সংখ্যা ৩১ বৃহস্পতিবার ১৩ জুন ২০২৪ ৩০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ ০৫ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিঃ

Spread the love

অস্ত্র মামলায় প্রেসিডেন্ট বাইডেনের ছেলে দোষী সাব্যস্ত

ডেস্ক রিপোর্ট : মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের ছেলে হান্টার বাইডেনকে ২০১৮ সালে একটি রিভলবার কেনার সাথে সম্পর্কিত তিনটি গুরুতর অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। বাদি পক্ষের আইনজীবিদের যুক্তি ছিল, প্রেসিডেন্টের পুত্র বাধ্যতামূলক বন্দুক-ক্রয়ের বাধ্যতামূলক ফর্মে মিথ্যা বলেছিলেন যে তিনি অবৈধভাবে মাদক ব্যবহার করেননি বা তাতে আসক্ত নন।
জুরিরা হান্টার বাইডেনকে ফেডারেল লাইসেন্সপ্রাপ্ত বন্দুক ব্যবসায়ীর কাছে মিথ্যা বলার জন্য দোষী সাব্যস্ত করেছেন। হান্টার বাইডেন আবেদনে মিথ্যা দাবি করেছিলেন যে, তিনি মাদক ব্যবহারকারী নন। তিনি ১১ দিন অবৈধভাবে নিজের কাছে বন্দুকটি রেখেছিলেন।বিচারক মেরিয়েলেন নোরেইকা তাকে দোষী সাব্যস্ত করায় তার ২৫ বছর পর্যন্ত কারাদন্ড হতে পারে। তবে প্রথমবার যারা এই অপরাধ করে তাদের সর্বোচ্চ কারাদন্ডের কাছাকাছিও কোনো কারাদন্ড দেয়া হয় না।বিচারক তাকে কারাদন্ড দেবেন কি না তা স্পষ্ট নয়।হান্টার বাইডেন এবং ট্রাম্প উভয়েই যুক্তি দিয়েছেন, তারা এই সময়ের রাজনীতির শিকার। তবে ট্রাম্প যখন এই রায়কে ‘কারচুপি’ বলে মিথ্যা দাবি করে চলেছেন, তখন জো বাইডেন বলেছেন, তিনি রায়ের ফলাফল মেনে নেবেন এবং তার ছেলেকে ক্ষমা করা হোক- এমনটা তিনি চাইবেন না।জুরিদের রায় ঘোষণার পর প্রেসিডেন্ট বাইডেন বলেন, তিনি মামলার ফলাফল মেনে নিয়েছেন এবং তিনি ‘হান্টারের আপিল বিবেচনা সত্বেও বিচারিক প্রক্রিয়ার প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকবেন। সূত্র : নয়া দিগন্ত।

কানাডাকে হারিয়ে বিশ্বকাপে টিকে থাকলো পাকিস্তান

ডেস্ক রিপোর্ট : প্রথম দুই ম্যাচেই হার। যুক্তরাষ্ট্রের কাছে হারের পর চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারতকে বাগে পেয়েও হারাতে পারেনি পাকিস্তান। ফলে তাদের সুপার এইটে ওঠার স্বপ্ন অনেকটাই মলিন হয়ে যায় । শেষ আটের আশা বাচিয়ে রাখতে কানাডার বিপক্ষে জয়ের বিকল্প ছিলো না তাদের। নিউইয়র্কের নাসাউ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আরেকটি লো স্কোরিং ম্যাচে কানাডাকে ৭ উইকেটে হারিয়ে সেই কাজটি করলো পাকিস্তান ।
আগে ব্যাটিংয়ে নেমে ৭ উইকেটে ১০৬ রান করে কানাডা। তাদের পক্ষে একাই লড়াই করেন অ্যারন জনসন। ৫২ রান করেন এই ওপেনার। আর মাত্র দুজন ব্যাটার দুই অঙ্কের ঘরে রান করেন। পাকিস্তানের হয়ে মোহাম্মদ আমির ৪ ওভারে মাত্র ১৩ রান দিয়ে ২ উইকেট নিয়ে বড় অবদান রাখেন। হারিস রউফও সমান সংখ্যক উইকেট পান।
সহজ লক্ষ্যে নেমে এবার পাকিস্তান হোঁচট খায়নি। মোহাম্মদ রিজওয়ান হাফ সেঞ্চুরি করেন, বাবর আজমের কাছ থেকেও ভালো সহযোগিতা পান তিনি। সূত্রঃ মানবজমিন।

শক্ত সিদ্ধান্ত না নিলে অরাজকতা থামবে না: ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ

ডেস্ক রিপোর্ট ঃ বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ও বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, বাজেটে ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপিদের ধরার কোনো উদ্যোগ নেই। অথচ আশা করেছিলাম অর্থমন্ত্রী তার বাজেট বক্তৃতায় বলবেন, ‘ঋণখেলাপিদের আর কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। তাদের এবার শক্ত হাতে ধরা হবে। ঋণ ফেরত না দিলে তাদের সব সুযোগ-সুবিধা বন্ধ করে দেওয়া হবে।’
তিনি আরও বলেন, ব্যাংক খাতে এখন প্রধান সমস্যা সুশাসনের অভাব। এ কারণে জালজালিয়তিসহ নানা অনিয়ম হচ্ছে। অনিয়মের মাধ্যমে যেসব ঋণ দেওয়া হচ্ছে, এর সবই খেলাপিতে পরিণত হচ্ছে। খেলাপি ঋণ এখন কোনো কোনো ব্যবসায়ীর কাছে ব্যবসার ‘রোল মডেল’ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এখন ব্যাংকের জন্য কঠিন সময়। এ সময়ে শক্ত সিদ্ধান্ত নিতে না পারলে ব্যাংক খাতের অরাজকতা থামবে না।বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্টের (বিআইবিএম) সাবেক মহাপরিচালক ও অর্থনীতি সমিতির সাবেক সভাপতি অধ্যাপক ড. মইনুল ইসলাম বলেন, খেলাপি ঋণের যে হিসাব বাংলাদেশ ব্যাংক প্রকাশ করেছে, এটা প্রকৃত তথ্য নয়। খেলাপি ঋণ এর চেয়েও বেশি। অর্থঋণ আদালত, হাইকোর্ট, সুপ্রিমকোর্টের মামলাগুলোয় আটকে থাকা খেলাপি ঋণকে জাস্টিফাইড ঋণে অন্তর্ভুক্ত করা যায় না। ৬৫ হাজার কোটি টাকার ঋণ অবলোপন করা হয়েছে। এগুলো পাঁচ বছরের পুরোনো মন্দঋণ, সেটা কিন্তু খেলাপি ঋণে অন্তর্ভুক্ত করা হয় না। এ দুটিকে যোগ করলে খেলাপি ঋণ ৫ লাখ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে।এ অর্থনীতিবিদ ইচ্ছাকৃত খেলাপিদের বিরুদ্ধে কঠোর হওয়ার পরামর্শ দিয়ে বলেন, সরকার যদি ইচ্ছাকৃতভাবে ঋণখেলাপিদের বিরুদ্ধে কঠোর না হয় এবং একটা স্পেশাল ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে খেলাপি ঋণ আদায়ের ব্যবস্থা না করে, তাহলে এ সমস্যা থেকে মুক্তি মিলবে না। বরং সমস্যা আরও প্রকট হবে।

 

 

