তাড়াশে শত শত বিঘা ফসলী জমিতে পুকুর খনন-প্রশাসনের দীর্ঘ নিরবতা

Spread the love

চলনবিল বার্তা ডেস্ক : সিরাজগঞ্জের তাড়াশ পৌর শহরের একজন প্রভাবশালী ব্যক্তি কৃষিজমির শ্রেণী পরিবর্তন করে পুকুর খনন করেছেন। তিনি ওই পুকুরে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাইবো) প্রায় ১২ বিঘা খাল দখল করেছেন বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এদিকে পুকুর খননের ফলে এই এলাকায় পানি নিস্কাশনের পথ বন্ধ হয়ে গেছে। জলাবদ্ধতার কবলে পড়েছে শত শত বিঘা আবাদি জমি। তাড়াশ সদরের বাসিন্দা মো. মজিবর রহমানের লিখিত অভিযোগ এবং এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার মান্নান নগর থেকে প্রায় তিন কিলোমিটার উত্তরে তাড়াশ সদরের দিকে পাউবোর বাধ রয়েছে। বাঁধটি আঞ্চলিক সড়ক হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। এই বাঁধের পূর্ব পাশে পৌর শ্মশান ঘাটসংলগ্ন জায়গায় স্থানীয় প্রভাবশালী সুজাব উদ্দিীন পুকুর খনন করেছেন। প্রায় ৫২ বিঘা জমিতে এই পুকুর খনন করা হচ্ছে। এর মধ্যে পাউবোর ১২ বিঘা খাল রয়েছে। এই পুকুরের জমিসহ আশপাশের সব জমি তিন ফসলি। এসব খেতের পানি খাল দিয়ে ঢালুর দিকে নেমে যেত। কিন্তু খাল দখল করায় জলাব্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। পুকুরের পাড়ের কারণে পানি সরছে না।
স্থানীয় বাসিন্দা মো. আফজাৃল হোসেন ও আবদুস সালাম বলেন, এই এলাকার সব জমি তিন ফসলি। এই কৃষিজমির শ্রেণী পরিবর্তন করে বিশাল পুকুর খনন করা হচ্ছে। তা ছাড়া প্রতি বছর বর্ষা কালে এখানে বন্যা হয়। বন্যার পানি দ্রুত ওই খাল খাল দিয়ে নেমে যেত। কিন্তু বর্তমানে পুকুর খননের নামে খালটি দখল করা হয়েছে। খালের মুখ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। এ কারণে আশপাশের ফসলের ক্ষেত থেকে পানি নিস্কাষনের পথও বন্ধ হয়ে গেছে। এতে জলাবদ্ধতার কবলে পড়েছে শত শত বিঘা আবাদি জমি। সেগুলো এক ফসলি জমিতে পরিণত হবে। এবিষয়ে জানতে চাইলে সুজাব উদ্দিন বলেন, ‘আমার জায়গার উপর দিয়ে পাউবো বাধ নির্মাণ করা হয়েছে। বর্তমানে যে খাল রয়েছে, সেটির মালিক এখন আমি নিজে। আমার জায়গার আমি পুকুর কেন, যা ইচ্ছে তা-ই খনন করতে পারি। এখানে বাধা দেওয়ার কেউ নেই।
এবিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, এই এলাকার জমি খুব উর্বর। এখানে বছরে তিনটি ফসলের আবাদ হয়। এমন জমির শ্রেণী পরিবর্তন করে পুকুর খনন করার কোনো নিয়ম নেই। বিষয়টি উপজেলা প্রশাসনকে জানানো হয়েছে। তারা এবিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নিতে পারবে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইফ্ফাত জাহান বলেন, আমি সবে এখানে যোগদান করেছি। কৃষিজমির শ্রেণী পরিবর্তন করে পুকুর খননের অভিযোগ সম্পর্কে এখন জানলাম। খোঁজ নিয়ে এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। বিশেষ উল্লেখ্য, তাড়াশ উপজেলায় এযাবৎ ফসলী জমি কেটে ও খাল বিল দখল করে ৫ শতাধিক পুকুর খনন করা হয়েছে। এমনকি তাড়াশ উপজেলা সদর গ্রামেও অনেক দীঘি-পুকুর ভরাট করে বিভিন্ন ধরনের স্থাপনা গড়ে তোলা হচ্ছে। তবে সরকারী প্রশাসনের চোখের ওপর এই পরিবেশ বিধ্বংসী ও জনস্বার্থবিরোধী কর্মকান্ড চললেও তারা অজ্ঞাত কারণে নিরব ভূমিকা পালন করে চলেছে। অবশ্য কালেকস্মিনে এব্যাপারে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করলেও তাতে কোন ফল বা প্রতিকার পাওয়া গেছে বলে জানা যায় না। (প্রথম আলো থেকে। ঈষৎ সংযোজিত)

Please follow and like us:
Pin Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Website Design, Developed & Hosted by ALL IT BD