উন্নত নাগরিক সেবার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি

Spread the love
মো. আকছেদ আলী, ভাঙ্গুড়া, পাবনা থেকে:
ভাঙ্গুড়া পৌরসভাকে আধুনিক,মাদকমুক্ত, আলোকশোভা, পরিচ্ছন্ন ও নান্দনিক সৌন্দর্য্য বর্ধন করে আকর্ষনীয় জনবান্ধব পৌরসভা নির্মাণের লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি। পর পর দুইবার নির্বাচিত পৌর মেয়র ও পৌর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক, গোলাম হাসনাইন রাসেল এই প্রতিনিধিকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাতকারে এমন কথা জানিয়েছেন। কিছু পেতে নয় জনগণকে সেবা দেওয়ার ব্রত নিয়েই তিনি নৌকা প্রতীক নিয়ে ২০১৬ সালের প্রথম বার মেয়র হিসেবে বিপুল ভোটে নির্বাচিত হয়ে ৭ ফেব্রুয়ারিতে দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলেন। তারই ধাবাহিকতায় ২০২১ সালের জানুয়ারিতে পুনরায় নৌকা প্রতীক নিয়ে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নিবার্চিত হয়ে ৫ম মেয়র হিসেবে  তিনি দায়িত্বভার গ্রহণ করেন।
পাবনা জেলা সদর থেকে প্রায় ৫০ কিলোমিটার উত্তর পূর্বদিকে চলনবিল পাড়ে অবস্থিত ভাঙ্গুড়া পৌরসভা গঠিত হয়েছিল ১৯৯৯ সালের পহেলা ডিসেম্বরে। প্রথম প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. ইব্রাহিম খলিল। ২০০০ সালের নভেম্বরে পৌরসভা নির্বাচনে নির্বাচিত প্রথম মেয়র আলহাজ্ব মো. ওসমান গণি। ৬.৬৭ বর্গ কি.মি. আয়তনের এই পৌরসভার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে বড়াল নদী। বড়াল নদীর পূর্বপাড়ে শরৎনগর বাজার ও পশ্চিমপাড়ে ভাঙ্গুড়া বাজার অবস্থিত। জনসংখ্যা প্রায় ৩০হাজার। ভোটার সংখ্যা ১৬ হাজার ৩শত ১৯জন। তান্মধ্যে নারী ভোটার ৮হাজার ৩শত ২৬জন ও পুরুষ ভোটার ৭হাজার ৯শত ৯৩জন। ট্যাক্স, ট্রেড লাইন্সেস ও হাটবাজার এই পৌরসভার আয়ের প্রধান উৎস।
মেয়র গোলাম হাসনাইন রাসেল জানান, জাতীর জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এঁর আর্দশকে বুকে ধারণ করে পৌরবাসীদের সেবা দেওয়ার ব্রত নিয়ে ২০১৬ সালে নৌকা প্রতীক নিয়ে বিপুল ভোটের ব্যবধানে বিএনপি-র প্রার্থীকে পরাজিত করে এই পৌরসভার চতুর্থ নির্বাচিত মেয়র হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলেন। সে সময় পৌরসভার কর্মকর্তা কর্মচারীদের বকেয়া বেতনসহ প্রায় ৩০ লাখ টাকা ঘাটতিসহ দায়িত্ব নিয়ে যাত্রা শুরু করেছিলেন। তিনি পৌরসভার টিমকে সাথে নিয়ে জনগণের সহযোগীতায় অল্প সময়ের মধ্যেই সেই ঘাটতি পুরণ করতে সক্ষম হন। পৌরবাসীকে সচেতন করে নাগরিকদের ট্যাক্স প্রদান ও ব্যবসায়ীদের ট্রেড লাইন্সেস গ্রহণে উদ্বুদ্ধ করে পৌরসভা বর্তমানে স্বয়ংসম্পূর্ণ। পৌরসভার কর্মকর্তা কর্মচারীদের নিয়মিত বেতনভাতা ও বিদ্যুৎ বিল পরিশেধ করা হচ্ছে। ২০২১ সালের জানুয়ারি মাসে পৌর নির্বাচনে নৌকা প্রতীক নিয়ে দ্বিতীয় মোয়াদে বিনা প্রতিন্দন্দ্বিতায় মেয়র নির্বাচিত হয়ে সেই উন্নয়নের ধারাকে আরও ত্বরান্বিত করে এগিয়ে যাওয়া হচ্ছে এই পৌরসভাকে। মাদক নির্মূলে পৌর এলাকার বিভিন্ন পয়েন্টে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে এবং মাদক নিয়ন্ত্রণে কঠোর নীতি অবলম্বন করা হচ্ছে।
