চলনবিল বার্তা,বর্ষ ০৮ সংখ্যা ৭ বুধবার ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ২৭ ভাদ্র ১৪৩১ ৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিঃ

Spread the love

সম্পাদকীয়
মৌলবাদের অমূলক গন্ধ খুঁজছে বিদেশীরা

প্রথমেই বলি, আমাদের মূল সংবিধান কোন ধর্মীয় দর্শনকে প্রাধান্য দিয়ে রচিত নয়। রাষ্ট্রীয় চার মূলনীতিরও অন্যতম ধর্ম নিরপেক্ষতা।অবশ্য এখন তা পরিমার্জন বা পরিবর্তনের কথা উঠেছে। তাহলেও এটা যে আরো যুগোপযোগী, যৌক্তিক, আধুনিক এবং বিশ্বমানের সর্বজনগ্রাহ্য হবে তাতে সন্দেহ নেই। উল্লেখ্য, ইসলাম সবকিছুতেই মধ্যপন্থা অবলম্বনে বিশ্বাসী, ইসলামের মতো ধর্মনিরপেক্ষতা কোথাও নেই। কোরআনে তাই ধর্মীয় ব্যাপারে জবরদস্তি নাকোচ করা হয়েছে। খুব সুক্ষ্মভাবে লক্ষ্য করলে দেখা যায়, ইসলামের মতো ভিন্ন মত ও অন্য ধর্ম ব্যাপারে সহনশীলতা ও উদারতা এমনকি বিপরীতধর্মী বিশ্বাসীদের জানমালের নিরাপত্তা ও সুরক্ষা দেয়ার যে বিধান বা নিদর্শনাবলী রয়েছে তা ইসলাম ব্যতীত অন্য কোথাও বিরল। এ কথা অন্য ধর্মের বহু মানুষের আজো অজানা আছে।

আর একটি প্রাসঙ্গিক বিষয় হল, পৃথীবিতে গণতন্ত্রের প্রথম নিদর্শন মদিনা সনদে রাসুল (সা.) সব ধর্মের-মতের মানুষকেই ঠাঁই দিয়ে মদিনায় শান্তি স্থাপন করেছিলেন। তাই বাংলাদেশের ন্যায় বহুজাতিক ,বহু মত ও পথের ভূখন্ডে শাসন ব্যবস্থায় কোন একক ধর্মীয়করণ আধুনিক উদার গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে বেমানান, গ্রহণযোগ্য নয় বলে প্রচলিত অভিমত। বিশ্বে ভারতের গণতান্ত্রিক সুনাম থাকলেও পাশাপাশি হিন্দুত্ববাদের বাড়াবাড়ি, বিজেপির ধর্মীয় উগ্রবাদ ও চরমপন্থা মোদি যুগের ভারতকে ইদানিং অশান্ত করে তুলেছে। সেখানে মুসলিম, খৃষ্টানসহ ভিন্ন ধর্মালম্বীদের নির্মূলকরণের নিষ্ঠুর খেলা আজও শেষ হয়নি। তাদের সেই স্ববিরোধ এবং কলংকিত গণতন্ত্রের প্রচুর সমালোচনা হচ্ছে সাড়া বিশ্বে প্রকাশ্যেই।

অপরদিকে বিশ্বে মুসলিম প্রধান ৫২টি দেশ নিয়ে ওআইসি গঠিত। কিন্তু বর্তমানে কোন মুসলিম দেশেই ভালো মুক্ত গণতন্ত্র নেই। আবার সাচ্চা, খাঁটি, নির্ভেজাল ইসলামী কিংবা কোরআনিক সংবিধান বা আইনও নিরংকুশভাবে বিশ্বের কোন মুসলিম দেশে কায়েম রয়েছে বলে জানা যায় না। বরং মধ্যপ্রাচ্যের রাজতান্ত্রিক, একনায়কতন্ত্রের অপশাসিত মুসলিম দেশগুলো মূলতঃ স্বৈরতান্ত্রিক যা ইসলামের সংস্কৃতি ও বৈশিষ্ট্যের সাথে আদৌ যায় না।অথচ সৌদির মতো নির্লজ্জ বাদশাহীতন্ত্র মুসলিম উম্মাহ্র দুই সম্মানিত স্থাপনা মক্কা ও মদিনার পাহাড়াদার নিযুক্ত হয়েছে- এটাও মূল ইসলামী আদর্শের সাথে সাংঘর্ষিক। সে কথা বুঝেও মুসলিম বিশ্ব কেন চুপ থাকে তা-ও সবারই জানা। এসব দেশে ভোট, নির্বাচন, মানবাধিকার, ব্যক্তির ও মতামতের স্বাধীনতা, সুশাসন ও গণতন্ত্র সবই অকল্পনীয়। ফলে সমকালীন দুনিয়ায় ইসলাম ও গণতন্ত্রের যুগপৎ সুষ্ঠু বিকাশ ও প্রগতিশীল চর্চার নজির বহনকারী কোন দেশ বর্তমান বিশ্বে আছে বলে জানা নেই।

আজ ফিলিস্তিনে প্রকাশ্য দীর্ঘ গণহত্যার মতো পৃথিবীর নিষ্ঠুরতম হত্যাযজ্ঞ চলার পরও মুসলিম উম্মাহ্র বিভক্তি-বিভাজন ও শুধুমাত্র অগণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থার দরুন ইহুদিবাদী শক্তির বিরুদ্ধে তারা ঐক্যবদ্ধ হয়ে লড়তে পারছে না। সেজন্যই ইদানিং তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান বারবার ইসলামিক দেশগুলোকে একজোট হওয়ার ডাক দিচ্ছেন। তাই আমাদের দেশে ও দেশের বাইরে আমাদের ছাত্র-জনতা বিপ্লবের পর ধর্মীয় মৌলবাদের উত্থান হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে মর্মে অতি সম্প্রতি বহির্বিশ্বেও জোড় প্রচার ও আলোচনা চলছে যদিও অমূলক এই অপপ্রয়াসের ও অপপ্রচারের পেছনে রয়েছে মতলববাজ ও সদ্য বিপ্লবে পরাজিত-পলাতকদের মদদ ও ইন্ধন। অপরদিকে বাস্তবে এখানে জামায়ত সহ অন্যান্য ইসলামিক দলগুলোকে নিয়ে জোট বাধার প্রয়াস লক্ষ্য করা যাচ্ছে রাজনীতিতে যা অস্বাভাবিক নয়। আওয়ামীলীগের আপাত পতনের পর বিএনপি এখন দেশের বৃহৎ রাজনৈতিক দল। তাদেরও রাজনৈতিক বডিল্যাঙ্গুয়েজ, প্রত্যাশা ও প্রচেষ্টা দেখে দুর্বোধ্য নয় যে, আগামী দিনে দেশে রাজনৈতিক ক্ষমতার নেতৃত্ব দিতে চায় বিএনপি। এরই মধ্যে গোলাম আযমের ছেলে জাতীয় সঙ্গীত ইস্যুতে বিতর্ক উসকে দিয়েছেন এবং অন্যরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে হিজাব বাধ্যতামূলক করার যুক্তিহীন কথাববার্তা ফেসবুকে চাউর করে চলেছেন।

লক্ষ্যণীয় যে, বিএনপিও ইসলামপন্থী বা তেমন মনস্ক দল বললে ভুল হবে না। বর্তমানে আওয়ামী লীগ ও বাম দলগুলো রাজনৈতিক দৃশ্যপটে অনুপস্থিত। সামনে নির্বাচনের পূর্বে তাদের পুনরাবির্ভাব ঘটবে কি না তা সময়ই বলে দেবে। তবে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে,দেশে এই মুহূর্তে ইসলামপন্থী দলগুলো রাজনৈতিক মঞ্চে প্রায় একচেটিয়া সরব ও সোচ্চার। যদিও জামায়াতের প্রধান আমীর ইতিমধ্যে আওয়ামীলীগকে ক্ষমা প্রদর্শনের কথা বলেছেন ও ভিন্ন মতালম্বীদের প্রতি সহিষ্ণুতা প্রদর্শনের আহ্বান জানিয়ে সামঞ্জস্যমূলক উদারচেতা নেতার মতো নমনীয় ধাঁচের বক্তব্য দিয়ে যাচ্ছেন।এমনকি আসন্ন দূর্গাপূজায় তারা মাদ্রাসা ছাত্রদের দিয়ে পূজামন্ডপে নিরাপত্তা দেয়ার কথাও বলছেন। কিন্তু আমরা জানি, এর আগে জামাত-শিবিরের বিতর্কিত কর্মকান্ড এবং হেফাজতের হস্তক্ষেপে শিক্ষা পাঠ্যক্রমে নাক গলানো কেন্দ্রকরে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা হয়েছে। স্বাধীনতার পর আমরা খুব স্পষ্টভাবে লক্ষ্য করেছি, আওয়ামীলীগ তার নিজস্ব দলীয় মতাদর্শ জাতির কাঁধে চাপাতে চেষ্টা করেছে। অনুরূপ বিএনপি-জামাতও তাদের বিগত শাসনামলে অগণতান্ত্রিক নেতিবাচক দৃষ্টান্ত রেখেছে যা দেশবাসীর কাছে সমাদৃত হয়নি। এসব সংকীর্ণ ইস্যুকে তারা জাতীয়করণ করতে চেয়েও ব্যর্থ হয়েছে। কারণ এদেশের মানুষ শুধুমাত্র বঙ্গবন্ধু, জিয়া, মুক্তিযুদ্ধ বা ইসলামি কালচারের একচেটিয়া অন্ধ অনুসারী নয় যদিও কোন রাজনীতির ছদ্মাবরণ ছাড়াই তারা প্রকৃত, যথার্থ ধর্মবিশ্বাসী তথা ধর্মভিরু নিরিহ শান্তিকামী এবং অসাম্প্রদায়িক। ।

মনে রাখা বাঞ্ছনীয়, এখানে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠতা সত্বেও বহুত্ববাদের সংমিশ্রণ রয়েছে, নানা জাতপাত. মত ও পথের সম্মিলন আছে।সবচেয়ে বড় কথা,স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের সূত্রে এদেশের আপামর জনসাধারণের মনে লুকিয়ে আছে গণতন্ত্রের জন্য উদগ্র কামনা-বাসনা ও সীমাহীন আকাংখা। তাই একমাত্র প্রগতিশীল, উদার ও মুক্ত গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ছাড়া অন্য কোন ধর্মীয় বা জগাখিচুড়ী নীতি-পদ্ধতিতে এদেশ শাসন ও পরিচালনা করা আর সম্ভব হবে না। একই কারণে সেই পাকিস্তানের জন্ম থেকেই দেশ স্বাধীনের পর অদ্যাবধি শুধু পূর্ণাংগ গণতন্ত্রের জন্য দেশবাসীকে বারবার আন্দোলন করে রক্ত ঝড়াতে হচ্ছে। সেটাই সাম্প্রতিকের ছাত্র-জনতা গণঅভ্যুত্থানের মূল চেতনা। আর সেই মূল লক্ষ্য-চেতনাকে ভিন্ন খাতে নেওয়ার সুযোগ নেই। মনে হয় এ কারণেই, অতি সম্প্রতি তারেক রহমানও বলেছেন, বাংলাদেশের আগামী নির্বাচন খুব একটা সহজ হবে না।

তাছাড়া আমরা যে রাষ্ট্র মেরামত ও রাষ্ট্র সংস্কারের স্বপ্ন দেখছি যার জন্য এত রক্তক্ষয়ী আন্দোলন ও বিপ্লব সংঘটিত হল। সেটা দীর্ঘ মেয়াদে সফলতার মুখ দেখতে গেলে কোন একক বিশ্বাস ভিত্তিক ধর্মীয় মৌলবাদের আবরণে ও আবহে এবং সাম্প্রদায়িক দর্শনে-মননে সম্ভব হবে না তা সহজেই বোধগম্য। তাই সংস্কার ধারণার মূলে আছে আধুনিক কল্যাণমূলক রাষ্ট্রের চিন্তা-চেতনা। কেননা দীর্ঘ আকাংখিত এই সংস্কারের মধ্যে নিহিত আছে রাষ্ট্রের গভীর চাওয়া-পাওয়া গণমানুষের সুদীর্ঘ প্রতীক্ষিত বহু আশা-প্রত্যাশা। সেটাকে কেবলমাত্র ইসলামীকরণ করার দৃষ্টিতে দেখলে তা সংস্কারের লক্ষ্য-উদ্দেশ্য অর্জনে সহায়ক হবে বলে মনে হয় না। এর পাশাপাশি আর একটা চিন্তার বিষয় হল, বহির্বিশ্বে যেন বাংলাদেশ সম্পর্কে ঠিক এ মুহুর্তে ভুল বার্তা না যায় যে, এখানে ছাত্র-জনতা অভ্যুত্থানের সুবাদে ধর্মীয় মৌলবাদের আবির্ভাব ঘটতে চলেছে। সে ধারণা বদ্ধমূল হলে এবং এ ধরনের দুর্নামের তকমা সেঁটে দিতে পারলে এখানে বৈদেশিক ব্যবসা-বিনিয়োগ ,আন্তর্জাতিক সাহায্য-সমর্থন ও ক’টনৈতিক যোগাযোগ বিঘিœত হওয়ার ঝুঁকি থাকবে যা কারোই কাম্য নয়।

উল্লেখ্য, আওয়ামীলীগ মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে নিয়ে ভোটের রাজনীতি খেলেছে। তবে দেশের জনগণ তাদের সে প্রতারণা ও চাতুর্য বুঝতে পেরেছে এবং ধরেও ফেলেছে। এ যুগে ধর্মের সাথে রাজনীতির মিশেলে যদি রাষ্ট্র ক্ষমতা চর্চিত হয় তা সফল হওয়ার ও খাপ খাওয়ার তেমন সফল নজির নেই। যেমনটা আমরা ইরানে , পাকিস্তানে কিংবা আফগানিস্তানে দেখতে পাই। তারা রাষ্ট্র ব্যবস্থায় ধর্ম, গণতন্ত্র, স্বৈরতন্ত্র সব একসাথে গুলিয়ে ফেলেছে। পরিণামে সমস্যায় পড়ে আছে।

ঝুঁকিতে চলনবিলের মৎস্য ভান্ডার
লিখন আহমেদ
বর্ষায় বিল আর গ্রীষ্মে আবাদি জমি এ নিয়ে গঠিত বাংলাদেশের বৃহত্তম বিলের নাম চলনবিল। সিরাজগঞ্জ নাটোর ও পাবনা জেলা জুড়ে যে জলাভুমি বর্ষা এবং বর্ষা পরবর্তী সময়ে দেখা যায় সেটাই বিখ্যাত চলনবিল। শুকনো মৌসুমে চলনবিলের আসল সৌন্দর্য উপলব্ধি করা না গেলেও বর্ষাকালে চলনবিলের অপরুপ সৌন্দর্য ফুটে ওঠে। বর্ষায় বিশাল চলনবিল কানায় কানায় পানিতে পূর্ণ হয়ে রুপের পসরা সাজিয়ে বসে। পুরো বর্ষাকাল জুড়েই চলনবিল পানিতে পুর্ণ থাকে। চারদিকে পানি থৈ থৈ করে। এসময় বিলের সৌন্দর্যে মানুষ বিমোহিত হয়। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে পর্যটকরা চলনবিলের সৌন্দর্য উপভোগ করতে চলনবিলে আসেন। এই মুহুর্তে দিগন্তপ্রসারি টলমল জলে এক নয়নমনোহর রুপে, এক অপরুপ সাজে সেজেছে চলনবিল। চলনবিল শুধু রুপে নয় গুণেও যেন অতুলনীয়। শুকনো মৌসুমে বিলের উঁচু জমিতে প্রায় সব ধরনের ফসল উৎপাদিত হয়। দেশের অধিকাংশ খাদ্য শষ্যের যোগান আসে চলনবিল থেকে। খাদ্যশষ্যের মতোই মাছের ভান্ডার হিসেবে দেশব্যাপী পরিচিতি রয়েছে চলনবিলের। ভরা বর্ষায় চলনবিল হয়ে ওঠে অনন্তযৌবনা। বর্ষার পানির সাথে প্রচুর পরিমাণ দেশি মাছ প্রবেশ করে বিলে। জেলেরা এসময় মেতে ওঠে মাছ শিকারে। বর্ষা মৌসুম ছাড়াও বিলের নিচু অংশে প্রায় পুরো বছরই চলে মাছ শিকার। বিলের মাছ দেশের বিভিন্ন স্থানের হাট-বাজারে বিক্রি হয়। এছাড়া চলনবিলের দেশী মাছের শুটকি দেশ ছাড়িয়ে বিদেশেও রপ্তানি হচ্ছে। এ থেকে বিকল্প কর্মসংস্থান তৈরি হয়েছে বহু মানুষের। পেশাদার জেলের পাশাপাশি অনেকে মৌসুমী জেলেরা মাছ ধরে নিজেদের চাহিদা মিটিয়ে তা বাজারে বিক্রি করে বাড়তি অর্থ উপার্জন করছে।
সাম্প্রতিক সময়ে বিশাল চলনবিলের সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া, শাহজাদপুর, তাড়াশ, নাটোরের গুরুদাসপুর, পাবনার ভাঙ্গুড়া অঞ্চল ঘুরে দেখা গেছে, বিস্তৃত জলরাশির বুকে ঢেউ ভাঙার খেলা। মাঝেমধ্যে দিগন্ত রেখায় সবুজের আলপনা। এরই মধ্যে চলছে যান্ত্রিক শ্যালো নৌকা। আবার আছে মাছ ধরার বিচিত্র আয়োজনও। বর্ষাকালে মাছ ধরাতে মেতে উঠেছে বিল অঞ্চলের জেলেরা।খড়াজাল, মইজাল, ধর্মজাল, কারেন্টজাল, ঝাকিজাল, বাদাইজালসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম দিয়ে মাছ শিকার করছেন জেলে ও শৌখিন শিকারিরা। তাদের জালে ধরা পড়ছে পুঁটি, ট্যাংরা, পাতাসি, রায়েক, বাইলা, গুচি, টাকি, মৃগেল, কই, শিং, মাগুড়, বোয়াল সহ হরেক রকমের দেশীয় প্রজাতির মাছ। জেলেরা শেষরাতে জাল ও নৌকা নিয়ে মাছ ধরে স্থানীয় বাজারে বিক্রির জন্য নিয়ে আসে। বর্ষাকালে স্থানীয় হাট-বাজারগুলোতে চাহিদার তুলনায় মাছের সরবরাহ বেশী থাকায় অন্যান্য সময়ের তুলনায় কম দামে বেচাকেনা হচ্ছে বিলের মাছ। এসব মাছ এলাকার স্থানীয়দের চাহিদা পূরণ করার পর দেশের আনাচে কানাচে পৌঁছে যাচ্ছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, চলনবিল দেশের মিঠা পানির সর্ববৃহৎ জলাভুমি। যমুনা নদীর বাঘাবাড়ি হুরাসাগর হয়ে বড়াল ও গুমানি নদীপথে বন্যার শুরুতে বিলে দেশীয় প্রজাতির মা মাছ প্রবেশ করে প্রজনন শুরু করে। এক সময় এ বিলটিতে শতাধিক প্রজাতির দেশি মাছ উৎপাদিত হতো। জমিতে অধিক পরিমাণ সার ও কীটনাশক প্রয়োগ, যত্রতত্র পুকুর খনন ও স্থাপনা নির্মাণসহ নানা কারণে অনেক প্রজাতির মাছ ইতোমধ্যে বিলুপ্ত হয়ে গেছে।
চলনবিলে নৌকায় বসে চাঁই পেতে মাছ শিকারি বৃদ্ধ গোলাম মোস্তফা বলেন, বিলেরপাড়ে বাড়ি হওয়ায় ছোট বেলা থেকে বাবার সাথে বিলে মাছ ধরেন তিনি। শখ করে মাছ ধরতে শুরু করলেও পরবর্তীতে তা পেশা হয়ে হয়ে গেছে তার। এখন বয়সের ভারে আগের মতো আর মাছ ধরতে পারেন না। তবুও সংসার চালাতে মাছ শিকার করছেন তিনি। পাঁচ বছর বয়স থেকে তিনি নানান সরঞ্জাম দিয়ে চলনবিলে মাছ ধরে আসছেন। একসময় বিলের পানিতে প্রচুর পরিমাণ দেশিয় মাছ থাকতো। কারেন্টজাল পেতে রাখলে দশ মিনিট পর তা তুলে দেখা যেতো মাছে ভরপুর। বাড়ির বউদের বর্ষাকালে মাছ পরিষ্কার করতে করতে হাতে ঘা হয়ে যেতো। সেসময়ের তুলনায় বর্তমানে বিলে মাছ নেই বললেই চলে। এখন চলনবিলের যত্রতত্র পুকুর খনন আর বিলের মধ্যে দালান কোঠা নির্মাণ হয়েছে। যার ফলে বিলের মাছ বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে। এখন দেশীয় প্রজাতির যেসব মাছ আছে বাজারে তার চাহিদা অনেক বেশী। অন্যান্য নদী কিংবা খালের মাছের তুলনায় স্বাদ বেশী বলে চলনবিলের মাছ বেশী দামে বিক্রি করা যায়। তার মতো শতশত মানুষ মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করছে বলে তিনি জানান।
চলনবিল অধ্যুষিত উল্লাপাড়া উপজেলার উধুনিয়া এলাকার আলাউদ্দিন নামে এক জেলে বলেন, প্রথম ধাপের বন্যায় চলনবিলের প্রতিটি অঞ্চল কানায় কানায় পানিতে ভরপুর হয়ে ওঠে। এখন চারদিকে পানিতে থৈ থৈ করছে। বিলে পানি ঢোকার আগে থেকেই আমরা জাল নৌকা সব প্রস্তুত করে রাখি। পানি আসলে কয়েকমাস জেলেরা মাছ ধরতে ব্যস্ত সময় পার করে। বর্ষার পুরো সময় জুড়ে চলনবিলের বিভিন্ন স্থানে জেলেরা সন্ধা থেকে সারারাত মাছ ধরে এবং সকালে স্থানীয় হাট-বাজারে তা বিক্রি করে। বর্তমানে বিলের পানি কমতে শুরু করেছে। পানি কমার সময় বেশী মাছ পাওয়া যায়। এখন তাদের জালে পুঁটি, ট্যাংরা, পাতাসি রায়েক ইত্যাদি দেশিয় প্রজাতির মাছ বেশী ধরা পড়ছে।
চলনবিল অঞ্চলের মাছের আড়তের কয়েকজন পাইকার বলেন, জেলেরা সারারাত বিলে মাছ ধরে ভোর থেকে মাছ আড়তে আনতে শুরু করে। এসময় বিলের মাছে আড়ত জমজমাট থাকে। পুরো বর্ষার সময়কাল জুড়ে জেলেরা চলনবিলে মাছ ধরে হাট-বাজার ও আড়তে বিক্রি করে। চলনবিল অঞ্চলের অধিকাংশ মানুষ মাছ শিকার করে তাদের তাদের জীবিকা নির্বাহ করছেন বলে তারা জানান।
চলনবিল অঞ্চলের জ্যেষ্ঠসাংবাদিক ও তাড়াশ থেকে প্রকাশিতসাপ্তাহিক চলনবিল বার্তা এর সম্পাদক আবদুর রাজ্জাক রাজু বলেন, শষ্য ও মৎসভান্ডার খ্যাত চলনবিল। এ বিলের উর্বর উদারতায় কখনো সোনালী ধানে ভরে যায় কৃষকের গোলা,উঠোন জুড়ে শোভা পায় সরিষা, গম ভুট্টাসহ বিভিন্ন রকম শষ্য দানা। আবার কখনো জাল ভরা মাছে প্রাণ জুড়িয়ে যায় জেলেদের। বর্ষাকালে জেলেরা চলনবিলে মাছ শিকারে মেতে ওঠে। মাছ শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করে অনেকে। জেলেরা সারারাত মাছ শিকার করে ভোর থেকে হাট-বাজারে তা বিক্রি শুরু করে। বর্ষাকালে চলনবিল অঞ্চলের হাট-বাজারে প্রচুর পরিমাণ দেশীয় মাছ পাওয়া যায়। চলনবিলের মাছে জেলেদের জীবিকা নির্বাহ ও সাধারন মানুষের দেশীয় মাছের চাহিদা পূরণ হয়।
তিনি আরো বলেন, একসময় চলনবিলকে দেশীয় মাছের ভান্ডার বলা হতো। তবে এখন আর আগের মতো মাছ পাওয়া যায় না। চলনবিল থেকে অসংখ্য প্রজাতির মাছের বিলুপ্তি ঘটেছে। জলবায়ুর প্রভাব ও মানবসৃষ্ট কারণে চলনবিলের জীববৈচিত্রের অনেকটাই পরিবর্তন ঘটেছে। চলনবিল রক্ষায় সরকারী উদ্যোগসহ সকলের ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টা দরকার বলে তিনি জানান।

লেখকঃ দৈনিক জনকণ্ঠের উল্লাপাড়া প্রতিনিধি।

চলনবিলের সাহসী সাহিত্যিক কবি আবদুর রাজ্জাক রাজু
ড. মোঃ খায়রুজ্জামান মুননু
(গত ৩০ আগষ্ট শুক্রবার “জামাল উদ্দিন সাহিত্য পরস্কার-২০২৪” প্রদান উপলক্ষে রচিত ও পঠিত নিবন্ধ)
চলনবিল অধ্যুষিত দশটি উপজেলায় কালের গতি প্রকৃতির সাথে তাল মিলিয়ে যুগে যুগেএখানটায় আবির্ভাব ঘটেছে অসংখ্য কবি সাহিত্যিকের। ইতিহাস স্বাক্ষ্য দেয়, মধ্য যুগে চলনবিল ছিল সাহিত্য সাধনার আতুর ঘর। সম্রাট আকবরের রাজত্বকালে গোবিন্দ মোহন রায় “বারেন্দ্র কায়স্থ ঢাকুর” নামক একখানি অমূল্য গ্রন্থ রচনা করে রাজ দরবারে ব্যাপক সমাদৃত হন। কবি গোবিন্দ মোহন রায় মহাশয়ের স্থায়ী নিবাস ছিল বর্তমান উল্লাপাড়া উপজেলার উধুনিয়া গ্রামে। চাটমোহরের প্রমথ চৌধুরী, রায়গঞ্জের অবনিমোহন সেন, শাহজাদপুরের আব্দুস শাকুর, তাড়াশের এম. সেরাজুল হক, গুরুদাসপুরের টিকে আব্দুল হামিদ, বড়াইগ্রামের প্রমথনাথ বিশি- সকল কবি সাহিত্যিকগণই ছিলেন বিশিষ্ট প্রতিভার অধিকারী। তাদের হাতে রচিত হয়েছে অসংখ্য উপন্যাস, কবিতা, ইতিহাস ও গল্প গ্রন্থ। এক সময় তাদের সাহিত্যকর্ম চলনবিলের গন্ডি পেড়িয়ে সমগ্র দেশে ছড়িয়ে পরে এবং পরবর্তিতে তারাই তাদের স্বীয় লেখনি শক্তি দ্বারা চলনবিলের মাটি ও মানুষকে মহিমান্বিত করে তোলেন যা অদ্যাবধি আমাদের সাহিত্যাঙ্গনে প্রেরণার উৎস হিসেবে কাজ করছে।
বর্তমানে চলনবিলাঞ্চলে অনেকেই সাহিত্য চর্চা করছেন বা সাহিত্য সাধনায় নিমগ্ন বয়েছেন। দরিদ্রতার কষাঘাত, জগৎ সংসারে নানাবিধ প্রতিকূলতার মধ্যেও বিগত তিন দশকে এখানকার কবি সাহিত্যিকদের হাতে প্রকাশিত হয়েছে শতাধিক গ্রন্থ। পাঠক মহলে তার বেশিরভাগ সমাদৃত-প্রশংসিত হয়েছে। লক্ষ্যণীয়, এ সকল গ্রন্থে প্রাধান্য পেয়েছে চলনবিলের রুপ রহস্য, জীববৈচিত্র ও খেটে খাওয়া মানুষদের দুঃখ, ব্যথা-বেদনার গল্প কাহিনী। চলনবিলের মানুষ জন্মগতভাবেই সংগ্রামী ও সাহসী। বৈরী আবহাওয়া, ঝড়, বন্যা ও প্রকান্ড জলরাশির সাথে দুর্বার লড়াই মোকাবেলা করে তারা ঘর সংসার পরিচালনা করে থাকে। তাই বিস্তর অসংগতির সংঙ্গে বন্ধুত্ব স্থাপন করেই বিলাঞ্চলের কবি সাহিত্যিকেরা পথ চলতে জানে। বিংশ শতাব্দির মধ্যভাগে চলনবিলের সাহিত্য সাধনা যখন খানিকটা ঝিমিয়ে পড়েছিল, ঠিক সে সময় আবির্ভূত হন আমাদের সাহসী সাহিত্যিক কবি আবদুর রাজ্জাক রাজু। তিনি একাধারে পাঁচখানি গ্রন্থ রচনা করেন। জলে বাস করে কুমিরের সাথে লড়াই করার শক্তিশালী কলম চালিয়েছেন এই সাহসী কবি। সত্য প্রকাশে তিনি কাউকেই ছাড় দেননি। উপর তলার মানুষ, সমাজপতি, রাজনীতিবিদ, ছাত্র-শিক্ষক, ধর্মগুরু, সরকারী কর্মচারী এমনকি কবি লেখকদেরও কড়া ও তীর্যক বাক্য বাণে শাসন করেছেন। তার সকল গ্রন্থে সমভাবে উচ্চারিত হয়েছে মানবতার জয়গান। ২০১৫ সালে প্রকাশিত “প্রতিচ্ছবি” কাব্য গ্রন্থে কবি আবদুর রাজ্জাক রাজু সমকালীন সমাজ ও রাজনীতির অসাধারণ কাব্যিক প্রতিফলন ঘটিয়েছেন। তিনি তথাকথিত রাজনীতিকদের বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে উচ্চারণ করেন,
“ফকির থেকে রাজা হয় রাজনীতির জোরে
অপবাদ ঘুঁচে যায় রাজনীতির তোরে”।

(কবিতার শিরোনাম- “আমাদের রাজনীতি”। পৃষ্ঠা-২১)
কবি আবদুর রাজ্জাক রাজু নিজেও একজন সু-লেখক। যারা লেখা-লেখি, সাহিত্য রচনায় নিবেদিত তাদের আত্মিক শিথিলতা তিনি হৃদয় দিয়ে অনুধাবন করেছেন। তিনি কায়মনে বিশ্বাস করেন, কবি সাহিত্যিকেরা হবেন সত্যের দিশারী, আদর্শের অনুসারী ও মানবতার পূজারী। তাইতো তিনি লেখক সাহিত্যিকদের উদ্দেশ্যে এক রকম শাসনের সুরেই ঘোষণা করেন,
“নিবেদিত একজন সাহিত্যিকের আজকে করণীয় কী ?
শুধুই কি নান্দনিক শিল্পের মোহে ব্যস্ত নির্লিপ্ত থাকা
অথচ চারিদিকে চলছে দুর্নীতি অবক্ষয়ের অব্যাহত মহোৎসব”।

(কবিতার শিরোনাম- “আজ কবিদের কাজ কী?”। পৃষ্টা-৮৩)
যেখানে গুণী মানুষের কদর আছে, সেখানেই গুণীজন জন্মে- এই প্রচ্ছন্ন বাক্যের মর্মকথা কবি আবদুর রাজ্জাক রাজু তাঁর সাহিত্যকর্মে ব্যাপকভাবে প্রতিফলন ঘটিয়েছেন। তাইতো তিনি ২০১৬ সালে সম্পাদনা করেন “চলনবিল রতœ” নামে মহামূল্যবান স্মারক গ্রন্থ যেখানে স্থান পায় আমাদের সবার প্রিয় স্বনামধন্য লেখক এমএ হামিদ স্যারের তাৎপর্যপূর্ণ জীবনী। প্রবন্ধাকারে সম্পাদিত এই প্রন্থে কয়েকটি দুর্বল লেখা সন্নিবেশিত হলেও নিঃসন্দেহে তা সাহসী উদ্যোগ। কবি আবদুর রাজ্জাক রাজু ছিলেন খাঁটি মুসলিম পরিবারের সদস্য। মাতুল কুলের সবাই ইসলাম ধর্মের প্রতি ছিলেন অধিক সচেতন। কবির স্বীয় নানাজান ব্রীটিশ আমলে গ্রামের মসজিদে ইমামতি করতেন যার প্রভাব পরবর্তী সময়ে কবির জীবনে দারুনভাবে প্রতিফলিত হয়। ২০১৮ সালে ধর্মপরায়ণ আবদুর রাজ্জাক রাজু সংকলিত গ্রন্থ “কোরআনের তাৎপর্য ও মাহাত্ম্য সম্পর্কে কোরআনের ভাষ্য” নামীয় একখানি গ্রন্থ প্রকাশ করে বিশেষ সুনাম অর্জন করেন।
২০২৩ সালে কবি দেশ মাতৃকার টানে রচনা করেন “মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিময় দিনগুলি”। এটি নিঃসন্দেহে একটি গবেষণাধর্মী গ্রন্থ। সত্য কাহিনী অবলম্বনে এ গ্রন্থে চলনবিলাঞ্চলে সংঘটিত মুক্তিযুদ্ধের অনেক অজানা ইতিহাস উন্মোচিত হয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শী হিসেবে তিনি অনেক যুদ্ধাপরাধীদের নাম উল্লেখ করতে দ্বিধাবোধ করেননি এবং সাহসিকতার সাথে তার প্রতিকার চেয়ে রাষ্ট্র ও সরকারকে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছেন। গ্রন্থের বর্ণনা মতে (পৃষ্ঠা নং-২০) সহজেই অনুমান করা যায়, তিনি ছিলেন প্রকৃতই একজন স্ব-ঘোষিত মুক্তিযোদ্ধা। কবির পঞ্চম ও সাম্প্রতিককালেরশেষ গ্রন্থ “সময়ের প্রতিধ্বনি”। অন্যায়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার অসাধারণ একটি কাব্যগ্রন্থ যার প্রতিটি চরণে যুক্ত হয়েছে সাহসী বর্ণ ও শব্দ। কবি পাঠকদের চোখে আঙ্গুল দিয়ে বুঝিয়েছেন, সাহিত্যের শক্তি দুর্নিবার নয়। তাড়াশ থানার পশ্চাদপদ জনপদ আসানবাড়ী গ্রামে জন্ম নেয়া সাহসী সাহিত্যিক কবি আবদুর রাজ্জাক রাজু আমাদের মাঝে বেঁচে থাকুক হাজার বছর। উল্লেখ্য, সময়োপযোগী সাহিতা চর্চা, সাহসী উচ্চারণ, নির্ভিক শব্দ চয়ন, সংগ্রামী বাক্য বিন্যাস কবিকে আজকের এই “জামাল উদ্দিন সাহিত্য পুরস্কার-২০২৪” প্রাপ্তিতে সহায়ক হিসেবে কাজ করেছে। সবাইকে ধন্যবাদ।
ধন্যবাদান্তে-
ড. মোঃ খায়রুজ্জামান মুননু
(বিশিষ্টলেখক,গবেষক ও সমাজসেবী
প্রধান সমন্বয়ক, পুরস্কার মনোনয়ন উপ-কমিটি।
জামাল উদ্দিন সাহিত্য পুরস্কার-২০২৪।)

রাষ্ট্র মেরামত – রাষ্ট্র সংস্কার
আবদুর রাজ্জাক রাজু

রাষ্ট্র মেরামত-রাষ্ট্র সংস্কার
বহুদিনের বলাবলি প্রয়োজন দরকার।
রাষ্ট্র সংস্কার কোথা থেকে শুরু তার
কেউ বলে সংবিধান কেউ বলে শিক্ষার।
কেউ বলে রাজনীতি, স্বাস্থ্য বা ন্যায়বিচার
কেউ পুলিশ-প্রশাসন কেউ আর্থিক খাতটার।
রাষ্ট্র মেরামত-রাষ্ট্র সংস্কার
এ জাতির সারা দেহে ক্ষত আর ক্যান্সার।

সংস্কার আরম্ভ কোথা থেকে হবে আর
সুদ-ঘুষ দুর্নীতি-দূষণে সব ছাড়খার।
চাঁদাবাজি-দখল ও সিন্ডিকেটে জেরবার
কিভাবে সফল হবে মেরামত-সংস্কার।
আইন আর সুশাসন বড় বেশী ঘাটতি যার
রাষ্ট্রযন্ত্র পুরো রগ্ন অসুস্থতার শিকার।
ভোট-নির্বাচন দিয়ে হবে নাকো সংস্কার
নিশ্চিত হতে হবে মানব-ভোটের অধিকার।

কোন্ খাতে হাত দিবে প্রথমেই ভাববার
যে করবে শুরু তারও মনে স্তুপ ময়লার।
রাষ্ট্র মেরামত-রাষ্ট্র সংস্কার
দূষিত-কলুষিত, মন-মগজ-মাথাটার।
আরো পচন আছে বেশি লোভ আর লালসার
কিভাবে হবে ধোলাই বিধ্বস্ত মানসিকতার।
আপাদমস্তক ছেয়ে আছে নষ্টামি চিন্তার
লুটপাটের নেশাটা কিভাবে হবে পরিহার।

এদেশের অর্থ সম্পদ বিদেশে করে পাচার
কিভাবে হবে তার রাশ টানা প্রতিকার।
রাষ্ট্র মেরামত-রাষ্ট্র সংস্কার
সততার ও আদর্শ রাজনীতি দরকার।
কামাই-রোজগারের ধান্দা নেতৃত্ব ক্ষমতার
এসব থাকলে নেশা বৃথা স্বপ্ন সংস্কার।
দেশপ্রেম দেশাত্মবোধ প্রমাণিত নেই যার
কেমনে হবে তবে এ দেশটা পরিষ্কার।

দিনক্ষণ রূপরেখা দিয়ে কেমনে হবে তার
দরকার পরিবর্তন নীতি ও নৈতিকতার।
রাষ্ট্র মেরামত-রাষ্ট্র সংস্কার
বাস্তবে সবার চরিত্রের সংশোধন দরকার।
শুধু আইনে-সংবিধানে কে দেবে নিশ্চয়তার
মানুষ না সভ্য হলে কিভাবে হয় সংস্কার।
তাই আগে সব মানুষগুলোর মেরামত দরকার
তা না হলে দেখা যাবে শুধু ছবি হতাশার।
০২.০৯.২৪

ঘুষ খাওয়া বন্ধ করতে হবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
ডেস্ক রিপোর্ট ঃ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন শুধু কোটার জন্য হয়নি। এর পেছনে মূল কারণ হিসেবে কাজ করেছে ঘুষ, দুর্নীতি ও দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি। ঘুষ খাওয়া চলবে না। যেভাবেই হোক ঘুষ খাওয়া বন্ধ করতে হবে। এর কোনো বিকল্প নেই বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.)। গত সোমবার সকালে রাজধানীর বকশিবাজারে কারা অধিদপ্তরে কারা কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন। কারাগারের সমস্যার কারণ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ঘুষ ও দুর্নীতি বন্ধের মাধ্যমে কারাগারের বেশির ভাগ সমস্যার সমাধান সম্ভব। কারাগারকে সংশোধনাগার হিসেবে গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়ে জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, কারারক্ষী ও কয়েদিদের খাবারের মান উন্নত করতে হবে। সূত্রঃ মানবজমিন

পুলিশ সংস্কারে শীঘ্রই কমিটি গঠন

ডেস্ক রিপোর্ট ঃ স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী জানিয়েছেন, পুলিশ সংস্কারে শিগগির কমিটি গঠন করা হবে। গত সোমবার সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে বাংলাদেশে নিযুক্ত জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচির (ইউএনডিপি) প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে তিনি এ কথা জানান।সাক্ষাৎকালে দুই পক্ষের মধ্যে পুলিশ সংস্কার, বন্যা পুনর্বাসনসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়।পুলিশ সংস্কারের বিষয়ে উপদেষ্টা বলেন, এটি এখনো প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। এ বিষয়ে এখনো কোনো কমিটি গঠিত হয়নি। তবে শিগগির পুলিশ সংস্কারের লক্ষ্যে প্রাথমিক কমিটি গঠন করা হবে।
ইউএনডিপির আবাসিক প্রতিনিধি বলেন, বাংলাদেশের পুলিশ সংস্কার এমনভাবে হওয়া উচিত যাতে জনগণ পুলিশের ওপর আস্থা ও বিশ্বাস অর্জন করতে পারে এবং কোনো সমালোচনা না হয়। তিনি সুশীল সমাজের প্রতিনিধিকে অন্তর্ভুক্ত করে জনগণের সঙ্গে আলোচনা করে মতামত নিয়ে ব্যাপক পরিসরে এ সংস্কার বাস্তবায়নের পরামর্শ দেন। এ ক্ষেত্রে জাতিসংঘ প্রয়োজনীয় কারিগরি ও আর্থিক সহযোগিতা দিতে প্রস্তুত বলেও জানান তিনি। সূত্রঃ আমার সংবাদ।
তাড়াশ প্রেস ক্লাব নিয়ে রশি টানাটানি