তাড়াশ যে আজো পশ্চাৎপদ
তার কতিপয় করুণ দৃষ্টান্ত
আবদুর রাজ্জাক রাজু

শুধু সিরাজগঞ্জ জেলায় নয় সমগ্র চলনবিলের মধ্যেও তাড়াশ যে সর্বাধিক পশ্চাৎপদ এবং অনগ্রসর উপজেলা, অপ্রিয়-তিক্ত সত্য হলেও তার কতিপয় নজির বা দৃষ্টান্ত একটু পর্যালোচনা করে দেখা যেতে পারে। এর মধ্যে প্রথমেই উল্লেখ করার মতো- তাড়াশ সদরে কোন স্টেডিয়াম বা খেলার মাঠ নেই। নেই প্রকৃত হেলিপ্যাড। এমনকি কেন্দ্রীয় ঈদগাহ মাঠও। বর্তমানে তাড়াশ ঈদগাহ মাঠকে হেলিপ্যাড বলে চালিয়ে দেওয়া হলেও এটা প্রকৃত অর্থে খেলার মাঠ, হেলিপ্যাড ও ঈদগাহ মাঠ কোনটিই ধরা বা বলা চলে না। এর অধিকাংশটুকু দখল করে সরকারী উপজেলা ভূমি অফিস ভবন নির্মিত হয়েছে কয়েক বছর পূর্বে। সম্প্রতি এখানে ধুলাবালির মধ্যে মাঠের দক্ষিণ ধারে শাকসবজি বাজার বসানো হয়েছে যা অত্যন্ত অযৌক্তিক,অসুন্দর ও পরিবেশ রুচি বিরুদ্ধ কাজ। অপরদিকে পৌর সদর প্রধান বাজারের অবস্থাও করুণ ও মান্ধাতা আমলের। বিশেষত: কাঁচা বাজার দখল করে রয়েছে বাজারের প্রধান সড়কের সিংহভাগ। তাছাড়া অস্থায়ী তাবু ও দড়ি টানিয়ে গোটা বাজার একটা নোংরা ও সেকেলে গ্রাম্য হাটে পরিণত করা হয়েছে। পথচারী,যানবাহন আরোহী এবং ক্রেতা-বিক্রেতাদের জনভোগান্তি ও গণ হয়রানী এ কারণে চরমে। কিন্তু বহু লেখালেখি ও বলাবলি হলেও সিন্ডিকেট ভেঙে দিয়ে এই অব্যবস্থাপনার ও দুর্ভোগের কোন অবসান করা সম্ভব হলো না আজো। বর্তমানে দুধ বাজার, মাছ বাজার, মুরগি বাজার, মুদিখানা পট্টি সবই অপরিণত ও আনাড়ি বাজার নেতৃত্বের পরিচালনার পরিচায়ক, অথবা নেতৃত্বহীন। তাড়াশ বাজারে এখনো পানি ও টয়লেট ব্যবস্থাপনা দুর্বল বা নেই বলা চলে। এ বাজারে কোন সুষ্ঠু পরিবেশের ছোঁয়া নেই।বাজারের শেডগুলো দীর্ঘদিন বেদখলের কবলে পড়ে আছে, উদ্ধারের পদক্ষেপ নেয়া হয় না। যে যেমনি পারে এটাকে লুটেপুটে খায়। অথচ এর উন্নয়ন ও শ্রীবৃদ্ধির দিকে কারো দৃষ্টি নেই।
এবার চলি পৌর সদরের রাস্তাঘাটের চিত্র অবলোকন করতে। তাড়াশ বাজারের দক্ষিণে চৌরাস্তা মোড় যেটা অধুনা “বীর মুক্তিযোদ্ধা মোড়” নামে পরিচিত। এটা অনেক দিন যাবত “জ্যাম” এর নিয়মিত স্পটে পরিণত হয়েছে। দিনের অধিকাংশ সময় এখানে ট্রাফিক জ্যাম লেগেই আছে। আগের ইউএনও এবং সওজ-সিরাজগঞ্জ বলেছিল – তারা এই সংকটের সুরাহা করবে। কোন খবর নেই অতঃপর অদ্যাবধি।
চলে যাই পৌর সদরের রাস্তা-পথের দুর্দশার চালচিত্র দেখতে। সদর বাজার থেকে উপজেলা পরিষদমুখি সংকীর্ণ সড়ক-রাস্তার অধিকাংশ জুড়ে কতিপয় ব্যবসায়ী বিত্তবানদের বাড়ীর সামনে পূর্ব-পশ্চিমে, জনৈক হার্ডওয়্যার ব্যবসায়ীর ঘরের সাথে বা পাশে ও সকালী রেস্তোরাঁর নিকটে অতি চাপা চিকন সরু সড়ক-গলি পথ দিয়ে নিত্যদিন নানা বিড়ম্বনাসহ যানবাহন চলে। অর্থাৎ বারোয়ারি বটতলা পূজা মন্ডপ থেকে তাড়াশ বাজার পর্যন্ত পৌর সদরের রাস্তাটির সিংহভাগ প্রভাবশালীদের দখলে-বেদখলে এটা অপ্রশস্ত গলিতে পরিণত হয়ে যানবাহন ও পথচারী চলাচলে প্রতিকূলতা সৃষ্টি করে চলেছে দীর্ঘদিন যাবত। এখানে যানবাহন হয় থেমে থেমে নয়তো অতি ধীর গতিতে চলে। কিন্তু কেউকেটাদের ভয়ে কেউ মুখ খুলতে চায় না। তাড়াশ সদরের অন্যান্য কিছু মহল্লায়ও অনুরূপ দুরাবস্থা বিদ্যমান। কিন্তু উপজেলা প্রশাসন বা পৌর কর্তৃপক্ষ কারোই গরজ নেই এসব সমস্যা সনাক্ত করার ও তা সমাধানের। এটা দুঃখজনক। সদরের সোনালী ব্যাংক হতে টিএন্ডটি মোড় পর্যন্ত রাস্তাটি অবহেলিত, বাজারের পশ্চিমে দত্তবাড়ী মোড় থেকে ঘোষপাড়া অব্দি সড়কটি উপেক্ষিত, প্রাচীণ পায়ে হাঁটার কাঁচা রাস্তা।অনুরুপ পৌর সদরের অনেক মহল্লারই রাস্তা-পথের দুর্দশা অবর্ণনীয় দুর্ভোগের। তাড়াশ গ্রামের প্রায় সব খালনালা-ব্রীজ-কালভার্ট ভরাটের কারণে বন্ধ হয়ে গেছে। এত সার্বিক পরিবেশ ব্যাহত বা বিঘিœত হয়েছে।
এবার চলুন নিয়ে যাই সদরের একমাত্র তাড়াশ পৌর শিশু পার্কে। তো গেলেও সাবধান, কেননা সামনে বাঁশ আছে। অর্থাৎ পৌর শিশু পার্কের প্রবেশ পথে বাঁশের বাজার। অথচ একটি শিশু পার্ক আর বাঁশ বাজার একই সাথে পাশাপাশি কিভাবে হতে পারে তা কর্মকর্তারাই ভালো জানেন। তবে বাঁশের দালালদের খুঁটির জোড় যে কম নয় তা বোঝা যায়- শিশুদের সমাগম স্থলে বাঁশেরও ক্রয়-বিক্রয় দেখে। বাঁশ মনে হয় শিশু বান্ধব কোনো বস্তু। তাছাড়া অল্প কিছুদিন পূর্বে গত রমজানের ঈদে এই পার্কের তাৎক্ষণিক ভাড়া প্রচলন করে পৌরসভার নামে ভালোই কামাই করেছে সংশ্লিষ্টরা যা ছিল নিয়ম-নীতি বহির্ভূত ও লজ্জাকর। পরে স্বার্থের দ্ব›েদ্ব মারামারির কথাও শোনা গিয়েছিল। ওই পার্কের উন্নয়নে উপজেলা প্রশাসন বা পৌর কর্তৃপক্ষ কারোই সত্যকার সুনজর এবং দীর্ঘ মেয়াদী টেকসই সুষ্ঠু পরিকল্পনা নেই। তবে মাঝে-মধ্যে সামান্য করে বরাদ্দ দিয়ে তা চেটেপুটে খাবার ব্যবস্থা হয়েছে – মানহীন কাজকর্ম দেখে সেটা বুঝতে কষ্ট হয় না।
তারপর আসি তাড়াশ উপজেলা পরিষদ চত্বরে। এখানে পরিষদ প্রাঙ্গনে প্রবেশদ্বারের দুটি তোরণ বা গেটে পরিষদের কোন নাম লিখন বা সাইনবোর্ড বা সাইনপ্লেট কিছুই নাই এ নিবন্ধ লেখার মুহুর্ত পর্যন্ত। গেট দু’টির পূর্বের লেখা মুছে অস্পষ্ট হয়েছে অনেক আগেই, এখন তা সম্পূর্ণ মুছে গেছে। মানে এটা যে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশাসনিক সরকারি স্থাপনা তা প্রবেশ পথে বোঝা যাবে না। দেশে অন্যরা যখন “উপজেলা প্রবেশ গেট” অভিজাত ও প্রতিযোগিতামূলক মনোরম, আকর্ষণীয় চমকপ্রদ করতে ব্যস্ত; তখন তাড়াশ উপজেলা প্রশাসনের কর্তা ও নেতাদের সেদিকে কোন খেয়াল নেই। মনে হয় অন্দর মহলের কোন বিশেষ কাজে ব্যস্ত থাকায় বাইরের প্রবেশ পথের সাইন বোর্ডের কথা স্মরণে আসছে না। আর ওটা না থাকলেও তো অসুবিধা নেই। দিন চলে যাচ্ছে। সরকারি-বেসরকারি কারো আপত্তি বা অনুযোগ অভিযোগ নেই। এছাড়া ওই পরিষদ চত্বরে বাইরের গাড়ি, কোচ,বাস ইত্যাদি প্রায়শ: দিনরাত পার্কিং করে রাখলেও নিষেধ করার কে আছে। কেননা, এটাতো সবার জন্যই উন্মুক্ত। এটা সংরক্ষিত ও নিয়ন্ত্রিত কোন অঞ্চল নয় মনে হয়।
অপরদিকে তাড়াশ সদরে অবস্থিত ঐতিহাসিক তাড়াশ ডিগ্রী কলেজ, ইসলামিয়া হাইস্কুল, কারিগরি উচ্চ বিদ্যালয়, গার্লস হাইস্কুল ও প্রাথমিক স্কুল ক্যাম্পাসগুলো ঘুরে দেখুন। কী অবস্থা ! কত ঘিঞ্জী, চাপাচাপি ও সংকীর্ণ গন্ডিতে সব গাদাগাদি অবস্থিত। এদের শিশুদের তথা শিক্ষার্থীগণের কোন মাঠ বা সভা বৈঠক করার খোলা-মুক্ত জায়গা নেই। এসব প্রতিষ্ঠান ক্রমেই একটা গন্ডিতে কেন্দ্রভূত হলেও ক্রমবর্ধমান প্রবৃদ্ধির ও বিস্তৃতির আলোকে এগুলো বিকেন্দীভূত বা সুপরিসর স্থানে সরাবার সুপারিশ করার কোন চিন্তা কেউ করে না। এসব বিদ্যালয়ে ক্রীড়া, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করার মতো পর্যাপ্ত জায়গা নেই। তাড়াশে অবৈধ পুকুর ভরাট ও আবাদি জমি দখল করে অবৈধ পুকুর খনন দুটোই পাশাপাশি চলছে। পরিবেশ বা জলবায়ু পরিবর্তনজনিত প্রভাব বিষয়ে কেউ ভাবছে না।
বিশেষ করে সদরের উপজেলা পরিষদ পার্শ্ববর্তী পশ্চিমের দীঘি ভরাট করে উপজেলা পরিষদ মিলনায়তন নির্মাণ করা হল। বিশাল কুঞ্জবন দিঘির উত্তরাংশে অনুরূপ ভরাট করে নির্মিত হল তাড়াশ উপজেলা মডেল মসজিদ। অন্যদিকে তাড়াশ থানা প্রাঙ্গন সংলগ্ন পূর্বদিকে পুকুরের আংশিক ভরাট করে থানা মসজিদ কমপ্লেক্স নির্মিত হচ্ছে। এসবই পরিবেশ বিরুদ্ধ কাজ হিসেবে বিবেচিত। কিন্তু এক্ষেত্রে যারা আইনের রক্ষক তারাই আবার ভক্ষক। এরা অন্যদের আবাদি তথা ফসলী জমিতে পুকুর খননে নিষেধাজ্ঞা দেয়। আর নিজেরা দীঘি ভরাট করে সরকারি স্থাপনা নির্মাণ করে। এটা স্ববিরোধী ও দ্বিচারিতার শামিল। আগে নিজে আইন মেনে পরে অপরকে তা মান্য করার কথা বলতে হবে। এমনি কওে বেআইনীভাবে তাড়াশ গ্রামের অসংখ্য পুকুর জলাশয় ভরাট করে লোকেরা বসতবাড়ি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলছে। বাধা দেবার কে আছে। স্বাধীনতার পর থেকে তাড়াশে যোগ্য, সৎ,ত্যাগী ও আদর্শবান নেতৃত্বের অভাবে উপজেলায় এই অরাজকতা ও নৈরাজ্য চলছে বাধাহীনভাবে।
এখানে একটি পাবলিক লাইব্রেরী দীর্ঘদিন হল অকেজো ও মৃত প্রায় পড়ে আছে। কত আবেদন-নিবেদন ও আলোচনা-সমালোচনা হল।স্থানীয় সাংসদ পর্যন্ত বিষয়টি অবগত। অবশ্য তাতে কোন ফল হয় না। এটাকে মোটেই জীবিত করা যাচ্ছে না। উপজেলা শিল্পকলা কমিটি নামে মাত্র কিছু একটা আছে বলে শোনা যায়।তা কারা কুক্ষিগত রেখেছে সে হদিস নেই। অবশেষে আশা করা হচ্ছিল, নব গঠিত ও নির্বাচিত তাড়াশ পৌরসভা পৌরবাসীর দীর্ঘ প্রত্যাশিত ও প্রতীক্ষিত উন্নয়ন সারথী হবে, পৌর এলাকার কাংখিত উন্নয়ন ঘটাবে। কিন্তু পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত পেীরসভার সাম্প্রতিকের অনৈতিক এবং হতাশাব্যঞ্জক চালচিত্র দেখে মনে হচ্ছে ‘গ’ শ্রেণির পৌরসভাটি ঘিরে পৌরবাসীর যে স্বপ্ন জেগে উঠেছিল বা আশার সঞ্চার হয়েছিল- তা পূরণ হওয়া এখন “দিল্লী দূর অস্ত” এর মতো। এটা বরং নিজেই না ডুবে যায় অনুয়ন্নের অথৈ জলে।।
এরপর মুন্সিয়ানা না করে এক দমে তাড়াশের আরো কতিপয় সমস্যা তুলে আনা যেতে পারে যা দেখে যে কেউ বুঝবে,এই উপজেলাটা উন্নয়নের কোন্ স্তরে অবস্থান করছে। এখানে বাস-কোচ টার্মিনাল, সিএনজি স্ট্যান্ড এবং ভ্যান-রিকশার কোনো গ্যারেজ নেই।ফলে বিশৃংখল পরিবহন ব্যবস্থার কারণে যা হবার তাই হচ্ছে। উপজেলার একমাত্র সরকারী টেলিফোন অফিস বছরের পর বছর অচল। কোটি টাকা ব্যয়ে পূণ:নির্মিত একমাত্র সরকারী ডাকবাংলো অপরিচ্ছন্ন ,মানসম্পন্ন বসবাসের অনুপযোগী। একটা উপজেলা সদরের সুপ্রশস্ত জায়গার উপর নব নির্মিত ডাকঘরটি যেন “মুরগীর খোপ” বানিয়ে রেখেছে। সদরের সবগুলো সব রকম শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার মান এত খারাপ-নি¤œ পর্যায়ের যে, এসব এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-অধ্যাপকদের প্রায় সবারই নিজ নিজ ছেলেমেয়েদের তাড়াশের বাইরে অন্যত্র পড়ায়। এখানে ভর্তি করায় না , কেননা তারা জানে তারা তাড়াশে কোন ধরনের শিক্ষার পরিবেশ বানিয়ে রেখেছে। এছাড়া তাড়াশে এখনও ভাল মার্কেট, রেস্টুরেন্ট ইত্যাকার সেভাবে আধুনিক বিশ্বের সাথে তাল রেখে গড়ে ওঠে নি। সরকারী দপ্তরগুলোর মধ্যে বিশেষত: তাড়াশ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও উপজেলা প্রাণী সম্পদ হাসপাতাল প্রতিষ্ঠান দু’টি নিজেরাই রুগ্ন, অসুস্থ এবং ভগ্নদশাগ্রস্থ যা নিয়ে প্রায়ই পত্র-পত্রিকায় খবর ওঠে। এ সংকটেরও কোন সমাধান দেখা যায় না। তাড়াশ সাহিত্য-সংস্কৃতি ক্ষেত্রে কিছুটা সমৃদ্ধ। তথাপি এখানকার লেখক-সাহিত্যিকদের অবদানের কেউ কদর দেয় না। তাদের প্রতি সবাই উদাসীন। এটাও অনুন্নত এলাকার চিহ্ন বা নমূনা। আলোকিত মানুষেরা অসমাদৃত হলে সমাজ পিছিয়ে পড়ে তা বলাই বাহুল্য। আরেকটা প্রসংগ উল্লেখ করা যায়। তাহল, তাড়াশের কিছু মানুষ দেশে-বিদেশে অনেক উঁচু স্তরে অবস্থান করলেও তারা তাড়াশের উন্নয়নে-অগ্রগতিতে কোনো প্রকার সুনজর দেয় না, অবদান রাখে না। এরা আত্মস্বার্থপর, আত্মকেন্দ্রীক তথা নিজেদের নিয়ে শুধু ব্যস্ত।
এখানে জেলার সর্বাধিক সংখ্যক সাংবাদিকের বসবাস। তাদের ক্লাবও প্রায় অর্ধ ডজন। এটাকে তারা অধিকাংশই বাণিজ্য বা রোজগারের উপায় অবলম্বন হিসেবে বেছে নিয়েছে। এ পেশায় জ্ঞান-গরিমা ও নীতি আদর্শের কথা তারা ভাবেন না। এখানে জনগণ তাদের ‘সাংবাদিকের’ পরিবর্তে ‘সাংঘাতিক’ বলে অভিহিত করে।এমনকি এসব ক্লাবের ভীড়ে ও চাপাচাপিতে-ঠেলাঠেলিতে স্থানীয় একমাত্র পত্রিকা “চলনবিল বার্তা” বিভিন্ন অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ ও বিজ্ঞাপন বঞ্চিত হয়ে থাকে। সদরের একমাত্র সুপ্রতিষ্ঠিত ডিগ্রি কলেজটিকে সরকারীকরণ না করে হীন উদ্দেশ্যে গ্রামের মধ্যে নিয়ম-নীতি বহির্ভূত কলেজ বানিয়ে যার ছাত্র নেই, ‘এমপিও’ নেই সেটাকে সরকারী কলেজ বানাবার অন্যায্য ও অযৌক্তিক কর্মকান্ডের দৃষ্টান্ত স্থাপন করে রেখেছে। এটাই এখন তাড়াশের কালচার। এলাকার সার্বিক উন্নয়নের স্বার্থেও নিরপেক্ষ মতৈক্যের ও প্রচেষ্টার প্রচন্ড অভাব। পরিশেষে বলতে হয়, এটা সেই তাড়াশ যেখানে নোংরা আবর্জনা তথা ময়লার ‘লিটার’ এর ভাগাড় দিয়ে মাছ চাষ করা হয়, স্থানীয় মানুষ দেখে-শুনেও তা খায়, কেউ প্রতিবাদ করে না এত বড় ভয়ংকর অপরাধ এবং অমানবিকতা সত্বেও, জনস্বাস্থ্যের জন্য যা মারাত্মক হুমকি। এই অনন্য নিন্দনীয় নজির তাড়াশের পার্শ্ববর্তী অন্য কোথাও বিরল। এসব দেখার চোখ তাড়াশে কারো নেই; অথচ নেই তথাকথিত নেতা-নেত্রীর অভাবও। এই হল অখ্যাত পশ্চাৎপদ অপ্রসিদ্ধ একটি জনপদের আলামত,লক্ষণ ও বৈশিষ্ট্য, আর তাড়াশ তা-ই বহন করে চলেছে যুগের পর যুগ ধরে। যেখানে এখনও গর্ব-কৃতিত্ব দাবি করার তেমন কিছু পাওয়া যাবে না। এসব জড়াজীর্ণতার অবসান বা অবমুক্তি কবে হবে তা কেউ বলতে পারবে না।

চলনবিলে সাহিত্য বিকাশের ক্রমধারা
( প্রথম পর্ব)
ড.মোঃ খায়রুজ্জামান মুননু
সতেরটি উপজেলা বেষ্ঠিত বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ জলাধার চলনবিল। যদিও প্রশাসনিক এলাকা বিবেচনায় চলনবিল এখন এগারটি উপজেলার মধ্যে সীমাবদ্ধ রয়েছে। আকার আয়তনে চলনবিল সংকুচিত হলেও এখানকার প্রকৃতি, ইতিহাস-ঐতিহ্য, শিল্প- সংস্কৃতি, সংগীত-নৃত্যকলা ও সাহিত্যাঙ্গন বহুগুনে বৃদ্ধি পেয়েছে। বিল বেষ্ঠিত এই জনপদের কবি সাহিত্যিক, লেখকগণের সাহিত্য চর্চার প্রধান উপজিব্যই হলো বিলের কাদা মাটি, জলের ঢেউ, মুক্ত বাতাশ, পালের নৌকা, কুঁড়ে ঘর, পাকা ধান, বৃক্ষরাজি, লতাগুল্ম, পাখির কলকাকলী, মাঝি মাল্লার গান, কৃষকের সুখ-দুঃখ ও মেহনতী মানুষের সংগ্রামী জীবন কাহিনী। কোন জনপদের সুনির্দিষ্ট সাহিত্যিক বিবর্তনিক তথ্য বা ইতিহাস তুলে ধরা বেশ দুরুহ , শ্রমসাধ্য ও বিতর্কিত বিষয়। এ ধরনের প্রবন্ধ রচনা ও উপস্থাপনকারী সুনামের চেয়ে দুর্নামই বেশী অর্জন করে থাকেন। সর্বত্রই সমালোচনার রোশানলে পরতে হয় রচনাকারীকে। আমার ক্ষেত্রেও হয়তো তার ব্যতিক্রম হবে না। উপস্থিত সম্মানিত কবি, সাহিত্যিক, প্রাবন্ধিক, লেখক, গবেষক, সুজনেষু, প্রিয়তমেষু, সমমনা বন্ধুগণ। “চলনবিলে সাহিত্য বিকাশের ক্রমধারা” শিরোনামের প্রবন্ধ সংকলনে আমি সদা সচেষ্ট থেকে কাজ করেছি। তত্ব, তথ্য সংগ্রহে কখনও পক্ষপাত দুষ্ট হইনি। যে সকল লেখকের কমপক্ষে একটি লেখা প্রকাশিত হয়েছে তাদেরকেও এই প্রবন্ধে যুক্ত করতে কৃপণতা করিনি। তারপরেও যদি কেউ বাদ পরে থাকে, তাঁদের যুক্ত করার সমুহ সুযোগ এখনও রয়েছে।
চলনবিলে সাহিত্য বিকাশের ক্রমধারায় যে নামটি প্রথমেই উঠে আসে তিনি হলেন কবি আব্দুস শাকুর যার জন্ম শাহজাদপুর শহরে। ১৮৯০ সালে তিনি উর্দু ভাষায় সাহিত্য রচনা করে পাঠক সমাজে ব্যাপক সারা ফেলেন। তার রচিত গ্রন্থাবলী- গুলশানে নওবাহার,নূরুল বশার, গুলে বাকাউলি। কবি গুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ১৮৯০ সাল থেকে ১৯০০ সাল পর্যন্ত জমিদারী তদারকী কাজে শাহজাদপুর ও পতিসরে স্থায়ীভাবে বসবাস করেন এবং আরও দুই বছর অনিয়মিতভাবে আসা যাওয়া করেন। সবমিলে তিনি বারো বছর চলনবিলে বাস করেছেন। ভুমি সংশোধন ও নিয়ন্ত্রন আইনে কোন ব্যক্তি বারো বছর বসত করলে সে সেই বসতকৃত ভুমির মালিকানা প্রাপ্ত হয়ে যায়। সে হিসেবে বিশ^কবি রবীন্দ্রনাথকে চলনবিলের মানুষ বলা মোটেও অযৌক্তিক নয়। নোবেল বিজয়ী বাংলা সাহিত্যের মধ্যমনি আমাদের প্রতিবেশী রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর চলনবিলে বসবাসরত অবস্থায় অসংখ্য ছোট গল্প, কবিতা, উপন্যাস ও গান রচনা করেছেন ১৮৯০-১৯০২ সাল পর্যন্ত।১৯০৭ সালে জমিদার দুর্গাদাসের পুত্র কবি প্রমথ চৌধুরী চলিত ভাষায় প্রবন্ধ রচনা করে চলতি ভাষাকে সাহিত্যের মর্যাদায় অধিষ্ঠিত করেন। তার জন্মস্থান চাটমোহর উপজেলার হরিপুর গ্রাম। উল্লেখযোগ্য গ্রন্থাবলীর মধ্যে রয়েছে- বীরবলের হালখাতা,নানা কথা ইত্যাদি। গ্রামীন জীবনের বাস্তব রুপকার কবি নজিবর রহমান ১৯১৪ সালে সাহিত্য রচনায় ব্রত হন যিনি শাহজাদপুরের বেলতৈল গ্রামে জন্ম গ্রহন করেন। তিনি “সাহিত্য রতœ” উপাধিতে ভুষিত হন। তার রচিত গ্রন্থ- আনোয়ারা,গরীবের মেয়ে,প্রেমের সমাধি। রায়গঞ্জের ধানগড়া গ্রামে জন্মগ্রহনকারী কবি অবনী মোহন সেন ১৯৩০ সালে রচনা করেন বেশ কয়েকটি গল্প উপন্যাস। তার লেখায় সমাজের সংস্কার মুলক কথা উঠে আসে। তার উল্লেখযোগ্য গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে- প্রহলাদ চরিত, বাল্য বিবাহ,স্মৃতি মন্দির ইত্যাদি। ১৯৩৬ সালে শাহজাদপুর উপজেলার ভেরুয়াদহ গ্রামের কবি আব্দুল বারি খাঁন “সোবেহ সাদেক” নামের একটি কবিতা গ্রন্থ রচনা করে ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। তিনি ভুমি অফিসে চাকুরী করতেন। ফরিদপুর উপজেলার খাগড়াবাড়ী গ্রামে জন্মগ্রহণকারী কবি ও উপন্যাসিক আবুল হাসেম ১৯৩৮ সালে সাহিত্য কর্মে যুক্ত হন। তার গ্রন্থাবলীর নাম- আলো ও আালেয়া, প্রাপ্ত বলাকা, মাস্টার সাহেব।
পঞ্চাশের দশকে চলনবিলের মাটিতে দুইজন প্রতিভাবান সাহিত্যিকের আবির্ভাব ঘটে যারা সাধারণ মানুষের দুঃখ বেদনাকে উপজিব্য করে কাব্য রচনা করেন। ১৯৫০ সালে তাড়াশ উপজেলার সেরাজপুর গ্রামের মোঃ সেরাজুল হক সাহিত্য রচনায় আত্বনিয়োগ করেন। তার রচিত গ্রন্থ- মোসলেম সমস্যা, শিরাজী চরিত, কেতাবুল ইমান। অনাদরে বেড়ে ওঠা তাড়াশ উপজেলার মাগুড়াবিনোদ গ্রামের পুঁথি সাহিত্যিক কবি আব্দুর রহমান ১৯৫১ সালে সাহিত্য রচনায় মনোনিবেশ করেন। তার রচনার প্রধান উপজিব্য ছিল চলনবিলের মাটি ও মানুষ। তিনি পল্লী কবি পদবীতে ভুষিত হন। তার প্রকাশিত গ্রন্থ- পাকিস্তানের কথা। এর পরে প্রায় এক দশক চলনবিলে সাহিত্য চর্চা খানিকটা স্তিমিত হয়ে আসে। ১৯৬০ সালে তমজের আলম ও আজিজুর রহমান ফিরোজী নামের দুই জন খ্যাতিমান কবির আবির্ভাব ঘটে। দু’জনই ছিলেন শাহজাদপুর উপজেলার মানুষ। তমজের আলম “রুপবান” যাত্রাপালার লেখক এবং আজিজুর রহমানের সেরা গ্রন্থগুলোর নাম- ফেরার পথে,অনামিকা,আকাশের রং নীল।।১৯৬২ সালে উল্লাপাড়া উপজেলায় আবির্ভুত হন বিশিষ্ট কবি গোলাম সাকলায়েন। তিনি একাধারে সাহিত্যিক, গবেষক ও দার্শনিক ছিলেন। তাঁর রচিত গ্রন্থ- বাংলাদেশের সূফি সাধক, একের ভিতর পাঁচ, ফকির গরীবুল্লাহ।১৯৬৪ সালে চলনবিলের ইতিহাস সমৃদ্ধ বড় মাপের একটি গ্রন্থ রচনা করেন গুরুদাসপুর উপজেলার খুবজীপুর গ্রামের প্রখ্যাত লেখক টি.কে আব্দুল হামিদ। পেশায় তিনি ছিলেন রসায়ন শাস্ত্রের অধ্যাপক। তার প্রকাশিত গ্রন্থের নাম- চলনবিলের ইতিকথা, জ্ঞানের মশাল,পশ্চিম পাকিস্তানের ডাইরীসহ ২৬টি গ্রন্থ। শাহজাদপুর উপজেলার রতনকান্দি গ্রামের প্রতিথযশা কবি ফজল এ খোদা ১৯৬৮ সাালে বেশ কিছু উপন্যাস ও নাটক রচনা করেন। তিনি ছিলেন বাংলাদেশ বেতারের মহাপরিচালক। তার গ্রন্থাবলীর মধ্যে রয়েছে-বিতর্কিত জোসনা, মোক্তার পাড়া, সানাই। একুশে পদক বিজয়ী কবি ও গবেষক আবু হেনা মোন্তফা কামাল ১৯৭৪ সালে কাব্য চর্চায় ব্রত হন। তিনি উল্লাপাড়া উপজেলার গোবিন্দপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার রচিত কাব্য গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে-শিল্পীর রুপান্তর,কথা ও কবিতা ইত্যাদি। ১৯৮৩ সালে ছোট গল্প ও শিশু সাহিত্যে জনপ্রিয়তা পান শাহজাদপুর উপজেলার কাদাইবাদলা গ্রামের কবি অনামিকা হক লিলি। তার রচিত গ্রন্থাবলী-ছড়ায় ছন্দে দুলি,অগ্নি ও জলের ভেতরে,অষ্ট প্রহর ইত্যাদি। তাড়াশ উপজেলার সাচানদিঘী গ্রামে ১৯৮৪ সালে সাহিত্য রচনায় ব্রত হন কবি ফজলুর রহমান। তাঁর গ্রন্থের নাম- আলেয়া। ১৯৮৯ সালে শাহজাদপুর উপজেলার নড়িনা গ্রামের কবি আলী আসগর এবং টেটিয়ারকান্দা গ্রামের এম এ জব্বার আনসারী সাহিত চর্চায় আগ্রহী হয়ে ওঠেন। আলী আসগর ছিলেন বুয়েট এর অধ্যাপক। তার গ্রন্থের নাম-বিজ্ঞানের দিগন্তে, ভাষা ও বিজ্ঞান। উল্লাপাড়া উপজেলার পিয়ারামোহনপুর গ্রামের দরদী কবি সুলতান মাহমুদ ১৯৯১ সালে চমৎকার কয়েকটি গ্রন্থ রচনা করেন। তার গ্রন্থাবলী হলো-অন্তরঙ্গ,ডাক্তার,মনমাঝি, ঝংকার।শাহজাদপুর উপজেলাধীন চরবেলতৈল গ্রামের কবি সৈয়দ শুকুর মাহমুদ ১৯৯৩ সালে নারী জাগরনী মুলক উপন্যাস “দঃসাহসী নারী” রচনা করে তৎকালে ব্যাপক আলোচিত হন। তার অন্যান্য গ্রন্থ- সত্যি তুমি নারী, কে দায়ী। তিনি বাংলার স্বনামধন্য কথাশিল্পী নজিবর রহমান সাত্যিরত্সের নাতি। একইভাবে তাড়াশ উপজেলার দোবিলা গ্রামের সাহসী উপন্যাসিক সরদার আব্দুল জলিল ১৯৯৪ সালে সাহিত্যাঙ্গনে বিরাট বিপ্লব ঘটান। তার প্রকাশিত গ্রন্থ-বিলের নাম চলন। রায়গঞ্জ উপজেলার হাসিল গ্রামের কবি শহিদুল জহির ১৯৯৫ সালে কাব্য রচনা শুরু করেন। তার কাব্য গ্রন্থ- সে রাতে পুর্নিমা ছিল, পারাপার, মুখের দিকে দেখি।শাহজাদপুর উপজেলার চর বাতিয়া গ্রামের প্রতিবাদী কবি ওয়াসেল মোল্লা ১৯৯৭ সালে বেশ কিছু উপন্যাস, কবিতা লিখে পাঠকদের দৃষ্টি আকৃষ্ট করেন। তার প্রকাশিত গ্রন্থ-ডাহুকী মেয়ে, চান্দের মেলা, লখাই। ১৯৯৯ সালে চলনবিলাঞ্চলে যারা সাহিত্য রচনায় ব্রত হন তারা হলো- সিংড়া উপজেলার মৌগ্রাম নিবাসী কবি সরদার মোহাম্মদ আলী। প্রকাশিত গ্রন্থ- মায়ের আশির্বাদ, পদ্মা পারের সেই মেয়েটি। ভাঙ্গুড়া উপজেলার করতকান্দি গ্রামের সত্যেন্দ্রনাথ সরকার। তার প্রকাশিত যৌথ গ্রন্থ রয়েছে। বিংশ শতাব্দিতে রায়গঞ্জের সোনাখড়া গ্রামের পরিশ্রমী সাহিত্যিক কবি হাসিম সরকার এবং কবি আব্দুল কুদ্দুস ও কবি মনিরুল ইসলাম ব্যাপকভাবে সাহিত্য রচনায় আত্বনিয়োগ করেন। তাদের স্বতন্ত্র প্রকাশনা গ্রন্থ রয়েছে।২০০০ সালে শাহজাদপুরের মশিপুর ও রতনকান্দি গ্রামের এইচএম সরওয়ার্দী ও খালেক সুজন নামের দুইজন রোমান্টিক কবির আবির্ভাব। (চলবে)।

