গোলাম মোস্তফা : হৃদয় বিদারক এক ঘটনার সচিত্র প্রতিবেদন দৈনিক ইত্তেফাকের অনলাইন সংস্করণে প্রকাশের পর ভাগ্য বদলে গেছে রুহুল আমিন ও রেহেনা দম্পতির। রুহুল আমিনের বাড়ি সিরাজগঞ্জ জেলার তাড়াশ উপজেলার বারুহাস ইউনিয়নের দিঘরিয়া গ্রামের সরদার পাড়াতে। সেখানে নিদারুণ দরিদ্রতার নিষ্ঠুর কষাঘাতে ঘর তুলতে না পেরে মাটি খুঁড়ে গর্ত করে সেই গর্তের মধ্যে ঘর বানিয়ে দেড় যুগেরও অধিক সময় ধরে বহু কষ্টে বসবাস করছিলেন গৃহহীন রুহুল আমিন ও রেহেনা দম্পত্তি। দৈনিক ইত্তেফাক পত্রিকার অনলাইন ভার্সনে সেই সংবাদ প্রকাশের পর নতুন ঘর পেলেন তারা।
গত ১৯ ফেব্রুয়ারী শনিবার সকালে গৃহহীন রুহুল আমিন ও রেহেনা খাতুনের নতুন ঘরের আনুষ্ঠানিকতা সম্পূর্ণ করা হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন তাড়াশ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মেজবাউল করিম, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন সেভ হিউম্যান লাইফের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক সাইফুল্লাহ আল হেলাল, সেফ হিউম্যান লাইফের রাজশাহী বিভাগীয় প্রকল্প সমন্বয়ক মো. আব্দুল কাদের বিপ্লব, সিরাজগঞ্জ জেলার সমন্বয়ক মো. উজ্জল হোসেন, দৈনিক ইত্তেফাকের তাড়াশ সংবাদদাতা ও তাড়াশ মডেল প্রেসক্লাবের সভাপতি গোলাম মোস্তফা প্রমূখ। তাড়াশ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মেজবাউল করিম বলেন, ৩ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার গৃহহীন রুহুল আমিন ও রেহেনা দম্পত্তির মানবেতর জীবনযাপনের তথ্যবহুল ও বস্তুনিষ্ট সংবাদটি দৈনিক ইত্তেফাকের অনলাইন ভার্ষণে প্রকাশ হওয়ার পর সরজমিনে তদন্ত করা হয়। তারপর সিরাজগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে ২০ হাজার টাকা ও তাড়াশ উপজেলা প্রশাসন কর্তৃক ২০ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে।
স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন সেভ হিউম্যান লাইফের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক সাইফুল্লাহ আল হেলাল বলেন, দৈনিক ইত্তেফাকের সংবাদটি আমাদের নজরে আসার পর আমরা সরজমিনে তদন্ত করি। এরপর গৃহহীন রুহল আমিন ও রেহেনা দম্পত্তির জন্য একটি টিনের ঘরের ব্যবস্থা করা হয়েছে। তাড়াশ থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ফজলে আশিক বলেন, গৃহহীন রুহুল আমিন ও রেহেনা দম্পত্তির করুণ জীবন কাহীনীর বিষয়ে পুলিশের ঊর্দ্ধতন বিভাগ অবগত। ইতোমধ্যে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। বাংলাদেশ পুলিশ বিভাগ হতে অসহায় পরিবারটির জন্য সহায়তার কথা ভাবা হচ্ছে।
দিঘরিয়া সরদার পাড়ার স্থানীয় বাসিন্দা ও সলঙ্গা ডিগ্রি কলেজের সমাজকল্যাণ বিভাগের প্রভাষক আলাল উদ্দিন ও দিঘরিয়া চার নাম্বার ওয়ার্ডের গ্রাম পুলিশ সুদেব বলেন, রুহুল আমিন ও রেহেনা খাতুন একটি ঘর পাওয়াতে গ্রামবাসী খুব খুশি হয়েছি।এদিকে নতুন ঘর পেয়ে মহা খুশি রুহুল আমিন ও রেহেনা দম্পত্তি। এই দম্পত্তি দৈনিক ইত্তেফাককে বলেন, একটি সংবাদ আমাদের ভাগ্য বদলে দিয়েছে। বহু কষ্টের পর আল্লাহ আমাদের দুঃখের অবসান ঘটালেন। আমরা যতদিন বেঁচে থাকব আপনাদের জন্য দোয়া করব। এর আগে ঘর না থাকার কারণে শীতের তীব্রতাসহ ঝড়-বৃষ্টির প্রভাব সবই নীরবে সইতে হয়েছে।