ভাঙ্গুড়া থেকে আকছেদ আলী ঃ বড়াল নদী এখন পানিশূণ্য। চলনবিল অঞ্চলের এক সময়ের খরস্রোতা দীর্ঘতম নদী বড়াল প্রয়োজনীয় সংস্কার ও ড্রেজিংয়ের অভাবসহ অপরিকল্পিত রেগুলেটর স্থাপনের ফলে দিন দিন নাব্যতা হারিয়ে সংকীর্ণ হচ্ছে। ফলে শুকনো মৌসুমে নদীটি শুকিয়ে পানিশূণ্য হয়ে পড়ে। নদীটি শুকিয়ে যাওয়ায় নদী কেন্দ্রিক ব্যবসা-বাণিজ্যে নেমে এসেছে স্থবিরতা। চলনবিল অঞ্চলে ফসল উৎপাদন ও অকাল বন্যার কবল থেকে রক্ষার লক্ষ্যে বড়াল নদীর ও পদ্মার উৎসমুলে একটি স্লুইস গেট নির্মাণ করা হয়। কিন্তু ভুল পরিকল্পনার কারণে এ এই গেট নির্মাণে ত্রুটি দেখা দেয়। ফলে দীর্ঘ প্রায় দুই যুগেরও বেশি সময় পদ্মার পলিযুক্ত পানির স্বাভাবিক প্রবাহ বড়াল নদীতে বন্ধ থাকায় নাব্যতা হ্রাস পেয়েছে। এতে রাজশাহীর চারঘাট বড়াল রেগুলেটর থেকে পাবনার চাটমোহর, ভাঙ্গুড়া, ফরিদপুরসহ নাটোরের গুরুদাসপুর, লালপুর, বড়াইগ্রাম, সিংড়া, সিরাজগঞ্জের তাড়াশ, রায়গঞ্জসহ আশেপাশের উপজেলার ৩০ লক্ষাধিক মানুষ দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে। পদ্মার স্রোতধারা এখন আর বড়াল নদীতে প্রভাবিত হয় না। ফলে বড়াল রেগুলেটর থেকে গুরুদাসপুর, ভাঙ্গুড়া ও ফরিদপুর হয়ে প্রায় ২০০ কিলোমিটার নদীপথ পলি পড়ে নদীর প্রশস্থতা ও গভীরতা হারিয়ে গেছে। নদীর দুপাড়েই গড়ে উঠেছে বসতবাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। মানুষ এখন নদীর তলদেশে চাষ করছে বিভিন্ন ফসল। অন্যদিকে নদীটি শুকিয়ে যাওয়ায় চলনবিল অঞ্চলের ৮টি উপজেলার সঙ্গে নৌ যোগাযোগ বিছিন্ন হয়ে পড়েছে। এতে নদী কেন্দ্রিক ব্যবসা কেন্দ্রগুলোর ব্যবসায়ীরা আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। সড়কপথে পরিবহন খরচ বেশি হওয়ায় এসব ব্যবসায়ী স্বল্প খরচে নৌপথে ঢাকা-নারায়নগঞ্জ ও আরিচাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় পণ্য পরিবহন করে আসছিল। এখন নৌপথ বন্ধ থাকায় সড়কপথে অধিক খরচে পণ্য পরিবহন করতে হচ্ছে। চলনবিল অঞ্চলের প্রায় ৩০ লাক্ষ মানুষ সংশ্লিষ্ঠ মন্ত্রণালয়ে বার বার আবেদন করলেও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। অথচ এ নদীটি নাব্যতা হারানোর ফলে প্রতি বছর অকাল বন্যার কড়াল গওাসে ক্ষতির পরিমাণ বেড়েই চলেছে। এতে মৎস্য সম্পদ বিলুপ্তি হচ্ছে।