লেখক ঃ গবেষক,বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ^বিদ্যালয়,গাজীপুর। পিজিডিআরডি, পল্লী উন্নয়ন একাডেমী,বগুড়া।

জিলহজ্ব মাসের গুরুত্বপূর্ণ ছয়টি আমল
মুফতি খোন্দকার আমিনুল ইসলাম আবদুল্লাহ ।

হিজরি সালের ১২তম মাস জিলহজ। মহান আল্লাহ এই মাসের প্রথম ১০ দিনকে বিশেষভাবে সম্মানিত করেছেন। এ সময়ে আল্লাহর ঘর পবিত্র কাবা প্রান্তরে সারা বিশ্বের মুসলিমরা এসে জড়ো হয়। কোরআন ও হাদিসে এ মাসের বিশেষ মর্যাদার কথা বর্ণিত হয়েছে।
পবিত্র এ মাসে যেকোনো ভালো আমলের বিশেষ সওয়াব রয়েছে। কোরআনের সুরা ফজরে জিলহজ মাসের প্রথম ১০ দিনের শপথ করা হয়েছে। অন্যত্র ইরশাদ হয়েছে, ‘যেন তারা কল্যাণকর স্থানগুলো পরিদর্শন করে এবং নির্দিষ্ট দিনগুলোতে তিনি রিজিক হিসেবে তাদের যে চতুষ্পদ জন্তু দিয়েছেন তাতে যেন আল্লাহর নাম স্মরণ করে, অতঃপর তোমরা তা থেকে আহার করো এবং দুস্থ ও অভাবগ্রস্থদর আহার করাও।’ (সুরা : হজ, আয়াত : ২৮)
বিভিন্ন হাদিসে জিলহজ মাসের প্রথম ১০ দিনের গুরুত্বপূর্ণ আমলের কথা এসেছে।
নিম্নে তা তুলে ধরা হলোঃ
এক. চুল ও নখ না কাটা : জিলহজ মাসের চাঁদ দেখার পর থেকে কোরবানি দেওয়া পর্যন্ত হাত ও পায়ের নখ, মাথার চুল কাটা বা মুন্ডানো, মোচ ছোট করা বা কাটা, নাভি ও বগলের নিচের অযাচিত পশম না কাটা উত্তম। জিলহজ মাস শুরুর আগেই এসব বিষয়ে প্রস্ততি নেওয়া উচিত। উম্মে সালামা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, তোমরা জিলহজ মাসের নতুন চাঁদ দেখলে এবং তোমাদের কেউ কোরবানির ইচ্ছা করলে সে যেন নিজের চুল ও নখের কোনো কিছু না কাটে। (মুসলিম, হাদিস : ১৯৭৭)অন্য বর্ণনায় এসেছে, যে ব্যক্তি কোনো জন্তু কোরবানি দেবে সে যেন জিলহজ মাসের নতুন চাঁদ দেখার পর নিজের চুল ও নখ থেকে কোনো কিছু স্পর্শ না করে।
(মুসলিম, হাদিস : ১৯৭৭)
কোরবানি দেওয়ার সামর্থ্য নেই এমন ব্যক্তি যদি আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য এ আমল করে তিনিও কোরবানি দেওয়ার পূর্ণ সওয়াব পাবেন। আবদুল্লাহ ইবনে আমর ইবনুল আস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, আল্লাহ এই উম্মতের জন্য কোরবানির দিনকে ঈদ হিসেবে নির্ধারণ করেছেন। এক ব্যক্তি জিজ্ঞাসা করল, হে আল্লাহর রাসুল, আমি যদি দুগ্ধবতী ছাগল ছাড়া অন্য কোনো পশু না পাই তাহলে কি কোরবানি করব? তিনি বললেন, না। বরং তুমি (ঈদের দিন কোরবানির পর) তোমার চুল ও নখ কাটবে। গোঁফ ছোট করবে।
নাভির নিচের লোম কাটবে। এটাই আল্লাহর কাছে তোমার পরিপূর্ণ কোরবানি। (আবু দাউদ, হাদিস : ২৭৮৯)
দুই. রোজা রাখা : জিলহজ মাসের প্রথম ৯ দিন রোজা রাখা সুন্নত। এসব দিনে রোজার বিশেষ ফজিলত বর্ণিত হয়েছে। হাফসা (রা.) বর্ণনা করেছেন, চারটি আমল নবী করিম (সা.) কখনো ছাড়তেন না। আশুরার রোজা, জিলহজের প্রথম দশকের রোজা, প্রতি মাসের তিন দিনের রোজা, ফজরের আগে দুই রাকাত সুন্নত নামাজ। (সুনানে নাসায়ি, হাদিস : ২৪১৫)
আর ৯ জিলহজ তথা আরাফার দিন রোজা রাখলে আগে ও পরে এক বছর গুনাহ মাফ হবে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, আরাফার দিন (৯ জিলহজ) রোজার বিষয়ে আমি আল্লাহর কাছে আশাবাদী যে তিনি এর মাধ্যমে বিগত এক বছর ও আগামী বছরের গুনাহ মাফ করবেন। (মুসলিম, হাদিস : ১১৬২)
তিন. জিকির করা : জিলহজ মাসের প্রথম ১০ দিন বেশি পরিমাণ জিকিরের কথা হাদিসে এসেছে। বিশেষত তাকবির (আল্লাহু আকবার), তাহমিদ (আলহামদুলিল্লাহ), তাহলিল (লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ) ও তাসবিহ (সুবহানাল্লাহ) পড়া সুন্নত। ইবনে ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, আল্লাহর কাছে কোনো দিবস ও তাতে আমল করা জিলহজ মাসের ১০ দিনের চেয়ে অধিক প্রিয় মর্যাদাপূর্ণ নয়। অতএব তোমরা তাতে বেশি পরিমাণ জিকির লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ, আল্লাহু আকবার ও আলহামদুলিল্লাহ পড়ো। (মুসনাদে আহমদ, হাদিস : ৫৪৪৬)
চার. তাকবির পাঠ : জিলহজ মাসের প্রথম দিন থেকে ১৩ তারিখ পর্যন্ত তাকবির পাঠ করা একটি সাধারণ আমল। তবে জিলহজ মাসের ৯ তারিখ ফজরের নামাজ থেকে ১৩ তারিখ আসরের নামাজ পর্যন্ত মোট ২৩ ওয়াক্ত ফরজ নামাজ শেষে তাকবির বলবে। এটাকে তাকবিরে তাশরিক বলা হয়। এ সম্পর্কে আল্লাহ বলেন, ‘তোমরা নির্দিষ্ট দিনগুলোতে আল্লাহকে স্মরণ কোরো।’ (সুরা : বাকারা, আয়াত : ২০৩)

ইবনে আববাস (রা.) বলেছেন, এখানে ‘নির্দিষ্ট দিন’ বলতে (জিলহজ মাসের) প্রথম ১০ দিন উদ্দেশ্য করা হয়েছে। ইবনে ওমর (রা.) ও আবু হুরাইরা (রা.) এই ১০ দিন তাকবির বলতে বলতে বাজারের দিকে যেতেন এবং তাদের তাকবিরের সঙ্গে অন্যরাও তাকবির বলত। মুহাম্মাদ বিন আলী (রহ.) নফল নামাজের পরও তাকবির বলতেন। (বুখারি, হাদিস : ৯৬৯)
তাকবির হলো, ‘আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার ওয়া লিল্লাহিল হামদ।’ অর্থ : আল্লাহ বড় আল্লাহ বড়, আল্লাহ ছাড়া কোনো উপাস্য নেই। আল্লাহ বড় আল্লাহ বড়। সব প্রশংসা আল্লাহর জন্য। (দারু কুতনি, হাদিস : ১৭৫৬)
পাঁচ. হজ ও ওমরাহ করা : পবিত্র হজ ও ওমরাহ জিলহজ মাসের অন্যতম আমল। নির্দিষ্ট পরিমাণ সম্পদের মালিক হলে জীবনে একবার হজ করা ফরজ। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যে আল্লাহর জন্য হজ করে এবং তাতে অশালীনতা ও গুনাহ থেকে বিরত থাকে, সে হজ থেকে নবজাতক শিশুর মতো (নিষ্পাপ হয়ে) ফিরে আসে। (বুখারি, হাদিস : ১৫২১)
অন্য হাদিসে এসেছে, ইবনে মাসউদ (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, তোমরা ধারাবাহিকভাবে হজ ও ওমরাহ পালন কোরো, অর্থাৎ সঙ্গে সঙ্গে কোরো। তা এমনভাবে মুমিনের দরিদ্রতা ও পাপ মোচন করে, যেমন (কামারের আগুনের) হাপর লোহা, স্বর্ণ ও রৌপ্যের ময়লা দূর করে। আর কবুল হজের প্রতিদান জান্নাত ছাড়া কিছুই নয়। (তিরমিজি, হাদিস : ৮১০)
ছয়. কোরবানি করা : জিলহজ মাসের বিশেষ আমল হলো কোরবানি করা। যতটুকু সম্পদ থাকলে জাকাত ওয়াজিব হয় ততটুকু সম্পদের জন্য কুরবানি ওয়াজিব হবে। জিলহজ মাসের দশম দিন থেকে ১৩ তারিখ পর্যন্ত কোরবানি করা যাবে। এই সময় হাজিরা মিনা ও আশপাশের প্রাঙ্গণে কোরবানি করেন। আল্লাহ বলেন, ‘তুমি তোমার রবের জন্য নামাজ পড়ো এবং কোরবানি করো।’ (সুরা : কাউসার, আয়াত : ২)।
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, যে ব্যক্তি সামর্থ্য থাকা সত্তে¡ও কোরবানি করল না, সে যেন আমাদের ঈদগাহের কাছেও না আসে। (বুখারি, হাদিস : ৬৪৯০)আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে ওই দিনগুলোতে বেশি বেশি আমল করার তাওফিক দান করুন।

