একজন পল্লীবন্ধু স্বৈরাচার এরশাদ : বাংলাদেশ ও তাঁর উন্নয়ন

Spread the love

মোঃ আবুল কালাম আজাদ।।

পাকিস্তানী স্বৈরশাসকের কাছ থেকে স্বাধীনতা ছিনিয়ে আনতে একাত্তরে বাঙ্গালী জাতিকে যুদ্ধ করতে হয়েছিল ৯ মাস, আর স্বাধীন এই দেশে গনতন্ত্র পুন:প্রতিষ্ঠার জন্যে সামরিক স্বৈরশাসক জেনারেল এরশাদের বিরুদ্ধে এই বাঙ্গালী জাতিকেই লড়তে হয়েছিল দীর্ঘ ৯ বছর। ১৯৮২ সালে ২৪ মে মার্চ থেকে স্বৈরশাসক হঠাতে এদেশে রক্তাক্ত সংগ্রামের যাত্রা শুরু হয়ে শেষ হযেছিল ১৯৯০ সালের ৪ ডিসেম্বর। ১৯৬৯ সালে পাকিস্তানের স্বৈরশাসক ফিল্ড মার্শাল জেনারেল আয়ুব খানের বিরুদ্ধে যে গন অভ্যুত্থান হযেছিল সেরকম নিরস্ত্র গন আন্দোল ঘটে নব্বইয়ে।নব্বইয়ের ২৭ শে নভেম্বর থেকে ৪ ডিসেম্বর ছিল স্বৈরাচারী জেনারেল এরশাদের বিরুদ্ধে চুড়ান্ত গনবিস্ফোরন।

১৯৮২ সালের পরবর্তী সময়ে লে. জে. হুসাইন মোহাম্মদ এরশাদের বর্নাঢ্য রাজনৈতিক ও পারিবারিক জীবনের জন্য সবসময় আলোচনা- সমালোচনায় থেকেছেন। কারন তিনি দেশের অস্থিরতার সময়ের রাষট্রপতি বিচারপতি সাত্তারকে হটিয়ে জোর করে রাষ্ট্র ক্ষমতা দখল করেছিলেন।নব্বই পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশীদের কাছে তার পরিচয় ছিল স্বৈরশাসক হিসেবে। মানুষদের মন্দ কাজগুলিকে নিয়ে নেতিবাচক রাজনীতি করা আর ভালো কাজগুলোর জন্য কৃজ্ঞতা স্বীকার না করা এবং সর্বোপরি তাদের ভুলে যাওয়াই হচ্ছে আমাদের রাজনীতির ধারা। সাবেক রাষ্ট্রপতি জে. এরশাদ তার কৃতকর্মের জন্য সমালোচিত এবং দীর্ঘ কারাজীবন ভোগ করেছেন । তারপরও তিনি কখনো রাজনৈতিক অঙ্গনে সম্মানীত হতে পারেননাই। মানুষ কালের আবর্তে আত্মবিস্মৃত হয়ে যায়। আমরা বা আমাদের পরবর্তী প্রজন্মও একদিন ভুলে যাবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু তার কৃতকর্মই স্বক্ষী হয়ে থাকবে।

মহান স্বধীনতার স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে স্বপরিবারে হত্যার পর ১৯৭৫ পরবর্তীতে দেশে যে রাজনৈতিক সংকট ও অস্থিরতা বিরাজ করছিল সেটাকে ’৭৫-৮২ এবং’৮২- ৯১ দুই অংশে ভাগ করা যায়। ১৯৭৫ থেকে ১৯৮২ সাল পর্যন্ত রাজনৈতিক ইতিহাসে সবচেয়ে বেশী ভাঙা-গড়া হয়েছে যার ফলে দেশ হয়েছিল রাজনৈতিকভাবে অস্থিতিশীল। সদ্য স্বাধীন দেশ হয়ে পড়ে রাজনীতিহীন। ১৯৮২ সালের ২৪ মার্চ সেনাবিিহনীর তৎকালিন চীফ অব ষ্টাফ লে. জেনারেল হুসেইন মোহাম্মদ এরশাদ সামরিক শাসন জারী করে রাষ্ট্রপতি বিচারপতি আব্দুস সাত্তারকে হটিয়ে জোরপুর্ব্বক রাষ্ট্রক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হন।

