ফারুক আহমেদ: সিরাজগঞ্জের সলঙ্গা থানার আমশড়া শাখা পোস্ট অফিস নানা সমস্যায় জর্জরিত। জানা যায়, সিরাজগঞ্জ জেলার সলঙ্গা থানার ৩নং ধুবিল ইউপির ২নং ওয়ার্ডের আমশড়া গ্রামের শাখা পোস্ট অফিস এমন ত্রক সময়ে স্থাপিত হয় যখন সলঙ্গাতে কোথাও তেমন কোন শাখা পোস্ট অফিস ছিল না।
আমশড়া গ্রামের শাখা পোস্ট অফিসের পিয়ন মুজাহার আলী ২৫ বছর ধরে এই অফিসে চাকরী করে আসছেন। তিনি বলেন, আমি এক সময়ে এই পোস্ট অফিস থেকে প্রতিদিন শত শত চিঠিপত্র বিতরণ করা হতো যেসব এলাকায় তার মধ্যে ছিল তাড়াশ ও সলঙ্গা দুই থানা মিলে আমশড়া,আগরপুর, খুর্দশিমলা, কালিকাপুুর,ভিকমপুর, মাধুবপুর, মথুরাপুর,ঝুরঝুরি,লক্ষিপুর,চকনিহাল, রহিমাবাদ,বেতুয়া,চুনিয়াখাড়া, মাদারজানি, নইপাড়া,মালতিনগর,মাধাইনগর,সাতকুর্শি ইছিদহ,শ্যামিরঘণ, সরাপপুরপুরসহ বিভিন্ন গ্রামে। বন্যার মধ্যে অনেক কষ্ট করে সবার ঘরে ঘরে চিঠি পৌছিয়ে দিয়ে এসেছি। এখন সলঙ্গা, রৌহাদহ এবং তাড়াশসহ বিভিন্ন জায়গায় শাখা পোস্ট অফিস হলেও সলঙ্গা থানার আমশড়া শাখা পোস্ট অফিসের ভাগ্যের কোন পরির্বতন ঘটেনি। নাম প্রকাশে অনইচ্ছুক জনৈক ব্যক্তি জানান,আমশড়া শাখা পোস্ট অফিসের নামে নিজস্ব কোন জমি নেই। পোস্ট অফিসে সরকারি বিধান অনুযায়ী ৩জন কর্মচারী থাকার কথা থাকলেও মাত্র একজন পিয়ন দিয়ে এই পোষ্ট অফিস চলে। পোস্ট মাষ্টার হামিদা বেগম নিয়মিত অফিস করেন না। অনেকেই এসে টিকিট, পোস্ট কার্ড ও ইনভেলাপ না পেয়ে ফেরত চলে যান। রানার থেকেও নেই। রানার কোনদিন পোস্ট অফিসের বারান্দায় এসেছে কি না তা কেই দেখে নি। এই সব অফিসিয়াল কাজগুলি অনেক সময় অফিসের পিয়নকে দিয়ে চলছে। এই পোস্ট অফিসটি বর্তমানে পারিবাকি ডাকঘরে পরিণতত হয়েছে মনে। এখানকার পোস্ট মাষ্টার হামিদা বেগমের সাথে এই বিষয়ে মুঠো ফোনে যোগাযোগ করা হলে হামিদা বেগমের স্বামী সাবেক পোস্ট মাস্টার দুলাল মাষ্টার জানান, পোস্ট অফিসের নামে ৩ -৪ শতক জমি আমি দিয়েছি তাতে কোন ঘর তৈরি করা হয়নি। ভবিষৎতে ভবন নির্মাণ করার পরিকল্পনা আছে। তিনি আরো বলেন, পোস্ট মাস্টার, রানার ও পিয়ন তিনজন মিলেইতো তারা কাজ করেন। আমার জানা মতে, এখানে কোন সমস্যা নেই।
এলাকাবাসী জানান, এই ডাকঘরের সাবেক পোস্ট মাষ্টার দুলাল আহমেদ তার নিজস্ব পরিত্যক্ত বাড়িতে বলতে গেলে পারিবারিক পোস্ট অফিস বানিয়েছেন। ভাড়াটিয়া অস্থায়ী ওই পোস্ট অফিসের করুণ দশা । খুরিয়ে খুরিয়ে চলে পোস্ট অফিসের কাজ। টিনের চাল দিয়ে বৃষ্টির পানি পড়ে মূল্যবান কাগজপত্র নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। অফিসে আসবাবপত্র নেই বললে চলে। যা আছে তাও নষ্ট হয়ে ব্যবহার অযোগ্য হয়ে গেছে। পোস্ট অফিসের টিনসেড ঘরের খামখুঁিট পচে নষ্ট হয়ে খসে পড়ছে। যেকোন সময় টিনসেড ঘরটি ধ্বসে পড়ে প্রাণহানি ঘটতে পারে। দীর্ঘদিন যাবৎ সংস্কার না করায় জরাজীর্ণ ভবনে পরিণত হয়েছে। বর্তমান সরকারের কাছে এলাকাবাসির প্রাণের দাবি জরাজীর্ণ টিনসেড ঘরটি ভেঙ্গে নিজস্ব জায়গার উপর একটি ভবন নির্মাণ করে পোস্ট অফিসটির উন্নয়ন করা গেলে তা এলাকাবাসীর বিরাট কল্যাণে আসবে।