‘বিশ্ব পরিবেশ দিবস ও আমাদের করণীয় ‘
সাইফুল ইসলাম
শুরুতে পৃথিবী উত্তপ্ত ছিলো, শেষেও হয়ত পৃথিবী উত্তপ্ত হবে। মাঝের সময়টা শীত, গ্রীষ্ম, বসন্তে মানব সভ্যতা-সংস্কৃতি হয়ে যাবে প্রাচীন। আজকের যে অসহনীয় তাপ, বাতাসে আদ্রতা- এর সকল দায় আমাদের, এই মানবজাতির। আমরা প্রচন্ড বেগে ধেয়ে চলেছি নিঃশেষের দিকে। আমাদের রিসোর্স, আমাদের সকল প্রাকৃতিক সম্পদকে আমরা নিদারুণ ক্রান্তি ও নির্মমতায় নিঃশেষ করে চলেছি। বিশ্ব উষ্ণায়নজনিত জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ অভিঘাতে ধ্বংস হতে চলেছে আমাদের জীববৈচিত্র। বৈশ্বিক উষ্ণতা, পানি ও বায়ু দূষণ এবং জীববৈচিত্র ও মাটির উপর পড়ছে এর সুস্পষ্ট প্রভাব ! যদি এভাবে চলতে থাকে তাহলে ধ্বংস হবে প্রাকৃতিক সম্পদ, ধ্বংস হবে মানব সভ্যতা, বাড়বে অভিবাসন, বাড়বে স্থিতিশীল প্রাকৃতিক পরিবেশের সংঘাত।
বিশ্বভ্রম্মান্ডের সেরা সৃষ্টি মানুষকে তাই হতে হবে আরো অনেক বেশি দায়িত্বশীল। বিশ্ব ইকোসিস্টেমকে রাখতে হবে স্থিতিশীল। পরম যতনে পৃথিবীকে রাখতে হবে সুস্থ, বাসযোগ্য। আমাদের পরবর্তী প্রজন্মের জন্যে এটা আমাদের মনুষ্যত্বের দায়। কৃষি, মৎস্য, ডেইরি, পল্ট্রিতে কমাতে হবে কীটনাশক ও কেমিক্যালের ব্যবহার। জীবনের সকল পর্যায়ে পরিবেশ বান্ধব সামগ্রী ব্যবহার করতে সবাইকে সচেতন হতে হবে। কার্বন ফুটপ্রিন্ট ও বায়ুদূষণ যেনো কম হয় সেদিকে মনোযোগ ও যতœ বাড়াতে হবে। এয়ারকন্ডিশনের ব্যবহার কমাতে হবে। পলিথিন ও প্লাস্টিকের ব্যবহার নিষিদ্ধ করতে হবে। প্রাত্যহিক জীবনের বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় হতে হবে সচেতন ও আন্তরিক।
বর্জ্য পদার্থ রিসাইকেল করতে পদ্ধতিগত দক্ষতা অর্জন করতে হবে।
আর সবচেয়ে জরুরি হলো-প্রচুর পরিমাণে গাছ লাগাতে হবে। অধিক পরিমাণে বৃক্ষ রোপন বৈশ্বিক তাপ নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি পরিবারের আয়ে ভুমিকা রাখবে।
আরো একটি বিশেষ অনুরোধ সবাই – আসুন আমরা নিজ নিজ এলাকাকে ইউক্যালিপটাস গাছ মুক্ত করতে সচেষ্ট হই, সচেতনতা বাড়াই এবং যার যার জায়গা থেকে এর উৎপাদন, বিক্রি, বিতরণকে নিরুৎসাহিত করি এবং প্রচারণায় নিজেদের সম্পৃক্ত করি। সাময়িক লাভের আশায় এই গাছ লাগিয়ে আমরা নিজেদের সর্বনাশ ডেকে আনছি। ২০০৮ সালে একটি প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে বাংলাদেশ সরকার এই গাছের রোপন নিষিদ্ধ করেছে। কিন্তু খুবই পরিতাপের বিষয় দায়িত্বশীলদের এ বিষয়ে যথাযথ দৃষ্টি দৃশ্যমান নয়।
তাই আসুন আমরা নিজেদের দায় নিজেদের কাঁধে তুলে নেই। অকারণ বৃক্ষ নিধন বন্ধ করি। বেশি বেশি ফলজ গাছ লাগাই, বেশি বেশি পরিবেশ বান্ধব গাছ লাগাই। এই সুন্দর পৃথিবীকে বাসযোগ্য রাখতে সবাই যার যার অবস্থান থেকে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখি। মহান সৃষ্টিকর্তার বিশেষ অনুগ্রহের এই অনন্য সুন্দর পৃথিবীকে, এর প্রকৃতিকে মানুষ ও প্রাণীকূলের বাসযোগ্য রাখি। এই বর্ষায় আসুন সবাই অন্তত দুইটি করে গাছ লাগাই। একটি নিজের জন্যে আর অন্যটি কোনো প্রিয়জনের জন্যে। সবাইকে বিশ্ব পরিবেশ দিবসের শুভেচ্ছা
সাইফুল ইসলাম

লেখক: প্রাবন্ধিক ও কলামিস্ট।

তাড়াশে শিক্ষককে মারধর

গোলাম মোস্তফা ঃ সিরাজগঞ্জের তাড়াশে বিষমডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী দুই শিক্ষক সহোদর ভাই দেবেন্দ্র কুমার মাহাতো ও বিশ্বনাথ মাহাতো পাঠদানের সময় শ্রেণিকক্ষে ঘুমিয়ে পড়েন। তাদের এ সমস্যা দীর্ঘদিনের। এতে ছাত্রছাত্রীর পড়ালেখা চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে।
গত রবিবার ঐ বিদ্যালয়ের আরেকজন সহকারী শিক্ষক সুশীল কুমার মাহাতো শ্রেণিকক্ষে ঘুমাতে নিষেধ করেন। তাতেই দুই শিক্ষক সহদর ভাই দেবেন্দ্র কুমার মাহাতো ও বিশ্বনাথ মাহাতো মিলে বেধরক পেটান শিক্ষক সুশীল কুমার মাহাতোকে। এদিকে বিষমডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নৃপেন্দ্রনাথ মাহাতো মারধরের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, আমি দেবেন্দ্র কুমার মাহাতোকে সুশীল কুমার মাহাতোর সার্টের কলার চেপে ধরে থাকতে দেখি। সেসময় দেবেন্দ্র কুমার মাহাতোর ভাই বিশ^নাথ মাহাতো সুশীল কুমার মাহাতোকে কিলঘুষি ও লাথি মারতে থাকেন। অপরদিকে শিক্ষক সুশীল কুমার মাহাতো বলেন, ১৯৮৯ সালে বিষমডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত। দেবেন্দ্র কুমার মাহাতো সহকারী শিক্ষক হিসাবে রয়েছেন প্রতিষ্ঠাকালীন সময় থেকে। বিশ^নাথ মাহাতো রয়েছেন ২০১৬ সাল থেকে। বিদ্যালয়ে যোগদানের পর থেকে দুই ভাই শ্রেণিকক্ষে ঘুমান। এতে বিদ্যালয়ের শিক্ষার মান উন্নয়ন বাধাগ্রস্থ হচ্ছে। এ নিয়ে বিগত বছরগুলোয় বেশ কয়েকবার বিদ্যালয় কর্তৃক উপজেলা শিক্ষা অফিস বরাবর লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। বিষমডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী সত্যবতী, অনুরাধা, চৈতি ও দিপান্তর বলেন, আমরা পড়া দেওয়ার জন্য টেবিলের সামনে দাড়িয়ে থাকি। তখনও স্যার ঘুমান!
বিষমডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক প্রবীণ কুমার মাহাতো বলেন, শিক্ষক হয়ে আরেকজন শিক্ষকের গায়ে হাত তোলা উচিত হয়নি। সহোদর ভাইয়ের এহেন আচরণে ক্লাস করা বাদ দিয়ে অধিকাংশ শিক্ষার্থী ভয়ে বিদ্যালয় থেকে বাড়িতে চলে যায়। বিষমডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী দুই শিক্ষক সহদর ভাই দেবেন্দ্র কুমার মাহাতো ও বিশ্বনাথ মাহাতো বলেন, আমরা বিশেষজ্ঞ চিকিৎসককে দেখিয়েছি। নিয়মিত ওষুধ খাচ্ছি। আগের থেকে ঘুম একটু কমেছে। মারধরের বিষয়ে বিশ্বনাথ মাহাতো বলেন, আমার ভাই দেবেন্দ্র কুমার মাহাতো টেবিলে মাথা রেখে ঘুমিয়ে পড়েন। সহকারী শিক্ষক সুশীল কুমার মাহাতো মোবাইল ফোনে সেই ছবি তোলেন। এতে আমার রাগ হয়। পরে উভয়ের মধ্যে তর্কের এক পর্যায়ে মারধরের ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, মারধরের শিকার সহকারী শিক্ষক সুশীল কুমার মাহাতো বুকের বাম পাশে গুরুতর আঘাত পেয়েছেন। তিনি তাড়াশ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসাসেবা নিয়েছেন। পরে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিরাজগঞ্জ সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. মুসাব্বির হোসেন খান বলেন, সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মনিরুজ্জামানকে ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছিলো। মারধরের শিকার সহকারী শিক্ষক সুশীল কুমার মাহাতোকে আইনী ব্যবস্থা গ্রহন করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। আমাদেরও তদন্ত কমিটি হবে। পরে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ প্রসঙ্গে তাড়াশ থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নজরুল ইসলাম বলেন, মৌখিকভাবে মারধরের বিষয়ে জেনেছি। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

বড়াইগ্রামে বনপাড়া পৌরসভার বাজেট ঘোষণা

বড়াইগ্রাম(নাটোর) প্রতিনিধি ঃ নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার বনপাড়া পৌরসভার উন্মুক্ত বাজেট ঘোষণা করা হয়েছে। গত বুধবার দুপুরে পৌর মিলনায়তনে ২০২৪-২৫ অর্থ বছরের আয়-ব্যয় সম্বলিত বাজেট ঘোষণা করা হয়। বনপাড়া পৌরসভার নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আশরাফুল ইসলাম ভুঁইয়া ও হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা মোঃ দেলোয়ার হোসেন উক্ত বাজেট পেশ করেন। ঘোষিত বাজেটে রাজস্ব আয় ধরা হয়েছে ৫ কোটি ৩১ লাখ ৮৪ হাজার ৫৯২ টাকা, এবং রাজস্ব ব্যয় ধরা হয়েছে ৪ কোটি ৮৪ লাখ ৮ হাজার টাকা। অর্থাৎ মোট উদ্বৃত্ত রয়েছে ৪৭লাখ ৭৬হাজার ৫৯২ টাকা। অপরদিকে উন্নয়ন খাতে আয় ধরা হয়েছে ৩৩কোটি ২৭ লাখ ১৩ হাজার ৭৮৪ টাকা এবং ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৩ কোটি ২৩ লাখ ৭৫ হাজার টাকা। অর্থাৎ উন্নয়ন খাতে মোট উদ্বৃত্ত রয়েছে ৩ লাখ ৩৮হাজার ৭৮৪ টাকা
এ উপলক্ষে পৌরসভা মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে পৌর মেয়র কেএম জাকির হোসেন’র সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন, বড়াইগ্রাম উপজেলা হিন্দু ঐক্য পরিষদের সভাপতি শ্রী ধীরেন্দ্রনাথ সাহা,
শিক্ষাবিদ শ্রী গোপাল চন্দ্র মিত্র, পৗরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ আতাউর রহমান, পৗরসভার প্যানেল মেয়র শিরিন আক্তার, পৌর কাউন্সিলর মোঃ মাসুদুর রহমান সোনার,দুলাল হোসেন,ঈমান আলী ও বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল খায়ের ব্যাপারী।
এ সময় পৌর মেয়র কেএম জাকির হোসেন বলেন, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা থাকলে একটি পৌরসভা বা সমাজ সুন্দর ভাবে পরিচালিত হয়। তাই এভাবে উন্মক্ত বাজেট ঘোষণার মাধ্যমে পৌরবাসীর সু-পরামর্শের সুযোগ ও তাদের মতামতের প্রতি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। এছাড়া তিনি একটি পৌরসভাকে সুন্দর ও মডেলে পরিণত করতে পৌরবাসীকে নিয়মিত কর প্রদানের আহ্বান জানান।

