এস.কে. কর্মকার, শাহজাদপুর প্রতিনিধি: সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার বাঘাবাড়ি দক্ষিণপাড় মহল্লার খলিল মোল্লা ও লতিফ প্রামাণিক এ দু’দল গ্রামবাসীর মধ্যে বুধবার (১৯ জানুয়ারি) সকাল সাড়ে ৭টা থেকে দিনভর দফায় দফায় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে ১ জন নিহত ও ২ পুলিশ সদস্যসহ কমপক্ষে ৬০ জন আহত হয়েছে।
নিহত ইয়ারমিন (৩৫) ওই গ্রামের মোল্লা গোষ্ঠীর ইউনুস মোল্লার ছেলে বলে জানা গেছে। আহতদের শাহজাদপুর, বেড়াসহ বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সংঘর্ষ চলাকালে পুরো গ্রাম রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। এ সময় উভয়পক্ষের অর্ধশতাধিক বাড়িঘর ভাংচুর ও ব্যাপক লুটপাটের ঘটনা ঘটে। প্রাণভয়ে মহল্লাবাসী গরু, ছাগল, আসবাবপত্রসহ দলে দলে বাড়িঘর ছেড়ে অন্যত্র চলে যাচ্ছে।
খবর পেয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে ১০ জনকে গ্রেফতার করে। উভয় পক্ষই থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছে। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত উভয় পক্ষের মধ্যেই চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। পুনরায় সংঘর্ষের আশংকায় মহল্লাবাসী বিচলিত হয়ে পড়েছে।
সরেজমিন পরিদর্শনকালে এলাকাবাসী জানায়, উপজেলার বাঘাবাড়ি দক্ষিণপাড় মহল্লার মোল্লা গোষ্ঠীর আমিরুল মোল্লা কর্তৃক সন্ত্রাসী তান্ডব, চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই, ধর্ষণ ও নারী নির্যাতনের ঘটনাকে কেন্দ্র করে গত বছরের ২৭ ও ২৮ অক্টোবর মোল্লা গোষ্ঠীর সাথে প্রামানিক গোষ্ঠীর হামলা সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে উভয়পক্ষের মধ্যে চরম বিরোধের সৃষ্টি হয়। এ বিরোধের জের ধরে এ দিন সকাল সাড়ে ৭টায় দু‘পক্ষের মধ্যে নতুন করে সংঘর্ষ বাঁধে। সংঘর্ষ চলাকালে উভয়পক্ষের লোকজনই হাসুয়া, রামদা, লাঠি, ফালা, হলেঙ্গা, ঢাল, সর্কি নিয়ে একে অপরের উপর ঝাপিয়ে পড়ে। এ সময় উভয়পক্ষের মধ্যে ব্যাপক ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া, ইট পাটকেল নিক্ষেপ, অর্ধশতাধিক বাড়িঘর ভাংচুর ও ব্যাপক লুটপাটের ঘটনা ঘটে।
এ বিষয়ে প্রামানিক গোষ্ঠীর মিজানুর রহমান, আব্দুল লতিফ বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে মোল্লা গোষ্ঠীর আমিরুল মোল্লা কর্তৃক সন্ত্রাসী তান্ডব, চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই, ধর্ষণ ও নারী নির্যাতনের ঘটনা চলতে থাকলেও মোল্লা গোষ্ঠীর লোকজন এর প্রতিকার ও সুবিচার না দেওয়ার প্রতিবাদ করায় এদিন সকালে তারা আমাদের উপর অতর্কিত হামলা চালিয়ে মারপিট শুরু করে। আমরা বাঁধা দিলে উভয়পক্ষের মধ্যে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।’
অন্যদিকে, মোল্লা গোষ্ঠির কামাল আহমেদ বাবু, ‘খলিল মোল্লা, মিন্টু মোল্লা বলেন, কোন কারণ ছাড়াই তারা অতর্কিতে আমাদের বাড়িঘরে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাংচুর ও লুটপাট করে। আমরা বাধা দিলে উভয়পক্ষের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও ইট পাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। এ সময় প্রতিপক্ষের ফালার আঘাতে আমাদের ১ জন নিহত ও ১০ জন আহত হয়েছে।
এ বিষয়ে শাহজাদপুর থানার ওসি শাহিদ মাহমুদ খান বলেন, ‘খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌছে মৃদু লাঠি চার্জ করে উভয় পক্ষকে সরিয়ে দেওয়া হয়। এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। এ ঘটনায় এখনও কোন পক্ষ মামলা করেনি। মামলা করলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
|
|