স্টাফ রিপোর্টার ঃ সিরাজগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী তাড়াশ প্রেস ক্লাব এর কার্যকরী কমিটি গঠন নিয়ে গত বেশ কিছুকাল যাবৎ দুই পক্ষের মধ্যে রশি টানাটানি চলছে।তা ভালই উপভোগ করছেন তাড়াশবাসী।
গত আগষ্ট মাসে দেশে পট পরিবর্তনের সাথে অজ্ঞাত কারণে তাড়াশ প্রেস ক্লাবের বুলবুল-শামীম নেতৃত্বাধীন কার্যকরী কমিটি ভেঙে যায়। প্রথমে ১৯ আগষ্ট পদত্যাগ করেন ক্লাবের সম্পাদক শামিউল হক শামীম।অত:পর সভাপতি আতিকুল ইসলাম বুলবুল পদ ছেড়ে দেন ২৯ আগষ্ট জ্যেষ্ঠ সদস্য সাব্বির আহমেদ বরাবর পত্র দিয়ে যা তিনি ২ সেপ্টেম্বর গ্রহণ করেন।
এমতাবস্থায় গত ২ সেপ্টেম্বর প্রেস ক্লাবের অন্যতম সিনিয়র সদস্য সাব্বির আহমেদকে সভাপতি ও সানোয়ার হোসেন সাজুকে সাধারণ সম্পাদক মনোনীত করে তাড়াশ প্রেস ক্লাবের ১১ সদস্য বিশিষ্ট দ্বিবার্ষিক কার্যকরী কমিটি গঠিত হয়।এরপরই বিশেষত: সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শুরু হয় কমিটি গঠন কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি দাবি, নাকোচ, মন্তব্য ও বক্তব্য যা এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত চলমান। শুধু তাই নয়, তারা এর সুরাহাকল্পে উভয় পক্ষ ছুটে যাচ্ছে তাড়াশ ও সিরাজগঞ্জের বিএনপি ও জামাতে ইসলামী নেতাদের কাছে। আরো শরণাপন্ন হচ্ছে সিরাজগঞ্জ প্রেস ক্লাব, প্রশাসন, র‌্যাব, পুলিশ, সেনাবাহিনিও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের। তাড়াশ সদরে চলছে দফায় দফায় প্রেস ক্লাবের বিভিন্ন দল-উপদলের গোপন ও প্রকাশ্য বৈঠক। এই অস্বাস্থ্যকর ও অশোভনীয় পরিস্থিতির মধ্যেই প্রেস ক্লাবের তালাচাবি নিয়েও চলে টানাটানি ও লুকোচুরি। এক দল তালা মারলে অপর দল তা ভেঙে ফেলে। সর্বশেষ সাব্বির আহমেদের দলের হাতে তালাচাবির হেফাজত বহাল রয়েছে বলে জানা গেছে। জনান্তিকে প্রকাশ, প্রেস ক্লাবের কমিটি গঠন ও রেজুলেশন খাতায় সদস্যদের স্বাক্ষরের বিনিময়ে আর্থিক লেনদেনের ঘটনা পর্যন্ত ঘটেছে যা ঘৃণ্য এবং নিন্দনীয়।
উল্লেখ্য, গঠনতন্ত্রবিহীন তাড়াশ প্রেস ক্লাব কেন্দ্র করে বিচিত্র সিন্ডিকেট, বাণিজ্য, স্বেচ্ছাচারিতা, অনিয়ম, অব্যবস্থাপনা, নৈরাজ্য ও দুর্নীতি দীর্ঘদিন যাবত অব্যাহতভাবে চলে আসার প্রেক্ষাপটে বর্তমান অচলাবস্থার সৃষ্টি। এর আগে চলতি বছরের প্রথম দিকে তাড়াশ উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের একজন স্বনামধন্য সাবেক ডেপুটি কমান্ডার এবং এই প্রেস ক্লাবের অন্যতম প্রতিষ্ঠাকালীন উদ্যোক্তা প্রেস ক্লাবের আরেকজন প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ও বর্তমানে লেখক-সাংবাদিক ও সম্পাদককে তার বহুদিনের আবেদনের প্রেক্ষিতে ক্লাবের কার্যকরী সদস্য হিসেবে অন্তর্ভূক্ত করে নিতে লিখিত আবেদন জানালে তা অগ্রাহ্য করা হয়। এর কারণ হল তাকে নেয়া হলে বিদ্যমান অপসাংবাদিকতা কিংবা হলুদ সাংবাদিকতা হোচট খাবে। সেই শঙ্কা ও অনুমিতি থেকে তাকে আজো অত্যন্ত অন্যায় ও অন্যায্যভাবে এই প্রেস ক্লাবের বাইরে রাখা হয়েছে।যা চরম বিবেকবর্জিত ও অকৃতজ্ঞতার শামিল বলে স্থানীয় পর্যবেক্ষক মহল মনে করেন। তবে এ প্রসঙ্গে নতুন সাধারণ সম্পাদক সানোয়ার হাসেন বলেন, এবার তাড়াশের সব সক্রিয় সাংবাদিককে আমরা তাড়াশ প্রেসক্লাবের এক ছাতার তলে আনার ঐতিহাসিক কাজটি করতে চাই।

হাল ধরবে কে আওয়ামী লীগের ?

ডেস্ক রিপোর্ট ঃ গণআন্দোলনের মুখে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা দেশ ছাড়ার পর এখনও নিজেদের স্বাভাবিক চলাফেরা ও জীবনের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন দলটির সর্বস্তরের নেতারা। দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ কেন্দ্রীয় বহু নেতারাও ‘আত্মগোপনে’ রয়েছেন। গ্রেপ্তার হয়েছেন অনেকে। ফলে দলে নেতৃত্বশূন্যতা অনুভব করছেন বলে জানিয়েছেন তৃণমূলের নেতাকর্মীরা।
এমন অবস্থার মধ্যে সামাজিক মাধ্যমসহ বিভিন্ন মহলে গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে যে, শিগগিরই আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটিতে পরিবর্তন আসতে যাচ্ছে। এক্ষেত্রে নতুন নেতৃত্বে কারা আসছেন, সেটি নিয়েও নানান আলোচনা শোনা যাচ্ছে।সাংগঠনিক এ বিপর্যস্ত পরিস্থিতির মধ্যে সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এবং নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের সাবেক আলোচিত মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব নিয়ে দলের হাল ধরতে যাচ্ছেন বলে সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ বিভিন্ন মাধ্যমে গুঞ্জন উঠেছে। তবে এ ধরনের গুঞ্জনকে অপপ্রচার বলে দাবি করেছেন দলটির শীর্ষস্থানীয় কয়েকজন নেতা। সূত্র: বিবিসি বাংলা।

তাড়াশে পূজা উদযাপন কমিটি গঠনের প্রস্তুতি সভা

সাব্বির আহমেদ ঃ সিরাজগঞ্জের তাড়াশে উপজেলা পূজা উদযাপন কমিটি গঠনের প্রস্তুতি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গত শনিবার দুপুরে তাড়াশ উপজেলা বিএনপির সভাপতি স ম আফসার আলীর সভাপতিত্বে দলিল লেখক সমিতি মাঠে ওই সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন সিরাজগঞ্জ জেলা পূজা উদযাপন কমিটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক অমর কৃঞ্চ শাহা। বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা পূজা উদযাপন কমিটির যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক মানিক শাহা,তাড়াশ উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এটি এম আমিনুর রহমান টুটুল,সাংগঠনিক সম্পাদক প্রভাষক সাইদুর রহমান, যুবদলের আহ্বায়ক শাহ আলম, যুগ্ন আহ্বায়ক মাসুম প্রমুখ।উক্ত সভায় তাড়াশ উপজেলা পূজা উদযাপন কমিটির সাবেক সভাপতি রজত কুমার ঘোষ উপস্থিত ছিলেন। এ সময় বক্তাগণ বিগত ফ্যাসিষ্ট সরকারের সময় বিভিন্ন অন্যায় কর্মকান্ডের সমালোচনা করেন এবং তাড়াশ উপজেলায় একটি সুষ্ঠু সুন্দর পূজা উদযাপন কমিটি গঠনের ব্যাপারে একমত হন।উল্লেখ্য সমগ্র অনুষ্ঠানটি স্ঞ্চালন করেন হিন্দু নেতা আশুতোষ স্যান্যাল।

তাড়াশের রোকনপুরে ফ্রি মেডিক্যাল ক্যাম্প

আশরাফুল ইসলাম আসিফঃ সিরাজগঞ্জের তাড়াশ ১নং তালম ইউনিয়নের রোকনপুর গ্রামে ১৪ তম ফ্রি মেডিক্যাল ক্যাম্প অনুষ্ঠিত হয়েছে।গত শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে রোকনপুর দাখিল মাদ্রাসায় সকল হত দরিদ্র মানুষদের, এডুকেশন ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম ইডিপি ও আর্থিক সহযোগিতা ড. ফজলুর রহমান ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে ফ্রীতে সেবা ও ঔষধ দেওয়া হয়। সার্বিক সহযোগিতায় ছিলেন, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও সমাজ সেবক আব্দুর রাজ্জাক টুর এন্ড ট্রাভেলসের স্বত্বাধিকারী মোঃ আব্দুর রাজ্জাক খান। সকাল থেকে প্রায় ৩শত হতদরিদ্র মানুষের সেবা ও ঔষধ দেওয়া হয়েছে।

তাড়াশে হুইল চেয়ার নিয়ে বৃদ্ধার বাড়ীতে
আরিফুল ইসলাম, তাড়াশ প্রতিনিধি: সিরাজগঞ্জের তাড়াশের তালম ইউনিয়নের রোকনপুর গ্রামের দামড়ায় ঝুপড়ি ঘরে বসবাস বৃদ্ধা কহিনুর বেগমের। বয়সের ভারে চলাচলে ভীষণ কষ্ট পেতেন তিনি। বিষয়টি জানতে পেরে গত সোমবার তার বাড়িতে হুইল চেয়ার নিয়ে উপস্থিত হন আব্দুর রাজ্জাক ট্যুরস এন্ড ট্রাভেলসের স্বত্বাধিকারী আব্দুর রাজ্জাক খান। এ সময় তার পাশে কিছুক্ষণ সময় কাটান তিনি।আ: রাজ্জাক খান বলেন, ‘আমি অসহায় বয়স্কদের জন্য নানা পদক্ষেপ হাতে নিয়েছি। তার অংশ হিসেবে বৃদ্ধার অসহায়ত্বের কথা বিবেচনা করে হুইল চেয়ার নিয়ে তার বাড়িতে দেখতে যাই। এ ছাড়াও আগামীতে যত সহযোগীতা পারি দিয়ে যাবো।’

