তাড়াশ প্রতিনিধি: বুলবুলি খাতুন (৪৮)। স্বামী মৃত নুরাল ফকির। তাড়াশ উপজেলার পৌর শহরের আসানবাড়ি গ্রামের বাসিন্দা। দিনমজুর বুলবুলি খাতুনের স্বামী মারা যাওয়ার ২৫ বছর পেরিয়ে গেলেও জোটেনি বিধবা ভাতা।
সরেজমিনে জানা যায়, ১৯৯৪ সালে তার ভিটে মাটিহীন দিনমজুর স্বামী অসুস্থতা জনিত কারণে মারা যান। তখন তার বড় ছেলে বকুলের বয়স ছয় বছর। মেয়ে ধলির বয়স চার। আরেক মেয়ে ফুয়ারা মাত্র ছয় মাসের কোলের শিশু। ওই সময় মাথা গোজার ঠাই বলতে তার কিছুই ছিলনা। সারাদিন সন্তানদের নিয়ে যার বাড়িতে দিন মজুর খাটতেন, রাত হলে তার বাড়িতেই কোথাও শুয়ে পড়তেন। এরপর ২০০০ সালের দিকে আসানবাড়ি গ্রামের পাশের তাড়াশ-রানীহাট সড়কের ধারে খাসের জায়গায় ওপর কোন এক বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা তাকে একটি টিনের চাল আর বনের বেড়ার ঘর নির্মান করে দেয়। সেই থেকে তিনি সেখানেই বসবাস করছেন। মেরামতের অভাবে ঘরটির অবস্থাও এখন জরার্জীর্ণ।
এসময় কথা হয় বুলবুলি খাতুনের সাথে। কান্না জড়িত কন্ঠে বলেন, বিয়ের পর থেকেই তিনি দিন মজুরের কাজ করে চলেছেন। অতিরিক্ত খাটুনি আর খেয়ে না খেয়ে যথেষ্ট বয়স হওয়ার আগেই শরীর ও মন ভেঙে পড়েছে। কাজ না করলে কি খাবেন সেই ভাবনা আজও জীবন থেকে গেলনা! আজকাল তার শরীরটাও ভালো যায়না। রোগব্যাধির কারণে সারাক্ষণ কাতরাতে থাকেন। অর্থাভাবে চিকিৎসাও জোটেনা। তার অনেক পুরনো ছোট বসতঘরটিও মেরামতের অভাবে বেহাল হয়ে পড়েছে। অল্প বৃষ্টিতেই চাল ও বেড়া দিয়ে টপটপ করে পানি পড়ে। দিন মজুরের কাজ করেই দুই মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন তিনি। একমাত্র ছেলে বকুলও বিয়ে করে আলাদা সংসার করছে। তারও অভাব অনটনের সংসার। স্বামী মারা যাওয়ার ২৫ বছর পর হলেও সুষ্ঠভাবে বেঁচে থাকার জন্য বিধবা ভাতা কার্ড পেতে তিনি যথেষ্ট আশাবাদী। এ প্রসঙ্গে উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. শাহাদত হোসেন বলেন, বুলবুলি খাতুনের খোঁজ খবর নিয়ে তার জন্য শিগগিরই বিধবা ভাতার ব্যবস্থা করা হবে।