১৯৯০ সালের ৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত দীর্ঘ নয় বছর রাষ্ট্র ক্ষমতায় থেকে সৈরাচারী পদ্ধতিতে একক সিদ্ধান্তে দাপটের সাথে রাষ্ট্র পরিচালনা করেছেন। সৈরাচার শাসকের পদত্যাগ এবং নির্বাচনের দাবীতে সর্বদলীয় গন আন্দোলনের মুখে এরশাদের সৈরশাসনের পতন ঘটে ১৯৯০সালের ৬ ডিসেম্বর। জাতি এখন তাঁকে কীভাবে মনে রাখবে? এ প্রশ্নের উত্তর ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপুর্ন বটে। বাংলাদেশের ইতিহাসের সবচেয়ে কলঙ্কজনক ঘটনা মহান স্বাধীনতার স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে স্বাধীনতার স্বল্প সময়ের মধ্যে হারানো। জাতির জনক দেশকে পাক হানাদারদের হাত থেকে মুক্ত করে স¦াধীনতার স্বাদ এনে দিলেও দেশকে প্রতিষ্ঠিত করে দেওয়ার সময় দেওয়া হয়নাই।

জাতীয় পার্টির প্রচার ও প্রকাশনা সেল থেকে প্রকাশিত ‘ দেশের জন্য যা করেছি এবং আগামিতে যা করতে চাই’ গ্রন্থে এরশাদ প্রথম ধাপে ২০৭ টি এবং আরেকটি ভাগে ১৭৩ টি উন্নয়ন কাজের বিবরন তুলে ধরেছেন। এরশাদের মুল শ্লোগান এবং স্বপ্ন ছিল‘ ৬৮ হাজার গ্রাম বাঁচলে বাংলাদেশ বাঁচবে’। এরশাদের এই শ্লোগানের প্রতিধ্বনী শোনা যায় বর্তমান প্রধানমন্ত্রী জাতির জনক বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার বক্তব্যে যা-‘ প্রতিটা গ্রাম হবে শহর’ সেই লক্ষ্যেই তাঁর সরকার কজ করে যাচ্ছে। ওই গ্রন্থ অনুযায়ী এরশাদের সময়ের উন্নয়ন কর্মকান্ডের মধ্যে আছে- বৃটিশ প্রশাসনিক ব্যবস্থা ভেঙ্গে বাংলাদেশের ৪৬ মহকুমাকে জেলা এবং ৪৬০টি থানাকে উপজেলায় উন্নীত করে প্রশাসনিক বিকেন্দ্রীকরনের মাধ্যমে প্রতিটি উপজেলায় একজন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা( ইউএনও)- র পদ সৃষ্টি করে তাঁর অধীনে ১৭টি বিসিএস ক্যাডার কর্মকর্তাকে পদায়ন করে জনগনের সরাসরি ভোেটের দ্বারা নির্বাচিত উপজেলা চেয়ারম্যানের অধীনে ন্যাস্ত করা। প্রতিটা উপজেলায় গ্রামের সাধারন মানুষ যাতে সহজে বিচার পায় সেজন্য ম্যাজিষ্ট্রেট ও মুন্সেফ আদালত স্থাপন করেন।হাইকোর্ট বিকেন্দ্রীকরন ছিল এরশাদের একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ। একটি রীট করার জন্য ভ’ক্তভোগীকে বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ঢাকায় গিয়ে দিনের পর দিন অবস্থান করে লক্ষ লক্ষ টাকা ব্যয় করে কাজ করতে হতো। হাইকোর্ট বিকেন্দ্রীকরনের কারনে স্বার্থান্বেষী এক শ্রেনির আইনজীবিগন এর বিরোধীতা করেন।