গুরুদাসপুরে চলছে পুকুর খননের মহামারী

গুরুদাসপুর প্রতিনিধি: নাটোরের গুরুদাসপুরে এমপির হুঙ্কার আর ইউএনও’র জেল-জরিমানা দেওয়ার পরও কোনোভাবেই থামানো যাচ্ছে না রাক্ষুসে মাটি খাদকদের। কৌশল বদলে রাতের দ্বিতীয় প্রহরে চলছে তিন ফসলি জমিতে মাটি কেটে পুকুর খননের কাজ। শত শত বিঘা ধানি জমি চলে যাচ্ছে পুকুরের পেটে। মহামারী আকার ধারণ করায় পুকুর খনন রোধে মাইকিং দিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার সালমা আক্তার।
গত বুধবার সকাল থেকে গুরুদাসপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের দেওয়া ওই প্রচার মাইকিং চালু করা হয়েছে। নির্বাহী অফিসারের জারি করা ওই জরুরি বিজ্ঞপ্তিতে ‘ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার আইন ২০২৩ এর ১৩ ধারা মোতাবেক ‘মাটির উপরিস্তর কর্তন ও ভরাটের দÐের কথা তুলে ধরা হয়।মাইকিংয়ে বলা হয়- ‘যদি কোন ব্যক্তি জেলা প্রশাসকের অনুমতি ব্যতিরেকে আবাদযোগ্য বা কর্ষণীয় জমির উপরিস্তর কর্তন, জমির রেকর্ডীয় মালিকের বিনা অনুমতিতে বালু, মাটি দ্বারা ভরাট এবং অনুরূপ কাজ অপরাধ বলে বিবেচিত হবে। এই অপরাধে অনধিক দুই বছর কারাদÐ ও অর্থদÐের বিধান রয়েছে’। উপজেলাবাসীকে এই আইনের প্রতি দায়িত্বশীল থাকার জন্য অনুরোধও জানানো হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার সালমা আক্তার বলেন- গুরুদাসপুরে ফসলি জমিতে পুকুর খনন একশ্রেণির মানুষের নেশা-পেশায় পরিণত হয়েছে। এসব মাটি খেকোদের হাত থেকে ফসলি জমি রক্ষায় তিনি ব্যাপকভাবে প্রচারের জন্য মাইকিং দিয়েছেন। একইসাথে জরুরী বিজ্ঞপ্তিও জারি করেছেন।স্থানীয়রা জানায়- বিলের তলানি থেকে পাকা সড়কের ধার। কোনো জমিই বাদ যায়নি রাক্ষুসে মাটি খাদকদের হাত থেকে। বিলের এসব তিন ফসলি জমি নির্বিচারে কেটে পুকুর বানানো হয়েছে। হাঁড়িভাঙ্গা, কুমারখালী, চাকলের বিলের যতদূর চোখ যায় শুধু পুকুর আর পুকুর।
গুরুদাসপুর কৃষি স¤প্রসারণ অফিসের পরিসংখ্যানে দেখাযায়- এভাবে পুকুর খননের ফলে গত ১৩ বছরে গুরুদাসপুর উপজেলায় ফসলি জমি কমেছে ১ হাজার ৫১০ হেক্টর। ২০১১ সালে গুরুদাসপুরে ফসলি জমির পরিমাণ ছিল ১৬ হাজার ৬০৯ হেক্টর। এই জমি চলতি বছরে এসে দাঁড়িয়েছে ১৫ হাজার হেক্টরে।উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. হারুনর রশিদ বলেন- এভাবে ফসলি জমি নষ্ট করে পুকুর খনন করায় মারাত্মকভাবে ফসল হানি হচ্ছে। নিয়ম-নীতি উপেক্ষা করে নির্বিচারে পুকুর খনন করায় প্রতি বছরই আশঙ্কাজনক হারে কমছে ফসলি জমি।নাটোর-৪ আসনের সংসদ সদস্য সিদ্দিকুর রহমান পাটোয়ারী বলেন- পুকুর খননকারীরা কোনো দলের হতে পারেনা। পুকুর খনন বন্ধে তিনি সবার সহযোগিতা চান।
তাড়াশে ভূমি সেবা সপ্তাহ উদযাপন

আরিফুল ইসলাম ঃ ‘স্মার্ট ভূমি সেবা, স্মার্ট নাগরিক’ এ প্রতিপাদ্যকে সামনে নিয়ে সিরাজগঞ্জের তাড়াশে ভূমি সেবা সপ্তাহ-২০২৪ইং (০৮-১৪জুন) এর উদ্বোধন ও জনসচেতনতা মূলক সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গত শনিবার সকালে উপজেলা ভূমি অফিস কার্যালয় চত্বরে উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুইচিং মং মারমার সভাপতিত্বে ভূমি সেবা সপ্তাহের শুভ উদ্বোধন করেন প্রধান অতিথি স্থানীয় সংসদ সদস্য অধ্যাপক ডাঃ মোঃ আব্দুল আজিজ।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, সহকারী কমিশনার (ভূমি) খালিদ মাহমুদ, পৌর মেয়র আব্দুল রাজ্জাক, বীর মুক্তিযোদ্ধা আরশেদুল ইসলাম, বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রহমান, এস এম আব্দুল রাজ্জাক, বারুহাস ইউপি চেয়ারম্যান ময়নুল হক, মাগুরা বিনোদ ইউপি চেয়ারম্যান মেহেদী হাসান ম্যাগনেট, যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ আলী বিদ্যুৎ, ছাত্রলীগের সভাপতি ইকবাল হাসান রুবেল, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক সুলতান মাহমুদ, উপজেলা বঙ্গবন্ধু জাতীয় চারনেতা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সিরাজ সরকার সহ আরো অনেকে। ভূমি সেবা সপ্তাহ-২০২৪ ইং উপলক্ষে সপ্তাহ ব্যাপী জনসচেতনতা সভা, ক্যাম্পেইন, ডকুমেন্টারি, প্রচার সহ সেবা প্রার্থীদের সহযোগিতার জন্য তথ্য কাম সেবা বুথ স্থাপনের উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।

বড়াইগ্রামে ভাসমান পশুর হাট বসিয়ে অর্থ হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ

বড়াইগ্রাম প্রতিনিধি ঃ নাটোরের বড়াইগ্রামের আহম্মেদপুরে অবৈধভাবে পশুর হাট বসিয়ে লাখ লাখ টাকা টোল আদায়ের অভিযোগ উঠেছে একটি চক্রের বিরুদ্ধে। মসজিদের নামে রশিদ ছাপিয়ে এ চাঁদা উত্তোলন করা হলেও মসজিদের তহবিলে কোন টাকা দেয়া হয়না বলে জানা গেছে। এসব অনিয়ম বন্ধ ও সরকারি স্বার্থ রক্ষায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য মসজিদ কমিটির পক্ষ থেকে জেলা প্রশাসক ও ইউএনও’র কাছে লিখিত আবেদন করা হয়েছে।
জানা যায়, আহম্মেদপুরে সরকারীভাবে কোন পশুর হাটের অনুমোদন নেই। কিন্তু স্থানীয় কিছু সংখ্যক লোক আহম্মেদপুর বাজার ও বাসস্ট্যান্ড জামে মসজিদের উন্নতিকল্পে ছাগল হাট নাম দিয়ে অবৈধভাবে এ হাট বসিয়ে আসছে। সরকারের ঘোষনা অনুযায়ী, ইজারাবিহীনভাবে হাট বসানো ও টোল আদায় সম্পূর্ণ অবৈধ। কিন্তু তারা প্রতি শুক্রবার এখানে ছাগলের হাট বসিয়ে মসজিদের নামে রশিদ ছাপিয়ে বছরের অন্যান্য সময়ে ৩০-৪০ হাজার টাকা হাসিল (টোল) আদায় করে। এছাড়া ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে অতিরিক্ত হাসিল আদায়ের মাধ্যমে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে তারা। স্থানীয়দের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা অনিয়মের প্রতিকারে কার্যকর কোনো উদ্যোগ চোখে পড়েনি।
এ ব্যাপারে আহম্মেদপুর বাজার ও হাট ইজারাদার এসএম কামরুজ্জামান রউফ জানান, প্রতি সপ্তাহে শুক্রবার তারা এখানে ছাগলের হাট বসায়। প্রতি হাটে শত শত ছাগল, ভেড়া-খাসি কেনা-বেচা হয়। স্থানীয় কৃষক লীগ নেতা ইসাহাক আলী ও যুবলীগ নেতা শফিকুল ইসলামের নেতৃত্বে তাদের লোকজন ক্রেতা-বিক্রেতাদের কাছ থেকে চাঁদা তোলে। বছরের অন্য সময় ৩০-৪০ হাজার টাকা আদায় হলেও ঈদের সময় প্রতি হাটে লক্ষাধিক টাকা চাঁদা আদায় করা হয়। কিন্তু আমি ইজারাদার হয়েও একটাকাও পাই না, সরকারও কোন রাজস্ব পায় না।
আহম্মেদপুর বাসস্ট্যান্ড জামে মসজিদ পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক জরিপ আলী মৃধা বলেন, তারা মসজিদের উন্নয়নের কথা বলে হাট বসিয়ে চাঁদা তুললেও মসজিদের তহবিলে কোন টাকা দেয় না। সব টাকা নিজেরাই ভাগাভাগি করে নিয়ে চলে যায়।
এ ব্যাপারে ছাগল হাট পরিচালনার দায়িত্বে থাকা জোয়াড়ী ইউনিয়ন যুবলীগের সাবেক সহ-সভাপতি শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘প্রায় ১৫ বছর ধরে মসজিদের নামেই এ হাটটি চলে। আদায় করা টাকার একটি অংশ আমরা মসজিদের জন্য জমা রেখেছি। কিন্তু আমাদের আগে যারা হাট চালাতো, তারা মসজিদের টাকার সঠিক হিসাব না দেয়ায় আমরাও জমা রাখা টাকা দিচ্ছি না।
ইউএনও লায়লা জান্নাতুল ফেরদৌস লিখিত অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, আমি এ উপজেলায় নতুন আসায় বিষয়টি জানা ছিল না। সরকারি অনুমোদন ছাড়া হাট বসানোর কোন সুযোগ নেই। দ্রæত অবৈধ হাট বন্ধ করাসহ এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