নতুন সংগঠন জাতীয় নাগরিক কমিটি

ডেস্ক রিপোর্ট ঃ ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের পতনের পর ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার বিলোপ এবং নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তেরর চলমান লড়াই সফল করার লক্ষ্যে জাতীয় নাগরিক কমিটির আত্মপ্রকাশ ঘটেছে। মুহাম্মাদ নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীকে আহ্বায়ক এবং আখতার হোসেনকে এ কমিটির সদস্য সচিব করা হয়েছে। আহ্বায়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী কিছুদিন আগ পর্যন্ত এবি পার্টির সহকারী তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক ছিলেন। এর আগে তিনি বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার নেতৃত্ব দিয়েছেন।
আর সদস্য সচিব আখতার হোসেন গণতান্ত্রিক ছাত্রশক্তির আহ্বায়ক। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সাবেক সমাজসেবা সম্পাদক। ৫৫ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা ধারণ করে জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করে রাষ্ট্রের সংস্কার ও পুনর্গঠনের লক্ষ্যে কাজ করবে। গত রোববার বিকালে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এক সমাবেশের মাধ্যমে এ কমিটির আত্মপ্রকাশ ঘটে। কমিটির মুখপাত্র করা হয়েছে সামান্থা শারমিনকে। বাকি ৫২ জন কমিটিতে সদস্য হিসেবে কাজ করবেন। সংহতি, প্রতিরোধ, পুনর্গঠন মূলনীতিকে সামনে রেখে গঠিত নাগরিক কমিটির ৮টি লক্ষ্য তুলে ধরেন মুখপাত্র সামান্থা শারমিন। সূত্রঃ মানবজমিন।
রায়গঞ্জে হিন্দু ধর্ম ছেড়ে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ

রায়গঞ্জ প্রতিনিধি ঃ মুসলমানদের আচার-ব্যবহার, ধর্মীয় রীতিনীতি ও ইসলাম ধর্ম সম্পর্কে জেনে মুগ্ধ হয়ে স্বেচ্ছায় ও স্বজ্ঞানে সনাতন হিন্দু ধর্ম ত্যাগ করে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছেন তাপস কুমার রুহিদাস (৩৫) নামের এক যুবক। গত মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সিরাজগঞ্জের মোকাম নোটারী পাবলিকের কার্যালয়ে হাজির হয়ে হলফনামার মাধ্যমে পাকাপাকিভাবে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। তাপস কুমার রুহিদাস নাম পরিবর্তন করে তার নাম রেখেছেন মোঃ তৌহিদুল ইসলাম।
কার্তিক কুমার রুহিদাস সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ উপজেলার সোনাখাড়া ইউনিয়নের ভূইয়ট গ্রামের তাপস কুমার রহিদাসের ছেলে। গত বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) সকালে সিরাজগঞ্জের আমলী আদালতের আইনজীবী সোহেল রেজা এ তথ্য নিশ্চিত করেন।জানা যায়, তাপস এক বছর পূর্বে স্থানীয় একজন অভিজ্ঞ মাওলানার মাধ্যমে কালেমা ত্যায়েইবা পড়ে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন এবং সেদিন থেকে তিনি ইসলাম ধর্মের শরিয়ত বিধি বিধান মোতাবেক চলাফেরা শুরু করেন।

শেষের পাতার ফিচার
ঘোড়া দিয়ে জমি মই জনপ্রিয় হচ্ছে তাড়াশে

গোলাম মোস্তফা, বিশেষ সংবদদাতাঃ কালের বিবর্তনে কৃষি কাজে গরু-মহিষের জোয়াল-মইয়ের প্রচলন উঠে গেছে। এখন কালে-ভাদ্রে হঠাৎ দেখা মেলে। কিন্তু জনপ্রিয়তা বাড়ছে ঘোড়ার জোয়াল-মই দিয়ে আমন ও বোরো ধান চাষের।
এদিকে ঘোড়ার গাড়িওয়ালারা জানিয়েছেন, স্থানীয় কৃষকদের কাছে বেশ চাহিদা রয়েছে ঘোড়ার মই দিয়ে চাষের জমির কাঁদা মাটি সমান করে নেওয়ার। এ কাজে গাড়িওয়ালাদেরও লাভ হচ্ছে। (৪ সেপ্টেম্বর) বুধবার দুপুরে সিরাজগঞ্জ জেলার তাড়াশ উপজেলার বিনসাড়া গ্রামের পশ্চিমের বিস্তীর্ণ মাঠে দেখা যায়, ছয়টি ঘোড়া দিয়ে ছয়জন ঘোড়ার গাড়িওয়ালা পাশাপাশি জমিতে মই দিচ্ছেন। গাড়িগুলো বিনসাড়া-কুসুম্বী গ্রামীণ সড়কের ধারে একটি স্থানে রেখে দিয়েছেন।
বারুহাস ইউনিয়নের বিনসাড়া গ্রামের কৃষক ইলিয়াছ আলী, রুবেল আহমেদ ও হাফিজুর রহমান বলেন, পুরো উপজেলাতে গরুর জোয়াল-মই নাই। মহিষ দিয়ে এক থেকে দুইজন মই দিয়ে থাকেন। ট্রাক্টর, পাওয়ার সাধারণত টিলার প্রয়োজনের সময় পাওয়া যায়না। বিশেষ করে ঘোড়ার মইয়ে জমির মাটি সঠিকভাবে সমান হয়। এজন্য জমিতে সেচ দিতে সুবিধা হয়। প্রতিটি ধান গাছের গোড়ায় সম পরিমাণে পানি থাকে। এতে জমির ধান ছোট-বড় না হয়ে এক সঙ্গে বেড়ে ওঠে। ফলনও ভালো হয়।
তালম ইউনিয়নের জন্তিপুর গ্রামের ঘোড়ার গাড়িওয়ালা আয়জদ্দি ফকির বলেন, তিনি ঘোড়ার গাড়িতে ধান ও অন্যান্য মালামাল বহন করতেন। পরে ঘোড়া দিয়ে জমিতে মই দিতে শুরু করেন। তিনি আরো বলেন, ঘোড়ার জোয়াল-মইয়েই সম্ভব কাঁদা মাটি সঠিকভাবে সমান করা। কারণ ঘোড়া ইচ্ছে মত একই জায়গাতে তিন থেকে চার বার ঘুরানো যায়। ফলে জমির মাটি কোথাও উঁচু-নিচু থাকেনা। ট্রাক্টর, পাওয়ার টিলার কিংবা মহিষের জোয়াল-মইয়ে নয়, বরং ঘোড়ার জোয়াল-মইয়ে কৃষকের আস্থা বাড়ছে।
আয়জদ্দি ফকিরের নাতি আশরাফুল ইসলাম বলেন, তাড়াশে গত বছর বেরো মৌসুমে প্রথমে আমার নানা কৃষি কাজে ঘোড়ার জোয়াল-মইয়ের প্রচলন শুরু করেন। তার দেখে অনেকেই এ কাজ পেশা হিসাবে নিচ্ছেন। আমি নিজেও আমন ও বোরো মৌসুমে ঘোড়া দিয়ে মই দিচ্ছি। প্রতিদিন কমপক্ষে ১০ বিঘা জমি মই দেওয়া যায়। একই মাঠে কাছাকাছি জমি হলে আরো বেশি জমিতে মই দেওয়া সম্ভব। এক বিঘা জমিতে মই দিয়ে ২০০ টাকা পাওয়া যায়। এ কাজ করে সংসারের আর্থিক অনটন কেটে গেছে আমাদের।জানা গেছে, তাড়াশের আয়জদ্দি ফকিরের দেখে পার্শ্ববর্তী সিংড়া ও গুরুদাসপুর উপজেলাতেও ঘোড়ার মই দিয়ে জীবীকা নির্বাহ করছেন অনেকে।সিংড়ার আরশেদ আলী বলেন, আমরা তিনজন এসেছি সিংড়া থেকে। তাড়াশে পুরোদমে আমন ধান রোপন শুরু হয়েছে। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ঘোড়ার মই দিচ্ছি জমিতে।
এ প্রসঙ্গে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন সাপ্তাহিক চলনবিল বার্তাকে বলেন, ঘোড়ার জোয়াল-মই কৃষকদের মধ্যে বেশ সাড়া ফেলেছে। লক্ষ্য করছি, জমির কাঁদা মাটি সমান করতে ঘোড়ার মইয়ের বিকল্প নাই। মাটি সমান হলে ধানও ভালো হবে।
সিংড়ায় পলকের বিরুদ্ধে আরও এক মামলা

সিংড়া প্রতিনিধিঃ সাবেক ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী ও নাটোর জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি জুনাইদ আহমেদ পলকের বিরুদ্ধে নাটোরের সিংড়া থানায় আরও একটি মামলা হয়েছে।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ধানের শীষের প্রচারণায় বিএনপি নেতাদের ওপর হামলা-মারধর-মোটরসাইকেল ভাঙচুরের অভিযোগে বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাতে মামলাটি করেন তাজপুর ইউনিয়ন যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক হাবিবুর রহমান হাবিব।মামলায় জেলা আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়াবিষয়ক সম্পাদক ও তাজপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মিনহাজ উদ্দিনসহ ১৪ জন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়েছে।

রায়গঞ্জ প্রেস ক্লাবের আহবায়ক কমিটি গঠন
আব্দুল কুদ্দুস তালুকদারঃ দেশের পরিবর্তিত রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারনে ঐতিহ্যবাহী রায়গঞ্জ প্রেস ক্লাবের গঠনতন্ত্র মোতাবেক নির্বাচিত কমিটির মেয়াদ ১ বছর বাকী থাকতেই কার্যকরী কমিটি বিলুপ্ত করে আহবায়ক কমিটি গঠিত হয়েছে। গত ৪ আগষ্ট দূস্কৃতজন কর্তৃক ক্লাবের ধানঘড়াস্থ নিজস্ব অফিস পুড়ে ছারখার করার কারনে সংগঠনের বিশেষ সভা অনুষ্ঠিত হয় গত শনিবার বেলা ১১ টায় সদস্য মাওলানা আবুল কালাম বিশ্বাসের সিমলা গ্রামের বাসভবনে বিদায়ী সভাপতি কে এম রফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে। সাংবাদিক ডঃ গোলাম মোস্তফার উপস্থাপনায় সভায় বক্তব্য রাখেন প্রফেসর ফজলুল হক খান, প্রফেসর আসাদুল আলম, প্রফেসর আব্দুল্লাহ প্রমূখ।

