণা। যোগ্যতা অনুযায়ী সরকারি চাকরির জন্য রোদ-বৃষ্টিতে ভিজে চলতে থাকে তার অনশন। ২৯ জুন, শনিবার এক প্রতিক্রিয়ায় প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়ে চাঁদের কণা ফেসবুক পোস্টে জানান, প্রধানমন্ত্রী আশ্বস্ত করেছেন, যোগ্যতা অনুযায়ী সমাজসেবা অধিদপ্তরে তার চাকরির ব্যবস্থা করা হবে। ঐ দিন বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়–য়া তাকে (চাঁদের কণাকে) মোবাইল ফোনে এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি অনশন ভেঙে বাড়ি ফিরে যান।

তার জন্য চাকরির ব্যবস্থা করা হয়েছে ঠিকই। তবে সমাজসেবা অধিদপ্তরের অস্থায়ী চাকরি। যে চাকরি তিনি অনশন আর প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই আগে থেকে করতে পারতেন। যার নিয়োগপত্র তিনি মে মাসের ১৪ তারিখেই হাতে পেয়ে যান।

সর্বপরি পড়ালেখার পাশাপাশি বিভিন্ন কর্মকান্ডে নিজেকে দক্ষ করে গড়ে তুলেছেন চাঁদের কণা। ভাড় উত্তোলন থেকে শুরু করে টিভি-রেডিওতে সংবাদ পাঠ; টিভি প্রোগ্রাম গ্রন্থনা, উপস্থাপনা ও পরিচালনা; নাটক, গল্প ও কবিতা লেখা; অভিনয় করা ও কবিতা আবৃতি করা; গল্প বলা; ছবি আঁকা এবং কম্পিউটারে সকল কাজের অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন তিনি।

এখন যোগ্যতা অনুযায়ী সরকারি চাকরির জন্য তিনি প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাৎ চান। তাতেও নানা বাধা-বিপত্তি। ইতোমধ্যে কয়েকবার গণভবনে তাঁর (প্রধানমন্ত্রীর) সাক্ষাৎ না পেয়ে হতাশ হয়ে ফিরে এসেছেন।

চাঁদের কণার ফেসবুক পোস্টের সাথে রয়েছে গত জুলাই মাসের ১৩ তারিখে প্রধানমন্ত্রীর জন্য গণভবনের দরজায় অপেক্ষমান একটি ছবি। রয়েছে, প্রধানমন্ত্রীর কাছে লেখা চাঁদের কণার একটি চিঠি। সেই চিঠির মাঝেও রয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি। সব শেষে লেখা রয়েছে “জয় বাংলা-জয় বঙ্গবন্ধু” চাঁদের কণা সিরাজগঞ্জ জেলার কাজিপুর উপজেলার বিয়াড়া গ্রামের আব্দুল কাদেরের মেয়ে।

 

Please follow and like us:
Pin Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Website Design, Developed & Hosted by ALL IT BD