এরশাদই প্রথম বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশগ্রহনকারী মুক্তিযোদ্ধাদের ‘ জাতির সর্বকালের সর্ব শ্রেষ্ঠ সন্তান’ আখ্যা দিয়ে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিল সচিবালয় গঠন করেন এবং মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য ভাতা প্রবর্তন করেন। এই সত্যটি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংসদ অধিবেশনে অকপটে স্বীকার করে মরহুম এরশাদের শোক প্রস্তাবের বক্তব্য রাখেন। সমাজের বুদ্ধিজীবি, কবি, সাহিত্যিক,সঙ্গিত শিল্পীদের প্রতি শ্রদ্ধা ও সম্মান জানিয়ে তাঁদের বাসস্থানের জন্য প্লট বরাদ্ধ করে গেছেন। সাভারে নতুন করে তৈরী করেছেন জাতীয় স্মৃতিসৌধ যা স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্তের নিদর্শন। ‘ এক নদী রক্ত পেড়িয়ে বাঙলার আকাশে রক্তিম সূর্য আনলো যাঁরা… তোমাদের সেই ঋন কোনদিন শোধ হবেনা’ গানটি সংসদে পাশ করায়ে রাষ্ট্রিয় টেলিভিশনে সংবাদ প্রচারের সময়, আযান প্রচারের পরে পরিবেশন করার কৃতিত্ত্ব এরশাদের। তিনি বৃটিশ ধারাকে বদলে দিয়ে বাঙলাদেশে রবিবারের পরিবর্তে ‘শুক্রবার’সরকারী সাপ্তাহিক ছুটি ঘোষনা করেন যা এখনও বিদ্যমান।

১৯৮২ সালে এরশাদ সরকার দেশে একটি ঔষধ নীতি প্রনয়ন করেন। এর ফলে ওষুধের দাম যেমন কমে আসে, তেমনি স্থানীয় কোম্পানীগুলো ওষুধ উৎপাদনে সক্ষমতা অর্জন করে। বহুজাতিক কোম্পানীগুলো একই ঔষধকে বিভিন্ন নামে ব্যবহার করে জনগনকে একই ঔষধকে বিভিন্ন দামে কিনতে বাধ্য করেছিল। তিনি একই গুনের বিভিন্ন ঔষধকে জেনেটিক নামে মৌলিক ঔষধে নিয়ে আসেন। ঔষধ নীতির মাধ্যমে মুল ঔষধকে প্রাধান্য দিয়ে অন্যান্য অপ্রয়োজনীয় ঔষধকে বাজার থেকে বিলুপ্ত করা হয়। তিনি স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজিয়েছিলেন। সে সময় জনসংখ্যার তুলনায় ডাক্তারের সংখ্যা ছিল কম। তখন সরকারী হাসপাতাল ছাড়া বেসরকারী মালিকানাধীন মেডিকেল ও হাসপাতাল ছিলনা বললেই চলে।তাঁর প্রনীত স্বাস্থ্য নীতির মাধ্যমে প্রতিটি সরকারী হাসপাতালে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের বাসস্থানের ব্যবস্থা করা সহ ব্যাক্তিগতভাবে রোগী দেখার জন্য চেম্বার তৈরী করে দেন। এতে করে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকগন হাসপাতালে নিয়মিত রোগী দেখার সাথে সাথে ব্যাক্তিগতভাবেও রোগী দেখতে পারতেন।বড় বড় বিশেষজ্ঞ ডাক্তারদেরকে বিভাগীয় শহরে না রেখে প্রত্যন্ত অঞ্চলে প্রেরন পুর্ব্বক গনমুখী স্বাস্থ্য চিকিৎসা ব্যবস্থা প্রবর্তন করেন। যার সুফল দেশবাসী ভোগ করছে। বর্তমান আওয়ামীলীগ সরকারও এ ব্যপারে কঠোর অবস্থানে।

এরশাদ স্বৈরশাসক হলেও তাঁর স্বপ্ন ছিল কোথাও না থেমে যে কেউ যেন টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া এবং পঞ্চগড় থেকে জাফলং পর্যন্ত সড়ক পথে যাতায়াত করতে পারে। সেই লক্ষ্যে সর্ব প্রথম জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন যমুনা সেতুর মাধ্যমে উত্তর বঙ্গের সাথে ঢাকার সংযোগ স্থাপন করেন। যমুনা সেতু বাস্তবায়নের জন্য বিদেশী দাতা সংস্থা যখন ৫০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ দাবী করে তখন রাষ্ট্রপতি এরশাদ জাতীয় সংসদে এ সংক্রান্ত বিল পাশ করিয়ে যমুনা সারচার্জ আদায়ের মাধ্যমে অর্থ সংগ্রহ করে এবং জাপানের সহযোগীতায় স্বপ্নের যমুনা সেতু তৈরীর কাজ শুরু করেন। এছাড়া জাপানের সহযোগীতায় মেঘনা -গোমতি সেতু নির্মান হওয়ায় এখন ঢাকা-চট্রগ্রাম সড়ক পথে ৫ ঘন্টায় পৌছানো যায়।বন্যা মোকাবেলায় সাবেক এই রাষ্ট্রপতি এরশাদ বাংরাদেশকে বিশ্বের কাছে রোল মডেলে পরিনত করেন।