তাড়াশে দোয়াত কলম প্রতীকের নির্বাচন করায়
১২ পরিবারকে সমাজচ্যুত করার অভিযোগ

তাড়াশ প্রতিনিধি: ৬ষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দোয়াত কলম প্রতীকের প্রার্থী মনিরুজ্জামান মনি পক্ষে নির্বাচন করায় ১২টি পরিবারকে সমাজচ্যুত করার অভিযোগ উঠেছে সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার উলিপুর গ্রামের সমাজ প্রধানদের বিরুদ্ধে। আর এ থেকে প্রতিকার চেয়ে গত বুধবার (৫ জুন) বিকালে তাড়াশ উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ওই গ্রামের ভুক্তোভোগী ১২ টি পরিবার।
গত শনিবার (৮ জুন) বিকালে লিখিত অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন, তাড়াশ উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) সুইচিং মং মারমা।
লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গত ২১ মে দ্বিতীয় ধাপে তাড়াশ উপজেলায় ৬ষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ওই নির্বাচনে উপজেলা চেয়ারম্যান পদে দুই জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দিতা করে। ওই নির্বাচনে উলিপুর গ্রামের ১২টি পরিবারের সদস্যেরা দোয়াত কলমের প্রার্থী অধ্যক্ষ মনিরুজ্জামান মনি পক্ষে করে। এই নির্বাচনে দোয়াত কলম প্রতীকের প্রার্থী মনিরুজ্জামান মনি বিজয়ী হয়।
এতে ক্ষিপ্ত হয়ে উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক সঞ্জিত কর্মকারের সমর্থক উলিপুর গ্রামের সমাজ প্রধান মো. বাহাদুর আলী, তয়জাল হোসেন, মাসুদ রানা গত ৩ জুন রাতে ওই ১২ পরিবারকে সমাজচ্যুত করে দেন। তাড়াশ পৌরসভার ৯ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শরিফুল ইসলাম খোকন বলেন, ঘটনাটি জানার পর থেকে আমি সমাধানের চেষ্টা করছি।
সমাজচ্যুতের বিষয়টি অস্বীকার করে সমাজ প্রধান মো. বাহাদুর আলী বলেন, নির্বাচন করার জন্য নয় বরং তারা আমাদের সমাজের কোন নিয়ম কানুন মেনে চলে না। তাই আমাদের সমাজ থেকে বাদ দিয়েছি।এ প্রসঙ্গে তাড়াশ উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) সুইচিং মং মারমা বলেন, একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে অবশ্যই আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

তাড়াশে প্রতিবন্ধী সুশান্তর মুখে হাসি

লুৎফর রহমান ঃ সিরাজগঞ্জের তাড়াশে ঘড় নির্মাণের জন্য দুই বান্ডিল ঢেউ টিন, নগদ টাকা ও ব্যাটারি চালিত অটো ভ্যান পেয়ে মুখে হাসি ফুটেছে প্রতিবন্ধী সুশান্ত চন্দ্র মজুমদার ও তাঁর পরিবারের।
গত শনিবার (৮ জুন) দুপুরে তাড়াশ প্রেসক্লাব চত্ত¡রে ঘড় নির্মাণের জন্য দুই বান্ডিল ঢেউ টিন, নগদ ৬ হাজার টাকা ও একটি ব্যাটারি চালিত অটো ভ্যান তাঁর হাতে তুলে দেন স্থানীয় সংসদ সদস্য অধ্যাপক ডা. মো. আব্দুল আজিজ।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন, তাড়াশ উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) সুইচিং মং মারমা, বারুহাস ইউপি চেয়ারম্যান মো. ময়নুল হক, মাগুড়া বিনোদ ইউপি চেয়ারম্যান মেহেদী হাসান ম্যাগনেট, তাড়াশ ইসলামিয়া পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুস সালাম, উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ আলী বিদ্যুৎ, তাড়াশ প্রেসক্লাবের সভাপতি প্রভাষক এম আতিকুল ইসলাম বুলবুল, সাবেক সভাপতি প্রভাষক সনাতন দাশ, সাধারণ সম্পাদক শামিউল হক শামীম, যুগ্ম সম্পাদক লুৎফর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক হাদিউল হৃদয়, সিনিয়র সাংবাদিক শফিউল হক বাবলু, আলহাজ আলী রনি, এম মাজিদ, শায়লা পারভীন, উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ইকবাল হাসান রুবেল, সাধারণ সম্পাদক সুলতান মাহমুদ প্রমূখ।

তাড়াশে বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা
মুজিব ফুটবল টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলা অনুষ্ঠিত

লুৎফর রহমান ঃ সিরাজগঞ্জের তাড়াশে উপজেলা পর্যায়ে বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব গোল্ড কাপ প্রাথমিক বিদ্যালয় ফুটবল টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলা ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। গত (৭ জুন) শনিবার বিকেলে উপজেলার কাস্তা বেত্রাশিন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় খেলার মাঠে বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব গোল্ড কাপ প্রাথমিক বিদ্যালয় ফুটবল টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলা ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুইচিং মং মারমা।
প্রধান অতিথি হিসেবে বিজয়ী দলের হাতে ট্রফি তুলে দেন ৬৪ সিরাজগঞ্জ-৩ (রায়গঞ্জ-তাড়াশ) আসনের সংসদ সদস্য অধ্যাপক ডাঃ মোঃ আব্দুল আজিজ ।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা পরিষদের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ মনিরুজ্জামান মনি, উপজেলা শিক্ষা অফিসার মুসাব্বির হোসেন খান, উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহিনুর আলম লাবু, তাড়াশ সদর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান বাবুল শেখ, উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি আইবুবুর রহমান রাজন, সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম, উপজেলা সেচ্ছাসেবকলীগের সাধারণ সম্পাদক লুৎফর কবির লিমন, ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সুলতান মাহমুদ সহ আরো অনেকে।
বঙ্গবন্ধু গোল্ড কাপ প্রাথমিক বিদ্যালয় ফুটবল টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলায় খুটিগাছা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় টাইব্রেকারে চরকুশাবাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়কে পরাজিত করে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে।
অপরদিকে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব গোল্ড কাপ প্রাথমিক বিদ্যালয় ফুটবল টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলায় গুল্টা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ১-০ গোলে ঘরগ্রাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়কে পরাজিত করে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে এমপি আজিজ বলেন,স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তাঁর সহধর্মীনি বেগম ফজিলাতুনন্নেসা মুজিবের স্মৃতির প্রতি সম্মান প্রদর্শন এবং আজকের শিশুদের বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গমাতা সম্পর্কে সম্যক ধারণা প্রদান, স্বাধীনতার প্রকৃত ইতিহাস সম্পর্কে অবহিত করণের জন্য প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় ২০১০ সালে থেকে এ টুর্নামেন্ট দুইটি আয়োজন করে চলেছে

সলঙ্গা থানার ওসির বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন

নিজস্ব প্রতিবেদক ঃ ভুক্তভোগী পরিবারকে আইনি সহযোগিতা না করে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ করে সিরাজগঞ্জের সলঙ্গা থানার ওসি এনামুল হকের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করেছেন সলঙ্গা থানা কৃষকলীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক সেলিম রেজা, গত মঙ্গলবার দুপুরে সলঙ্গার মাওলানা তর্কবাগীশ পাঠাগারে এ সংবাদ সম্মেলন করা হয়। উক্ত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে সেলিম রেজা বলেন, গত শুক্রবার দুপুরে শরিফুল ইসলাম গং আমার পৈতিক সম্পাতি দখল করার জন্য ৪০ থেকে ৪৫ জন সন্তাসি নিয়ে আমার নিজ বাড়িতে গিয়ে জোর পূর্বক ভাবে সিমানা পাচিরের কাজ শুরু করে এবং আমারা তাদের বাধা দিলে আমিসহ আমার পরিবারের উপর হামলা চালায় এ সময় আমি আমার ৬ মাসের শিশুসহ গুরুতর ভাবে আহত হই
আহত অবস্থায় ৯৯৯ ফোন দেই তাৎক্ষনিক ভাবে ফোন কলটি সলঙ্গা থানায় ফরওয়ার্ড করলে, সলঙ্গা থানা থেকে বলেন, থানার সকল ফোর্স ব্যস্ত আছে কেউ যেতে পারবে না বলে ফোনের লাইন কেটে দেয়। এসময় অহত অবস্থায় এলাকাবাসী এসে উদ্ধার ভুক্তভোগী পরিবারকে।
পরবর্তিতে সলঙ্গা থানায় গিয়ে লিখিত অভিযোগ দায়ের করে, অভিযোগ করার ৫ দিন পেরিয়ে গেলেও কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি সলঙ্গা থানা পুলিশ এবং এ বিষয়ে কোন প্রকার তদন্ত করেনি। থানা পুলিশ হয়তো শরিফুল গংদের পক্ষ নিয়েছে তাই পুলিশ আমাদের কোন আইনি সহযোগিতা করছে না তিনি আরো বলেন আমিও আমার পরিবারের সদস্যগণ নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। এ সময় সংবাদ সম্মেলনে সেলিমের বাবা কোবাদ আলীসহ ভুক্তভোগী পরিবারের সকল সদস্যগন সহ গণমাধ্যম কর্মিরা উপস্থিত ছিলেন।
এবিষয়ে সলঙ্গা থানার ওসি এনামুল হকের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি এবিষয়ে কোন কথা বলতে রাজি হয়নি।

রায়গঞ্জে পলিথিন বর্জন অভিযান

রায়গঞ্জ প্রতিনিধি ঃ “আসুন সবাই পলিথিন বর্জন করি, পরিবেশ সংরক্ষণ ভূমিকা রাখি ” এই শ্লোগান নিয়ে সিরাজগঞ্জ রায়গঞ্জ উপজেলার ধামাইনগর গ্রাম সামাজিক শক্তি কমিটির মাধ্যমে কমিউনিটিতে পলিথিন বর্জন অভিযান -২০২৪ খ্রীঃ উদযাপন উপলক্ষ্যে পলিথিন ও প্লাস্টিক বর্জন সচেতনতামূলক র‌্যালি প্রদর্শন ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। ধামানগর গ্রাম সামাজিক শক্তি কমিটির আয়োজনে এবং ব্র্যাক আল্টা-পুওর গ্র্যাজুয়েশন প্রোগ্রাম চান্দাইকোনা, সিরাজগঞ্জের সহযোগিতায় গত বুধবার (৫ জুন) বিকেল রায়গঞ্জ উপজেলার ধামাইনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এ অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন, ধামাইনগর গ্রাম সামাজিক শক্তি কমিটির সভাপতি মোঃ রমজান আলী।
সন্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, ধামাইনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালংেয়র সহকারি শিক্ষক মোঃ ইয়াকুব আলী, ধামাইনগর গ্রাম সামাজিক শক্তি কমিটির সাধারণ সম্পাদক মোঃ হাবিবুর রহমান , ব্র্যাক ইউপিজি কর্মসূচির শাখা ব্যবস্থাপক মোঃ জাকির হোসেন প্রমুখ।
এসময়ে অনুষ্ঠানে আরো অত্র এলাকার শিক্ষার্থীরা এবং সুধীজন, ব্র্যাক ইউপিজি কর্মসূচির শাখার কর্মসূচি সংগঠকগণ উপস্থিত ছিলেন।
আলোচনা সভায় আলোচকগণ বলেন, এলাকার জনগণের মাঝে সচেতনতা বৃদ্ধি করে পলিথিন এর খারাপ দিকগুলো তুলে ধরতে হবে এবং আসুন আমরা সবাই মিলে পলিথিন ও প্লাস্টিকের ব্যবহার বর্জন করি সারা গ্রাম বাংলায় এই আওয়াজ তুলি।

Please follow and like us:
Pin Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Website Design, Developed & Hosted by ALL IT BD