ফেসবুকের ফাঁদে কিশোরী মন

Spread the love

 

সাব্বির আহম্মেদ

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোর মধ্যে এক অনবদ্য নাম ফেসবুক। দুঃখ, কষ্ট, আনন্দ বেদনা সহ সৃজনশীল অনেক কিছুই শেয়ার করা যায় ফেসবুকে।

ফেসবুকে  আশিকের (ছদ্মনাম)  সাথে পরিচয় হয় দশম শ্রেণীর ছাত্রী রুমার (ছদ্মনাম) । পরিচয় থেকে প্রেম। শুরু হয় ফেসবুকে মেসেজ , একে অন্যের ছবি পাঠানো। সেদিন ছিল পহেলা বৈশাখ । বাঙ্গালী জাতির উৎসবের দিন। ওই দিন আশিক রুমাকে তার এক বন্ধুর বাসায় দেখা করতে বলে। এ সময় ছেলেটি তার সম্ভ্রমহানি করে একটি হাসপাতালের বারান্দায় রেখে পালিয়ে যায় । সেখান থেকে রক্তাক্ত অবস্থায় রুমাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

এ রকম বহু ঘটনা প্রায়ই ঘটছে আমাদের চারপাশে। কিছু বিকৃত রুচির মানুষের জন্য শুধু বাস্তব জীবনে নয় ভার্চুয়াল জগতেও হয়রানির শিকার হচ্ছেন নারীরা। অনেকে বেছে নিচ্ছেন আত্মহত্যার পথ। কিন্তু বাস্তবতা হল ভুক্তভোগীদের বেশীর ভাগের বয়সই হল ১৪ থেকে ২২ বছরের মধ্যে। অথাৎ কিশোরীর সংখ্যাই বেশী।

বন্ধুত্বের শুরুটা একেবারে সাদামাটা । ফ্রেন্ড রিকোয়েষ্ট পাঠানো । সরল বিশ্বাসে কিশোরীরা তা এ্যাকসেপ্ট করছে । কিন্তু সেই বন্ধুত্ব শুধু বন্ধুত্বেই থাকছে না । লাইক, কমেন্টস , পোষ্ট আর চ্যাট এক সময় গিয়ে গড়াচ্ছে প্রেমে।

প্রেমের অজুহাতে গোপনীয় ছবি, মেসেজ সংগ্রহ করে দেখা করার সময়কালে অন্তরঙ্গ মূহুর্তের ছবি , ভিডিও , রেকর্ড করে পরবর্তী সময়ে সেগুলো দিয়ে নারীদের ব্ল্যাকমেইল করা হচ্ছে।  ফেসবুকে বন্ধু অথবা প্রেমিকের সাথে দেখা করতে গিয়ে প্রায় প্রতিনিয়ত ধর্ষণ ,  খুন ও  অপহরণের শিকার হচ্ছেন নারীরা।

ফেসবুক কিম্বা যে কোন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রতারণার শিকার হলে ভুক্তভোগী আইনের আশ্রয় নিতে পারবে। সেটা প্রেমের ফাঁদে ফেলে অন্তরঙ্গ মূহুর্তের ছবি, ভিডিও ছেড়ে (ভাইরাল) দিয়ে হোক কিম্বা মেয়েটির অজান্তে প্রোফাইল থেকে ছবি নিয়েই হোক ।

এর জন্য ভিকটিম পর্ণোগ্রাফি আইনে অথবা  সাইবার দুটো আইনেই মামলা করতে পারবে। এ ক্ষেত্রে অপরাধের ধরণ অনুযায়ী ২ থেকে ১৪ বছর পর্যন্ত কারাদন্ড ছাড়াও অর্থ জরিমানার ব্যবস্থা রয়েছে প্রচলিত আইনে।

তাই এ ধরনের সমস্যার শিকার হলে গোপন না রেখে যত দ্র্রুত সম্ভব আইনের আশ্রয় নিতে হবে। সম্প্রতি ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ২০১৮’র চুড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। আইন ছাড়াও ফেসবুক ফাঁদ বা সাইবার অপরাধ থেকে রক্ষা পেতে সরকারীভাবে আরো বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে।

সাইবার ক্রাইম ও নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধে ২৪ ঘন্টা খোলা রয়েছে হেল্পলাইন ০১৯৭৯-১২২৩৭৭। এতে মেসেজ কিম্বা কল করা ছাড়াও অভিযোগ জানাতে পারবেন িি.িভধপবনড়ড়শ.পড়স /ঋরমযঃ ভড়ৎ ংঁৎারাড়ৎং ৎরমযঃ.ভংৎ  এই ঠিকানায়।

 

লেখক: প্রভাষক ও সাংবাদিক  ,০১৭১৭-০১৬৫৯২

 

Please follow and like us:
Pin Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Website Design, Developed & Hosted by ALL IT BD