মোঃ মুন্না হুসাইন তাড়াশ প্রতিনিধিঃ তাড়াশ উপজেলার চলনবিলের মাঠে সরিষার ক্ষেতগুলো ফুলে ফুলে ভরে উঠেছে। মাঠজুড়ে যত দূর চোখ যায়, তত দূর দেখা যায় হলদে রঙের সরিষা ফুল। বিশাল এ মাঠ দূর থেকে দেখতে মনে হয় বিশাল আকৃতির হলুদ চাদর বিছানো। সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, এলাকার এই মাঠজুড়ে এখন সরিষার আবাদ। হলদে রঙের সমারোহে চোখজুড়িয়ে যায়। মাঠের পর মাঠজুড়ে সরিষা ফুলের নয়নাভিরাম দৃশ্যে ভরে ওঠার পালা। ফুলে ফুলে মধু আহরণে ভিড়ছে মৌমাছি। তোফায়েল হোসেন জানান, ভালো ফলনের সম্ভাবনার দেখা দিচ্ছে এবারে।
সব মিলিয়ে আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা দেখছেন সরিষা চাষিরা। সাধারণত রবি মৌসুমে কার্তিকের মাঝামাঝি থেকে অগ্রহায়ণ মাসের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত সরিষার বীজ বপনের সময়। শীতকালে ডিসেম্বর থেকে জানুয়ারি সরিষা ফুলে ছেয়ে থাকে চারদিক। তবে উপজেলার নওগাঁ ইউনিয়নের মহেশরৌহালীর মাঠে গুলোতে অগ্রীম জাতের সরিষা আবাদ করা হয়েছে। এছাড়া যে জমিতে সরিষা আবাদের পর বোরো ধানের চাষ করা হবে সেসব জমিতে আগাম সরিষা চাষ করা হয়। নওগাঁ ইউনিয়নের মহেশরৌহালী, চাকরৌহালী, বিরল, মহিষলুটি, খালকুলা, নওগাঁ, কোনাবারি, পংরৌহালী, ও চলন বিল, সহ বিভিন্ন স্থানে এ মৌসুমে সরিষার আবাদ লক্ষ্য করা যায়। আমন ধান ঘরে তোলার পরই কৃষকরা ওই জমিতে সরিষা চাষ করেন। ইতোমধ্যে উপজেলার বিভিন্ন এলাকার মাঠে সরিষার আবাদ নব্বই ভাগ শেষ হয়েছে কিছুদিন আগে। বিশেষ করে তাড়াশের চলন বিলের মাঠ পুরোদমে ফুল ফুটতেছে। মহেরৌহালীর মাঠে সরিষাক্ষেতে গিয়ে দেখা যায়, সরিষা মাঠে ফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করতে আসছে বিভিন্ন বয়সের নারী, পুরুষ, শিশুসহ বিনোদন প্রেমীরা
হলুদ সরিষা ফুলের সাথে ছবি-সেলফি তুলছেন কেউ কেউ। প্রকৃতি প্রেমীদের ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়বে এসব ছবি। ছবি, ভিডিও ধারণের জন্য এসেছেন এলাকার সাগর হোসেন নামের এক যুবক। তিনি জানান,ছবি, ভিডিও সংগ্রহ করতে এসেছি। সত্যি এখানে এসে মন ভরে গেছে। মনজুড়ানো দৃশ্য চারদিকে শুধু হলুদ আর হলুদ। তাড়াশ চলন বিলের বাসিন্দা মানিক ইসলাম, আবু হোসেন ,ইসমাইল হোসেন সহ একাধিক কৃষক জানান, এবার দ্রুত বন্যার পানি নেমে যাওয়ায় আগাম চাষ করায় জমিতে সরিষা গাছে ফুল এসেছে। প্রায় সব জমিতে পুরোপুরি ফুলে ফুলে ভরে গেছে। তবে এ বছর সরিষাক্ষেতে ভালো ফলন হবে বলে আশাবাদী কৃষক। একটু সমস্যা হয়েছে কয়কদিন বৃষ্টি ও কুুয়াশার জন্য। এখন গাছগুলো সুন্দর আর স্বাস্থ্যবান হয়ে উঠেছে।
উপজেলার কৃষি অফিসার মামুনুর রশিদ বলেন, বপন সময় থেকে শুরু করে এ ফসল ফলনে সময় লাগে ৮৫-৯০ দিন। তবে এ উপজেলায় ২০ ভাগ কৃষক সরিষার চাষ করতে থাকে। এবার কৃষকদের আগাম চাষ করা সব জমিতে ফুল ফুটেছে। তবে অবহাওয়া প্রতিকুল ভাল থাকলে শরিষার বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে।