চলনবিল বার্তা ,বর্ষ ০৮ সংখ্যা ০৬ রবিবার ০১ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৭ ভাদ্র ১৪৩১ ২৬ সফর ১৪৪৬ হিঃ

Spread the love

সম্পাদকীয়
অন্তবর্তী সরকারকে পর্যাপ্ত সময় দিন

বাংলাদেশ স্বাধীনতার পর আমরা এক-এগারোসহ একাধিকবার তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা দেখেছি। কিন্তু সে প্রেক্ষাপট আর বর্তমান অন্তবর্তীকালীন সরকার এর প্রেক্ষাপট সম্পূর্ণ ভিন্ন। দেশে ছাত্র-জনতার বিপ্লব ও একটি স্বৈরতান্ত্রিক শাসনের অবসানের মধ্য দিয়ে এই সরকারের আবির্ভাব। এ সরকারের উপদেষ্টাদের পছন্দ করে বেছে নিয়েছে প্রধানত: ছাত্র-জনতা। উপদেষ্টাদের প্রায় সবাই দল নিরপেক্ষ ব্যক্তিত্ব এবং তাদের প্রত্যেকের জীবনাদর্শ ও কর্মর্কীতি স্ব-স্ব ক্ষেত্রে জাতীয়-আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে সুপরিচিত ও নন্দিত। সম্ভবত: সে কারণেই তরুণ ছাত্র সমন্বয়কগণ উপযাচক হয়ে তাদের আমন্ত্রণ জানিয়ে উপদেষ্টার মর্যাদা দিয়েছেন দেশ ও জাতির বৃহত্তর স্বার্থ চিন্তা করে। ছাত্রদের এই দূরদৃষ্টি ও ন্যায় নিরপেক্ষ গুণীজন নির্বাচন প্রক্রিয়াকে দেশবাসী অভিনন্দন জানিয়েছে। লক্ষ্যনীয়, এ ধরনের নির্দলীয় ও রাজনীতির দুর্গন্ধবিহীন দক্ষ, অভিজ্ঞ, জ্ঞানী-পন্ডিতদের শাসন কাঠামোয় স্থান দেয়া দেশে এবারই প্রথম।তবে তারা সরাসরি রাজনীতি না করলেও রাজনীতির প্রকৃত সমঝদার, বিশ্লেষক এবং জনমানুষের কল্যাণ ও উন্নয়নে তাদের প্রত্যেকের বিশেষ অবদান ইতোমধ্যেই দেশে ও আন্তর্জাতিক পরিসরেও প্রমাণিত। বিশেষ করে কোনো নোবেলজয়ীকে দেশের প্রধান মনোনীত করা সমকালীন বিশ্ব ইতিহাসে নজিরবিহীন বলে মনে হয়।
এখন সংস্কার সাধন সম্পন্ন করতে অন্তবর্তী সরকারকে কতদিন সময় দেয়া হবে তার একটা রূপরেখা বা পথ নকশা যাকে রোড ম্যাপ বলে তা দাবি করছে বিশেষত: বর্তমান বড় রাজনৈতিক দল বিএনপি।অন্যান্য রাজনৈতিক দলও একটা যৌক্তিক সময় দিতে অনুরুপ প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছে। অর্থাৎ রাজনৈতিক দলগুলোর প্রায় সবারই এখন একটাই চাওয়া তা হলো নির্বাচন। কারণ তাদের মতে প্রধানত: এই নির্বাচন কেন্দ্র করেই দু:শাসনের দুষ্ট প্রভূ জনতার উপর মরণ কামড় হেনেছিল। তাদের সেটা কবে কখন হবে এমন দিনক্ষণ সময় তারা জেনে আশ্বস্ত হতে চায়। দেশবাসী জানে যে, আওয়ামীলীগ দুঃশাসনে এ সব রাজনৈতিক দল শ্বাসরুদ্ধকর পরিবেশে প্রায় দেড়দশক কাল অতিবাহিত করেছে। সীমাহীন জেল, জুলুম, দমন, নিগ্রহ, নিপীড়ন সইতে হয়েছে। তারা ভোটাধিকার, নির্বাচন ও গণতন্ত্র সবকিছু থেকে বঞ্চিত হয়েছে, একই দুর্ভোগের ও দুঃশাসনের শিকার হয়েছে দেশবাসীও। সে যন্ত্রনা আর বেদনা সবার একই রকম। যদিও রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিবাদ, প্রতিরোধ ও আন্দোলনের ধারাবাহিকতা ছিল। কিন্তু ছাত্র-জনতার ফুঁসে ও গর্জে ওঠা রক্তক্ষয়ী বিপ্লব ব্যতীত তারা বিজয়ী হতে পারেনি। কাজেই নির্বাচনের যৌক্তিক সময়ের ব্যাপারে ছাত্রদের মনোভাব জানতে প্রাধান্য দেয়া সমিচিন হবে।
এখন দেশের দীর্ঘদিনের জমে থাকা জঞ্জাল ও আবর্জনা মোটামুটি পরিষ্কার বা সংস্কার করে নির্বাচনের ঘোষণা দিতে কতদিন সময় প্রয়োজন তা নির্ধারণ করতে প্রধান উপদেষ্টা রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের উপরে ছেড়ে দিয়েছেন। আরো লক্ষণীয় রাষ্ট্রের প্রতিটি অঙ্গনেই অনিয়ম, বিশৃংখলা, অব্যবস্থাপনা, দুর্নীতি, স্বেচ্ছাচারিতা, অবক্ষয়, অপশাসন ও দুঃশাসন শতভাগ কায়েম করে রেখে গেছে বিগত দুর্নীতিবাজ সরকার। এটা শিক্ষা, স্বাস্থ্য সহ উন্নয়নের যে স্তরেই দৃষ্টি যায়, দূষণ, দুর্নীতি ছাড়া কিছুই নেই। এখন “সর্বাঙ্গে ব্যথা,মলম দিব কোথা” এই হল দুরাবস্থার চিত্র। এই জাতীয় দুর্নীতির দুর্যোগ মোকাবেলা করে প্রধান প্রধান প্রধান সেক্টরে সংস্কার সফল করে নির্বাচনের পথ সুগম করা কতটুকু সময়ের ব্যাপার তা ছাত্র-জনতা, রাজনৈতিক দল সবাই মিলে ঠান্ডা মন-মাথায় ভেবে দেখতে হবে। এ নিয়ে তারা মতবিনিময় ও সংলাপ করে একটা ন্যায্য ও যৌক্তিক সময় বের করে প্রস্তাব রাখতে পারে। স্মরণে রাখতে হবে, স্বাধীনতার পর এই দীর্ঘ সময়কালে আমাদের রাজনৈতিক দলগুলো যে ভুল করেছে, তাদের যে মারাত্মক নৈতিক ও আদর্শিক বিচ্যুতি ঘটেছে, রাজনীতি কলুষিত ও দুর্বৃত্তায়িত হয়েছে তারই করুণ পরিণতি আজকের এই দুর্ভোগ-দুর্দশা।বর্তমানে নির্বাচনের দাবিতে সরব দলগুলো এর বাইরে নয়। দায়ভাগ রয়েছে তাদেরও। ফলে রাষ্ট্র, দল, প্রশাসন, রাজনীতি সব গুলিয়ে একাকার হয়ে গেছে।সমাজ ও রাষ্ট্রের প্রতিটি ক্ষেত্রে হয়েছে রাজনৈতিকীকরণ, এর বিষাক্ত সংক্রমণ ঘটেছে সর্বত্র। দেশপ্রেম উধাও হয়েছে। আত্মস্বার্থপরতা, গোষ্ঠী, পরিবার, দল, ক্ষমতা, নেতৃত্ব, গণতন্ত্রহীনতা, নির্বাচন ও ভোট শূন্যতা এসব প্রাধান্য পেয়েছে। তাহলে এই নৈরাজ্য, বিশৃঙ্খলা ও দুর্নীতির মূলোৎপাটন না হলে, একটা সহনীয় মাত্রায় কমিয়ে আনতে কত সময় আবশ্যক তা ধৈর্য ও প্রজ্ঞাসহ বিবেচনাপূর্বক স্থীর করতে হবে। সম্প্রতি ঢাকায় জনৈক আইনজীবি হাইকোর্টে রিট করে অন্তর্র্বতী সরকারের মেয়াদ তিন বছর করতে সময় চেয়েছেন। এ ব্যাপারে রাজনৈতিক দলগুলোর সম্মিলিত নিরংকুশ মতৈক্য খুব সহজ হবে বলে মনে হয় না। সুশীল, নাগরিক সমাজ এবং অভ্যুত্থানের মূল নায়ক ছাত্র-জনতা তথা সবাই মিলে সময় ঠিক করে দেওয়া অনেক বিতর্ক সাপেক্ষ ও জটিল হতে পারে। একই ইস্যুতে জাতীয় রেফারেন্ডাম হতে পারে কিনা তাও ভেবে দেখা যায়। তবে মনে রাখতে হবে, কেবল এক স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধ ছাড়া জাতীয় স্বার্থে আমরা কখনো একমত হতে পারি নি। এটা জাতি হিসেবে আমাদের বিরাট দৈন্যতা, ঘাটতি, দুর্বলতা ও দুর্ভাগ্য। বহির্বিশ্বে আমাদের সক্ষমতা ও সফলতা প্রমাণ করতে গেলে জাতিগত ঐকমত্য ও সংহতি দরকার যা গণতান্ত্রিক উন্নত বিশ্বে দেখা যায়। আমরা জানি আমাদের পলিটিক্যাল পার্টিগুলো দীর্ঘদিন ক্ষমতার বাইরে থাকায় সিংহাসনের স্বাদ ও উপভোগ আস্বাদন করতে পারেনি। সেজন্য ওই বঞ্চনা ও উপেক্ষা তাদেরকে ক্ষুধার্ত ও পিপাসার্ত করে তুলেছে তীব্রভাবে। ক্ষমতায় যত তাড়াতাড়ি যাবে ততই যেন প্রশান্তি, মিটবে তৃষনার জ্বালা। কিন্তু আমরা সমাজ ও রাষ্ট্রের ক্যান্সারের মত দুরারোগ্য ব্যাধিগুলো যদি ন্যূনতম আরোগ্য বা নিরাময় না করে আবারও সেই নোংরামি, নষ্টামি,দখল, দাপট, নৈরাজ্য ও স্বেচ্ছাচারিতায় লিপ্ত হই, তাহলে আওয়ামী লীগ বিএনপি সহ এ যাবত যারা যত ভুল, অন্যায়, অবিচার ও অন্যায্য কাজ করেছে পুনরায় তারই পুনরাবৃত্তি ঘটবে তা বলাই বাহুল্য। পরিশেষে এদেশের মানুষ এই মুহূর্তে রাজনীতিতে গুণগত পরিবর্তন ও সংস্কার দেখতে চায়। বর্তমান রাজনীতির ঘেরাটোপে বন্দী নতুন বোতলে পুরাতন মদ তারা দেখতে চায় না। সেই রাজনৈতিক সংস্কার যতদিন ন্যূনতম প্রত্যাশিত মাত্রায় না হয় ততদিন অন্তবর্তীকালীন সরকারের কাজ করে যাওয়া বা কাজ করতে দেয়া জাতির জন্য মঙ্গলজনক হবে। তাই এ ব্যাপারে তাদের পর্যাপ্ত সময় দিন।এ প্রসঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর অভিপ্রায়ের সাথে যুগপৎ বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের ছাত্র সমন্বয়কদের বা ছাত্রনেতৃবৃন্দের অভিমতের সমন্বয় ঘটানো গেলে আরো ভাল হতে পারে। কেননা এ অভ্যূত্থানে তারাই তো অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে। জাতী এই গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে তাদেরও সুচিন্তিত মতামত জানতে চায়। সবশেষে মনে রাখতে হবে , স্বাধীনতার ৫৩ বছরে যে জঞ্জাল পরিস্কার করা সম্ভব হয়নি, মাত্র অল্প সময়ে তা মুক্ত করা যাবে এমনটি ভাবা সুবিবেচনাপ্রসূত হবে না। বিধায় অন্তবর্তীকালীন সরকারকে সংস্কারের লক্ষ্যে যথেষ্ট সময় দেয়া শ্রেয়। এর অন্যথা হলে আমাদের কাঙ্খিত স্বপ্ন ভূলুণ্ঠিত হতে পারে – তেমন আশঙ্কা অমূলক নয়।

অন্তবর্তীকালীন সরকার এর প্রত্যাশিত সংস্কার প্রসঙ্গে
শামসুল আলম সেলিম
বৈষম্যবিরোধী ছাত্রসমাজের ব্যনারে কোটা সংষ্কার এবং শেষ পর্যায়ে নয় থেকে একদফা তথা সরকার পতনের ঐতিহাসিক আন্দোলনের মাধ্যমে এ দেশের মানুষের বিজয় অর্জিত হয়েছে। অনেকেই এটিকে দ্বিতীয়বার স্বাধীনতা অর্জন বলে অভিহিত করছেন। বাংলাদেশের সরকারি চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে বিভিন্ন কোটা সংরক্ষণের কারনে মেধাবীদের বঞ্চিত করার নিয়ম সংশোধনের দাবীতে ২০১৮ সাল থেকে চলে আসা বিভিন্ন প্রকার গণতান্ত্রিক কর্মসূর্চি তদানীন্তন ক্ষমতাসীনদের সময়োচিৎ সিদ্ধান্ত দানে ব্যর্থতা, হঠকারিতা, দমনপীড়ণ এমনকি গণহত্যার কারনে শেষমেষ গণদাবীতে পরিণত হয়ে ছাত্র-জনতার একটি অভ্যূত্থানের মাধমে সরকারের পতন ঘটে।

৫ আগস্ট শেখ হাসিনার দেশত্যাগ এবং আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর রাজনৈতিক শূণ্যতা সৃষ্টি হয় এবং একটানা চারদিন দেশ সরকারবিহীন থাকে। সরকারি প্রশাসন এবং বিগত সরকারে অনুগত শৃংখলাবাহিনী পরাজিত প্রতিপক্ষের ন্যয় নিস্ক্রীয় হয়ে পরে এমনকি কোন কোন ক্ষেত্রে গণরোষের শিকার হয়। বিক্ষুব্ধ জনতা প্রধাণমন্ত্রীর বাসভবন সহ গুরত্বপূর্ণ স্থাপনা, অফিস, অবকাঠামো ও পতিত সরকারের স্মৃতিচিহ্ন ভাঙচুর করে। সুযোগ বুঝে কিছু সুযোগসন্ধানী উচ্ছৃংখল ব্যক্তি নৈরাজ্য কায়েমের অপচেষ্টা চালায়। ৮ আগস্ট আলোচনার মাধ্যমে নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বে উপদেস্টা পরিষদ নামে একটি অস্থায়ী অন্তবর্তীকালীন সরকার গঠন করা হয়। তাদের নির্দেশে আইন শৃংখলাবাহিনীর সদস্যরা কর্মে যোদান করতে থাকেন। দেশের সেনাবহিনী, শিক্ষার্থী ও জনতার সহায়তায় দেশের অবস্থা ক্রমান্বয়ে স্বাভাবিক হয়ে আসছে। প্রধান বিচারপতি কর্তৃক আহুত সুপ্রিম কোর্টের বিচারকগণের (ফুলকোর্ট) উদ্দেশ্যমুলক বৈঠক এবং আনসার বাহিনী কর্তৃক সচিবালয় অবরোধের মত অপতৎপরতা সচেতন ও জাগ্রত ছাত্রজনতা প্রতিরোধ করতে পেরেছেন।

ইতোমধ্যে অন্তবর্তীকালীন সরকারের আইনগত ভিত্তি, প্রশাসনিক কাঠামো ও কর্মপরিধি, উপদেষ্টাবর্গ, তাদের অভিজ্ঞতা বা সরকারের ভবিষ্যত নিয়ে আলাপ আলোচনা হচ্ছে। বিগত সরকার বা তৎপূর্ববর্তী সময়ে উপেক্ষিত, বঞ্চিত, নিপীড়িতরা ন্যায়বিচার, নিরপেক্ষতা ও ন্যায্যতার প্রত্যাশায় দাবীদাওয়া নিয়ে সরব হচ্ছেন। তবে অনেকেরই সজাগ দৃষ্টি এখন বর্তমান অন্তবর্তীকালীন সরকারের মেয়াদ তথা ভবিষ্যত সরকার ও নির্বাচনের বিষয়ে। তাদের কৌতুহল দীর্ঘদিনের হারানো গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান, ভোট ও ভাতের অধিকার, আইনের শাসন প্রভৃতি পূনঃপ্রতিষ্ঠার পথ নকশা কেমন হবে এবং তা কতদূরে, তা নিয়ে।অন্তবর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেওয়ার দুই সপ্তাহের বেশি সময় পর গত রোববার ২৫ আগস্ট প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনুস জাতীর উদ্দেশ্যে প্রদত্ত ভাষনে বলেছেন, ‘ ছাত্র-জনতার গণঅভ্যূত্থানকে সফল পরিণতি দিতে প্রশাসন, বিচার বিভাগ, নির্বাচন কমিশন ও নির্বাচনী ব্যবস্থা, আইনশৃংখলা খাত এবং তথ্যপ্রবাহে প্রয়োজনীয় সংস্কার সম্পূর্ণ করে অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন আয়োজন করা হবে। এর লক্ষ্য হবে দুর্নীতি, লুটপাট ও গণহত্যার বিরুদ্ধে একটি জবাবদিহিমূলক রাজনৈতিক বন্দোবস্তের সূচনা।’ এছাড়া তিনি বিচার বিভাগ, পুলিশ, প্রশাসন, নির্বাচন কমিশন, অর্থনীতি, শিক্ষা , স্বাস্থ্যসহ বিভিন্ন খাতে সংস্কারের কথা তুলে ধরেন। নির্বাচন প্রসঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা বলেন ‘কবে নির্বাচন হবে, এটা রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত।”

প্রধান উপদেষ্টা জাতির উদ্দেশ্যে প্রদত্ত উক্ত ভাষনে আরও অনেক গুরুত্ব ও তাৎপর্যপূর্ণ সংস্কারের কথা বলেছেন যেগুলি বাস্তবায়নে সময়ের প্রয়োজন বলে কোন কোন রাজনীতিবিদ ইতিবাচক মতামত ব্যক্ত করেছেন। শেখ হাসিনার শাসনে ভেঙ্গেপড়া সব খাতেই সংস্কারের প্রয়োজনের কথা বলেছে আত্মগোপনে থাকা আওয়ামী লীগ ব্যতীত সব প্রধান রাজনৈতিক দল। আমি শুধু প্রধান উপদেষ্টার ভাষনের উদ্ধৃত অংশের বাস্তবায়ন বিষয়ে সামান্য কিছু নিবেদন করতে চাই।রাষ্ট্রব্যবস্থা সংস্কারের বিষয়টি এখন নাগরিক সমাজের প্রাণের কথা। গণঅভ্যূত্থানের মাধ্যমে মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা এবং অন্তর্বতী সরকার গঠিত হওয়ায় এখন গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান প্রস্তুতের প্রত্যাশা পূরণের ভিত্তি রচিত হয়েছ। এদিকে উপদেষ্টাগণের দেশপ্রেম, সততা,নিষ্ঠা, দক্ষতা সব থাকলেও তাদের দুই একজন ব্যতীত অধিকাংশেরই সরকার পরিচালনার ব্যবহারিক অভিজ্ঞতা নাই। বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থী আন্দোলনের সমন্বয়কগণ পেশাদার রাজনীতিক বা ছাত্রনেতা নন। রাজনৈতিক লেজুরবৃত্তি করেও তারা বৈষম্যবিরোধীদের নেতৃত্বে আসেননি। পরিস্থিতির প্রয়োজনে তাদের নেতৃত্বে এগিয়ে আসতে হয়েছে এবং সতীর্থ সমমনারা তাদের সমর্থন, অনুপ্রেরণা ও সহযোগীতা যুগিয়েছেন যা সময়ের প্রয়োজনে গণদাবীতে পরিণত হয়েছে। দার্শনিক হার্বার্ট স্পেনসার বলেছিলেন, ‘সময়ই মানুষকে তৈরি করে, উল্টোটা নয়।’ এই তত্ত্ব অনুসারে বিভিন্ন পরিস্থিতি বিভিন্ন বৈশিষ্ঠের জন্ম দেয়। ‘নেতা হিসেবে কাজ করার সময় কোন ব্যক্তিমানুষ আসলে যা করেন তা বহুলাংশে সেই পরিস্থিতির উপর নির্ভরশীল, যেখানে তিনি কাজ করছেন।’

নবগঠিত অন্তবর্তী সরকারও অরাজনৈতিক; কিন্ত তাদেরকেই এখন রাজনৈতিক সরকারের কর্ম সম্পাদন ও রাষ্ট্রব্যবস্থা সংস্কার করতে হবে। এদেশের দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক, সামরিক ও স্বৈরতান্ত্রিক সরকারের সময়ে গজিয়ে ওঠা অনিয়ম ও অব্যবস্থাকে সংস্কারের দুরূহ কাজটি করতে হবে। পরিবর্তনের ক্ষেত্রে অন্তবর্তীকালীন সময়টিকে সতর্ককতার সাথে ও যথাযথভাবে কাজে লাগাতে হবে। এই সময়ে কোন ভুল করলে তা সংশোধনের জন্য আবার গণ আন্দেলন গড়ে উঠতে পারে এবং ঘাপটি মেরে থাকা সুযোগসন্ধানীরা মাথাচারা দিয়ে উঠতে পারে। এক্ষেত্রে সর্বাধিক প্রয়োজন নাগরিক তথা সকল মহলের ইতিবাচক মনোভাব ও সক্রিয় সহযোগীতা। তাহলেই ছাত্র-জনতার গণঅভ্যূত্থানের প্রকৃত সফলতা পাওয়া যাবে। বেসরকারি প্রশাসনের সকল স্তরে দলীয়করণ একটি অশুভ রেওয়াজে পরিণত হয়েছে। যে সরকারই ক্ষমতায় আসুক না কেন তারা পছন্দের লোকজনকে বিধিবহির্ভূতভাবে পদোন্নতি, পদাবনতি,প্রেষণ, চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ,পদায়নের মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ পদে বসিয়ে প্রভাবিত ও ক্ষমতার অপব্যবহার বা অনিয়ম করান। ফলে একদিকে যেমন শৃংখলা ভঙ্গ হয় অন্যদিকে দক্ষ, জেষ্ঠ্য ও পদবঞ্চিতরা উপেক্ষিত অবমূল্যায়িত হন। চাকুরীবিধি প্রবিধিমালা আছে, কিন্ত এসব ক্ষেত্রে তার সঠিক বা পূর্ণাঙ্গ বাস্তবয়ন নেই। আবার নিয়োগের ক্ষেত্রেও পুশি ভেরিফিকেশনের মাধমে প্রার্থী বা তার পরিবারের রাজনৈতিক দলীয় পরিচয় বিবেচনায় নেওয়া হয়। পুলিশসহ দলীয়করণকৃত প্রভাবিত প্রশাসনকে নির্বাচনী অনিয়মে ব্যবহার করা হয়। প্রকৃতপক্ষে বিগত সময়ে সিভিল সার্ভিস পেশাদারীত্ব অর্জন করতে পারে নাই। সুতরাং জনসেবার জন্য দলীয় প্রভাবমুক্ত নিরপেক্ষ, দক্ষ এবং আন্ত:ক্যাডার ও বেতনবৈষম্যবিহীন প্রশাসন পূনর্গঠন ও তৈরী করতে হবে।

বিচারালয় মানুষের শেষ আশ্রয়স্থল, কিন্ত সেখানেও মানুষ আস্থা হারিয়ে ফেলেছে। সাম্প্রতিককালে দেশত্যাগী একজন সাবেক প্রধান বিচাপতির সাথে তদানিন্তন সরকারের আচরণ এবং একজন সদ্য সাবেক প্রধান বিচারপতি কর্তৃক (সরকার সবকিছু খুলে দেওয়ার পরও) আদালতের কার্যক্রম তিনদিন স্থগিত রাখা, উদ্দেশ্যমুলকভাবে সব বিচারকদের (ফুল কোর্ট) অনাকাংখিত সভা ডাকা যা বিচারবিভাগীয় অভ্যূত্থান চেষ্টা হিসেবে শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদের মুখে ব্যর্থ হওয়ায় তাদের বিদায় নেওয়া এসব জাতির জন্য উদ্বেগজনক। সংবিধান অনুযায়ী সরকারের তিনটি বিভাগের মধ্যে বিচার বিভাগ একটি স্বতন্ত্র অঙ্গ। কিন্ত সেখানেও নিয়োগ, পদায়ন পদোন্নতি, সুযোগসুবিধা অন্য বিভাগের নিয়ন্ত্রণে । বিচার বিভাগের স্বাধীনতা সুশাসনের একটি অন্যতম উপাদান যা আজও অর্জিত হয়নি। এমতাবস্থায় বর্তমান বিচার বিভাগের সংস্কার, স্বাধীন সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল গঠনের মাধ্যমে বিচার বিভাগের কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণ এবং প্রভাবমুক্ত ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে অন্তবর্তী সরকারকে কাজ করতে হবে। এই মূহুর্তে নির্বাচন দিলে তা সুষ্ঠু, অবাধ বা নিরপেক্ষ হবে না। প্রশাসন ও দলীয় সরকারের অধীনে এদেশে স্থানীয় থেকে জাতীয়, উপনির্বাচন থেকে দেশব্যাপী নির্বাচন গ্রহণযোগ্যভাবে আয়োজনে নির্বাচন কমিশনের ব্যর্থতার ভুরিভুরি দৃষ্টান্ত রয়েছে । বর্তমান নির্বাচন কমিশনের নিয়োগ প্রশ্নবিদ্ধ এবং অনেক আগে থেকেই বিরোধীদল ও নাগরিক সমাজ কর্তৃক তাদের পদত্যাগের জোড়ালো দাবী ছিল। একতরফা ও প্রতিদ্বন্দ্বিতাহীন প্রহসনমূলক দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন করে স্বৈরশাসনের মেয়াদকে দীর্ঘায়িত করার কারনে পরবর্তী কোন নির্বাচনেই আওয়ামী লীগ ব্যতীত কোন দল অংশগ্রহণ করছিল না।

আগে নির্বাচন কমিশন ও প্রচলিত নির্বাচন ব্যবস্থার সংস্কার করতে হবে। আমার মনে হয়, যতদিন পর্যন্ত নির্বাচন কমিশন সরকারের প্রভাবমুক্ত হযে স্বাধীনভাবে কাজ করতে না পারবে ততদিন নির্দলীয় তত্বাবধায়ক বা অন্তর্বতীকালিন অথবা নির্বাচনকালীন সরকারের অধীনে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়া উচিত। প্রচলিত নির্বাচন ব্যবস্থায় সংস্কার আনতে হবে। প্রয়োজনে জনপ্রতিনিধিত্ব আদেশ হালনাগাদ করা যেতে পারে। একই ব্যক্তি জীবনে এক বা সর্বোচ্চ দুই বার প্রধানমšী¿ হওয়ার বিধান রাখাা যেতে পারে। দলীয় নির্বাচনে দলের বিভিন্ন স্তরের কমিটি গঠণ, দলীয় প্রার্থী মনোনয়ন, এসব প্রক্রিয়া তৃণমূল থেকে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে সম্পন্ন হয় কি না, প্রার্থী বা তার পরিবার প্রজাতন্ত্রের লাভজনক পদে বা ভৌত, সেবা ও সরবরাহের ঠিকাদারী লাইসেন্সধারী কি না, জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ আছে কি না তা হলফনামা এবং পদ বা ক্ষমতায় থাকাকলীন নির্দিষ্ট সময় পরপর প্রদত্ত সম্পদের বিবরণী যাচাইসহ সকল পর্যায়ে কমিশনের প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ নজরদারী এবং ব্যবস্থা গ্রহণের বিধান থাকা। নির্বাচনের ব্যয়ে স্বচ্ছতা ও নিয়ন্ত্রণ, পেশীশক্তির ব্যবহার রোধের পদ্ধতি, ন্যূনতম ভোটের হার নির্ধারণ, নেতিবাচক বা নেগেটিভ ভোটের বিধান রাখার বিষয়গুলি ভেবে দেখা যেতে পারে। ড. মুহাম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বাধীন অন্তবর্তী সরকার এমন এক সময় দায়িত্ব নিয়েছে যখন বাংলাদেশে অর্থনৈতিক অবস্থা শোচনীয়। বিগত সরকারের দেশী ও বিদেশী উৎস থেকে নেওয়া ১৮ লক্ষ ৩৫ হাজার কোটি টাকা ঋণের বোঝা নিয়ে বর্তমান অন্তবর্তী সরকারকে হিমশিম খেতে হচ্ছে। দ্রব্যমূল্য লাগামহীন (১২% মূদ্রাস্ফিতি,খাদ্যদ্রব্যে ১৪%) এবং মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে। বিগত ১৫ বছরে বাংলাদেশ থেকে ১১ লক্ষ কোটি টাকা বিদেশে পাচার হয়েছে। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বা মজুদ পরিস্থিতি নাজুক। বকেয়া ঋণ মেটাতে স্থানীয় ব্যাংক থেকে ডলার কিনতে হচ্ছে।

চলমান ঋণ কর্মসূচির আওতায় বাংলাদেশের জন্য ৪৭০ কোটি মার্কিন ডলারের প্রতিশ্রুতি রয়েছে আন্তর্জাতিক মূদ্রা তহবিল (আইএমএফ)এর। সংস্থাটি বিগত শেখ হাসিনা সরকারকে এমন প্রতিশ্রুতি দেয়। ড. মুহাম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বাধীন বর্তমান অন্তবর্তী সরকার ঋণের আকার বাড়াতে চায়। তারা আরও ৩০০ কোটি ডলার বাড়িয়ে মোট ৭৭০ কোটি ডলারে উন্নীত করতে চায়।ইতোমধ্যে বর্তমান অন্তবর্তী সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকে অর্থ পাচার রোধ এবং পাচারকৃত অর্থ দেশে ফিরিয়ে আনার ব্যাপরে দৃঢ প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করা হয়েছে। কিন্ত এই টাকা ফেরৎ আনার বিষয়টি জটিল এবং দূরূহ। বিগত সরকারের সময় একাধিকবার পাচারকারীদের কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দিয়েছিল কিন্ত কাজ হয় নাই্ । এখন এই বিপুল অর্থ আদৌ ফিরিয়ে আনা সম্ভব কিনা বলা মুসকিল। মোটকথা দেশের অর্থনীতি বিপর্যস্ত। এই সরকারকে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে আর্থিক খাতে সংস্কার করতে হবে।যে কোন সংস্কার ও উন্নয়নের পূর্বশর্ত হচ্ছে আইনশৃংখলার উন্নয়ন এবং সামাজিক নিরাপত্তা ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা। গণঅভ্যূত্থানের পর একদিকে অকার্যকর প্রশাসন ও আইনশৃখলাবাহিনীর নিস্ক্রিয়তা অন্যদিকে মানুষের আবেগপ্রসূত জনতার আচরণ (ক্রাউড বিহেভিয়ার) দেশে বিশৃংখল পরিবেশ তৈরী করে। সাধারণ মানুষের মধ্যে আইন অমান্য করা বা আইন ও অস্ত্র হাতে তুলে নেওয়ার মত মারাত্বক প্রবণতা লক্ষ্য করা যায়। সেই সুযোগে দুর্বৃত্তেরা ধ্বংসলীলায় মেতে ওঠে। সেই পরিস্থিতি থেকে কিছুটা উন্নতি হলেও মানুষের ক্ষোভ ও প্রতিশোধপরায়নতার মারমুখী বহি:প্রকাশ বলপ্রয়োগ এখনও চলমান।

সম্প্রতি শিক্ষা ও পরিকল্পনা উপদেষ্টা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পদত্যাগের জন্য বলপ্রয়েগ না করার ওপর গুরুত্বরোপ করে কারোর বিরুদ্ধে ন্যায়সংগত অভিযোগ থাকলে তার ব্যবস্থা গ্রহণের আশ^াস দিয়েছেন। অদালত প্রাঙ্গনে অভিযুক্তের উপর হামলার বিষয়েও ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টার ভাষনে উল্লেখিত প্রতিষ্ঠানগুলো যেমন বেসামরিক প্রশাসন, বিচার বিভাগ, নির্বাচন কমিশন ও নির্বাচনী ব্যবস্থা সংস্কারের সাথে দেশের আইনশৃংখলার উন্নয়ন না করলে গণতন্ত্র পূনঃপ্রতিষ্ঠা বা গণতন্ত্রের সুফল পাওয়া যাবে না। চাঁদাবাজী, বল ও পেশীশক্তির প্রয়োগসহ অন্যান্য বেআইনী কার্যকলাপ রোধ এবং নাগরিক জীবনের নিরাপত্তা ও শৃংখলার জন্য টেকসই উদ্যোগ অন্তবর্তী সরকারকেই গ্রহণ করতে হবে।শিক্ষা ও স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় জরুরীভিত্তিতে সংস্কার করতে হবে। শিক্ষাপদ্ধতি, কারিকুলাম, পাঠদান, পরীক্ষা পদ্ধতি ঢেলে সাজাতে হবে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, প্রশাসন ও শিক্ষাবোর্ডকে জবাবদিহিতার আওতায় আনতে হবে। কোচিং, নোট ও গাইড বাণিজ্য নির্মূল করে শিক্ষকদের ভাবমূর্তি ফিরিয়ে আনতে হবে।

স্বা¯্য’্যখাতকে দূর্নীতি, সিন্ডিকেট এবং দলীয় ও পেশাভিত্তিক সংগঠনের প্রভাবমুক্ত করে অধিকতর স্বাস্থ্য সেবার সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে। হাসপাতাল ও সরকারি সেবাকেন্দ্রে প্রয়োজনীয় জীবন রক্ষাকারী ঔষধ, উপকরণ ও পরীক্ষানিরীক্ষা সহজ প্রাপ্যতা নিশ্চিত করতে হবে। চিকিৎসা, ঔষধ ও উপকরণের মূল্য এবং চিকিৎসা খরচ নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।আরও অনেক ক্ষেত্রে প্রচলিত অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনা রোধে প্রয়োজনীয় সংস্কার করতে হবে যার বিস্তারিত উল্লেখ করতে গেলে এই রচনার কলেবর আরও বেড়ে যাবে। পরিশেষে প্রধান উপদেষ্টার ভাষনের পূনরুল্লেখ করে বলা যায়: অন্তবর্তী সরকারের সংস্কারের ‘ লক্ষ্য হবে দুর্নীতি, লুটপাট ও গণহত্যার বিরুদ্ধে একটি জবাবদিহিমূলক রাজনৈতিক বন্দোবস্তের সূচনা।’ সেই লক্ষ্যে যে যে সেক্টরে যেমন পদক্ষেপ কার্যকর তা গ্রহণ এবং বাস্তবায়ন নিশ্চিত হওয়ার পরই সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে রাজনৈতিক সরকার ব্যবস্থা প্রবর্তনের পটভুমি তৈরী হবে।

২৯ আগস্ট ২০২৪

লেখকঃ বিশিষ্ট কবি, সাহিত্যিক, কলামিস্ট, প্রাবন্ধিক ও প্রাক্তন সরকারী কর্মকর্তা। তাড়াশ, সিরাজগঞ্জ।

দেশে এখনও ৭০০ মানুষ নিখোঁজ: রিজওয়ানা হাসান

ডেস্ক রিপোর্টঃ দেশে এখনও ৭০০ মানুষ নিখোঁজ রয়েছেন বলে জানিয়েছেন বন, পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। গত বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন ও প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় যমুনায় উপদেষ্টামন্ডলীর সভা শেষে এ তথ্য জানান তিনি।
সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, দেশে এখনও ৭০০ মানুষ নিখোঁজ রয়েছেন। নিখোঁজ ব্যক্তিদের তালিকা করা হবে। গুমের বিরুদ্ধে ২০০৬ সালের কনভেনশনে বাংলাদেশ আজ সই করেছে। এটি একটি বড় মাইলফলক। আর যেন কেউ ক্ষমতা কুক্ষিগত করতে কোনো নাগরিককে গুম করতে না পারে, তাই এটি স্বাক্ষর করা হয়েছে। এ জন্য প্রয়োজনীয় আইনি সংস্কার আমরা গ্রহণ করব।’উল্লেখ্য, দেশের নাগরিকদের সুরক্ষায় গুমবিষয়ক আন্তর্জাতিক কনভেনশনে আজ সই করেছে বাংলাদেশ। দেশের পক্ষে অন্তবর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস এতে সই করেন।প্রসঙ্গত, গত ১৫ বছরে বলপূর্বক গুমের প্রতিটি ঘটনা তদন্তের জন্য গত মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট) একটি কমিশন গঠন করে অন্তবর্তী সরকার। বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরীকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের এ তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটিকে আগামী ৪৫ কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। সূত্রঃ ইত্তেফাক।

প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষে নির্বাচনের
রূপরেখা ঘোষণা করবে সরকার: ফখরুল

ডেস্ক রিপোর্টঃ অন্তবর্তী সরকার প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষে নির্বাচনের রূপরেখা ঘোষণা করবে বলে জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।অগত বৃহস্পতিবার বিকেলে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনা থেকে বেরিয়ে সাংবাদিকদের এ কথা জানান বিএনপি মহাসচিব। এর আগে বিএনপির ৩ সদস্যের প্রতিনিধিদল অন্তবর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে তার বাসভবন যমুনায় বৈঠক করে। দেড় ঘণ্টার বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন মির্জা ফখরুল।
তিনি বলেন, ‘আমি, খসরু সাহেব ও সালাউদ্দিন সাহেব এসেছিলাম। প্রায় সোয়া ঘণ্টা আলোচনা হয়েছে। অত্যন্ত ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে।’ফখরুল বলেন, আমাদের জানানো হয়েছে, প্রয়োজনীয় সংস্কার করে নির্বাচনের রূপরেখা ঘোষণা করবে অন্তবর্তীী সরকার। দ্রুত সময়ের মধ্যে সরকার দেশকে স্থিতিশীল অবস্থায় নিয়ে আসবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি। সূত্রঃ সমকাল।

সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকার  স্থায়ীভাবে আনতে হবে

ডেস্ক রিপোর্টঃ রাজনৈতিক দলের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। তাই সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা স্থায়ীভাবে ফিরিয়ে আনতে হবে। গত বৃহস্পতিবার সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) আয়োজিত গোলটেবিল বৈঠকে এ কথা বলেন বক্তারা।একই সঙ্গে তারা ভবিষ্যতে স্বৈরাচারী শাসন ব্যবস্থা রোধে রাজনৈতিক দলের অভ্যন্তরে গণতন্ত্রের চর্চা চালু, দ্বি-কক্ষবিশিষ্ট পার্লামেন্ট গঠন ও সংসদ নির্বাচনে দলীয় ভোটের আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব চালুর পরামর্শ দেন।
রাজধানীর ডেইলি স্টার ভবনের আজিজুর রহমান সম্মেলন কক্ষে ‘বাংলাদেশের নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কারে করণীয়’ শীর্ষক ওই গোলটেবিল বৈঠকে সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) মো. আব্দুর রউফ বলেন, ‘গণতন্ত্র ছাড়া আমাদের উপায় নেই। কিছুকাল পরপর স্বৈরশাসক আসবে আর তাকে তাড়াতে সাধারণ মানুষ প্রাণ দেবে, রক্ত দেবে -এটা হতে পারে না। এবারের আন্দোলনেই যেন এই রীতি চিরতরে শেষ হয়ে যায়।’ কে স্বৈরাচার না- সেই প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, ‘রাজনৈতিক দলগুলোকে গণতান্ত্রিক করার এটিই সুযোগ। দলগুলোকে জোর করে হলেও গণতান্ত্রিক চর্চা করানোর চেষ্টা করতে হবে।’ সূত্রঃ সমকাল।

বঙ্গবন্ধু পরিবারের সদস্যরা
বিশেষ নিরাপত্তা বাতিল

ডেস্ক রিপোর্ট ঃ ‘জাতির পিতার পরিবার-সদস্যগণের নিরাপত্তা (রহিতকরণ) অধ্যাদেশ, ২০২৪’-এর খসড়া অনুমোদন দিয়েছে অন্তর্র্বতী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ। এর ফলে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ বঙ্গবন্ধু পরিবারের সদস্যরা বিশেষ নিরাপত্তার সুবিধা পাবেন না। গত বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের সভায় অধ্যাদেশের খসড়াটি অনুমোদন দেওয়া হয়।
পরে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়। এতে বলা হয়, বিগত সরকারের সিদ্ধান্ত অনুসারে ‘জাতির পিতার পরিবার-সদস্যগণের নিরাপত্তা আইন, ২০০৯ জারি করা হয়েছিল। পরে ২০১৫ সালে এই আইন অনুসারে বিশেষ নিরাপত্তা এবং সুবিধাদি প্রদানের গেজেট জারি করা হয়। কেবল একটি পরিবারের সদস্যদের রাষ্ট্রীয় বিশেষ সুবিধা দেওয়ার জন্য আইনটি করা হয়েছিল, যা একটি সুস্পষ্ট বৈষম্য।’ সূত্রঃ মানবজমিন।

বিএনপিতে দুষ্কৃতিকারীদের ঠাঁই নেই: তারেক রহমান
ডেস্ক রিপোর্টঃ দলে দুষ্কৃতিকারীদের কোন ঠাঁই নেই বলে জানিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি নেতাকর্মীদেরকে জনগণের সাথে সম্পর্কোন্নয়নের মাধ্যমে নির্বাচনের প্রস্তুতি নেয়ার আহবান জানিয়েছেন। গত বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) হতে দলের তৃণমূল নেতাকর্মীদের সাথে ধারাবাহিক মতবিনিময়ের প্রথম দিনে রংপুর বিভাগের জেলাগুলোর নেতাকর্মীদের সাথে মতবিনিময়কালে এসব কথা বলেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যের মাধ্যমে তারেক রহমান নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে দিকনির্দেশনামুলক বক্তব্য রাখেন। জনগণকে সাথে নিয়ে দেশের স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করে যাওয়ার নির্দেশনা প্রদান করেন। এসময় তিনি বলেন, দলের নাম ভাঙ্গিয়ে কিছু দুষ্কৃতিকারী দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টায় লিপ্ত হয়েছেন। তবে বিএনপিতে কোন দুষ্কৃতিকারীর ঠাঁই নেই।সূত্রঃ যুগান্তর।

একই ব্যক্তি সরকার ও দলীয়
প্রধান থাকতে পারবেন না

ডেস্ক রিপোর্টঃ ঃ সংসদ বা নির্বাহী বিভাগের কার্যক্রম পরিচালনা করার জন্য একই ব্যক্তি যেন একইসঙ্গে সরকার প্রধান (প্রধানমন্ত্রী), দলীয় প্রধান ও সংসদ নেতা থাকতে না পারেন সেই প্রস্তাব দিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। সেইসঙ্গে একজন ব্যক্তি যেন দুই মেয়াদের বেশি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে না পারেন সেই প্রস্তাবও দেয়া হয়েছে। এছাড়া স্পিকারকে সংসদের অভিভাবক হিসেবে দলীয় প্রভাবমুক্ত থেকে সংসদের কার্যক্রম পরিচালনা, বিরোধী দল থেকে ডেপুটি স্পিকার নির্বাচিত করা, সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ সংশোধন করে সংসদ সদস্যদের নিজ দলের (অনাস্থা প্রস্তাব ও বাজেট ছাড়া) সমালোচনা করা ও দলের বিপক্ষে ভোট দেয়ার সুযোগ দেয়া এবং রাজনৈতিক দলে দলীয় প্রধানের একচ্ছত্র কর্তৃত্ব ও পরিবারতন্ত্র বিলোপ করার প্রস্তাব দিয়েছে টিআইবি। গতকাল ‘নতুন বাংলাদেশ: গণতন্ত্র ও সুশাসন প্রতিষ্ঠা এবং দুর্নীতি প্রতিরোধে অন্তবর্তীকালীন সরকারের করণীয়’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে এসব প্রস্তাব তুলে ধরেন টিআইবি’র নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান। রাজধানীর মাইডাস সেন্টারে টিআইবি মিলনায়তনে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সূত্রঃ বাংলাদেশ প্রতিদিন।

তাড়াশে পল্লীবিদ্যুতের ভুতুরে বিল দিশেহারা গ্রাহক

তাড়াশ প্রতিনিধি ঃ সিরাজগঞ্জের তাড়াশে পল্লীবিদ্যুতের ভুতুরে বিলে হাজার হাজার গ্রাহক দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। বিগত মাসের তুলনায় চলতি মাসে ৩ থেকে ৪ গুন বেশী বিল এসেছে বলে তারা জানিয়েছেন। তাড়াশ পৌর সদরের পুর্বপাড়ার বাসিন্দা আলেয়া খাতুন জানান,আমার বাসায়া ২জন মানুষ বসবাস করি। আমার ০০০১৪৫৫৭ নং মিটারে গত জুলাই মাসে বিল এসেছিল ৫৪৫ টাকা আর আগষ্ট মাসে বিল আসে ১১৬৪ টাকা। ০০০১৬০৮৮ নং মিটারের মালিক মেহেরুল ইসলাম জানান, আমার জুলাই মাসে বিল এসেছিল ৪৫৫ টাকা আর আগষ্ট মাসে বিল এসেছে ১৮২৩ টাকা। আর আবদুর রাজ্জাক নামে খান পাড়ার এক বাসিন্দা জানান, আমার আবাসিক মিটারের বিল শুরুতে ছিল ৫শত টাকা। এখন এক বছরের ব্যবধানে তা বেড়ে দাড়িয়েছে ২ হাজার টাকার কাছাকাছি।এই সমস্যা তাড়াশ উপজেলার সকল বিদ্যুৎ গ্রাহকদের বেলায় ঘটছে এবং প্রতিনিয়ত ঘটে চলেছে।অভিযোগ রয়েছে অধিকাংশ ক্ষেত্রে মিটার রিডারগণ মিটার পরিদর্শন না করেই ঘরে বসে ওই ধরনের ভুতুরে বিল তৈরী করে অফিসে জমা দেন। আর গ্রাহক বাধ্য হয়ে বিল পরিশোধ করেন। কেননা বিল পরিশোধ না করলে লাইন কেটে দেয়া হয়। তাড়াশ পল্লী বিদ্যুৎ অফিসে সেবা নিতে আসা জাহিদুল, কালাম,মজিবরসহ একাধিক গ্রাহক জানান, শুধূ বিদ্যুৎ বিলের ক্ষেএেই নয়, তাড়াশ জোনাল অফিসে যে কোন কাজে গেলেই দালালদের খপ্পরে পড়তে হয়। তারা আর ও জানান,নিজে কাজ নিয়ে গেলে এ কাগজ নেই, ও কাগজ নেই আবার কাগজ থাকলে সময় নেই এ ভাবে ঘুড়ানো ও হয়রানি করা হয়। অথচ দালালদের মাধ্যমে কাজ দিলে আর কিছুই লাগে না। তাড়াশ জোনাল অফিসের ডি.জি.এম নিরাপদ দাস জানান, সারাদেশের ন্যায় আমাদের অফিসের কর্মচারীরা আন্দোলনে থাকার কারনে বিল কমবেশী হতে পারে। তিনি আর ও জানান, আমাদের মিটার রিডারদের এক এলাকা থেকে অন্য এলাকায় দেয়া হয়েছে, এ কারনে এমনটা হতে পারে। তিনি আরও বলেন, এ অফিসে দালালদের আনাগোনা আগে থাকলেও এখন নেই।

বারুহাস ইউপি চেয়ারম্যানের অপসারণের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল

তাড়াশ প্রতিনিধি ঃসিরাজগঞ্জের তাড়াশে বারুহাস ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোঃ ময়নুল হককে অপসারণের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও প্যানেল চেয়ারম্যান হিসেবে ইউপি সদস্য মেঃ আব্দুল বারিককে দেওয়ার দাবিতে জন সমাবেশ করেছে ছাত্রজনতা ও নাগরিক সমাজের নেতৃবৃন্দ। গত ২৭ আগস্ট মঙ্গলবার সকালে বারুহাস বাজার থেকে এক বিক্ষোভ মিছিল বের করে ইউনিয়ন পরিষদের সামনে গিয়ে ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ ময়নুল হককে অপসারণের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করে সমাবেশ করেন এবং ইউিপ সদস্য আব্দুল বারিককে প্যানেল চেয়ারম্যান দেওয়ার জন্য কর্তৃপক্ষের নিকট দাবি করেন। এ সময় ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোঃ ময়নুল হকের বিভিন্ন দূর্ণীতির বর্ণনা দিয়ে বক্তব্য রাখেন বারুহাস ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মোঃ মনিরুল ইসলাম, যুব দলের আহবায়ক মোঃ আলামিন হোসেনসহ এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ। তারা আজকের পর থেকে ইউনিয়ন পরিষদে মোঃ ময়নুল হককে চেয়ারম্যানের কার্যক্রম না করতে ও পরিষদের কাজে আসতে ‘না’ করেন।
এ ব্যাপারে ইউপি মেম্বর মোঃ আব্দুল বারিক বলেন, ইউএনও অফিস থেকে প্যানেল চেয়ারম্যানের নাম চাইলে ১২ জন ইউপি সদস্যর মধ্যে আমাকে ৯জন সমর্থন দিয়ে স্বাক্ষর করেছেন। এছাড়াও হেলাল উদ্দিন মেম্বর বলেন, আমরা ৯ জন সদস্য ইউএনও অফিসে গিয়ে ইউপি সদস্য মেঃ আব্দুল বারিককে প্যানেল চেয়ারম্যান দেওয়ার জন্য দাবি জানাবো।

তাড়াশ আওয়ামীলীগের সম্পাদকসহ ১২০ জনের নামে মামলা

তাড়াশ প্রতিনিধিঃ গত ৪ আগষ্ট সিরাজগঞ্জের তাড়াশে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কসহ ছাত্রদের উপর হামলার ঘটনা ঘটে। আর এ ঘটনার ২০ দিন পর বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আহত এক ছাত্রের অভিভাবক সাইফুল ইসলাম খন্দকার বাদি হয়ে তাড়াশ উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক সঞ্জিত কর্মকারসহ যুবলীগ, ছাত্রলীগের নামীয় ২৯ জন নেতাসহ অজ্ঞাত আরো ১২০ জনের নামে মামলা করেছেন।
গত শুক্রবার রাতে তাড়াশ থানায় ওই মামলাটি দায়েরের বিষয়টিনিশ্চিত করেছেন তাড়াশ থানার ওসি নজরুল ইসলাম মামলা সুত্রে জানা গেছে, গত ৪ আগষ্ট বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের উপজেলা সমন্বয়কসহ ছাত্ররা তাড়াশ সদরের জিকেএস মোড়ে অবস্থান নেন। এ সময় উপজেলা আওয়ামীলী, যুবলীগ, ছাত্রলীগের নামীয় ওই ২৯ জনসহ অজ্ঞাত আরো ১০০ থেকে ১২০ জনের আগ্নেয় অস্ত্র,হাসুয়া, লোহার রড, গোলা বারুদসহ আন্দোলনকারি শিক্ষার্থীদের উপর নির্মম ভাবে হামলা করে। এতে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা সাব্বির খন্দকারসহ অনেকে গুরুতর আহত হন। এ প্রসঙ্গে তাড়াশ থানার ওসি নজরুল ইসলাম বলেন, আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান চলমান আছে।

তাড়াশে ইউএনও’র মুঠো ফোন ক্লোন করে চাঁদা দাবী

তাড়াশ প্রতিনিধিঃ সিরাজগঞ্জের তাড়াশেএকটি প্রতারক চক্র উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুইচিং মং মারমার অফিসিয়াল ও ব্যাক্তিগত দুটি মুঠো ফোন নাম্বার ক্লোণ করে নানা সুবিধা দেবার কথা বলে চাঁদা দাবী করেছে।এ দিকে প্রতারনার বিষয়টি জানার পরপরই তাড়াশ উপজেলা নির্বাহী অফিসার সকলকে সর্তক থাকার অনুরোধ করেছেন। পাশাপাশি শনিবার রাতে তাড়াশ থানায় এ সংক্রান্ত একটি সাধারণ ডায়েরীও করেছেন।জানা গেছে, গত শনিবার বিকালে থেকে রবিবার দুপুর পর্যন্ত একটি প্রতারক চক্র উপজেলা নির্বাহীঅফিসার (ইউএনও) সুইচিং মং মারমার অফিসিয়াল ও ব্যাক্তি গত দুটি মুঠো ফোন নাম্বার ক্লোণ করে নিজেকে ইউএনও দাবী করে উপজেলা সরকারি খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, বিভিন্ন পন্যের ডিলার, উপজেলার প্রাথমিক, মাধ্যমিক স্কুল, কলেজসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রধানদের কাছে মোটা অংকের টাকা দাবী করেন।
পরে বিষয়টি নিয়ে অনেকের সন্দেহ হলে তারা উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুইচিং মং মারমার সাথে দেখা করে প্রতারনার বিষয়টি জানতে পারেন। এ বিষয়ে তাড়াশ উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুইচিং মং মারমা জানান, তিনি ঘটনাটি জানার পর পরই সর্তকতামূলক ব্যবস্থা নেন। পাশাপাশি ওই রাতেই তাড়াশ থানায় এ সংক্রান্ত একটি সাধারণ ডায়েরী করেন এবং বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অবগত করেন।তাড়াশ থানারওসি নজরুল ইসলাম জানান, প্রতারক চক্রকে সনাক্ত করে গ্রেফতার করতে পুলিশ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।

তাড়াশে বন্যার্তদের জন্য অর্থ সংগ্রহ
স্টাফ রিপোর্টার ঃ সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলায় বিভিন্ন এলাকায় বন্যার্তদের জন্য ত্রাণ সংগ্রহ করেছে তাড়াশ সাহিত্য-সংস্কৃতি ফোরামের পক্ষে স্থানীয় কবি-সাহিত্যিক ও ছাত্র-সমাজের একটি ঐক্যবদ্ধ দল। গত ২৬-২৭ আগস্ট দুই দিন এ ত্রাণ সংগ্রহ অভিযানে নেতৃত্ব দেন তাড়াশের তরুণ কবি তাহমিলুর রহমান মাহিম। তার সাথে শিক্ষার্থী সহযোগীরা হলেন, আব্দুস সামী, ফাহিম ইমতিয়াজ সহ আরো অনেকে। এছাড়া তাড়াশ পাইলট হাইস্কুলের শিক্ষার্থী উপমা ও নেহা অংশ নেন। দলটিতে বিশেষ ভূমিকা পালন করেন তাড়শের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও নারী নেত্রী রুপা আক্তার। দলটি তাড়াশ সদর, উলিপুর, পাচান, দেশীগ্রাম বাজার, বিনসাড়া বাজার, চৌড়া , গোন্তা বাজার এবং কুন্দইল বাজারে থেকে ফোরামের পক্ষে মোট ১৫ হাজার ৯ শত নগদ অর্থ উত্তোলন করে। পরে ওই টাকা বিকাশ সংযুক্ত ঢাকাস্থ আজ সন্ধ্যা ফাউন্ডেশনে ডোনেশন পাঠিয়ে দিয়েছে। বন্যা ত্রাণ তহবিলে দানের উদ্দেশ্যে।

তাড়াশ উপজেলা পরিষদের কয়েক গজ দূরে খাল দখল ভরাট!

জাকির আকন,বিশেষ প্রতিনিধি ঃ তাড়াশ উপজেলা পরিষদ থেকে মাত্র কয়েকগজ দুরে অবৈধভাবে সরকারী আইন অমান্য করে খাল দখল করে অবৈধভাবে ঘর নির্মাণ ও খাল ভরাট করা হয়েছে । সরকারী এই খাল ভরাট বন্ধ করায় তাড়াশ ব্র্যাক অফিস থেকে তাড়াশ দক্ষিণ পাড়ায় মধ্যে প্রবাহিত খালটির পানি প্রবাহ বন্ধ হয়ে মাঠে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে । উপজেলা পরিষদ সড়ক সংলগ্ন সরকারী খালটি অবৈধ দখল মুক্ত করতে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য এলাকাবাসি দাবি জানিয়েছেন।
সরজমিনে সংশ্লিষ্ট ও সরজমিনে জানা যায়, উপজেলা পরিষদের পুর্ব পাশের্^র পুকুর পাড়ের কাউরাইল সড়ক সংলগ্ন কোনাই পাড়া খালে অবৈধভাবে দখল করে পানির উপর ২০-২৫টি খুটি স্থাপন করে বড় ঘুরে তুলে দখল নিয়েছে যুবলীগ নেতা হায়দার আলী এবং এই খালটির তার সামনে অংশে ভরাট করে রাস্তা তৈরি করে জমি ভরাট করেছে নিত্য চন্দ্রের ছেলে কির্তন কুমার । খোজ নিয়ে জানা যায়, যুবলীগ নেতা হায়দার আলী জেনিন বাসের কাউন্টারে টিকিট বিক্রি করলেও এখন আত্মগোপনে রয়েছে ফলে তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি । কয়েকমাস মাস যাবত প্রকাশ্য সরকারী খাল ভরাট করে রাস্তা বানিয়ে জমি ভরাট করলে সংশ্লিষ্ট প্রশাসন কনো ব্যবস্থায় না করায় এলাকাবাসির মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে । তাড়াশ পুর্ব পাড়ার কৃষক জামাল উদ্দিন জানান উত্তর তাড়াশে ব্র্যাক অফিসের মাঠের পানি কোনাই পাড়া হয়ে দক্ষিন মাঠের এই খাল দিয়ে বের হওয়ায় ভরাট করায় জলাবদ্ধতায় তার জমি ডুবে রয়েছে । কোনাই পাড়ার নাম প্রকাশে অনচ্ছিুক একাধিক ব্যক্তি জানান প্রকাশ্য নিত্য ও হায়দার খাল দখল করলেও প্রশাসন দেখেও কোন অভিযান দিয়ে দখল মুক্ত করেননি । বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) তাড়াশ উপজেলা কমিটির আহবায়ক সাংবাদিক ও পরিবেশকর্মী আব্দুর রাজ্জাক রাজু জানান তাড়াশ উপজেলার সরকারী খাল ভরাট বন্ধ না হওয়ায় প্রতিবছর একাধিক মাঠ জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হচ্ছে এবিষয়ে মানব বন্ধন ও স্মারকলিপি দিয়েছে এবং বর্তমান উপজেলা প্রশাসন কে ভরাট খাল দখল মুক্ত করার দাবি জানাচ্ছি । অভিযুক্ত রাস্তা ভরাটকারী কির্তন কুমার জানান, জমি ভরাট শেষে খাল খুলে দেওয়া হবে। কিন্তু সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়,খালের ভরাটকৃত রাস্তায় স্থায়ীভাবে ব্যবহারে জন্য নিচে মাত্র চিকন পাইপ বসিয়ে রেখেছে । তাড়াশ পুর্ব পাড়ার কৃষক জামাল উদ্দিন বলেন, এ খাল দখল ও ভরাটের ফলে সদর গ্রামে বিরাট সমস্যা দেখা দিবে।

রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে মতবিনিময় হয়েছে
ডেস্ক রিপোর্টঃ ছাত্র-গণঅভ্যূত্থানে শেখ হাসিনা ভারতে পালানোর পর অন্তবর্তীকালীন সরকারের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার তিন সপ্তাহ পর বিএনপির ভোট নিয়ে আলোচনার দাবির মধ্যে দেশের প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে মতবিনিময়ে বসলেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। অগত শনিবার বিকেল ৩টায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় এই মতবিনিময় অনুষ্ঠিত হয়। রাত ৮টা পর্যন্ত টানা পাঁচ ঘণ্টা মতবিনিময় করা হয়।এর আগে বিএনপি ছাড়া আর কোন কোন দলকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে জানতে চাইলে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘বর্তমান সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর যেসব রাজনৈতিক দলের নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেছেন, এবারও তাঁদের সঙ্গে মতবিনিময় করা হবে। সূত্রঃ বণিক বার্তা।

বন্যায় এখন পর্যন্ত ৫৪ জনের মৃত্যু
ডেস্ক রিপোর্ট ঃ ভারত থেকে নেমে আসা ঢল ও ভারী বৃষ্টির কারণে সৃষ্ট বন্যায় দেশের ১১ জেলায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৫৪ জনে দাঁড়িয়েছে। এছাড়া ভয়াবহ এই বন্যায় এসব জেলায় ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে ৫০ লাখের বেশি মানুষ। গতকাল দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় এই তথ্য জানিয়েছে। মন্ত্রণালয় জানায়, এখন পর্যন্ত ১১টি জেলার ৬৪টি উপজেলা বন্যায় প্লাবিত হয়েছে। জেলাগুলো হলো- ফেনী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, কক্সবাজার, খাগড়াছড়ি, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, লক্ষ্মীপুর, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ ও সিলেট। সূত্রঃ কালের কণ্ঠ।

তাড়াশ সদর ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের পদত্যাগ

তাড়াশ প্রতিনিধি ঃ সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার সদর ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মোঃ আক্তার হোসেন পদত্যাগ করেছেন। গত বুধবার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুইচিং মং মারমার কাছে পদত্যাগ পত্র জমা দেন তিনি। মোঃ আক্তার হোসেন জানান, ব্যক্তিগত ও পারিবারিক কারণে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের পদ থেকে পদত্যাগ করেছি। এখন থেকে ইউপি সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করব। বিষয়টি নিশ্চিত করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুইসিং মং মারমা জানান, গত বুধবার তাড়াশ সদর ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মোঃ আক্তার হোসেন পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন। এই ব্যাপারে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পদত্যাগ পত্রটি সিরাজগঞ্জ জেলা প্রশাসক মহোদয়ের কাছে প্রেরণ করা হয়েছে। উল্লেখ্য ২০২৩ ইং সালের জুন মাসের ১৫ তারিখে তাড়াশ পৌরসভা নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ বাবুল শেখ পদত্যাগ করায় তিনি দায়িত্ব গ্রহণ করেন।

তাড়াশে জামায়াত নেতৃবৃন্দের সাথে ওসির মতবিনিময়
শাহজাহান আলী ঃ সরকার পতনের পর আইন-শৃঙ্খলা ও সারাদেশের চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে কর্মবিরতি স্থগিত করে মাঠে নেমেছে পুলিশ। ভুল-ত্রুটি শুধরে নতুন ধারায় কার্যক্রম শুরু করবে বলে জানায় পুলিশ। পরস্পরের সহযোগিতার মাধ্যমে শৃঙ্খলা বেড়াতে তাড়াশ উপজেলা জামায়াতে নেতৃবৃন্দের সাথে মতবিনিময় সভা করেছেন তাড়াশ থানার অফিসার্স ইনচার্জ মোঃ নজরুল ইসলাম। তাড়াশ থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার অফিস কক্ষে এ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। কর্মে যোগদানের জন্য পুলিশ সদস্যদের ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান উপজেলা জামায়াত ও শিবির নেতৃবৃন্দ।স্বৈরাচার শেখ হাসিনার পতন থেকে শুধুমাত্র আওয়ামী লীগ না, জামায়াত-বিএনপি সবাইকে শিক্ষা নিতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন তাড়াশ উপজেলা জামায়াতের আমির খম সাকলইন। তিনি বলেন, ‘এরপরে যারা দেশ পরিচালনায় আসবেন তারা যেনো জালিমের ভূমিকায় অবতীর্ণ না হয়। একই রাস্তায় যেন তারা না চলেন। এখান থেকে আমাদের সবার শিক্ষা নেওয়া উচিৎ। মানুষের সঙ্গে জুলুম করলে কী পরিণতি হয় সেটা সবার শিক্ষা নেওয়া উচিত। তাদের শিক্ষা নিতে হবে যাতে একই গর্তে জাতি না পড়ে।

উল্লাপাড়ায় জামায়াত নেতার দশটি পথসভা
ডাঃ আমজাদ হোসেন ঃসিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় জামায়াতে ইসলামী এর কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান উপজেলা সদরসহ নয়টি ইউনিয়নে দশটি পথসভা করেছেন। গত শনিবার (২৪ আগস্ট) বিকেলে উপজেলা সদরের পুরানো বাসষ্ট্যান্ড এলাকায় উপজেলা জামায়াত ইসলামীর আমীর অধ্যাপক মো. শাহজাহান আলীর সভাপতিত্বে পথসভা হয়। এতে মাওলানা রফিকুল ইসলাম প্রধান অতিথি হয়ে বক্তব্য রাখেন। এর আগে উপজেলার হাটিকুমরুল ইউনিয়নের গোল চত্বর এলাকায়, বড়হরের বোয়ালিয়া বাজার, সলঙ্গা ইউনিয়নে সলঙ্গা মাঠে, রামকৃষ্ণপুরের দবিরগঞ্জ বাজার, পূর্ণিমাগাতী ইউনিয়নের গয়হাট্রা বাজার, কয়ড়া ইউনিয়নের কয়ড়া বাজার, মোহনপুর ইউনিয়নের মোহনপুর ষ্ট্যান্ড, দুর্গানগরের বালসাবাড়ী বাজার, পঞ্চক্রোশী ইউনিয়নের শাহজাহান মাঠে এবং বাঙ্গালা ইউনিয়নে কুচিয়ামারা মাঠে পথসভা হয়।প্রতিটি পথসভায় মাওলানা রফিকুল ইসলাম খানসহ জামায়াত ইসলামীর জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ের নেতাগণের উপস্থিতি ও অনেকেই বক্তব্য রাখেন।
বন্যার্তদের আর্থিক সহায়তা পাঠালো সিংড়া প্রেস ক্লাব
সিংড়া প্রতিনিধি ঃদেশের বন্যা কবলিত মানুষের জন্য আর্থিক সহায়তা প্রদান করেছন সিংড়া প্রেস ক্লাবের সাংবাদিক এবং বাংলাদেশ সাংবাদিক ও লেখক ফোরামের সদস্যরা। গত সোমবার সকালে বন্যার্তদের সহায়তার জন্য লেখক-সাংবাদিকরা আর্থিক অনুদান তুলে দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা ফয়সাল নোমান ও সজিব সরদারের হাতে। এসময় উপস্থিত ছিলেন সিংড়া প্রেস ক্লাবের সভাপতি মোঃ এমরান আলী রানা, সাধারণ সম্পাদক সৌরভ সোহরাব, কবি ও লেখক মাহাবুব আলম মান্নান, জয়নাল আবেদিন, প্রভাষক আইয়ুব আলী, রিক্তা বানু প্রমুখ।

ভাঙ্গুড়ায় বন্যা মোকাবেলায় প্রস্তুতি সভা
ভাঙ্গুড়া প্রতিনিধি ঃফারাক্কা বাঁধের সবগুলো গেট খুলে দিয়েছে প্রতিবেশি দেশ ভারত। এতে করে দেশের উত্তরাঞ্চলে বন্যার আশংকা দেখা দিয়েছে। তাই আসন্ন বন্যা মোকাবেলায় আগাম প্রস্তুতি হিসেবে পাবনার ভাঙ্গুড়ায় জরুরী সভার আয়োজন করা হয়। গতমঙ্গলবার (২৭ আগস্ট) দুপুরে উপজেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটি এই সভার আয়োজন করে। উপজেলা পরিষদ সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত সভায় সভাপতিত্ব করেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোছা. নাজমুন নাহার। সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) তাসমীয়া আক্তার রোজী, স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. হালিমা খানম, কৃষি কর্মকর্তা শারমিন জাহান, প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ডা. রুমানা আক্তার রোমি, মৎস্য কর্মকর্তা নাজমুল হক, উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নুর মোজাহিদ স্বপন, জেলা জামায়াতে ইসলামীর (তরবিয়ত) সেক্রেটারি মাওলানা আলী আজগর, পৌর বিএনপির আহবায়ক কাউন্সিলর রফিকুল ইসলাম, ভাঙ্গুড়াইউপি চেয়ারম্যান হেদায়েতুল হক প্রমুখ।

রায়গঞ্জে জামায়াতে ইসলামীর জনসমাবেশ অনুষ্ঠিত
রায়গঞ্জ প্রতিনিধি ঃ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র জনতাকে হত্যার প্রতিবাদে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী পাঙ্গাসী ইউনিয়ন শাখার উদ্যোগে বিশাল জনসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। গত ২৬ শে আগস্ট সোমবার সকাল ৯ ঘটিকায় সিরাজগঞ্জ জেলার রায়গঞ্জের পাঙ্গাসী লায়লা মিজান স্কুল এ্যান্ড কলেজ মাঠে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশ জামাতে ইসলামী পাঙ্গাসী ইউনিয়ন শাখার সভাপতি আলহাজ্ব অধ্যক্ষ আবদুল হামিদ আকন্দের সভাপতিত্বে জামাংাতের রায়গঞ্জ উপজেলা অফিস ও বায়তুল মাল সেক্রেটারি ডা. এস এম মুনসুর আলীর সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী সিরাজগঞ্জ জেলা শাখার সম্মানিত সেক্রেটারি অধ্যাপক জাহিদুল ইসলাম। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, জামায়াতের রায়গঞ্জ উপজেলা শাখার আমির মাওলানা আবুল কালাম বিশ্বাস, রায়গঞ্জ উপজেলা সেক্রেটারি আলহাজ্ব খোরশেদ আলম প্রমূখ।

ভাঙ্গুড়ায় ৩ লাখ টাকার সুদ ৬ লাখ টাকা !

ভাঙ্গুড়া প্রতিনিধি ঃনাম তার পার্বতী সরকার(৫০)। তিনি পাবনার ভাঙ্গুড়াপৌরসভার কালিবাড়ী শাহপাড়া এলাকার সাবেক ব্যাংক কর্মকর্তা বিমল কুমার সরকারের স্ত্রী। দুই বছর আগে বাড়ির পাশের দক্ষিণমেন্দা মহল্লার আওয়ামী লীগ নেতা সিরাজুল ইসলামের কাছ থেকে ৩ লাখ টাকা ধার নেন। সেসময় ৩ লাখ টাকার সুদ হিসেবে প্রতি মাসে তার কাছ থেকে ৩০ হাজার টাকা দাবি করা হয়। সে অনুযায়ী বিভিন্ন সময় ৪ লাখ ২০ হাজার টাকা পরিশোধও করা হয়। এরপরও সুদ-আসলে আরও ৫ লাখ টাকা দাবি করেন আওয়ামী লীগ নেতা সিরাজুল। চাহিদা অনুযায়ী টাকা দিতে না পারায় সংখ্যালঘু নারী পার্বতীকে নানা হুমকি-ধামকি দেন তিনি । নিরুপায় হয়ে একবার আত্মহত্যারও চেষ্টা করেন ওই নারী। সম্প্রতি স্থানীয় ব্যক্তিদের পরামর্শে ওই নেতার বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী। অভিযুক্ত সিরাজুল ভাঙ্গুড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী সদস্য ও চিহ্নিত সুদে কারবারি বলে জানা যায়।
ভুক্তভোগী ওই নারী জানান,’৩ লাখ টাকা ধার নিয়ে সিরাজুলকে তিনি ৪ লাখ ২০ হাজার টাকা পরিশোধ করেছেন। এরপরও তিনি সুদে-আসলে আরও ৫ লাখ টাকা দাবি করছেন। টাকার জন্য তাদেরকে নানাভাবে হুমকি-ধামকি দিচ্ছেন। তার জ্বালায় অতিষ্ঠ হয়ে তিনি এখন শারীরিক ও মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন।

সলঙ্গায় বানভাসিদের জন্য শিক্ষার্থীদের অর্থ সংগ্রহ

জি,এম স্বপ্না ঃ দেশের দক্ষিনাঞ্চলে ভয়াবহ বন্যা দুর্গত মানুষকে সহযোগীতা করার জন্য সারা দেশে তরুণ সমাজ ও শিক্ষার্থীরা অর্থ সংগ্রহ করছে।এরই ধারাবাহিকতায় অনুদান বক্স হাতে নিয়ে সাধারন মানুষের কাছে ছুটে চলেছে সলঙ্গার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র সমাজসহ সাধারণ শিক্ষার্থীরা। মানবতার সেবায় বন্যার্ত মানুষদের সাহায্যের হাত বাড়ানোর কাজে নেমে তারা নিজেকে ধন্য মনে করছে। দলে বিভক্ত হয়ে পায়ে হেঁটে পাড়া-মহল্লা,বাজার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, দোকান পাটসহ রাস্তাঘাটে অর্থ সংগ্রহ করছে তারা।সলঙ্গা থানাসদর, হাটিকুমরুল রোড গোল চত্বর,ভুইয়াগাঁতী, ঘুড়কাসহ বিভিন্ন গুরুত্বপুর্ণ এলাকায় ঘুরে ঘুরে তারা অর্থ সংগ্রহ করছে। গত মঙ্গলবার সকাল ১০ টায় থানার নলকা ইউনিয়নের এরান্দহ গ্রামে অধ্যয়নরত স্কুল-কলেজ পড়ুয়া ছাত্রীদের মানবতার সেবায় অর্থ সংগ্রহ করার এমন দৃশ্য দেখে অনেকেই তাদের আশীর্বাদ ও প্রশংসা করছে।ছাত্রীরা অনুদান বাক্স নিয়ে সকলের সহযোগীতা চাচ্ছে।

চাটমোহরে বস্তায় আদাচাষে কৃষকের আগ্রহ বেড়েছে
জাহাঙ্গীর আলম, চাটমোহর ঃ সম্প্রতি পাবনার চাটমোহর উপজেলায় বস্তায় মাটি ভরে আদা চাষবাদ শুরু করে কৃষকরা। এতে আগ্রহ বাড়ছে অন্য কৃষকদের মধ্যেও। মসলা এবং ভেষজ ওষুধ হিসেবে সারা দেশে আদার ব্যাপক ব্যবহার রয়েছে। বর্তমান বাজারে এর দামও বেশ চড়া। তাই পরিবারের প্রয়োজন মেটাতে এবং বাড়তি কিছু আয়ের আশায় চাটমোহরের কৃষকরা বস্তায় আদা চাষ শুরু করেছেন। চাটমোহর কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চাটমোহরে চলতি মৌসুমে বস্তায় আদা চাষ করেছেন কৃষকরা। চাটমোহরের মথুরাপুর, ডিবিগ্রাম, ছাইকোলা, পার্শ্বডাঙ্গাসহ বিভিন্ন ইউনিয়নে সবমিলিয়ে প্রায় এ বছর দশ হাজার বস্তায় আদা চাষ হয়েছে। পাবনার চাটমোহরের ছাইকোলা গ্রামের আতিকুর রহমান জানান, এই প্রথম বস্তায় আদা চাষ করেছি। মাটির সঙ্গে গোবর সার, খৈল, ছাই, জিংক মিশিয়ে ৩০০ বস্তা মাটি প্রস্তুত করেছি। ৩৫০ টাকা কেজি দরে ২২ কেজি থাইল্যান্ডের বীজ আদা সংগ্রহ করেন দিনাজপুর থেকে। গত এপ্রিল মাসের প্রথম দিকে আদার কন্দগুলো রোপণ করি বস্তার মাটিতে।
তিনি বলেন, কয়েক দিনের মধ্যে চারা বের হয়ে দ্রুত বেড়ে উঠছে আদা গাছগুলো। বাড়ির পরিত্যক্ত উঠানের দেড় শতাংশের মতো জায়গা কাজে লাগিয়ে লাখ টাকা আয়ের স্বপ্ন দেখছি আমি। চাটমোহর-কাছিকাটা সড়কের পশ্চিম পাশে সারিবদ্ধাবস্থায় বস্তায় সবুজ আদা গাছ দেখে মুগ্ধ হচ্ছেন পথচারীরা।

সলঙ্গা ইউপি চেয়ারম্যানের অপসারণের দাবীতে মানববন্ধন
সলঙ্গা প্রতিনিধি ঃ সিরাজগঞ্জের ৮ নং সলঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, সলঙ্গা থানা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোখলেছুর রহমান তালুকদারের অনিয়ম, দুর্নীতি, দু:শাসনে চেয়ারম্যানের পদ থেকে অপসারণের দাবীতে মানববন্ধন করেছে ছাত্র-জনতা।বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতার আয়োজনে গত মঙ্গলবার (২০ আগস্ট) দুপুরে সলঙ্গা ফাজিল ডিগ্রী মাদ্রাসা মোড়ে ইউনিয়নের সর্বস্তরের জনগনকে নিয়ে এ মানব বন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় বক্তব্য রাখেন, সলঙ্গা থানা বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক মামুন সরকার সহ অনেকে। বক্তারা বলেন, আওয়ামী লীগ নেতা মোখলেছুর রহমান নৌকা প্রতীক নিয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর সংশ্লিষ্ট ইউপি সদস্যদের বৃদ্ধাঙ্গুল দেখিয়ে পরিষদের সকল উন্নয়ন কাজ হতে বঞ্চিত করেন। ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে একাই প্যানেল চেয়ারম্যান সাজিয়ে এক তরফা ভাবে পরিষদের সকল কার্যক্রম চালিয়ে সরকারি বরাদ্দ লুটপাট করেছেন। ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর হতে তিনি গা ঢাকা দিয়েছেন। এ পর্যন্ত তাকে পরিষদে দেখা যায় নি। এতে পরিষদের কার্যক্রমের সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সাধারন জনগণ। তাই দুর্নীতিবাজ চেয়ারম্যান মোখলেছুর রহমান তালুকদারকে চেয়ারম্যানের পদ থেকে অপসারন ও পদত্যাগ দাবী করেছেন তারা।

সিংড়া প্রেসক্লাবের উদ্যোগে সাহিত্য আসর

সিংড়া প্রতিনিধি ঃ নাটোরের সিংড়ায় নবীন-প্রবীণ কবি, সাহিত্যিক ও লেখকদের নিয়ে সাহিত্য আসর হয়েছে। রোববার (২৫ আগস্ট) সকাল ১০টার দিকে সিংড়া প্রেসক্লাব কমপ্লেক্স ভবনে প্রেসক্লাবের উদ্যোগে এ সাহিত্য আসর অনুষ্ঠিত হয় এবং বাংলাদেশের বন্যায় দুর্গতদের কষ্ট লাঘবের জন্য আল্লাহর দরবারে দোয়া কামনা করা হয়।সাহিত্য আসরে সভাপতিত্ব করেন সিংড়া প্রেস ক্লাবের সভাপতি, চয়েন বার্তার সম্পাদক মোল্লা মো. এমরান আলী রানা।
এসময় স্ব-রচিত কবিতা পাঠ করেন প্রবীণ কবি আজাহার আলী, কবি আবুল হোসেন, জয়নাল আবেদীন, কবি মাহবুব এ মান্নান, প্রভাষক আইয়ুব আলী, কবি রাজ কালাম, ওমর ফারুক, কবি মোঃ ইমরান, আউয়াল, কবি প্রত্যয়, রিক্তা বানু লেখক কবির হোসেন, এনামুল হক, কাওছার আহমেদ প্রমুখ।এসময় উপস্থিত ছিলেন সিংড়া প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ও মানব কন্ঠ প্রতিনিধি সৌরভ সোহরাব, সাংবাদিক রইচ উদ্দীন টুটুল, দেশ রুপান্তর প্রতিনিধি আবু জাফর সিদ্দিকী, সময়ের আলো প্রতিনিধি শহিদুল ইসলাম সুইট, দৈনিক জবাবদিহির প্রতিনিধি আলিফ বিন রেজা, দৈনিক ডাকবেলা প্রতিনিধি কাবিল উদ্দিন কাফি, সাংবাদিক শোভন আহমেদ সাদ্দাম, ইব্রাহিম, ছাত্র নোমান ফয়সাল, সজিব সরদার প্রমুখ। সাহিত্য আসর শেষে দেশের সমসাময়িক সকল সমস্যাসহ বন্যাকবলিত মানুষের জন্য দোয়া পরিচালনা করেন মুফতি জাকারিয়া মাসউদ।

