গুরুদাসপুর অতিরিক্ত মদপানে আরেক জনের মৃত্যু

Spread the love

গুরুদাসপুর (নাটোর) প্রতিনিধি. চৈতন্য সরকার (২৫) নামের এক যুবকের রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। সোমবার চৈতন্য’র দাহ করার পর মারা গেছেন তার আপন মামা কিরণ হালদারও (২৯)। অসুস্থ্য হয়ে হাসপাতালে ভর্তি আছেন আবির পাল (২৩) ও শান্ত (২৪)  দাস নামের দুই যুবক। 

কয়েক ঘন্টার ব্যবধানে দুইজনের অকাল মৃত্যুতে শোকাতর হয়ে পড়েছে পরিবার। চৈতন্য সরকার গুরুদাসপুর পৌর সদরের চাঁচকৈড় বাজার পাড়া মহল্লার গনেশ সরকারের ছেলে। তিনি স্নাতক প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। চৈতন্য’র মামা কিরণ হালদার নাটোরের নলডাঙ্গা উপজেলা সদরের সুকুমার হালদারের ছেলে।

মূলত ‘বিজয়া দশমীর দিন অতিরিক্ত মদ্যপানে চৈতন্য ও তার মামা কিরণ হালদারের মৃত্যুর গুঞ্জন ছড়িয়ে পরে স্থানীয়দের মধ্যে। এনিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও অনেকেই অকাল মৃত্যুকে ‘অতিরিক্ত মদপানের’ জন্য দায়ি করেছেন।

শোকে অসুস্থ্য হয়ে পরেছেন চৈতন্য’র বাবা গনেশ সরকার, মা রীনা সরকার ও বোন তুলশী সরকার। মৃত্যুর বিষয়টি নিয়ে তাদের সাথে কথা বলা সম্ভব হয়নি। তবে অতিরিক্ত মদপানে মৃত্যুর বিষয়টি অস্বীকার করে চৈতন্যে’র চাচাতো ভাই নরোত্তম সরকার ইত্তেফাককে বলেন, বয়সে ছোট হলেও চৈতন্য ও মামা কিরণ হালদার তার সাথেই চলাফেরা করতেন। সোমবার ভোর সাড়ে চারটার দিকে চৈতন্য মারা যান। দুপুরে দাহ করার পর অসুস্থ্য হয়ে পরেন মামা কিরণ। তিনিও ওই দিন সন্ধ্যার পর মারা গেলেন। আকষ্মিকভাবে পরিবারের দুই সদস্যকে হারিয়ে নির্বাক হয়ে গেছেন তারা। 

তিনি আরো বলেন, প্রতিমা বিসর্জন দিতে নৌকায় উঠেছিলেন চৈতন্য রোববার সন্ধ্যার পর বাড়ি ফিরে পেটে ব্যাথা অনুভব করেন। তাৎক্ষণিক গুরুদাসপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে বাড়িতে আনা হয়। অবস্থার অবনতি হলে রাত ১১ টার দিকে আবারো হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ভোর চারটার দিকে হাসপাতালেই চৈতন্যর মৃত্যু হয়। দুপুরে চৈতন্য’র দাহ করতে গিয়ে বমি করতে শুরু করেন মামা কিরণ। অসুস্থ্য অবস্থায় রাজশাহী মেডিকেলে নেওয়ার পথে পুঠিয়া এলাকায় মারা যান তিনি।

গুরুদাসপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মুজাহিদুল ইসলাম  বলেন, অতিরিক্ত মদপানের কারণে হৃদযন্ত্রের ক্রীয়া বন্ধ হয়ে চৈতন্য নামের ওই যুবকের মৃত্যু হয়েছে।

এদিকে একই ঘটনায় চাঁচকৈড় বাজারস্ত অসিম পালের ছেলে আবির পাল ও পরিমল দাসের ছেলে শান্ত দাস অসুস্থ্য হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধিন রয়েছেন। তারা নিহত চৈতন্য’র প্রতিবেশী ও বন্ধু। বিজয়া দশমীর দিন একই নৌকায় ছিলেন তারা। 

স্থানীয়রা জানান, এরআগেও বিজয়া দশমীতে একই এলাকায় মদ্যপানে অনীল দাসের ছেলে অখিল দাস ও নিতাই ঘোষের ছেলে অপু ঘোষের মৃত্যু হয়। স্থানীয় এক মদ বিক্রেতার বিক্রি করা মদপানে প্রায়ই অসুস্থ্য হয়ে পরেন অনেকেই।  

অসুস্থ্য আবির পালের পিতা উপজেলা পূজা উদযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক অসীম পাল বলেন, দশমীর রাত থেকে ছেলে আবীর পেটের ব্যাথায় অসুস্থ্য হয়ে পরে। শুরু হয় বমি-পায়খানা। তার ছেলে বর্তমানে রাজশাহী মেডিকেলে চিকিৎসাধীন রয়েছে। তবে ছেলে মদপান করে অসুস্থ্য হননি। তাছাড়া ধর্মীয়ভাবে মদ্যপানের বিষয়ে নিষেধ করা হলেও তা মানছেন না অনেকেই।

গুরুদাসপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) গোলাম সারওয়ার হোসেন বলেন, মদপানে মৃত্যুর বিষয়ে অভিযোগ না পাওয়ায় কোনো ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হয়নি।

Please follow and like us:
Pin Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Website Design, Developed & Hosted by ALL IT BD