স্টাফ রিপোর্টার: সিরাজগঞ্জের তাড়াশে এক পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতনের অভিযোগ এনে আদালতে পৃথক দুটি মামলা দায়ের করেছে তারই ভুক্তভোগী স্ত্রী আম্বিয়া খাতুন । মামলার আসামী পুলিশ ইনস্পেক্টর সাইদুর রহমান বর্তমানে জয়পুরহাট জেলা পুলিশ লাইনের রিজার্ভ অফিসে আরওআই পদে কর্মরত আছেন।
গতকাল মঙ্গলবার সিরাজগঞ্জের আমলী আদালত এবং নারী ও শিশু নির্যাতন দমন বিশেষ ট্রাইবুন্যাল-২ এ মামলাটি দায়ের করেন আম্বিয়া খাতুন (৪০)। যার মামলা নং ২৬৫/১৯, ৯২/১৯ মামলা সুত্রে জানা গেছে , ১৯৯৭ সালের ৩০ জুলাই সিরাজগঞ্জ জেলার তাড়াশ পৌর সদরের আবুল হোসেনের মেয়ে আম্বিয়া খাতুনের সঙ্গে একই উপজেলার দিঘী সগুনা গ্রামের মৃত: কোরবান মোল্লার ছেলে তৎকালীন পুলিশ কনস্টেবল সাইদুর রহমানের সঙ্গে বিয়ে হয়। আম্বিয়া খাতুনের বাবা আবুল হোসেন (৬২) জানান, বিয়ের সময় জামাতা সাইদুর রহমানের পরিবারের দাবী অনুযায়ী ৫ ভরি স্বর্ণালংকার, ১টি মোটর সাইকেল ও আসবাবপত্র সহ প্রায় ৩ লাখ টাকার উপহার সামগ্রী প্রদান করা হয়।
তিনি আরো জানান, তারপরও বিয়ের কিছুদিন পর থেকে আম্বিয়ার পরিবারকে যৌতুকের চাপ দিতে থাকেন পুলিশ কর্মকর্তা সাইদুর রহমান সহ তার দুই ভাই। আর মেয়ে আম্বিয়ার সুখের কথা ভেবে আমি আবারও তৎকালীন সময়ে ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা ফের যৌতুক হিসেবে দেই।
এদিকে ২০১৬ সালে পুলিশ ইনস্পেক্টর হিসেবে পদোন্নতি পেয়ে সাইদুর রহমান আবারও ৫ লাখ টাকার জন্য প্রায়ই আমার মেয়ে আম্বিয়াকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতে থাকেন। পরে গোপনে ২০১৩ সালে সাইদুর রহমান রাজশাহী জেলার পুঠিয়া উপজেলার শিবপুর গ্রামে আবারও ফারহানা খাতুন ইতি নামের এক মেয়েকে বিয়ে করেন। দ্বিতীয় বিয়ের করার পর থেকেই নানা অজুহাতে প্রথম স্ত্রী আম্বিয়া ও তার একমাত্র মেয়ে নবম শ্রেণীর ছাত্রী উম্মে সাদিয়া সিমিকে (১৪) শারিরীক নির্যাতন করতে থাকেন। এক পর্যায়ে নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে আম্বিয়া মেয়ে সহ তার বাবার বাড়ি তাড়াশে চলে আসেন এবং বর্তমানে সেখানেই বসবাস করছেন।
এদিকে বিষয়টি নিয়ে একাধিকবার পারিবারিকভাবে দেন-দরবার করার পর কোন সমাধান না হওয়ায় মঙ্গলবার আম্বিয়া খাতুন বাদী হয়ে একটি মামলায় পুলিশ কর্মকর্তা সাইদুর ,তার দুই ভাই সহ ৫ কে আসামী করে এবং পৃথক আরেক মামলায় শুধুমাত্র পুলিশ কর্মকর্তা সাইদুর রহমানকে আসামী করে আদালতে মামলা করেন।
এদিকে স্ত্রী আম্বিয়া খাতুন (০১৭১২-৪৯৯৪২২) বলেন, একুশ বছরের সংসার জীবনে স্বামী সাইদুরের কাছ থেকে আমি এতটাই নির্যাতনের শিকার যা বলা নয়-বলেই তিনি কেঁদে ফেলেন।
এ প্রসঙ্গে জয়পুরহাট পুলিশ লাইনে রিজার্ভ অফিসে কর্মরত আরওআই পুলিশ কর্মকর্তা সাইদুর রহমান (০১৭১২-০৭২৮৮৮) মুঠোফোনে স্থানীয় সংবাদকর্মীদের জানান, আমার কোন ছেলে সন্তান না থাকার কারণে আমি দ্বিতীয় বিয়ে করেছি। আমি এখনও স্ত্রী আম্বিয়া ও মেয়ে সিমিকে ভরণ পোষন করছি। তিনি আরো জানান, এটা আমার পারিবারিক সমস্যা। ফয়সালাও হয়ে যাবে দ্রুত।