গোলাম মোস্তফা
সিরাজগঞ্জের তাড়াশে অধিকাংশ গ্রামীণ সড়ক ও আঞ্চলিক সড়কের ওপর স্যালো মেশিনচালিত ইঞ্জিনে ধান মাড়াই করছেন বোরো চাষিরা। এদিকে রাস্তায় যাতায়াতের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির ফলে চরম ভোগান্তিতে পড়ে যান পথচারীরা।
উজ্জল হোসেন নামে এক যুবক বলেন, সোমবার তিনি মোটরসাইকেল নিয়ে তাড়াশ-মাগুড়া বিনোদ গ্রামীণ সড়ক দিয়ে যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যে ধান মাড়াই করার জন্য তাকে বিরম্বনায় পড়তে হয়। তিনি বার বার হর্ন বাজিয়ে ও ডাকাডাকি করে কৃষি শ্রমিকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে যাচ্ছিলেন। কিন্তু মাড়াই কলের বিকট শব্দে তারা কর্ণপাত করছিলেন না। শেষমেষ মোটরসাইকেল থেকে নেমে তাদের কাছে যান। তারপর কৃষি শ্রমিকদের একটু সময়ের জন্য থামিয়ে রেখে রাস্তা পার হয়েছেন। নয়তো ধানের ধুলাবালি ও খড়ের ছোট ছোট টুকরায় সমস্ত শরীর মেখে যায়। চোখের মধ্যেও ঢুকে পড়ে। শুধু তাই নয়,
আরেকজন ভুক্তভোগী সোহাগ হাসান। তিনি তাড়াশ-কাটাগাড়ী আঞ্চলিক সড়ক দিয়ে রাতে মোটরসাইকেল চালিয়ে আসছিলেন। কিন্তু ধান মাড়াই করে রাস্তার ওপর খড় জড়ো করে রাখা হয়েছে তা লক্ষ্য করতে পারেননি। তার মোটরসাইকেলটি সেই খড়ের ওপর উঠে পড়ে ও দুর্ঘটনা ঘটে যায়।
মাগুড়া বিনোদ গ্রামের বোরো চাষি সাজেদুর রহমান জানান, গ্রাম থেকে বেশ দূরে বিস্তীর্ণ মাঠে তাদের কৃষি জমি। অত দূর থেকে ধান কেটে মাথায় বা কাঁধে করে বাড়ির উঠান পর্যন্ত নিয়ে আসা কৃষি শ্রমিকদের পক্ষে সম্ভব না। নিরুপায় হয়ে সড়কের ওপরেই ধান মাড়াই করে নিতে হচ্ছে।
সরেজমিনে তাড়াশ-মাগুড়া গ্রামীণ সড়ক, বারুহাস-কুসুম্বী গ্রামীণ সড়ক, ধোপাগাড়ী-বস্তুল গ্রামীণ সড়ক, তাড়াশ-রানীহাট আঞ্চলিক সড়ক, তাড়াশ-খালকুলা আঞ্চলিক সড়ক ও তাড়াশ-মহিষলুটি আঞ্চলিক সড়কের উপর বিভিন্ন স্থানে বোরো চাষিদের স্যালো মেশিনচালিত ইঞ্জিনে ধান মাড়াই করতে দেখা গেছে। এ কাজ করতে গিয়ে কেউ কেউ পথচারীদের যাতায়াতের জন্য সামান্য রাস্তাও ফাঁকা রাখেননি। সড়কের এক পাশে মাড়াই কল, অন্য পাশে খড় আর মাঝখানে ধান শুকাতে দিয়েছেন। বিস্তীর্ণ মাঠের মধ্যেই ধান মাড়াই করে নেওয়ার জন্য খানিকটা জমিতে আবাদ না করে পতিত রাখতে বোরো চাষিদের পরামর্শ দিয়েছেন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা লুৎফুননাহার লুনা।