খোন্দকার অমিনুল ইসলাম আবদুল্লাহ : সিরাজগঞ্জে নদীর তীর প্রতিরক্ষা প্রকল্পের ব্লক তৈরিতে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আতাউর রহমান খান লি. এবং এমএম বিল্ডার্স ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেডসহ সহকারী ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান শামিমুর রহমান এন্ড সন্সের বিরুদ্ধে। সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, সিরাজগঞ্জের পাঁচ ঠাকুরীতে ১২শ কিলোমিটার নদীর তীর প্রতিরক্ষা প্রকল্পের ব্লক স্থাপন করার জন্য সরকারিভাবে তিনটি প্যাকেজে ৬ লাখ ৮ হাজার ৩৭০ পিস ব্লক তৈরি হচ্ছে। যার সরকারি মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৮৪ কোটি ৪৬ লাখ ৩৭ হাজার টাকা ও প্রকল্পের মেয়াদকাল দেওয়া হয়েছে ৩১ জুন ২০২২ সাল পর্যন্ত।
বুধবার (১ ডিসেম্বর) সকালে সরেজমিনে দেখা যায়, সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার পাঁচ ঠাকুরি বাজার এলাকায় নদীর তীর ভাঙনের হাত থেকে রক্ষার জন্য নদীর প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে সরকার। নদীর ভাঙনরোধে সদর উপজেলার রতনকান্দি ইউনিয়নে ব্লক স্থাপনের কাজ চলছে। প্রকল্পগুলোর মধ্যে ৮৪ কোটি ৪৬ লাখ ৩৭ হাজার টাকা মূল্যে ব্লক স্থাপনের কাজ করছে সহকারী ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান শামিমুর রহমান এন্ড সন্স।এই প্রতিষ্ঠানটি ৩টি প্যাকেজে প্রায় শত কোটি টাকার কাজ করছে। প্রকল্পে ব্লক তৈরিতে অপরিচ্ছন্ন পাথর এবং মাটি মিশ্রিত বালু ব্যবহার করা হচ্ছে। এক ব্যাগ সিমেন্টের সাথে ৫ বালতি বালু, ১ বালতি ডুমারের বালু এবং ১০ ঝুঁড়ি (টুকরি) পাথর ব্যবহারের পরিবর্তে বালু ও পাথর বেশি ব্যবহার করা হচ্ছে। কিন্তু প্রতিষ্ঠানটি শুরু থেকে নিম্নমানের বালু পাথর ব্যবহারসহ ব্লকের মিশ্রণ তৈরিতে সিমেন্টের চেয়ে বালু-পাথরের পরিমাণ বেশি ব্যবহার করছে। মাটিযুক্ত বালু ও অপরিচ্ছন্ন পাথর ব্যবহার করছে। বালুতে মাটির পরিমাণ বেশি থাকায় সিমেন্ট-বালু ও পাথরের মিশ্রণে চলে যাওয়ায় ব্লকের মান খারাপ হচ্ছে। এমনকি তৈরি করা ব্লকের ভেতর মাটিও দেখতে পাওয়া যায়।সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড ওয়ার্ক এ্যাসিস্টেন হারুন অর রশিদ বলেন, আমি নিয়মিত কাজের সাইডে তদারকি করছি। চোখের আড়ালে যদি কেউ অনিয়ম করে, সেই দায়ভার তাদেরই নিতে হবে।সহকারী ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের স্বত্তাধিকারী শামিমুর রহমান জানান, আমার এখানে অনিয়ম করার সুযোগ নেই। যেমন কাজ করবো তেমনি বিল পাবো।
সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মো. নাসির উদ্দিন বলেন, প্রকল্পের সাইডে প্রতিনিয়ত পরির্দশন করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে সর্তক করা হচ্ছে।তিনি আরও বলেন, ল্যাব টেষ্ট ছাড়া ব্লক গ্রহনযোগ্য হবে না। সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শফিকুল ইসলাম বলেন, পাঁচ ঠাকুরীতে ১২শ কিলোমিটার নদীর তীর প্রতিরক্ষা প্রকল্পের ব্লক নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে। পাউবো থেকে নিয়মিত পরিদর্শন করা হচ্ছে। কোনো অনিয়ম ও ব্লকের মান নিম্ন হলে সেই দায়ভার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে নিতে হবে বলে তিনি জানান।
|