সভার প্রারম্ভেই সভাপতি সাহেব নির্বাচিত কার্যকরী কমিটি বিলুপ্ত ঘোষনা করেন। পরে সর্বস্মতিক্রমে মাওলানা আবুল কালাম বিশ্বাসকে আহবায়ক, আতিক মাহমুদ আকাশকে যুগ্ম আহবায়ক, আলী হায়দার আব্বাসীকে সদস্য সচিব, আলহাজ্ব খোরশেদ আলমকে কোষাধ্যক্ষ ও আব্দুল্লাহ সরকার, আব্দুল লতিফ, আশরাফ আলীকে কার্যকরী সদস্য মনোনয়নপূর্বক ৭ সদস্য বিশিষ্ট প্রেস ক্লাবের আহবায়ক কমিটি গঠিত হয়। মিটিংয়ে আরও উপস্থিত ছিলেন সাংবাদিক ফয়সাল হোসেন, প্রফেসর সাজেদুল আলম, সাবেক সভাপতি দীপক কুমার কর, প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি স ম আব্দুস সাত্তার, আলহাজ্ব নুরুল হক নয়ন, শামীম হোসেন, আরাফাত তালুকদার, সিহাবুল সায়েম, আবীর হোসেন প্রমূখ।

নন্দীগ্রামে দুর্গাপূজা কমিটির মতবিনিময় সভা
নন্দীগ্রাম প্রতিনিধি: বগুড়ার নন্দীগ্রামে শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষ্যে উপজেলার সকল দুর্গাপূজা মন্ডপ কমিটির নেতৃবৃন্দের সাথে বগুড়া জেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক, কৃষক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ও বগুড়া-৪ (কাহালু-নন্দীগ্রাম) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আলহাজ্ব মোশারফ হোসেন মতবিনিময় সভা করেছেন।
সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) সকালে উপজেলা পরিষদ অডিটোরিয়ামে বিএনপি নেতা ও নন্দীগ্রাম পৌরসভার সাবেক মেয়র সুশান্ত কুমার সরকার শান্তর সভাপতিত্বে এ মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে বগুড়া-৪ (কাহালু-নন্দীগ্রাম) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আলহাজ্ব মোশারফ হোসেন বলেন, আমরা হিন্দু-মুসলিম ভাই ভাই মিলেমিশে থাকতে চাই। তাই আসন্ন শারদীয় দুর্গাপূজা উৎসবমুখর পরিবেশে উদযাপনের জন্য আমাদের পক্ষ থেকে সবধরনের সহযোগিতা করা হবে।

গুরুদাসপুরে একই বিদ্যালয়ের ২০ শিক্ষার্থীর বাল্যবিয়ে!

গুরুদাসপুর প্রতিনিধি ঃ নাটোরের গুরুদাসপুরে একই বিদ্যালয়ের ২০ জন ছাত্রীর বাল্যবিয়ের ঘটনা এলাকায় উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। পৌর সদরের চাঁচকৈড় শাহীদা কাশেম পৌর বালিকা বিদ্যালয়ের ছাত্রীদের ওই বাল্যবিয়ের বিষয় নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন শিক্ষকরা। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন প্রধান শিক্ষক নেগার সুলতানা। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বাল্যবিয়ের শিকার ছাত্রীরা ছিল ষষ্ঠ, সপ্তম, অষ্টম, নবম ও দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থী। অভিভাবকরা গোপনে তাদের বিয়ে দিয়েছেন। অধিকাংশ বিয়ে হয়েছে মেয়ের নানা, মামা ও আত্মীয়ের বাড়িতে। সমাজের একশ্রেণীর অসাধু লোক ও নিকাহ রেজিস্ট্রার এই বাল্যবিয়ে দিয়ে থাকেন। টাকার লোভে তারা জাল কাগজপত্র তৈরি করে বিয়ে সম্পন্ন করেন। সেক্ষেত্রে ডুপ্লিকেট রেজিষ্টারও মেইনটেইন্স করেন তারা।

চাটমোহর উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়নে প্রশাসক নিয়োগ

চাটমোহর প্রতিনিধি ঃপাবনার চাটমোহর উপজেলার ৫টি ইউনিয়নে প্রশাসক নিয়োগ করা হয়েছে। ইউনিয়নগুলো হলো হরিপুর, ছাইকোলা, মথুরাপুর, ফৈলজানা ও মুলগ্রাম। পাবনার ভারগ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক মোঃ জাহাঙ্গীর আলম গত বৃহস্পতিবার এক পত্রে এসকল ইউনিয়নে চাটমোহর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোঃ মেহেদী হাসান শাকিলকে প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ দেন। ইউনিয়ন পরিষদ পরিচালনার জন্য আর্থিক ও প্রশাসনিক ক্ষমতা অর্পন করা হয় তাঁকে।

উল্লাপাড়া সাবেক এমপিসহ ২০০ জনের বিরুদ্ধে মামলা

উল্লাপাড়া প্রতিনিধি ঃসিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ার বৈষম্যবিরোধী ছাত্রআন্দোলনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থী শামীম রেজাকে মারধরের ঘটনায় সাবেক এমপি তানভীর ইমামসহ ২০০ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছে। গত রোববার (৮ সেপ্টেম্বর) ভুক্তভোগী শামীমের বাবা শফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে উল্লাপাড়া মডেল থানায় এ মামলা করেন। মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা প্রয়াত এইচটি ইমামের ছেলে সাবেক এমপি তানভীর ইমাম ছাড়াও তার সাবেক পিএস মীর আরিফুর ইসলাম উজ্জ্বল, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফয়সাল কাদের রুমি, সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিক গোলাম মোস্তফা, সাবেক মেয়র নজরুল ইসলামসহ ৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে। এছাড়াও মামলায় অজ্ঞাত আরও ১৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে।

বড়াইগ্রামে মাদ্রাসা অধ্যক্ষের পদত্যাগ

বড়াইগ্রাম প্রতিনিধি ঃ নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার ইসলামপুর গোনাইহাটি ফাজিল ডিগ্রী মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা ওসমান গনি পদত্যাগ করেছেন। গত রবিবার দুপুরে মাদ্রাসা অধ্যক্ষের অফিস কক্ষে তিনি পদত্যাগ করেন। সকাল ১০ টার সময় থেকে মাদ্রাসার ভেতরে শিক্ষার্থীরা অধ্যক্ষের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন করেন। পরে তিনি আন্দোলনের মুখে দুপুর ১:৩০টার সময় পদত্যাগ করেন। তাঁর বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে নিয়ম বর্হিভূতভাবে পরীক্ষার ফি আদায় ও নানা অনিয়মের অভিযোগ তুলে ধরেন শিক্ষার্থীরা।

রায়গঞ্জে ইউনিয়ন পরিষদ ঘেরাও

রায়গঞ্জ প্রতিনিধি: সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জে ইউনিয়ন পরিষদ ঘেরাও করেছে এলাকাবাসী। গত রোববার (৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে উপজেলার চান্দাইকোনা ইউনিয়ন পরিষদে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় এলাকাবাসী ইউনিয়ন পরিষদ ঘেরাও করে চেয়ারম্যান আব্দুল হান্নান খানের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম তুলে ধরেন। এতে অংশ নেয় শতাধিক এলাকাবাসী। এ সময় উপস্থিত এলাকাবাসী জানান, ‘রাতের ভোটে অবৈধভাবে আব্দুল হান্নান খান চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। এরপর থেকেই সে বিচার বাণিজ্য, সার্টিফিকেট বাণিজ্যসহ নানা অনিয়ম ও দুর্নীতি করে আসছে। সে জেলা আওয়ামী লীগের সহ- সভাপতি পদ ব্যবহার করে দীর্ঘদিন ধরে এলাকার নিরীহ মানুষকে হয়রানি করেছেন। অত্যাচার করেছে নিয়মিত। তাই এই চেয়ারম্যান আমরা আর দেখতে চাই না। তিনি ইউনিয়ন পরিষদে আসবেন এমন সংবাদের ভিত্তিতে আমরা অবস্থান নিয়েছি।
গুরুদাসপুরে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পুরস্কার বিতরণ

গুরুদাসপুর প্রতিনিধি ঃউপজেলা পর্যায়ে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জনকারী গুরুদাসপুরের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, প্রতিষ্ঠান প্রধান, শ্রেণি শিক্ষকসহ শিক্ষার্থীদের মাঝে ক্রেষ্ট ও সনদ বিতরণ করেছে উপজেলা প্রশাসন।জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহ ২০২৪ উদযাপন উপলক্ষে বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. সেলিম আকতার। বক্তব্য শেষে পুরস্কার বিতরণ করেন প্রধান অতিথি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সালমা আক্তার।শ্রেষ্ঠত্ব অর্জনকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হলো- খুবজীপুর মোজাম্মেল হক ডিগ্রি কলেজ, খুবজীপুর বহুমুখী উচ্চবিদ্যালয়, দবির উদ্দিন দাখিল মাদ্রাসা ও হরদমা বহুমুখী টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড বিএম কলেজ।

চীন বিদেশে আর শিশু দত্তক দেবে না
উদ্বিগ্ন আমেরিকা!