১৯৮৮ সালে সর্বকালের ভয়াবহ বন্যায় প্রথম ঢাকা আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরসহ ঢাক মহানগরীতে পানি উঠে সারা দেশে ভয়াবহ বন্যা ও মহামারী দেখা দেয়। সেই সময়ে সামরিক পোশাক পরিহিত জেনারেল এরশাদ তৎকালীন সেনা প্রধান সহ মন্ত্রীবর্গদের নিয়ে বন্যা মোকাবেলায় ঝাঁপিয়ে পড়েন।স্পীডবোট/ নৌকা, হেলিকপ্টার, সী-প্লেন নিয়ে দুর্গোম প্রত্যন্ত এলাকায় পৌছে বন্যা মোকাবেলায় আত্মনিয়োগ করে বন্যা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করেন। বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দিয়ে সেই ভয়াবহ বন্যায় প্রানহানির হার ছিল প্রায় শুন্যের কোঠায়। পরবর্তীতে ভবিষ্যতে কোন ভয়াবহ বন্যা মোকাবেলায় দ্রুত উদ্ধার ও ত্রান পৌছানোর জন্যে প্রতিটি জেলা- উপজেলায় হেলীপ্যাড নির্মান সহপর্যাপ্ত স্পীডবোট ক্রয় করেন। এছাড়া ঢাকা মহানগরীকে বন্যার হাত থেকে রক্ষা করতে বেড়িবাঁধ তৈরী করেন। তিনি সুদুর ইরাক থেকে বিমান এনে বন্যার্তদের মাঝে ত্রান বিতরন করেন । বন্যার্তদের অবস্থা দেখতে আমাদের গুরুদাসপুরেও এসেছিলেন। সে সময়ে সংসদ সদ্য ছিলেন আবুল কাশেম সরকার, উপজেলা চেয়ারম্যান ছিলেন জাহিদুল ইসলাম এবং নির্বাহী অফিসার ছিলেন মো.রেজাউল করিম তরফদার। আমি তখন চলনবিল প্রেসক্লাবের সাধারন সম্পাদক এবং আত্হার হোসেন সভাপতি ছিলেন।বাংলাদেশের হিন্দুসহ অন্যান্য ধর্মাবলম্বীর সহঅবস্থানের সম্মানার্থে হিন্দুদের সবচেয়ে বড় অনুষ্ঠান জন্মাষ্টমির দিনকে রাষ্ট্রীয় ছুটি ঘোষনা করেন। এরই স্বীকৃতি স্বরূপ ভারত সরকার ভারতের কোটি কোটি মুসলমানদের সম্মানে আমাদের প্রিয় মহা নবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর জন্মদিন ১২ রবিউল আউয়াল দিনকে সরকারী ছুটি ঘোষনা করে। তিনি সারা দেশের মসজিদে বিনামুল্যে বিদ্যুৎ সুবিধা চালু করেন।

বাংলাদেশের স্বৈরশাসক নামে পরিচিত সাবেক রাষ্ট্রপতি জেনারেল হুসাইন মোহম্মদ এরশাদের একনাগারে সুদীর্ঘ নয় বছরের দেশ শাসন এবং তাঁর উন্নয় ও উন্নয়ন ভাবনার মূল্যায় হওয়া একান্ত উচিত বলে আমি মনে করছি। তিনি শুধু স্বৈরশাসকই নন, তিনি পল্লী বন্ধু নামেও সমধিক পরিচিত দেশব্যাপী। জেনারেল এইচ এম এরশাদ আমাদের উত্তর বঙ্গের সন্তান বিধায় আমাদের গর্বিত হওয়া উচিত।মাদরাসা শিক্ষায় পুর্বে কোন ¯œাতক সনদ ছিলনা। সাধারন ও সমসাময়িক শিক্ষার সাথে সামঞ্জস্যপুর্ন শিক্ষা ব্যবস্থা প্রবর্তন করেন। যার ফলে মাদরাসা থেকে ¯œাতক পাশ করে যেকোন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর সমমানের সনদ লাভ করতে পারছে।