পাবনা-৩ আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব মো. মকবুল হোসেন এর সহযোগিতায় জননেত্রী শেখ হসিনার উন্নয়নের সহযোগি হিসেবে ২০১৭ সালের খ শ্রেণি থেকে ক শ্রেণিতে উন্নীতকরণ হয়। এই পৌরসভায় রাস্তাঘাট নিমার্ণ, পাকাকরণ, সংষ্কার, পয়নিষ্কাশনের জন্য ড্রেনেজ ব্যবস্থা নির্মাণ, রাস্তা প্রশস্তকরণ, রাস্তাসহ জনগুরুত্বপূর্ণ স্থানসমূহে প্রায় ৭শত আলোক বাতি স্থাপন। পৌরসভায় অবসর বিনোদনের জন্য দুইটি শিশু পার্ক নির্মাণ, সরকারি হাজী জামাল উদ্দীন কলেজ সংলগ্ন এলাকায় একটি অবসর কালিন ক্যাফেটরিয়া নির্মাণ করা হয়েছে। বড়াল ব্রীজ স্টেশন এলাকায় যানজট মুক্ত  রাখার লক্ষ্যে ওই ক্যাফেটরিয়া পাশেই সিএনজি ও আটো স্ট্যান্ড নির্মাণ করা হয়েছে। ফলে শরৎনগর ও বড়াল ব্রীজ স্টেশন এলাকায় বর্তমানে অনেকটাই যানজট মুক্ত। পৌরসভার পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখার লক্ষ্যে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানসমূহে প্রায় ২শ ডাস্টবিন স্থাপন করা হয়েছে। বর্তমানে পৌরসভায়,ভিজিএফ,জিআর,মানবিক সহায়তা(নগদ অর্থ) বয়স্ক ভাতা ,বিধবা ভাতা,প্রতিবন্ধী ভাতা,ল্যাক্টোটিং ভাতা চালু আছে। পৌরসভায় ৩৪টি অক্সিজেন সিলিন্ডার মজুদ রাখা আছে । করোনায় আক্রান্ত শ্বাসকষ্টজনিত যে কোনো রোগি ডাক্তারী পরামর্শে পৌরসভার নিকট অক্সিজেন সহায়তা চাইলে পৌরসভার পক্ষ থেকে দ্রুত বিনামূল্যে অক্সিজেন সিলিন্ডার পৌঁচ্ছে দেওয়া হচ্ছে।
মেয়র আরো জানান, করোনাকালে পৌর সদরের জনবহুল স্থানসমূহে হাত ধেয়ার ব্যবস্থা, বিনামূল্যে মাক্স বিতরণ, করোনা আক্রান্ত হোম কোয়ারিন্টনে থাকা ব্যক্তি ও কর্মহীদের সাহায্য করা। এক্ষেত্রে পৌরসভার টিমকে  কখনো সাথে নিয়ে কখনো একাই নিয়মিতভাবে ছুটে চলেছেন। করোনাকালো বিনামূল্যে পৌরবাসীদের এন্টিবডি তৈরি লক্ষ্যে তাদের মধ্যে একাধিকবার  হোমিও  ওষুধ বিতরণ করা হয়েছে। রাস্তার পাকা করণের কাজ এরই মধ্যে  প্রায় ৯০ ভাগ শেষ হয়েছে। অধিকাংশ ড্রেনেজের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে তবে এখনও কিছু কাজ বাকী আছে সেই গুলি আগামী ডিসেম্বরে টেন্ডারের জন্য অপেক্ষায় রাখা আছে। বর্ষাকালে পৌরসভার কিছু কিছু স্থানে বৃষ্টির পানি জমে থাকে সেই স্থানে পৌরসভার পক্ষ থেকে অস্থায়ীভাবে ওয়াটার পাম্প বসিয়ে জলাবদ্ধতা নিরসন করা হচ্ছে। পৌরবাসীদের খানা জরিপ অর্থাৎ দরিদ্র, অতিদরিদ্র, মধ্যবৃত্ত ও উচ্চবৃত্ত চলমান আছে।
পৌরসভার সাপ্লাই পানি সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘পাবনা জেলার সুজাগর, ভাঙ্গুড়াও চাটমোহর পৌরসভা পাইপড ওয়াটার সাপ্লাই এন্ড এনভায়রনমেন্টাল স্যানিটেশন ’ নামের প্রকল্পে স্থাপিত হয়েছিল ২০১২ সালে । এই প্রকল্পের বাস্তবায়ন কারী সংস্থা ছিল জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর ও ভাঙ্গুড়া পৌরসভা। পৌরসভায় হস্তান্তরের হয়েছিল ২০১৩সালের ১৯ ডিসেম্বর। কিন্তু তৎকালীন মেয়রের সঠিক তদারকি ও দেখভালের অভাবে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান নি¤œমানের পাইপ ব্যবহারের কারণে পৌরবাসী আজঅবধি সাপ্লাই পানির মুখ দেখে নি।তবে আগামীতে পৌরবাসীদের ওয়ার্ড ভিত্তিক ১শত পরিবারকে টার্গেট করে মটর ও পানির ট্যাকিং স্থাপন করে তাদের সাপ্লাই পানি সুবিধার আওতায় আনার পরিকল্পনা রয়েছে।
Please follow and like us:
Pin Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Website Design, Developed & Hosted by ALL IT BD