ডেস্ক রিপোর্ট ঃ নিজ দেশের শিশুদের বিদেশে দত্তক দেওয়ার কর্মসূচি বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে চীন।গত বৃহস্পতিবার চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাও নিং এক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানান।তিনি বলেন, চীন এখন থেকে আন্তর্জাতিকভাবে শিশুদের দত্তক দেওয়ার অনুমতি দেবে না। তবে রক্তের সম্পর্কিত আত্মীয় বা সৎ সন্তানকে দত্তক নেওয়ার ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম প্রযোজ্য হবে।
মাও এই সিদ্ধান্তের কারণ সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু জানাননি। তিনি বলেছেন, এটি প্রাসঙ্গিক আন্তর্জাতিক চুক্তির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।তিনি আরও বলেন, “যেসব বিদেশি সরকার ও পরিবার চীনা শিশুদের দত্তক নিতে চেয়েছেন, তাদের শুভ ইচ্ছা, ভালোবাসা ও সহানুভূতির প্রতি আমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।”চীনের এমন সিদ্ধান্তে উদ্বিগ্ন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। চীনের কাছে তারা স্পষ্টভাবে জানতে চেয়েছে, এই সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে দত্তক নিতে আগ্রহী এবং ইতোমধ্যেই আবেদনকারী শত শত মার্কিন পরিবারের ওপর এর প্রভাব কী হবে? সূত্রঃ বাংলাদেশ প্রতিদিন।

নাটোর প্রেসক্লাবের সভা ও প্রশিক্ষণ

বড়াইগ্রাম প্রতিনিধি:নাটোরের বৃহত্তর সাংবাদিক সংগঠন নাটোর জেলা কেন্দ্রীয় প্রেসক্লাব এর উদ্যোগে সাংগঠনিক সভা ও বেসিক সাংবাদিকতা প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার দিনব্যাপী জেলা শহরের চা-ট্টা রেস্টুরেন্ট লবিতে অনুষ্ঠিত এই সভা ও প্রশিক্ষণে সভাপতিত্ব করেন প্রেসক্লাবের সভাপতি ও দৈনিক বারবেলা পত্রিকার সম্পাদক এ্যাড. আলেক শেখ। প্রশিক্ষণ পরিচালনা করেন প্রেসক্লাবের সহ-সভাপতি অমর ডি কস্তা, ভোরের কাগজ সাংবাদিক ও কলামিস্ট সাঈদ সিদ্ওদিক বাংলাদেশের খবর সাংবাদিক আবু হেনা মোস্তফা কামাল সুমন।
প্রশিক্ষণ পূর্ব সাংগঠনিক সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, প্রেসক্লাবের সহ সভাপতি আব্দুল রশিদ মাস্টার, এ্যাড. বাকী বিল্লাহ রশিদী, সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম মিন্টু, আইন বিষয়ক সম্পাদক এ্যাড. রবিউল সরদার, দপ্তর সম্পাদক হারুনর রশিদ বুলবুল, করতোয়া সাংবাদিক সাইফুর রহমান প্রমুখ। প্রশিক্ষণে জেলার ৭ উপজেলার ৪৫ জন সাংবাদিক অংশ নেন।

কোটেশন ঃ আল্লাহ বলেন, আমি তোমাদের আগে বহু জাতিকে ধ্বংস করে দিয়েছি যখন তারা জুলুমে লিপ্ত ছিল। আল কোরআন, সূরা ইউনুস-১৩

তাড়াশে পরিবর্তন এর প্রকল্প পরিদর্শন
স্টাফ রিপোর্টার ঃ সিরাজগঞ্জের তাড়াশে কর্মরত বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা পরিবর্তন কর্তৃক বাস্তবায়িত “গাভী পালন কর্মসূচি” পরিদর্শন করেছেন বাংলাদেশ এনজিও ফাউন্ডেশন এর পরিবীক্ষণ উপদেষ্টা মোঃ রফিকুল ইসলাম। উল্লেখ্য, ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে উক্ত ফাউন্ডেশন এর অর্থায়নে এক বছর মেয়াদী প্রকল্পটি গত মার্চ /২৪ এ বাস্তবায়ন সম্পন্ন হয়।
গত ২৪ আগস্ট (শনিবার) উল্লেখিত পরিবীক্ষণ উপদেষ্টা প্রথমে সরাসরি তাড়াশের বিনসাড়া, শিবপুর ও বলভা গ্রামে প্রকল্প উপকারভোগীদের বাড়িতে যান। এ সময় পরিদর্শক তিনজন নারী ও তিনজন পুরুষ গাভী পালনকারী প্রত্যেকের সাথে প্রকল্প সহায়তা বিষয়ে কথা বলেন ও গাভীগুলো স্বচোখে পরিদর্শন করে খোঁজখবর নেন। এরই মধ্যে দুইটি গাভী বাছুর ও দুধ দিচ্ছে যা তিনি সানন্দে লক্ষ্য করেন ও প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেন। পরিদর্শকালেপরিবর্তন এর কর্মকর্তাগণ উপদেষ্টার সাথে ছিলেন।
পরে তিনি তাড়াশ সদরে অবস্থিত পরিবর্তন এনজিও-র অফিস পরিদর্শন করেন ও প্রকল্প সংশ্লিষ্ট নথিপত্র পর্যবেক্ষণ করেন। উপদেষ্টা মহোদয় পরিদর্শন মন্তব্যে কর্মসূচি সফল বাস্তবায়নের জন্য সন্তোষ প্রকাশ করে ভবিষ্যতে এরূপ আরো কর্মসূচি গ্রহণ করা যেতে পারে মর্মে সুপারিশ লিখেন। তিনি সংস্থার পরিচালক, উপ-পরিচালক এবং সমন্বয়কারীর সাথে কর্মসূচি সংক্রান্ত মত বিনিময় করেন। স্মরণযোগ্য, পরিবর্তন ওই সরকারি ফাউন্ডেশনের একটি সহযোগী সংস্থা হিসেবে গত ১১ বছর যাবত ফাউন্ডেশনের অর্থায়নে তাড়াশ উপজেলায় বিচিত্র ধরনের উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে। ফলে এতে স্থানীয় সমাজের বহু দরিদ্র, প্রতিবন্ধী, আদিবাসী ও দুঃস্থ জনগোষ্ঠী উপকৃত হচ্ছে তা বলাই বাহুল্য।

বদলে গেছে বৃহৎতম চলনবিলের রুপ
জাহাঙ্গীর আলম, চাটমোহর ঃ চলনবিলের চারিদিকে শুধু পানি আর পানি। তাতে খেলা করছে ছোট-বড় নৌকা। নৌকাগুলো বিনোদনপ্রেমিদের নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে চলনবিলের বুকে। বিভিন্ন এলাকা থেকে ছুটে আসছে অসংখ্য ভ্রমণপিপাসু বিনোদনপ্রেমিরা। বর্ষায় পাল্টে গেছে চলনবিল অঞ্চলের রুপ। চারিদিকে থৈ থৈ পানি। সন্ধ্যায় বিলের পানিতে ডুবছে সূর্য। অপরুপ দৃশ্য চারিদিকে। বিনোদন পিপাসুদের ভিড় বেড়েছে চলনবিল অঞ্চলের বিভিন্ন পয়েন্টে। বিলে শত শত নৌকা ভেসে চলেছে। এই বর্ষায় পানিতে ভরে উঠেছে চলনবিলের ছোট-বড় প্রায় অর্ধশত খাল-বিল। নতুন পানির সঙ্গে এসেছে শোল, বোয়াল, ট্যাংরা, পুঁটি, কই, শিং, মাগুর, চাপিলা, পাবদাসহ বিভিন্ন প্রজাতির দেশি মাছ। চলনবিলের খাল ও নিম্নাঞ্চল এখন প্লাবিত। পুরো বিল পানিতে ভরে উঠেছে। নতুন পানির সঙ্গে বিভিন্ন প্রজাতির দেশি মাছ দেখা যাচ্ছে। মাছ ধরারও যেন ধূম পড়েছে।বিলপাড়ের লোকজন বর্ষার আগমনে আলাদা আলাদা পেশা বেছে নিচ্ছেন। কেউ নৌকা দিয়ে মালামাল পরিবহন করছেন, কেউ বা করছেন মানুষ পারাপার। কেউ আবার নৌকা দিয়ে মাছ শিকার করছেন। এ ছাড়া কেউ মাছ শিকারের জন্য বিভিন্ন ধরনের জাল বানিয়ে বিক্রি করছেন স্থানীয় হাট-বাজারে। বিনোদনের জন্য নৌকা প্রস্তুত রেখেছেন অনেকে। প্রতিদিনই চলনবিলের বিভিন্ন বিনোদন কেন্দ্রে ভিড় করছেন বিনোদন পিপাসুরা। সরেজমিনে চলনবিল ঘুরে এমন দৃশ্যই দেখা যায়।
বর্ষা মৌসুমে বিলের দুর্গম এলাকাগুলোর পথঘাট পানিতে ডুবে গেছে। এসব এলাকার মানুষের স্বাভাবিক চলাফেরায় একমাত্র বাহন হয়ে উঠেছে নৌকা। এবার নৌকার চাহিদা একটু বেশি মনে হচ্ছে। তাই অনেকেই বর্ষা আসার আগেই নৌকা মেরামত ও তৈরির কাজ করেছেন। বিলাঞ্চলের হাট-বাজারে মৌসুমি মৎস্যজীবীদের মাছ ধরার জাল কেনাবেচার হিড়িক। হাট-বাজারে মাছ শিকারের জন্য বিভিন্ন ধরনের জাল বিক্রি হচ্ছে। বাদাই, কারেন্ট, ফাঁসি, চায়না দুয়ারী, তেউরিসহ নানা ধরনের জাল বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া বিক্রি হচ্ছে দেশে তৈরি কোঁচ, জুতি, টেঁটা, চাঁই, খৈলশানী, দোয়ার ও ভাইর। নিষিদ্ধ চায়না দুয়ারী আর কারেন্ট জালের অবাধ ব্যবহারে বিলীন হচ্ছে দেশী প্রজাতির মাছ।
চাটমোহর উপজেলার নিমাইচড়া গ্রামের আঃ মতিন বলেন, বর্ষার মৌসুমে চলনবিল এলাকায় তেমন কোনো কাজকর্ম থাকে না। তাই এ সময় বিলপাড়ের গরিব লোকজন মাছ ধরার পেশাকে বেছে নেয়। ডিমওয়ালা মাছ ধরা নিষিদ্ধ থাকা সত্ত্বেও একশ্রেণির অসাধু ও শৌখিন মৎস্যজীবী অবাধে ডিমওয়ালা মাছ ধরছেন।এদিকে চলনবিল অঞ্চলে এখনো বিনোদন পিপাসুদের এখন সরব উপস্থিতি। সকাল হতেই বিভিন্ন এলাকা থেকে দল বেঁধে চলনবিল ঘুরতে আসছেন ভ্রমণ পিপাসুরা। সারাদিন বিলের পানিতে ঘুরছেন। রান্না হচ্ছে নৌকায় কিংবা বিলপাড়ে। বিনোদন কেন্দ্রগুলো এখন রমরমা। সকল বয়সের মানুষ এই বর্ষায় চলনবিলে বেড়াতে আসছেন। বিল সৈকতগুলো এখন জমে উঠেছে ভ্রমণপিপাসুদের কলরবে। বদলে গেছে দেশের অন্যতম বৃহৎ বিল চলনবিলের রুপ।

Please follow and like us:
Pin Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Website Design, Developed & Hosted by ALL IT BD