বিশ্বের অন্যান্য দেশের আদলে নাগরিক সেবায় আরো গতিশীল আনয়নের লক্ষ্যে তৎকালীন মিউনিসিপালটিকে অধ্যাদেশ বলে সিটি কর্পোরেশন ঘোষনা পুর্ব্বক প্রথম ঢাক ও চট্রগ্রামে মেয়র পদ সৃষ্টি করে সিটি কর্পোরেশনের যাত্রা শুরু করেন। তাঁর সময় ঢাকায় প্রথম ‘ নগর ভবন’ স্থাপিত হয়।জেনারেল এরশাদ দেশের গরিব মেহনতি মানুষের কথা চিন্তা করে ৬৮ হাজার গ্রামে ৮ টাকা দরে চাউল বিতরনের ব্যবস্থা করেন। ১৯৮৯ সালে নেদারল্যান্ড সরকারের সহযোগীতায় কর্নফুলি নদীর ওপর সেতু নির্মান করেন। ১৯৯০ সালে ইরাক কর্তৃক কুয়েত আক্রমনের সময় বিরোধী দলের বাধাকে উপেক্ষা করে জাতিসংঘের আহবানে সাড়া দিয়ে শান্তিরক্ষি মিশনে প্রথম সেনাবাহিনী প্রেরন ছিল যুগোপযোগী পদক্ষেপ। যার জন্য সে সময়ে এর বিরোধীতা করে সারা দেশে হরতাল ডাকা হয়েছিল। কিন্ত সিদ্ধান্তে অটল ছিলেন এরশাদ। এরই ধারাবাহিকতায় পরবর্তীতে জাতিসংঘ শান্তিমিশনে সেনা, নৌ, বিমান ও পুলিশের পুরুষ ও নারী সদস্য সহ বিভিন্ন সামরিক -বেসামরিক সদস্যরা অংশগ্রহন করছে। বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে গুরুত্বপুর্ন ভুমিকা রাখছে। একজন মুসলমান হিসেবে দেশের মুসলিম জনসাধারনের ধর্মীয় আবেগকে গুরুত্ব দিয়ে ‘ ইসলামকে রাষ্ট্রধর্ম’ করেছিলেন। টিভিতে আযান প্রচারের নিয়ম করেছিলেন। সরকারী কর্মকর্তা ও কর্মচারিদের সুযোগ সুবিধা মাথায় রেখে পে-স্কেল চালু করেছিলেন।

এরকম অসংখ্য অর্জন আছে এরশাদের উন্নয়ন ঝুলিতে। তাঁর সময়ে নেওয়া দেশের উন্নয়নের পদক্ষেপের ব্যাপারে জাতীয় পার্টির প্রচার ও প্রকাশনা সেল থেকে প্রকাশিত ‘দেশের জন্য যা করেছি এবং আগামীতে যা করতে চাই’ গ্রন্থে এরশাদ বলেন , ‘এক বিপর্যস্ত বাংলাদেশের দায়িত্ব আমাকে গ্রহন করতে হয়েছিল।তারপর আমাকে ঘাত-প্রাতঘাতের মধ্য দিয়ে ৯ টি বছর কেটে গেছে। এ সময়ের মধ্যে আমি আপ্রান চেষ্টা করেছি একটি সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তোলার। সেখানে কতটুকু সফল হয়েছি বা বিফল হয়েছি- তার মূল্যায়ন করতে হলে পরবর্তী সময়ের সঙ্গে আমার /আমদের যোগ-বিয়োগ করার প্রয়োজন হবে। আমার মনে হয় দেশের মানুষ নির্ভূলভাবে করতে পেরেছে’।আমার প্রশ্ন সাবেক রাষ্ট্রপতি জেনারেল মরহুম এরশাদকে স্বৈরশাসক বলি আর যাই বলিনা কেন আমরা কী তাঁর কাজের যথাযথ মূল্যায় করছি?

#মো. আবুল কালাম আজাদ# সভাপতি, চলনবিল প্রেসক্লাব, গুরুদাসপুর, নাটোর# ০১৭২৪ ০৮৪৯৭৩# ১৪/১২/২১

Please follow and like us:
Pin Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Website Design, Developed & Hosted by ALL IT BD