কালের বিবর্তনে মাস যায়, বছর আসে। আবার পুরাতন বছরের বিদায় শেষে আসে নতুন বছর। সেই প্রাকৃতিক নিয়মেই এবার শুরু হল ইংরেজী ২০২০ সাল। জাতীয় পর্যায়ে বিগত ২০১৯ সনের সালতামামী ইতোমধ্যেই আমরা গণমাধ্যমে দেখতে পেয়েছি। সেখানে আছে আমাদের সফলতা যেমন, ব্যর্থতাও তেমনি। খুব কম-বেশী কোনটার পাল্লাই নয়। তবে সার্বিক বিবেচনায় দেশে রাজনৈতিক বিভক্তি -বিভাজন প্রকটরুপ নিয়ে তা সমাজজীবনকে বিষময় করে তুলছে। এটা দেশের আগামী দিনের অগ্রগতি ও সমৃদ্ধির জন্য সহায়ক নয়। এই বিতর্ক বহির্বিশে^ দেশের ভাবমূর্তিকে বিতর্কিত করে। তাছাড়া নির্বাচনী ব্যবস্থা ও গণতন্ত্র প্রশ্নে আমাদের একটা সর্বম্মত সুরাহা প্রয়োজন। আরও বেশী দরকার সুদৃঢ় দেশপ্রেম ও জাতীয়তাবোধ যার ঘাটতি আত্মস্বার্থপরতাকে উসকে দিচ্ছে।
এবারে আসি আমাদের সার্বক্ষনিক বসবাসের জায়গা তাড়াশ প্রসঙ্গে। গত বছরে তাড়াশ উপজেলা সদরের একমাত্র খেলার মাঠ বা জনসভার উন্মুক্ত স্থানটি সরকারী স্থাপনার জন্য নির্মমভাবে গ্রাস করা হল। এখন সবাই কোথায় যাবে একটি বড় ময়দানের জন্য। অপরদিকে পৌরসভা বাস্তবায়নের পর করের বোঝা ওৎ পেতে আছে। কিছু ইতোমধ্যেই শুরু হয়ে গেছে, পুরোদমে শুরু হবে অদূর ভবিষ্যতে। তাড়াশে এখনো কোনো ব্যবসা-বাণিজ্য ধারা গড়ে ওঠেনি। ফলে তাড়াশ সদরের শতশত পুকুর-দীঘি পৌরসভার আওতায় নিলে করের আরো বিকল্প উৎস হতে পারে। অন্যদিকে পৌর সদরের রাস্তাপথের করুণ দশা কর্তৃপক্ষের নজরে নেই। অন্যান্য সুযোগ সুবিধা পূরণ করার দিকও রয়েছে যেদিকে দৃষ্টি দেওয়া দরকার। সবচেয়ে শোচনীয় তাড়াশের শিক্ষা ব্যবস্থা। এটা ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে বললে কম বলা হয়। এখানকার শিক্ষক অধ্যাপকগণ তাড়াশে চাকরী করে জীবিকা চালান। অথচ তাদের সন্তানদের তাড়াশে না পড়িয়ে বাইরে লেখাপড়া করান। তারা এখানে স্কুল কলেজে ফাঁকি মেরে প্রাইভেট, কোচিং বাণিজ্যে ব্যস্ত। বিশেষ করে উপজেলার স্কুল কলেজগুলির ব্যবস্থাগত মান আদৌ ভাল নয়। নেতাদের অনুগত লোকজন সেখানে নেতৃত্ব পাওয়ায় শিক্ষাঙ্গনে নৈরাজ্য সহ যুগপৎ স্থবিরতা বিরাজ করছে। তাড়াশের শিক্ষার মান সম্পর্কে স্থানীয় অশিক্ষিত লোকেরও ভাল বলে না। এটা বড়ই দু:খজনক। আরো কতিপয় জলন্ত সমস্যা থাকলেও সেদিকে না গিয়ে তাড়াশ পৌর সদরের বাজারের চিত্র তুলে ধরা যায়। যুগ যুগ ধরে এটা মান্ধাতা কালের বা সেই ব্রিটিশ আমলের চেহারায় শোভা পাচ্ছে। তাড়াশের কোন নেতৃত্বের এদিকটায় সুপরিকল্পিত নজর আগেও ছিল না , আজো দেখা যায় না। এই আধুনিক যুগেও যেখানে নর্দমা,পানি, পায়খানা ও পেশাবের ব্যবস্থা নেই। এটা কত লজ্জার, কত দীনতার ও পশ্চাৎপদতার পরিচায়ক। তাড়াশ যে এখনও অনুন্নতির তলানিতে এই বাজার তার উজ্জল দৃষ্টান্ত। সবশেষে তাড়াশ উপজেলা সদরের বাস ও সিএনজি ষ্ট্যান্ড ব্যবস্থাপনা ও পরিবেশগত দিক থেকে সঠিক ও উপযুক্ত স্থানে স্থাপন করা আশু প্রয়োজন। এটা বিশৃঙ্খল অবস্থায় চলছে বহুকাল যাবৎ। ইংরেজী নতুন বছরে পৌরবাসী এসব দুরাবস্থার পরিবর্তন দেখতে চায়।