স্টাফ রিপোর্টার : তাদের কোন মালিক বাড়ি ভাড়া দিতে চায় না। সরকারি-বেসরকারি কোন প্রতিষ্ঠানেও কাজের সুযোগ নেই। নিজ পরিবার থেকে শুরু করে সবখানেই তারা চরম বৈষম্যমূলক আচরণের শিকার। তাদের তৃতীয় লিঙ্গ হিসেবে সরকার স্বীকৃতি দিলেও সমাজ এখনও দেয়নি।
হোসনে আরা হিজড়া, পপি হিজড়া, লাকী হিজড়া, সাথী হিজড়া, যুথি হিজড়া, চামিলী হিজড়া, চৈতী হিজড়া, রেখা হিজড়া বলেন, তাড়াশ উপজেলার প্রায় প্রতিটি গ্রামেই এক বা একাধিক হিজড়া রয়েছে। যাদের বেশিরভাগই এখনও কিশোর। চক্ষু লজ্জায় তারা নিজেদের প্রকাশ করতে পারছে না। তবে একটা সময় ঠিকই জানাজানি হবে। সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গি না পাল্টালে ওরাও একদিন পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হবে। ওদেরও হয়ত ঠাঁই হবে হিজড়া সমাজেই।
তারা আরও বলেন, হিজড়া হওয়ার কারণে পরিবারই তাদের প্রথমে ত্যাগ করেন। সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গি এর জন্য দায়ি। তাদের পরিবারে কেউ আত্মীয়তা করতে চায় না। নিকট আত্মীয়রাও সম্পর্ক এড়িয়ে যান। পরিবারের লোকজনও তাদের বোঝা মনে করেন। অবজ্ঞা করে চলেন। অবশেষে তাদের ঠাঁই মেলে হিজড়া সমাজে।
এও বলেন, ক্ষিধের জ্বালা তো সবারই আছে। সবাইকেই তো খেয়ে পড়ে বাঁচতে হয়! তারা অন্য দশজন মানুষের মতো বাঁচতে চায়। অথচ হিজড়া হওয়ার কারণে সামাজিকভাবে তাদের কোথাও বিন্দু মাত্র সন্মান নেই। ঘর থেকে বেড়োলেই লোকজন হিজড়া হিজড়া বলে ডাকাডাকি করেন। অনেকে নোংড়া মন্তব্যও করেন। তারা রাষ্ট্রিয় স্বীকৃতির পাশাপাশি সামাজিক স্বীকৃতি চান। তারা মানবেতর জীবন থেকে মুক্তি পেতে চান।
এ প্রসঙ্গে উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. শাহাদত হোসেন বলেন, ইতোমধ্যে সমাজসেবা অধিদপ্তর হতে হিজড়া জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নে প্রকল্প গ্রহন করা হয়েছে। প্রকল্পের আওতায় হিজড়াদের বিভিন্ন ট্রেডে প্রশিক্ষণ দেয়া হবে। এছাড়াও ৫০ বা ৫০ উর্দ্ধ হিজড়াদের মাসিক ভাতার ব্যবস্থা করা হবে।