সমস্যায় জর্জরিত গুরুদাসপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স

Spread the love

গুরুদাসপুর প্রতিনিধি : নানা সমস্যায় জর্জরিত নাটোরের ৫০ শয্যা বিশিষ্ট গুরুদাসপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। জনবল সংকটের কারণে ব্যাহত হচ্ছে চিকিৎসা সেবা। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কমপক্ষে ২০জন চিকিৎসক প্রয়োজন হলেও এখানে নেই কোন মেডিসিন কনসালট্যান্ট, সার্জারী কনসালট্যান্ট, গাইনী কনসালট্যান্ট, অ্যানেসথেশিয়া কনসালট্যান্ট, ইমারজেন্সী মেডিক্যাল অফিসার, আউটডোর মেডিক্যাল অফিসার ও আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার। ফলে মুমূর্ষ রোগিরা চিকিৎসা না পেয়ে অধিক টাকা খরচ করে স্থানীয় বিভিন্ন প্রাইভেট ক্লিনিকে চিকিৎসা সেবা নিচ্ছেন।
জানা যায়, ২০ বছর ধরে গুরুদাসপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের এক্স-রে মেশিন বিকল এবং ৩ মাস ধরে আল্ট্রাসনোগ্রাফী মেসিন নষ্ট থাকায় চিকিৎসা কাজ চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে। ইসিজি মেশিন না থাকায় হার্টের রোগিদের চিকিৎসা দেয়া সম্ভব হচ্ছেনা। উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মুজাহিদুল ইসলামসহ মাত্র ৩জন চিকিৎসক আর ২৩জন সিষ্টার দিয়ে চলছে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি। ডা. রবিউল করিম শান্তকে দিয়ে আবাসিক মেডিক্যাল অফিসারের কাজ চালানো হলেও মেডিক্যাল এ্যাসিষ্ট্যান্টদের দিয়ে ইনডোর, আউটডোর ও ইমার্জেন্সী বিভাগের দায়িত্ব পালন করানো হচ্ছে। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের এই তিনটি ওয়ার্ডে পরিচ্ছন্ন পরিবেশ মোটেই নেই। কমপ্লেক্স ভবনের বাইরের পরিবেশও নোংরা। রাতের অন্ধকারে আলোর স্বল্পতার কারণে বিভিন্ন সমস্যায় পড়তে হয়। এমনকি রোগিদের বেড থেকে ব্যবহৃত মোবাইল ফোন ও টাকা চুরি হওয়ার ঘটনাও ঘটে।
এছাড়া স্থানীয় কিছু ক্লিনিকের দালাল চক্রের খপ্পরে পড়ে হয়রানির শিকার হচ্ছে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের রোগিরা। বহিরাগত এ্যাম্বুলেন্স ও ব্যাটারী চালিত ভ্যানের ভিড়ে হাসপাতালে রোগিদের চলাচল ব্যাহত হলেও কর্তৃপক্ষের টনক নড়েনি। কয়েকদিন আগে এক হারবাল চিকিৎসকের মোটরসাইকেল চুরি হয়। এরপর থেকে চিকিৎসা সেবা দিতে তিনি আর হাসপাতালেই আসেন না। এসব নানা সমস্যার কারণে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি এখন নিজেই অসুস্থ হয়ে পড়েছে। বৃহত্তর চলনবিলের প্রাণকেন্দ্রে গুরুদাসপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি হওয়ার কারণে পাশর্^বর্তী বড়াইগ্রাম, সিংড়া, তাড়াশ ও ভাঙ্গুড়া উপজেলা থেকেও রোগিরা আসে চিকিৎসা নিতে। এছাড়া বনপাড়া-হাটিকুমরুল মহাসড়কে প্রায়শই সড়ক দুর্ঘটনায় আহত রোগিদের চিকিৎসার জন্য নিকটবর্তী ওই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আনা হয়। কিন্তু চিকিৎসকের অভাবে অধিকাংশ মুমূর্ষ রোগিদের রাজশাহী মেডিকেল স্থানান্তর করা হয়। স্থানান্তরের সময় অনেক রোগি পথিমধ্যেই মারা যায়।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে আসা মর্জিনা বেগম নামে এক রোগি জানান, হাসপাতালে ডাক্তার নেই- চিকিৎসা নেই, হাসপাতালে থেকে লাভ কি? আব্দুর রহিম নামের আরেক রোগি জানান, আর কতদিন দাঁতের ডাক্তার আমিনুল ইসলাম সব রোগের চিকিৎসা দেবেন? সমস্যর বিষয়টি স্বীকার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মুজাহিদুল ইসলাম বলেন, প্রতিদিন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে আসা অধিকাংশ রোগিদের আমি একাই চিকিৎসা সেবা দিয়ে থাকি। তবে ডাক্তার ও জনবল সংকটের কারণে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসা সেবা ব্যহত হচ্ছে।#

Please follow and like us:
Pin Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Website Design, Developed & Hosted by ALL IT BD