গোলাম মোস্তফা : তাড়াশে কৃষকের ধান ক্ষেতে সেচ সংযোগের ৩৫টি বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমার চুরি হয়েছে। একটি ট্রান্সফরমারের দাম ৫৯ হাজার টাকা। যা পূনরায় কেনার জন্য স্থাপন খরচসহ কৃষকদেরকেই গুনতে হচ্ছে। ট্রান্সফরমার চুরির আতংকে চরম দুশ্চিন্তার মধ্যে রয়েছেন অন্যান্য কৃষকরাও।
তালম ইউনিয়নের পাড়িল গ্রামের শাহ পাড়ার ক্ষতিগ্রস্থ কৃষক আব্দুল কাদের ও ছোরমান আলী বলেন, বর্তমানে আমাদের এলাকাতে আমন ধানের ভরা মৌসুম। বিস্তীর্ণ মাঠের ক্ষেতগুলোয় ৪৯, ৫১, গুটি ৩৪ ও কাটারি জাতের ধানের আবাদ করা হয়েছে। বোরো ধানের ক্ষেতে যেমন পানি সেচ দিতে হয়, এসব আমন ধানেও অনুরূপভাবে পানির প্রয়োজন। ট্রান্সফরমার চুরি হওয়ার পর থেকে আমরা টাকা ও ধান দেওয়ার চুক্তিতে শ্যালো মেশিন নিয়ে ক্ষেতে সেচের ব্যবস্থা করেছি।
আব্দুল কাদের ও ছোরমান আলীর মতো ক্ষতিগ্রস্থ কৃষক আব্দুর রশিদ, সোলেমান আলী, আক্কাছ আলী, আবু সাঈদ, আব্দুর রশিদ ও সোবাহান সরকার প্রমূখ বলেন, ট্রান্সফরমার চুরিতে তাদের খুব ক্ষতি হয়েছে। অনেকের আবাদ করা অনিশ্চত হয়ে পড়েছে। প্রতিটি ৫ কেভির ট্রান্সফরমারের দাম ৩৮ হাজার টাকা ও ১০ কেভির দাম ৫৯ হাজার টাকা। এরপর টাকা জরিমানা গুণেও সময়মতো নতুন ট্রান্সফরমার পাওয়া যাচ্ছেনা। থানায় মামলা করেও প্রতিকার মিলছেনা। জানা গেছে, চলতি বছরের জুলাই মাস থেকে অক্টোবর মাসের ১০ তারিখ অবদি ট্রান্সফরমারগুলো চুরি হয়েছে। ধান ক্ষেতে সেচ সংযোগের বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমার রয়েছে মোট ১ হাজার ৬ শ ৭৬টি।উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা লুৎফুননাহার লুনা বলেন, আমন ক্ষেত থেকে ট্রান্সফরমার চুরি হওয়াতে কৃষকরা অসহায় হয়ে পড়েছেন। পানির অভাবে অনেকের ধান পাকা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
সিরাজগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ তাড়াশ জোনাল অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার আশরাফ উদ্দিন খান বলেন, ট্রান্সফরমার চুরির ঘটনায় থানায় মামলা দিয়েছি। উপজেলা প্রশাসনকে লিখিতভাবে অবগত করেছি। জনসচেতনতা বাড়াতে মাইকিং করেছি। এরপরও চুরি ঠেকানো যাচ্ছেনা, বরং বেড়েই চলেছে।
এহেন পরিস্থিতিতে তিনি কৃষকদের এলাকাভিত্তিক স্থানীয়ভাবে কমিটি করার পরামর্শ দিয়েছেন। যারা চার থেকে পাঁচজন করে রাত জেগে ট্রান্সফরমার পাহাড়া দেবেন। বিশেষকরে গভীর রাতে বিদ্যুৎ চলে গেলে দূর থেকে লাইট ধরে ট্রান্সফরমার দেখে রাখতে হবে। এ প্রসঙ্গে তাড়াশ থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ফজলে আশিক বলেন, ইতোমধ্যে ট্রান্সফরমার চুরির সাথে জড়িত দুজনকে আটক করা হয়েছে। এ চক্রের অন্যদেরকেও আটকের জোড় চেষ্টা চলছে।