গুরুদাসপুরে ক্লিনিক হস্তান্তরে ষড়যন্ত্র রুখে দিলেন বাস্তবায়ন কমিটির সদস্যরা

Spread the love

আবুল কালাম আজাদ : আদালতে মামলা থাকায় নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার একমাত্র পরিবার পরিকল্পনা, মা ও শিশু স্বাস্থ্য সেবা প্রতিষ্ঠান “সূর্যের হাসি ক্লিনিক” বন্ধ করে মালামাল হস্তান্তরের ষড়যন্ত্র রুখে দিয়েছেন ক্লিনিক বাস্তবায়ন কমিটির সদস্যবৃন্দ। আদালতের আদেশ উপেক্ষা করে সুর্যের হাসি নেটওয়ার্ক (এসএইচএন) এর নাটোর সদর শাখার ম্যানেজার মো. জহুরুল হাসান ২৪ জুন বুধবার গুরুদাসপুর ক্লিনিকের মালামাল হস্তান্তর নিতে আসলে ক্লিনিক ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্যরা আদালতের চুড়ান্ত আদেশ না হওয়া পর্যন্ত মালামাল হস্তান্তর বন্ধ করেন।
“সুর্যের হাসি ক্লিনিক গুরুদাসপুর উপজেলা শাখ সুত্রে জানা যায়- ইউএসএ আইডি (টঝঅওউ) এর আর্থিক সহায়তায় গত ২৩ বছরের অধিক সময় যাবত “সূর্যের হাসি ক্লিনিক” সমুহ প্রায় সকল জেলায় স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা সেবা দিয়ে আসছে। ২০১৮ সালে সুর্যের হাসি নেটওয়ার্ক নামে একটি অলাভজনক সামাজিক প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানি গঠনের মাধ্যমে এই ক্লিনিকগুলো এনজিও থেকে “সুর্যের হাসি নেটওয়ার্কের অধীনে হস্তান্তর করা হয়।
কিন্তু সরকারের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা মন্ত্রনালয়ের স্বাস্থ্য বিভাগের সাথে ২০২১ সালের জুন পর্যন্ত ২৪৯টি ক্লিনিক ভিত্তিক স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা সেবা প্রদানের চুক্তি থাকলেও সেই চুক্তি ভঙ্গ করে গত ৫/৪/২০২০ তারিখে “সুর্যের হাসি ক্লিনিক” গুরুদাসপুর উপজেলা শাখাসহ সারা দেশের ১৫৮টি সুর্যের হাসি নেটওয়ার্কের ক্লিনিকসমুহের কার্যক্রম জুন ২০২০ থেকে সংকোচন/সংস্কারের সিদ্ধান্ত জানিয়ে স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা মন্ত্রনালয়কে সুর্যের হাসি নেটওয়ার্ক আবেদন করে। ফলে ক্লিনিকগুলি থেকে গ্রামের গরিব মানুষ সুলভ মুল্যে স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে এবং প্রায় আড়াই হাজার কর্মকর্তা/-কর্মচারী এবং ৬ হাজার সেবাদানকারি নারীকর্মী চাকুরীচ্যুত হচ্ছেন। যা অত্যন্ত অমানবিক।
সূর্যের হাসি নেটওয়ার্কের ক্লিনিক ভিত্তিক পরিবার পরিকল্পনা সেবা প্রদানের অনুমোদনাদেশে উল্লেখিত শর্তাবলী এর সাথে সঙ্গতিপুর্ন নয় মর্মে অনুমোদনাদেশানুযায়ী আগামী ৩০ জুন ২০২১ খ্রিঃ পর্যন্ত অনুমোদনপ্রাপ্ত ক্লিনিকগুলি পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের বিদ্যমান অসরকারি সংস্থার অধিভূক্তি ও নবায়ন নীতিমালা অনুযায়ী পরিচালনার জন্য পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের ২০/৫/২০২০ তারিখের পপ অ/পরি/গক-১/এনজিও-১৩০/২০১৮/২০/২০৮ নম্বর স্মারক পত্রে নির্দেশ প্রদান করা হয়। তারপরও সুর্যের হাসি নেটওয়ার্ক (এসএইচএন) কর্তৃপক্ষ কর্তব্যরত কর্মকর্তা/ কর্মচারিদেরকে রিজাইন দেয়ার জন্য বার বার চাপ দিতে থাকেন।
চাকরি হারানোর আতংকে ১৫৮টি ক্লিনিকের পক্ষ থেকে বাদি হয়ে বাংলাদেশ সরকার, মহা পরিচালক পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর, কাওরান বাজার, ঢাকা এবং সুর্যের হাসি নেটওয়ার্ক (এসএইচএন) এর চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলিকে বিবাদী করে গত ১৯/৬/২০২০ তারিখে ঢাকা হাইকোর্টের ভার্চুয়াল কোর্টে রিট পিটিশন দায়ের করে। রিট পিটিশন নম্বর ১০০ অফ ২০২০। বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ২০/৫/২০২০ তারিখে রিট পিটিশনের শুনানী শেষে ৩০ দিনের মধ্যে বিবাদী পক্ষকে কারন দর্শানোর আদেশ দেন।
এ বিষয়ে ক্লিনিক ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি অধ্যক্ষ (অবঃ) মো. রসুল উদ্দিন মৃধা বলেন, যেহেতু এই ক্লিনিকসহ ১৫৮টি ক্লিনিক নিয়ে আদালতে মামলা চলছে সেহেতু আদালতের চুড়ান্ত আদেশ না হওয়া পর্যন্ত অত্র ক্লিনিকের কোন মালামাল হস্তান্তর করা হবেনা। তিনি আরো জানান, দায়িত্ব হস্তান্তরের চিঠির পুর্বেই আদালতের আশ্রয় নেয়া হয়েছে সেহেতু আদালতের আদেশ ছাড়া পুর্বের মতই ক্লিনিকের সকল কার্যক্রম পরিচালিত হবে। উপদেষ্টা সদস্য উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান রোকসানা আক্তার জানান, আদালতের রায়ের পর সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। এখন কোন হস্তান্তর হবেনা।

Please follow and like us:
Pin Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Website Design, Developed & Hosted by ALL IT BD