তাড়াশে বসতবাড়িতে অগ্নিকান্ড
তাড়াশ প্রতিনিধি ঃসিরাজগঞ্জের তাড়াশের পল্লীতে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে এক কৃষক পরিবারের বসতঘর পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। গত রোরবার বেলা ২টার দিকে উপজেলার তালম ইউনিয়নের পাড়িল বড়ইচড়া গ্রামে এ অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তালম ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. আব্দুল খালেক।এলাকাবাসী জানান, বেলা ২টার দিকে তালম ইউনিয়নের পাড়িল বড়ইচড়া গ্রামের মো.আব্দুস সামাদের ছেলে মো. আনোয়ার হোসেন (৪৫) বাড়িতে আগুন লাগে। এসময় গ্রামবাসী এগিয়ে এসে প্রায় ঘন্টাব্যাপী চেষ্টা করে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। ধারণা করা হচ্ছে বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিটের মাধ্যমে আগুনের সূত্রপাত ঘটে। আগুনে ৫০ হাজার টাকা, ধান-চাল, আসবাবপত্র, ইলেক্ট্রনিক্স সামগ্রীসহ বসতঘরে থাকা সমস্ত মালামাল পুড়ে ছাই হয়ে যায়। এতে ওই কৃষকের প্রায় ৫ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। তালম ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. আব্দুল খালেক ঘটনার সত্যতা জানান। এ প্রসঙ্গে তাড়াশ উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুইচিং মং মারমা বলেন, অগ্নিকান্ডের খবর পেয়েছি। তিনি ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে সরকারিভাবে সহায়তা প্রদানের আশ্বাস প্রদান করেন।

চাটমোহর টিসিবি পণ্য পায়নি কার্ডধারীরা

চাটমোহর প্রতিনিধি ঃ পাবনার চাটমোহর উপজেলার হরিপুর ইউনিয়নের টিসিবি’র কার্ডধারীরা টিসিবি পণ্য পেলেন না।গত বৃহস্পতিবার এ ইউনিয়নে টিসিবি’র পণ্য বিতরণ করা হয়। সকাল থেকে টিসিবি পণ্য বিতরণ শুরু করেন ডিলার আলমাস উদ্দিন। এসময় এলাকার কিছু ব্যক্তি পণ্য বিতরণ কার্যক্রম নিজেদের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয়। তারা কার্ডধারীদের কোন পণ্য না দিয়ে নিজেদের ইচ্ছেমতো নিজস্ব লোকদের মাঝে পণ্য বিতরণ শুরু করেন। তাদের সাথে যোগ দেন ডিলার ও তার লোকজন। টিসিবি’র কার্ডধারীরা পণ্য না পেয়ে হতাশ হয়ে ফিরে যান। এ ইউনিয়নে টিসিবি’র কার্ডধারীর সংখ্যা ১ হাজার ৪৬৭ জন। বিএনপি সমর্থক কিছু কার্ডধারী পণ্য কিনতে পারলেও অন্যরা পায়নি। এ বিষয়ে প্রশাসনের সহায়তা চেয়েও তারা কোন প্রকার সহযোগিতা পাননি। এই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও মেম্বাররা এলাকার একদল ব্যক্তির কারণে পরিষদে যেতে পারছেন না। তারা চেয়ারম্যান মোঃ মকবুল হোসেনের পদত্যাগ ও বিচার দাবি করে ইউনিয়ন পরিষদের সামনে রাতদিন অবস্থান করছেন। হরিপুর ইউপি সচিব মোঃ রফিকুল ইসলাম টিসিবি’র কার্ডধারীরা পণ্য না পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান,বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানানো হয়েছে।

বদলে গেছে বৃহৎতম চলনবিলের রুপ
জাহাঙ্গীর আলম ঃ চলনবিলের চারিদিকে শুধু পানি আর পানি। তাতে খেলা করছে ছোট-বড় নৌকা। নৌকাগুলো বিনোদনপ্রেমিদের নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে চলনবিলের বুকে। বিভিন্ন এলাকা থেকে ছুটে আসছে অসংখ্য ভ্রমণপিপাসু বিনোদনপ্রেমিরা। বর্ষায় পাল্টে গেছে চলনবিল অঞ্চলের রুপ। চারিদিকে থৈ থৈ পানি। সন্ধ্যায় বিলের পানিতে ডুবছে সূর্য। অপরুপ দৃশ্য চারিদিকে। বিনোদন পিপাসুদের ভিড় বেড়েছে চলনবিল অঞ্চলের বিভিন্ন পয়েন্টে। বিলে শত শত নৌকা ভেসে চলেছে। এই বর্ষায় পানিতে ভরে উঠেছে চলনবিলের ছোট-বড় প্রায় অর্ধশত খাল-বিল। নতুন পানির সঙ্গে এসেছে শোল, বোয়াল, ট্যাংরা, পুঁটি, কই, শিং, মাগুর, চাপিলা, পাবদাসহ বিভিন্ন প্রজাতির দেশি মাছ। চলনবিলের খাল ও নিম্নাঞ্চল এখন প্লাবিত। পুরো বিল পানিতে ভরে উঠেছে। নতুন পানির সঙ্গে বিভিন্ন প্রজাতির দেশি মাছ দেখা যাচ্ছে। মাছ ধরারও যেন ধূম পড়েছে। বিলপাড়ের লোকজন বর্ষার আগমনে আলাদা আলাদা পেশা বেছে নিচ্ছেন। কেউ নৌকা দিয়ে মালামাল পরিবহন করছেন, কেউ বা করছেন মানুষ পারাপার। কেউ আবার নৌকা দিয়ে মাছ শিকার করছেন। এ ছাড়া কেউ মাছ শিকারের জন্য বিভিন্ন ধরনের জাল বানিয়ে বিক্রি করছেন স্থানীয় হাট-বাজারে। বিনোদনের জন্য নৌকা প্রস্তুত রেখেছেন অনেকে। প্রতিদিনই চলনবিলের বিভিন্ন বিনোদন কেন্দ্রে ভিড় করছেন বিনোদন পিপাসুরা। সরেজমিনে চলনবিল ঘুরে এমন দৃশ্যই দেখা যায়।
বর্ষা মৌসুমে বিলের দুর্গম এলাকাগুলোর পথঘাট পানিতে ডুবে গেছে। এসব এলাকার মানুষের স্বাভাবিক চলাফেরায় একমাত্র বাহন হয়ে উঠেছে নৌকা। এবার নৌকার চাহিদা একটু বেশি মনে হচ্ছে। তাই অনেকেই বর্ষা আসার আগেই নৌকা মেরামত ও তৈরির কাজ করেছেন। বিলাঞ্চলের হাট-বাজারে মৌসুমি মৎস্যজীবীদের মাছ ধরার জাল কেনাবেচার হিড়িক। হাট-বাজারে মাছ শিকারের জন্য বিভিন্ন ধরনের জাল বিক্রি হচ্ছে। বাদাই, কারেন্ট, ফাঁসি, চায়না দুয়ারী, তেউরিসহ নানা ধরনের জাল বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া বিক্রি হচ্ছে দেশে তৈরি কোঁচ, জুতি, টেঁটা, চাঁই, খৈলশানী, দোয়ার ও ভাইর। নিষিদ্ধ চায়না দুয়ারী আর কারেন্ট জালের অবাধ ব্যবহারে বিলীন হচ্ছে দেশী প্রজাতির মাছ।
চাটমোহর উপজেলার নিমাইচড়া গ্রামের আঃ মতিন বলেন, বর্ষার মৌসুমে চলনবিল এলাকায় তেমন কোনো কাজকর্ম থাকে না। তাই এ সময় বিলপাড়ের গরিব লোকজন মাছ ধরার পেশাকে বেছে নেয়। ডিমওয়ালা মাছ ধরা নিষিদ্ধ থাকা সত্ত্বেও একশ্রেণির অসাধু ও শৌখিন মৎস্যজীবী অবাধে ডিমওয়ালা মাছ ধরছেন। এদিকে চলনবিল অঞ্চলে এখনো বিনোদন পিপাসুদের এখন সরব উপস্থিতি। সকাল হতেই বিভিন্ন এলাকা থেকে দল বেঁধে চলনবিল ঘুরতে আসছেন ভ্রমণ পিপাসুরা। সারাদিন বিলের পানিতে ঘুরছেন। রান্না হচ্ছে নৌকায় কিংবা বিলপাড়ে। বিনোদন কেন্দ্রগুলো এখন রমরমা। সকল বয়সের মানুষ এই বর্ষায় চলনবিলে বেড়াতে আসছেন। বিল সৈকতগুলো এখন জমে উঠেছে ভ্রমণপিপাসুদের কলরবে। বদলে গেছে দেশের অন্যতম বৃহৎ বিল চলনবিলের রুপ।

চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে লাভা ¯্রােতের সন্ধান
ডেস্ক রিপোর্ট ঃ চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে ম্যাগমা মহাসাগরের অবশিষ্টাংশের খুঁজে পেয়েছে ভারতের চন্দ্রযান-৩। বিজ্ঞানীদের মতে, অতীতে চাঁদের দক্ষিণ মেরু তরল গলিত শিলা বা ম্যাগমা মহাসাগরে আবৃত ছিল। এই ম্যাগমা থেকেই প্রায় সাড়ে চার শ কোটি বছর আগে চাঁদের পৃষ্ঠ তৈরি হয়েছে। গত বছরের আগস্টে চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে অবতরণ করে ভারতের চন্দ্রযান-৩। চাঁদের দক্ষিণ মেরুর তথ্য অজানা থাকায় অবতরণের পর থেকেই চাঁদের রহস্যময় এলাকায় গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করছে চন্দ্রযানটি।
এক সময় চাঁদে উত্তপ্ত ও গলিত পাথরের একটি মহাসাগর ছিল। তার অর্থ হলো চাঁদের ভেতরে ও বাইরে লাভা রয়েছে। এমনটাই জানিয়েছেন ভারতীয় বিজ্ঞানীরা। বিজ্ঞানীরা চন্দ্রযান-৩ থেকে প্রাপ্ত রাসায়নিক তথ্যগুলো বিশ্লেষণ করছেন। এরপর বিষয়টি তারা নিশ্চিত হয়েছেন। চাঁদ গঠনের পর, চাঁদ অনেক বছর ধরে উত্তপ্ত লাভায় আবৃত ছিল বলে তারা জানতে পেরেছেন। সম্প্রতি নেচার জার্নালে এই গবেষণাটি প্রকাশিত হয়েছে। পুরো চাঁদে উত্তপ্ত লাভার (ম্যাগমা) সমুদ্র ছিল। এটি চাঁদের গঠনের কয়েক কোটি বছর পরের ঘটনা। আহমেদাবাদের ফিজিক্যাল রিসার্চ ল্যাবরেটরির (পিআরএল) ভূতত্ত্ববিদ সন্তোষ ভি ভাদাভালে বলেন, আমাদের যন্ত্র প্রমাণ করেছে যে, চাঁদে লুনার ম্যাগমা মহাসাগর (এলএমও) ছিল।সূত্র ঃ ইনকিলাব ।

 

Please follow and like us:
Pin Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Website Design, Developed & Hosted by ALL IT BD